সস্তায় ফ্লাইটের দিন শেষ করার অঙ্গীকার
১৭ মে ২০২১জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক প্রভাব মোকাবিলা করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে জার্মানিতে আর তেমন মতভেদ নেই৷ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলই পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে শুরু করেছে৷ বিদায়ী সরকারও সেই দিশায় কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে৷ আসন্ন সাধারণ নির্বাচনেও বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব পাচ্ছে৷ যে দলের উদ্যোগে জার্মানিতে পরিবেশবাদী রাজনীতি শুরু হয়েছিল, সেই সবুজ দল ক্ষমতায় এলে আরও একধাপ এগোনোর ইঙ্গিত দিয়েছে৷
সবুজ দলের চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী আনালেনা বেয়ারবক বলেছেন, আগামী সরকারে শরিক হলে তার দল কম দূরত্বের বিমান চলাচল আর আগের মতো আকর্ষণীয় রাখবে না৷ সার্বিকভাবে সস্তায় বিমানযাত্রার প্রবণতাও বন্ধ করতে চান তিনি৷ জার্মানির অনেক মানুষ যেভাবে মাত্র ২৯ ইউরো ভাড়া দিয়ে স্পেনের মায়োর্কার মনো গন্তব্যে ছুটি কাটাতে অভ্যস্ত, তার ফলে বিশাল মাত্রায় কার্বন নির্গমন ঘটে৷ তার মতে, সেই ক্ষতি পূরণ করা প্রয়োজন৷ বিমানের জ্বালানির উপর সরকারি ভরতুকিরও সমালোচনা করেন বেয়ারবক৷ বিকল্প হিসেবে ছুটির মরসুমে দূরপাল্লার রেলযাত্রার ব্যয় কমানো উচিত বলে মনে করেন তিনি৷ ক্ষমতায় এলে সার্বিক নীতির আওতায় নতুন ভবন তৈরির সময় সৌর প্যানেল বাধ্যতামূলক করার মতো পদক্ষেপও নিতে চান তিনি৷ চ্যান্সেলর হলে তিনি জরুরি ভিত্তিতে জলবায়ু সংরক্ষণ কর্মসূচি ঘোষণা করতে চান৷
বিদায়ী সরকারের শরিক এসপিডি দলও পরিবেশ সংরক্ষণে আরও সাহসি পদক্ষেপের অঙ্গীকার করছে৷ দলের চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী ওলাফ শলৎসও সস্তায় বিমানযাত্রা বন্ধ করার পক্ষে সওয়াল করেছেন৷
চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের ইউনিয়ন শিবির এমন প্রস্তাবের কড়া সমালোচনা করেছে৷ শিবিরের মুখপাত্র উলরিশ লাঙে বলেন, কম দূরত্বের ফ্লাইট বন্ধ করা ও বিমানের জ্বালানির দাম বাড়ানো ভুল পদক্ষেপ৷
জার্মানির বেসরকারি বিমান চলাচল শিল্পও সবুজ দলের নেতার প্রস্তাবের ঘোর বিরোধিতা করেছে৷ বিমান চলাচল খর্ব করার যুক্তিগুলিও খণ্ডন করার চেষ্টা করেছে এই ক্ষেত্র৷ জার্মানি এককভাবে এমন নীতি গ্রহণ করলে শূন্যস্থান পূরণ করতে অন্যান্য দেশ সস্তায় বিমানযাত্রার সুযোগ আরও বাড়িয়ে দেবে৷
ফলে আখেরে কার্বন নির্গমন কমানো যাবে না৷ জেট ফুয়েলের উপর করের হার বাড়ালেও কার্বন নির্গমন কমবে না বলে মনে করে জার্মানির এভিয়েশন সমিতি৷ পরিবেশের উপর চাপ কমাতে বরং ইউরোপীয় স্তরে সার্বিক উদ্যোগ নেবার ডাক দিয়েছে এই ক্ষেত্র৷ বর্তমানে জার্মানিতে যে করের কাঠামো চালু আছে, সেই ব্যবস্থাকেই যথেষ্ট কার্যকর বলে মনে করে এভিয়েশন সমিতি৷ উল্লেখ্য, জার্মানিতে জেট ফুয়েল জ্বালানি বাবদ করের আওতার বাইরে৷ আন্তর্জাতিক উড়ালের ক্ষেত্রে এমনকি ভ্যাটও দিতে হয় না৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)