1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সাংবাদিক শামসুজ্জামানের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন সংগঠনের নিন্দা

৩১ মার্চ ২০২৩

প্রথম আলোর প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। ফাইল ছবি
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। ফাইল ছবিছবি: Zabed Hasnain Chowdhury/Zuma/picture alliance

শামসুজ্জামান এবং প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন৷

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার আমিনুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে শুক্রবার সকালে কাশিমপুর কারাগারে হস্তান্তর করা হয়।

সিআইডি পরিচয়ে সাভারের বাসা থেকে তুলে নেওয়ার ৩০ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার শামসুজ্জামানকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হয়। তাকে কারাগারে আটক রাখার জন্য আদালতে আবেদন করে রমনা থানার পুলিশ। অন্যদিকে শামসুজ্জামানের পক্ষে তার আইনজীবীরা জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঢাকার সিএমএম আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন। এরপর তাকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়।

বুধবার ভোর চারটার দিকে সাভারের বাসা থেকে সিআইডি পরিচয়ে তুলে নেওয়ার পর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না শামসুজ্জামানের। তুলে নেওয়ার পৌনে দুই ঘণ্টা আগে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম মামলা হয়। এ মামলার বাদি যুবলীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মো. গোলাম কিবরিয়া। যদিও মামলার বিষয়টি জানা যায় বুধবার দুপুরের দিকে। তবে গতকাল তাকে কারাগারে পাঠানো হয় রমনা থানায় করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা নতুন আরেকটি মামলায়।

বিভিন্ন সংগঠনের নিন্দা

সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক, মানবাধিকার ও সাংবাদিকদের সংগঠন।

নিউ ইয়র্কভিত্তিক সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই নিন্দা জানায়৷ শামসুজ্জামানের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। সংগঠনটি শামসুজ্জামানের কাজ সংক্রান্ত তদন্তও বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছে।

নিউ ইয়র্কভিত্তিক সংগঠনটি বুধবার তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে প্রথম আলোর কর্মীরা যেন হস্তক্ষেপ বা প্রতিহিংসার শিকার হওয়ার ভয় ছাড়াই সাংবাদিকতা করতে পারেন- তা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে।

অবিলম্বে নিঃশর্তভাবে শামসুজ্জামানের মুক্তির দাবি করে প্রতিবেদনে বলা হয়, "ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে সাংবাদিকদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। যারা সরকারের সমালোচনা করেন, তাদের কণ্ঠরোধে এই আইন বারবার ব্যবহার করা হচ্ছে।”

শামসুজ্জামানকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশছবি: Mahfuz Nipu

নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে, আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। বিবৃতিতে মানবাধিকার বিষয়ক এ সংগঠনটি বলেছে, একজন সাংবাদিকের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। পাশাপাশি এ ধরনের আচরণ স্বাধীন সাংবাদিকতা তথা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বিরাট প্রতিবন্ধকতা।

শামসুজ্জামানকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। টিআইবির বিবৃতিতে বলা হয়, এই ঘটনা একজন সাংবাদিক, দেশের একজন নাগরিকের জীবনের নিরাপত্তার সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুন্ন করেছে। পাশাপাশি গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণের এবং প্রয়োজনে ‘শায়েস্তা' করার ভয়ংকর উদাহরণ তৈরি করেছে। এ ঘটনাকে ন্যক্কারজনক উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সংবাদকর্মী হিসেবে তো বটেই, একজন নাগরিক হিসেবেও শামসুজ্জামানের সাংবিধানিক অধিকারের মারাত্মক লঙ্ঘন করা হয়েছে। কেননা, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী কোনো ব্যক্তিকে যদি আইনগতভাবে আটক করা হয়, আটকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে উপস্থাপন করার যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী তা করতে পরিষ্কারভাবে ব্যর্থ হয়েছে।'

এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ। বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দলের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

শামসুজ্জামান শামসকে তার সাভারের বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশ। বুধবার সংগঠনটির সভাপতি মোজাম্মেল বাবু ও সাংগঠনিক সম্পাদক জুলফিকার রাসেলের বরাতে দেওয়া বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, 'প্রথম আলো যদি সাংবাদিকতার নীতি বিরুদ্ধ কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে, তাহলে সংক্ষুব্ধ পক্ষ বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলে যেতে পারে।'

মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) মনে করে, সাংবাদিকেরা দেশের জনগণকে ও সরকারকে বিভিন্ন পর্যায়ে তথ্য সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। সাদা পোশাকধারী আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে আটক করা, গণমাধ্যম কর্মীদের কণ্ঠরোধ করার আরও একটি অপচেষ্টা যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

শামসুজ্জামানকে সিআইডি পরিচয়ে সাদা পোশাকে তুলে নেয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল।

এপিবি/এসিবি (ঢাকা ট্রিবিউন, বাংলা ট্রিবিউন, দ্য ডেইলি স্টার)

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ