1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শ্রমিক বিদ্রোহের আশঙ্কা

সমীর কুমার দে, ঢাকা১০ জুলাই ২০১৪

ঈদে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ নিয়ে জটিলতায় পড়তে পারে অন্তত ১ হাজার তৈরি পোশাক কারখানা৷ এই খাতের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-র এক জরিপে এই আশঙ্কার চিত্র উঠে এসেছে৷

Bangladesch nach Brand in einer Textilfabrik in Dhaka Proteste
ছবি: Reuters

শ্রম মন্ত্রণালয়ও এসব কারখানার একটি তালিকা তৈরি করছে৷ এসব কারখানার বেতন-বোনাস নিয়ে সৃষ্ট অসন্তোষ যাতে বড় আকারের শ্রম অসন্তোষে রূপ না নেয় তা নিয়ে সতর্ক সরকার ও মালিক পক্ষ৷ এ নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শ্রম মন্ত্রণালয়, গার্মেন্টস মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের নিয়ে করণীয় ঠিক করতে একাধিক বৈঠকও হয়েছে৷ বৈঠকে ঐসব কারখানার বেতন-বোনাস পরিশোধে বিশেষ নজরদারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালিক-শ্রমিক সব পক্ষই৷

মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এসব বিষয় নিয়ে সমন্বয় করছেন বিজিএমইএ-র সহ-সভাপতি এস এম মান্নান কচি৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, বিজিএমইএ প্রায় ১ হাজার কারখানার তালিকা করেছে যেগুলোতে বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধ নিয়ে ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে৷ এসব কারখানাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে৷ এ লক্ষ্যে বিজিএমইএ'র নানামুখী উদ্যোগ তুলে ধরে তিনি বলেন, পহেলা রমজান থেকে ঈদের আগের রাত পর্যন্ত রাজধানীর বিজিএমইএ ভবনে ক্রাইসিস কন্ট্রোল রুম খোলা রয়েছে৷ এছাড়া ঢাকা, গাজীপুর, আশুলিয়া, নারায়ণগঞ্জসহ শ্রমিক অধ্যুষিত ও অসন্তোষপ্রবণ এলাকার সংকট তাৎক্ষণিক সমাধানের লক্ষ্যে ১৫টি টিম কাজ করছে৷ প্রতিটি টিমের নেতৃত্বে রয়েছেন বিজিএমইএ-র একজন করে পরিচালক৷ মালিকরা এ নিয়ে দিন-রাত কাজ করছেন৷

বিজিএমইএ-র হিসাবে দেখা গেছে, রানা প্লাজা পরবর্তী সময়ে কাজ না পাওয়া, কারখানায় কমপ্লায়েন্সের (কর্মপরিবেশ) অভাবসহ নানামুখী সংকটে পড়ে ১৭৬টি তৈরি পোশাক কারখানা ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে৷ এর মধ্যে অনেক কারখানার শ্রমিকদের যথাযথ পাওনা পরিশোধ করা হয়নি৷ এসব শ্রমিকরা তাঁদের দাবি-দাওয়া নিয়ে প্রায়শই রাজধানীর বিজিএমইএ ভবনের সামনে হাজির হচ্ছেন৷ সাম্প্রতিক সময়ে বিজিএমইএ ভবনের সামনে শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও দেনদরবার নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ ঈদের আগে তারাও আন্দোলনে নামতে পারে৷

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বিজিএমইএ-র সদস্য বহির্ভূত প্রায় ১২শ' কারখানার মধ্যেও বেশ কিছু কারখানার বেতন-বোনাস পরিশোধে অনিশ্চয়তা রয়েছে৷ বর্তমানে বিজিএমইএ সদস্যভুক্ত ৪ হাজার ৩শ' কারখানার মধ্যে চালু রয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৩শ' কারখানা৷ এর বাইরে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সদস্যভুক্ত কারখানা রয়েছে আরো প্রায় ১ হাজার৷ গত ডিসেম্বরে নতুন মজুরি কার্যকর হওয়ার পর প্রথমবারের মত বর্ধিত নতুন মজুরির হিসাবে এসব কারখানাকে আসছে ঈদে বোনাসও দিতে হবে৷

রাস্তা অবরোধ

এদিকে বুধবার রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা প্রায় দুই ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করে রাখে৷ তাদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে৷ পরে পুলিশের আশ্বাসে তারা অবরোধ তুলে নেয়৷

বাড্ডা থানার ওসি এম এ জলিল ডয়চে ভেলেকে বলেন, শ্রমিকদের অবরোধের জন্য বাড্ডা পূর্ব ও পশ্চিম পাশের সড়ক বন্ধ হয়ে যায়৷ মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলা হবে এমন আশ্বাসের ভিত্তিতে শ্রমিকরা রাস্তা ছেড়ে অবরোধ তুলে নেন৷ তবে যে-কোনো সময় তারা আবার নামতে পারে এমন আশঙ্কাও তাঁর৷

অপরদিকে ২০ রমজানের আগেই পোশাক শ্রমিকদের বকেয়া বেতন বোনাস পরিশোধের দাবিতে মানববন্ধন করেছে নারী নেতৃত্বাধীন ৭টি পোশাক শ্রমিক ফেডারেশন৷ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তাঁরা এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে৷ ওই সাতটি সংগঠনের সমন্বয়কারী শহিদা সরকার ডয়চে ভেলেকে বলেন, এই দুর্মূল্যের বাজারে পোশাক শ্রমিকরা সারা বছর যে বেতন-ভাতা পায় তা দিয়ে কোনোরকম খেয়ে পড়ে চলতে পারে৷ তাদের সঞ্চয় বলে কিছুই নেই৷ এ জন্য আগামী ২০ রমজানের মধ্যে সব শ্রমিকদের বেতন-বোনাসসহ সব রকম পাওনা বুঝিয়ে না দিলে আনন্দের ঈদ তাদের কাছে কষ্টের হয়ে উঠবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ