1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সাংবাদিক হত্যায় বিচার এড়ানোর অভিযোগ

হারুন উর রশীদ স্বপন
২৮ অক্টোবর ২০১৬

বাংলাদেশে সাংবাদিক হত্যায় দায় মুক্তি বা বিচার এড়ানোর অভিযোগ তুলেছে সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ের আন্তর্জাতিক সংগঠন সিপিজে৷ তাদের প্রতিবেদনে বাংলাদেশে অন্তত সাত জন সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় দায়মুক্তির কথা বলেছে তারা৷

Bangladesh Zeitungen
ছবি: DW

তবে কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিজম বা সিপিজে যে সাত জনের নাম বলেছে তাদের মধ্যে মাত্র দুই জন পেশাদার সাংবাদিক, বাকি পাঁচ জন ব্লগার বা অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট৷ সিপিজের প্রতিবেদনে সবচেয়ে বেশি সাংবাদিক হত্যার বিচার এড়ানো দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এ বছর ১১ তম বলে উল্লেখ করা হয়েছে৷ এর আগের বছর বাংলাদেশ ছিল ১২তম স্থানে৷ তার মানে হলো. সিপিজে'র বিবেচনায় বাংলাদেশের অবস্থার অবনতি ঘটেছে৷

সিপিজে'র তালিকার শীর্ষে আছে সোমালিয়া৷ দেশটি দ্বিতীয়বারের মতো শীর্ষে অবস্থান করছে৷ সোমালিয়ার পরে আছে যথাক্রমে ইরাক, লিবিয়া, ফিলিপাইন্স, দক্ষিন সুদান, মেক্সিকো, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ব্রাজিল, রাশিয়া, বাংলাদেশ, নাইজেরিয়া ও ভারত৷

সাংবাদিক হত্যার মামলাগুলোর সন্দেহভাজনদের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএসসহ অপরাপর জঙ্গি সংগঠন এবং অন্যান্য রাজনৈতিক শক্তি ৪০ শতাংশ ঘটনায় জড়িত বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়৷ সেখানে বলা হয়, ২০০৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে ২০১৬ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সাংবাদিক হত্যার পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে এবারের তালিকাটি করা হয়েছে৷ এই সময়কালে অন্তত পাঁচটির বেশি অমীমাংসিত সাংবাদিক হত্যা মামলা রয়েছে এমন দেশের সংখ্যা ১৩টি৷ গত বছর এই তালিকায় এমন দেশের সংখ্যা ছিল ১৪৷ তালিকার ক্ষেত্রে যেসব মামলায় কারো কোনো শাস্তি হয়নি, সেসব মামলাকে অমীমাংসিত হিসেবে ধরা হচ্ছে৷ আর যেসব মামলায় অপরাধীদের মধ্যে সবাইকে আইনের আওতায় আনা যায়নি, সেগুলোকে আংশিক অব্যাহতি হিসেবে ধরা হলেও তালিকাভূক্ত করা হয়নি৷

‘‘যে কোনো হত্যাকাণ্ডের বিচার পেতেই অনেক সময় লাগে’’

This browser does not support the audio element.

সিপিজে বাংলাদেশের যে ৭ জনের হত্যা মামলায় অভিযুক্তদের বিচার না হওয়ার কথা বলছে, তাদের ২ জন সরাসরি সাংবাদিকতা পেশায় জড়িত ছিলেন৷ সেই দুজন হলেন , ২০১৪ সালের ২১ মে  নিহত সদরুল আলম নিপুল এবং ২০১২ সালের ১৫ জুন নিহত জামাল উদ্দীন৷ আর বাকি পাঁচ জন, অর্থাৎ উল্লেখিত ব্লগার-অ্যাক্টিভিস্টরা হলেন, ২০১৫ সালে নিহত ফয়সাল আরেফীন দীপন, নিলয় নীল, অনন্ত বিজয় দাশ, ওয়াশিকুর রহমান বাবু এবং অভিজিত রায়৷ ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যার বিচার হওযায় ওই মামলাটি এই তালিকায় নেয়নি সিপিজে৷ সিপিজে বলছে, বাংলাদেশে হত্যাকারীদের নিশানায় ছিলেন সেক্যুলার ব্লগার এবং মাদক চোরাচালান সংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরি করা সাংবাদিক৷

বাংলাদেশে ১৯৯৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২২ জন সাংবাদিক হত্যার ঘটনা ঘটেছে৷ আর ২০০৬ সাল থেকে পরের ১০ বছরে হত্যার শিকার হয়েছিলেন ৬ জন৷ এই হিসেবে অবশ্য ব্লগাররা নেই৷

‘‘এসব জরিপ নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ আছে’’

This browser does not support the audio element.

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতার অধ্যাপক ড. সফিউল আলম ভুইয়া ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বাংলাদেশে শুধু সাংবাদিক হত্যা নয়, যে কোনো হত্যাকাণ্ডের বিচার পেতেই অনেক সময় লাগে৷ এটা প্রচলিত আইনের ত্রুটি৷ উদ্দেশ্যমূলকভাকে সাংবাদিক হত্যার বিচার বিলম্বিত করা হয় তা আমার মনে হয় না৷'' তবে তিনি মনে করেন, ‘‘হত্যাকাণ্ডের বিচার ত্বরান্বিত করতে আইন সংশোধন করা যেতে পারে৷''

অন্যদিকে সিনিয়র সাংবাদিক আবেদ খান মনে করেন, ‘‘এসব জরিপ নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ আছে৷ ব্লগাররা মুক্তমনা৷ তাঁদের সাংবাদিক ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভূক্ত করে এই জরিপ গ্রহনযোগ্য হবেনা বলেই মনে হয়৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘বাংলাদেশে সাংবাদিক হত্যার নানা ধরণ আছে৷ এর ভিতরে পেশার কারণে কতটি হত্যাকান্ড ঘটেছে, তা অনুসন্ধান করা প্রয়োজন৷ তবে সাংবাদিক হত্যায় যারা জড়িত, তারা শক্তিশালী এবং তারা নানা কৌশল অবলম্বন করে৷ এ কারণে তারা অনেক সময় পার পেয়ে যায়৷'' আবেদ খান আরো বলেন, ‘‘আমাদের দেশে প্রচলিত ব্রিটিশ আইন আসামিদের পক্ষে, বাদির পক্ষে নয়৷ বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে এটিও একটি বড় বাধা৷''

প্রিয় পাঠক, আপনার কি কিছু বলার আছে? জানান নীচে মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ