২০ থেকে ৫০ হাজার বছর আগের গন্ডারের দেহ উদ্ধার হলো রাশিয়ার উত্তরাংশ থেকে।
বিজ্ঞাপন
রাশিয়ার উত্তরে সাইবেরিয়া অঞ্চলে উদ্ধার হলো আইস এজ বা শীতল যুগের একটি গন্ডারের দেহাবশেষ। বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, ২০ থেকে ৫০ হাজার বছর আগে সাইবেরিয়া অঞ্চলে মৃত্যু হয়েছিল ওই গন্ডারটির। এত পুরনো প্রাণীর এত সুঠাম দেহাবশেষ এর আগে মেলেনি বলে দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা। গন্ডারটির নির্দিষ্ট বয়স জানার জন্য দেহটি পরক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।
পৃথিবীর দুর্লভ সম্পদ
২৯ জুলাই পালিত হয়েছে বিশ্ব ওভারশুট দিবস৷ বিশ্বের প্রাকৃতিক সম্পদের হিসেব নিকেশ আর বরাদ্দ ঠিক করা হয় দিনটিতে৷ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ফুরিয়ে আসছে প্রকৃতির এসব সম্পদ৷
ছবি: AFP/S. Qayyum
পানি-জীবনের উৎস
পৃথিবীর কিছু অংশে মিঠা পানির প্রাপ্যতা অনেকটা ‘টেকেন ফর গ্রান্টেড’, আবার কোথাও এটা বিলাসিতা৷ পৃথিবীর সঞ্চিত পানির মাত্র আড়াইভাগ মিঠা৷ যার অর্ধেক আবার বরফ হয়ে জমে আছে৷ বাকি যা থাকলো তার ৭০ ভাগ চলে যাচ্ছে কৃষিকাজে৷ ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ মিঠা পানির সংকটে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/Zumapress
ভূমি-সোনার চেয়েও দামি
গোটা বিশ্ব জুড়ে বাড়ছে জনসংখ্যা৷ তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভূমির চাহিদা৷ এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন আর প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভূমির পরিমাণ কমছে আর কিছু হয়ে পড়ছে বসবাস অনুপযোগী৷ অধিক জনসংখ্যা কিংবা আবাদি জমির অভাবে থাকা দেশগুলো এখন হন্যে হয়ে ভূমি খুঁজছে৷ এর মধ্যেই আফ্রিকায় ভূমির খোঁজে নেমেছে চীন আর সৌদিআরব৷
ছবি: Imago/Blickwinkel
জীবাশ্ম জ্বালানি-দ্য স্পিক অব ডেবিল
পৃথিবীর দুর্লভ সম্পদের মধ্যে তেল বা জীবাশ্ম জ্বালানির নাম তালিকার শীর্ষে থাকে৷ কারণ এগুলোর ঘাটতি পূরণের কোনো সুযোগ নেই৷ দিন দিন বাড়ছে জ্বালানির চাহিদা, আর কমছে মজুদ৷ প্রাকৃতিক এই সম্পদের মজুদ শেষ হলে ইরাক, লিবিয়ার মতো দেশগুলো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpaH. Oeyvind
কয়লা-বিচ্ছিন্নতার সময়
কয়লার ক্ষেত্রে একই কথা প্রযোজ্য৷ দূষণের কথা জেনেও, জার্মানির মতো দেশও কয়লা পোড়ানো থেকে সরে আসতে নারাজ৷ ফলে শূন্য হয়ে আসছে মজুদ৷ পোল্যান্ডে লিগনাইটের (সাদা কয়লা) ভাণ্ডারে যা আছে, তা বড়জোর ২০৩০ পর্যন্ত যেতে পারে৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কঠিন কয়লাগুলো আরো কিছুদিন হয়তো টিকে থাকবে৷ তবে সেটা খুব বেশি নয়৷ ফলে, কয়লা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে পোল্যান্ড৷
ছবি: picture alliance/PAP/A. Grygiel
বালি-সবখানেই আছে, কোথাও নেই
মরুভূমির দিকে তাকিয়ে বলা যেতেই পারে, বালির কোনো অভাব পড়বে না৷ কিন্তু প্রাকৃতিকভাবে বালি তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়াটা খুব ধীর৷ এ কথা ঠিক, বালি নবায়নযোগ্য সম্পদ৷ তবে যে হারে বালি ব্যবহার হচ্ছে, প্রকৃতি সেই গতিতে বালি তৈরি করতে পারছে না৷ ২০৫০ সালের মধ্যে পূর্ব আফ্রিকার মতো উন্নয়নশীল এলাকায় জনসংখ্যা হবে দ্বিগুণ৷ তখন বালিও হয়ে উঠতে পারে একটি দুর্লভ প্রাকৃতিক সম্পদ৷
ছবি: picture-alliance/ZB/P. Förster
বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতি
অনিয়মতান্ত্রিক আচরণ আর বনভূমি উজাড় করার ফলে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের অনেক প্রাণীকূলই অস্তিত্বের সংকটে৷ মোটা দাগে, পশু হলো মানুষের সম্পদ৷ পাঙ্গোলিন, গণ্ডার, ভ্যাকিটাস বা সমুদ্রিক বেশি কিছু প্রাণী বিলুপ্তপ্রায় তালিকায় নাম লিখিয়েছে৷ বনভূমির উপর অত্যাচার না থামলে মানুষের জীবনও ঝুঁকির মুখে পড়বে৷
ছবি: picture-alliance/Zuma/I. Damanik
সবচেয়ে দামি সম্পদ? সময়...
দেখে মনে হচ্ছে সবকিছু ভেঙে পড়ছে৷ কিংবা একটি সুন্দর আগামী বিনির্মাণে কিচ্ছু করার নেই৷ তবে হ্যাঁ এখনও একটা জিনিস আছে, সেটি হলো সময়৷ যা একই সঙ্গে দুর্লভ এবং প্রচণ্ড মূল্যবান৷ কারো কারো মতে পরবর্তী ১২ বছরের জন্য সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা গেলে জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় খুব বেগ পেতে হবে না৷ সময়টা এখনও আছে৷ ফুরিয়ে যায়নি৷
ছবি: AFP/S. Qayyum
7 ছবি1 | 7
সাইবেরিয়া অঞ্চলে বিপুল বরফের চাদরে এতদিন ঢেকে ছিল গন্ডারটির দেহ। বিজ্ঞানীদের ধারণা, তিন-চার বছর বয়সে জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছিল প্রাণীটির। গন্ডারটির শরীরে বড় বড় লোম ছিল। দেহে পাকস্থলী সহ আরো বেশ কিছু অঙ্গ পাওয়া গিয়েছে। এতদিন পরেও যা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়নি। বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, প্রবল ঠান্ডার মধ্যে ছিল বলেই দেহটি এতটা অক্ষত আছে। এত বছরের পুরনো দেহ এত সুন্দর ভাবে পাওয়া যাবে, অনেকেই তা কল্পনা করতে পারেননি।
এর আগে এই অঞ্চল থেকেই আরো একটি গন্ডারের দেহ আবিষ্কার করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। পরে জানা যায়, ওই গন্ডারটির মৃত্যু হয়েছিল ৩৫ হাজার বছর আগে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, বর্তমান গন্ডারটির বয়স তার চেয়েও বেশি।
মূলত বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্যই ওই অঞ্চল থেকে একের পর এক দেহাবশেষ উদ্ধার হচ্ছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। সাইবেরিয়ার ওই অঞ্চলে এত দিন কার্যত যাওয়াই যেত না। ইদানীং বরফ গলার কারণে কোনো কোনো এলাকায় যাওয়া যাচ্ছে। সম্প্রতি যে দেহটি উদ্ধার হয়েছে তা পাওয়া গেছে তিরখত্যাখ নদীর ধার থেকে। বিজ্ঞানীদেকর ধারণা, ওই অঞ্চল থেকে এই ধরনের আরো কিছু পশুপাখির দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হবে। শীতল যুগে ওই অঞ্চলে প্রচুর প্রাণীর বাস ছিল বলেই মনে করা হচ্ছে।