1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সাংবাদিক উৎপল নিখোঁজের নেপথ্যে কী

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৪ অক্টোবর ২০১৭

সাংবাদিক উৎপল দাসের খোঁজ পাওয়া যায়নি গত দু'সপ্তাহেও৷ তবে গত দু'দিনে দু'বার উৎপলের মোবাইল ফোন থেকেই অজ্ঞাত ব্যক্তিরা ফোন করে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করেছেন বলে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন তাঁর বাবা চিত্ত দাস৷

ছবি: picture alliance/Geisler-Fotopress/G. Hardt

উৎপল দাস অনলাইন নিউজ পোর্টাল পূর্বপশ্চিমবিডি ডট নিউজের সিনিয়র রিপোর্টার৷

গত ১০ অক্টোবর ঢাকার মতিঝিলের অফিস থেকে বের হওয়ার পর থেকে তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না৷ তার দু'টি মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে৷ ২২ অক্টোবর, রবিবার মতিঝিল থানায় সাধারণ ডায়েরি করে পূর্ব-পশ্চিম কর্তৃপক্ষ৷ উৎপলের বাবাও পরের দিন থানায় আরেকটি জিডি করেন৷

উৎপলের গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার থানাহাটি এলাকায়৷ তাঁর বাবা চিত্ত দাস সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক৷ এখন তিনি স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেনের প্রিন্সিপাল৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘১০ অক্টোবর দুপুরে উৎপল সর্বশেষ ফোনে তার মায়ের সঙ্গে কথা বলেছে৷ রাতে আবার ফোন করার কথা ছিল৷ কিন্তু ফোন না করায় তার মা তাকে ফোন করে তার দু'টি মেবাইল ফোনই বন্ধ পায়৷ তারপরও কয়েকদিন ফোন করে করে তাকে না পেয়ে আমরা ভেবেছি হয়তো কোনো কারণে ফোন বন্ধ রেখেছে৷ কিন্তু ১৯ অক্টোবর তার এক সাংবাদিক বন্ধু রাজিব ফোন করে জানায়, উৎপল নিখোঁজ, তাকে পাওয়া যাচ্ছে না৷''

চিত্ত দাস

This browser does not support the audio element.

তিনি জানান, ‘‘তবে গতকাল (সোমবার) এবং আজ (মঙ্গলবার) উৎপলের দু'টি মেবাইল ফোনের একটি থেকে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিরা দু'দফা আমার ফোনে ফোন করে কথা বলে৷ তারা জানায়, উৎপল তাদের কাছে আছে৷ এক লাখ টাকা মুক্তিপণ পেলে ছেড়ে দেবে৷ আমি বলেছি, আমার ছেলের সঙ্গে কথা বলতে দাও৷ সে বেঁচে আছে, না মরে গেছে তা আমি জানতে চাই৷ তারপর মুক্তিপণ নিয়ে কথা হবে৷''

নিখোঁজ সাংবাদিকের পিতা আরো জানান, ‘‘তারা তাদের পরিচয় প্রকাশ করেনি বা কোথায় আছে তা-ও জানায়নি৷  ফোনে তাদের সঙ্গে আমার দুই দফায় ৯-১০ মিনিট কথা হয়েছে৷ কিন্তু পরে আমি ফোন করলে ওই নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়৷''

উৎপল ৭-৮ বছর ধরে সাংবাদিকতা করছেন৷  এখানে তিনি আওয়ামী লীগ বিটের সাংবাদিক৷ পূর্বপশ্চিমবিডি'র বার্তা সম্পাদক শাহনেওয়াজ সুমন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘উৎপল কোনো প্রতিবেদনের কারণে চাপ বা হুমকির মুখে ছিল বলে আমাদের জানা নাই৷ তবে সম্প্রতি তার কয়েকটি ফেসবুক স্ট্যাটাস  ছিল সাংঘর্ষিক৷ এরমধ্যে সে তার বন্ধুদের অনুরোধে কয়েকটি স্ট্যাটাস মুছেও ফেলে৷’’

খুজিস্তা নূর-ই-নাহারিন

This browser does not support the audio element.

তিনি আরো জানান, ‘‘সে প্রতিদিন অফিসেও আসতো না৷ বাধ্যবাধকতাও ছিল না৷ বাইরে থেকে মেইলে নিউজ পাঠলেই হতো৷ তিন-চার দিন পর হয়তো একদিন অফিসে আসতো৷ নিউজ পাঠানো বন্ধ করে দিলে আমরা তার নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপরটি বুঝতে পারি৷’’

ঢাকায় ফকিরাপুলের এক নম্বর গলিতে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন উৎপল৷ পূর্বপশ্চিমবিডি'র সম্পাদক খুজিস্তা নূর-ই-নাহারিন ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘আমরা তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়ার পর বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ করেও তাকে না পেয়ে তার ঢাকার বাসায় লোক পাঠাই৷ সেখানে গিয়ে তাকে না পেয়ে তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হই৷ আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো আমাদের না বলে সে অন্য কোথাও চাকরি নিয়েছে৷ তাই মোবাইল ফোন বন্ধ৷’’

তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘আমাদের পক্ষ থেকে থানায় জিডি করেছি৷ পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছি৷ পুলিশ তদন্ত করে দেখার কথা বলছে৷ আমরাও নানা মাধ্যমে তার খোঁজ জানার চেষ্টা করছি৷  মুক্তিপণ দাবির বিষয়টিও আমরা থানায় জানিয়েছি৷’’

শাহনেওয়াজ সুমন

This browser does not support the audio element.

এদিকে মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওমর ফরুক ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা জিডি ধরে তদন্ত করছি৷ তবে এখনো উৎপল দাসের কোনো খোঁজ পাইনি৷ আমরা চেষ্টা করছি৷’’

তাঁকে ফিরিয়ে দিতে পরিবারের কাছে এক লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘এ ধরণের কেনো তথ্য আমাদের কাছে নাই৷ তার পরিবারের পক্ষ থেকেও  এ ধরণের কোনো তথ্য আমাদের জানানো হয়নি৷’’

এদিকে দু' সপ্তাহেওসাংবাদিক উৎপল দাসের কোনো খোঁজ না মেলায় তাঁর পরিবারের সদস্যরা ভেঙ্গে পড়েছেন৷ তাঁর সহকর্মী এবং বন্ধুরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁকে ফিরে পেতে পোস্ট দিচ্ছেন৷  উৎপল চার ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ