1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রোহিঙ্গা

৭ সেপ্টেম্বর ২০১২

তাদের যেন কোনো দেশ নেই, নিরাপদ আশ্রয় নেই৷ রোহিঙ্গাদের অবস্থা দেখলে এ কথাটাই মনে আসে সবার আগে৷ মিয়ানমার সরকার একরকম তাচ্ছিল্যই করে আসছে তাদের৷ আর সে দেশের অনেকের কাছে তো রোহিঙ্গারা চক্ষুশূল৷

ছবি: Asiapics

মিয়ানমারে এখন গণতন্ত্রের সুবাতাস বয়ে চলার কথা৷ মানুষে মানুষে সম্প্রীতি বাড়বে এ আশা করার এর চেয়ে উপযুক্ত সময় মিয়ানমারে আর কবে এসেছিল কে জানে! অথচ সেখানেই রোহিঙ্গারা সবার কাছ থেকে পাচ্ছে বিমাতাসুলভ আচরণ৷

অং সান সু চির দেশ৷ মিয়ানমারকে আর কিছু বলে আরো বেশি চেনানোর উপায় কিছুদিন আগেও ছিল না৷ বড় জোর ঘুরিয়ে বলা হতো সামরিক শাসনের দেশ, যেখানে সু চি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বন্দি থাকেন বছরের পর বছর৷ তো গণতন্ত্রের মানসকন্যা মুক্তি পেয়েছেন, দেশে নির্বাচন হয়েছে, সে নির্বাচনে অংশ নিয়ে সু চি এখন সংসদ সদস্য৷ কিন্তু তাঁর নীরবতা দেখে তো মনে হচ্ছে দেশে বুঝি কোনো সমস্যাই নেই৷ রোহিঙ্গাদের অস্তিত্বই যে সেখানে বিপন্ন প্রায়, এ বিষয়টি কি তাঁকে ভাবাচ্ছে না?

মিয়ানমারে রোহিঙ্গারা এখন নিজভূমে পরবাসী৷ অবশ্য দেশটি যে তাদেরও সেটাই এখন মানছে ক'জন! সরকার তাঁদের নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী হিসেবেই মানছে না৷ এই অবজ্ঞা অবশ্য আজ থেকে নয়৷ ১৯৮২ সালে যে নাগরিক আইন হয়েছিল, সেখানে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছিল ১৩৫টি সংখ্যালঘু গোষ্ঠীকে৷ সেখানে উল্লেখই নেই রোহিঙ্গাদের৷ সরকারের চোখে তাঁরা বহিরাগত বা অবৈধ অভিবাসী৷ ব্যাপারটা খুব পীড়া দেয় সো মানকে৷ রোহিঙ্গা এই ব্যবসায়ী প্রতিদিন দেখছেন মিয়ানমারের সংখ্যাগুরু বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা তাঁদের কী অবজ্ঞার চোখে দেখে৷ বড় দুঃখ করে বলছিলেন কথাটা, ‘কাল্লা বা কালো কাল্লা নামে ডাকে আমাদের৷ কাল্লা মানে হলো বহিরাগত বা অবৈধ অভিবাসী৷ ইয়াঙ্গনে আমরা খুব ছোট এক সংখ্যালঘু গোষ্ঠী৷ তাই কেউ ভয় করে না আমাদের৷ কিন্তু রাখাইন প্রদেশের কিছু কিছু অঞ্চলে আমরা সংখ্যাগুরু৷ ওরা তাই ভয় পায়৷'

মিয়ানমারে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের প্রতিবাদছবি: dapd

কিন্তু ভয়টা কিসের? মায়রা থান শোয়ে কারণটা জানালেন ঘৃণাভরে, ‘ওরা খুব কলহপ্রিয় আর ধূর্ত৷ সরকার চায় আমরা ওদের সঙ্গে থাকি, কিন্তু আমরা ওদের ছায়াই মাড়াতে চাইনা৷'

রাখাইন এ তরুণ তো তবু ভদ্রভাবে বলেছেন, ২০০৯ সালে এক বিবৃতিতে হংকংয়ে মিয়ানমারের কাউন্সেলর জেনারেল রোহিঙ্গাদের উল্লেখ করেছিলেন কুৎসিত এক মাংশাসী প্রাণী হিসেবে৷

গত জুনের এক ঘটনার পর মিয়ানমারে রোহিঙ্গাবিদ্বেষী মনোভাব অনেক বেশি তীব্র হয়েছে৷ এক বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাখাইন তরুণীকে ধর্ষণ করে হত্যা করার পর শুরু হয়ে যায় মুসলিম-বৌদ্ধদের দাঙ্গা৷ ধারণা করা হয় ওই ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা তিন মুসলিম যুবক৷ তো সেই ঘটনার রেশ হিসেবে শুরু হওয়া দাঙ্গা থেকে বাঁচতে অনেক রোহিঙ্গা আশ্রয় নেন বাংলাদেশে৷ তবুও তাঁদের প্রতি বিন্দুমাত্র সহানুভূতি দেখায়নি মিয়ানমার সরকার৷

মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট থেন সেইন শরণার্থীদের জন্য তাঁর কিছু করার নেই জানিয়ে জাতিসংঘ যেন রোহিঙ্গাদের অন্য কোথাও থাকার ব্যবস্থা করে দেয় এমন প্রস্তাবও রেখেছিলেন৷

কোথাও স্থান নেই যাদেরছবি: AP

থেন সেইনের এমন কথা বলাটা যতটা বিস্ময়কর তার চেয়ে অনেক বিস্ময়কর রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে অং সান সু চি-র নীরবতা৷ এখন পর্যন্ত এ নিয়ে একটা কথাও বলেননি তিনি৷ এত বড় একটা ইস্যুতে নোবেল বিজয়ী সু চি-র এমন নীরবতার তীব্র সমালোচনা করেছেন ক্রিস লেয়া৷ রাখাইন রাজ্যের এই মানবাধিকার কর্মীর মতে সু চি-র এই নীরবতা মেনে নেয়া কষ্টকর, ‘সু চি গণতন্ত্র আর মানবাধিকারের প্রশ্নে খুব বড় এক আস্থার জায়গা৷ আর কিছু না হোক সবাই যাতে সহিংসতা থেকে দূরে থাকে জনগণেরর প্রতি এ আহ্বানটুকু অন্তত রাখতে পারতেন তিনি৷ আমার মতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে তাঁর ভূমিকা নিন্দনীয়৷'

এসিবি / জেডএইচ (ডিপিএ)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ