জামাত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত৷ কিন্তু এ রায় নিয়ে চলছে নানা হিসেব-নিকেষ৷ গণজাগরণ মঞ্চ বলছে এটা আঁতাতের রায়৷ অন্যদিকে জামাত পালন করছে হরতাল৷
বিজ্ঞাপন
গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ট্রাইব্যুনাল জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়ার পর, তার ফাঁসির দাবিতে ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে গড়ে উঠে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ৷ তাঁরা আন্দোলনে সফলও হয় তখন৷ কিন্তু কয়েকমাস আগে গণজাগরণ মঞ্চ তিন ধারায় বিভক্ত হয়ে যায়৷ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারের প্রতি কামাল পাশার নেতৃত্বে একাংশ অনাস্থা জানিয়ে তাঁরাই গণজাগরণ মঞ্চের মূল শক্তি হিসেবে নিজেদের দাবি করেন৷ অন্যদিকে কয়েকটি ছাত্র সংগঠন নিয়ে ‘শাহবাগ আন্দোলন' নামে একটি আলাদা মঞ্চ তৈরি হয় বাপ্পাদিত্য বসুর নেতৃত্বে৷
বুধবার জামায়াতে ইসলামের নায়েবে আমীর মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর শাস্তি কমানোর রায়ের একদিন পর, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার, ‘শাহবাগ আন্দোলন' শাহবাগে সাঈদীর ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ-মিছিল করে৷ পরে এক সমাবেশে বাপ্পাদিত্য বসু দাবি করেন, ‘‘এই রায় আপোষের মধ্য দিয়ে হয়েছে৷ শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন বিভক্ত হওয়ার কারণেই এই রায় দেয়ার সাহস করেছে৷''
তিনি বলেন, ‘‘তাই এই পরিস্থিতিতে সকল ভেদাভেদ ভুলে গণজাগরণ মঞ্চের সকল পক্ষকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে নামার আহ্বান জানাচ্ছি আমারা৷''
বুধবার রায়ের দিনই গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার একে ‘আঁতাতের রায়' বলে অভিহিত করেন৷ তিনিও সাঈদীর ফাঁসির দাবিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের নামার আহ্বান জানান৷ একই কথা বলেন মঞ্চের একাংশের নেতা কামাল পাশা চৌধুরী৷ তিনিও রায়কে প্রত্যাখান করে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কথা বলেন৷
শাহবাগ আন্দোলনের বছরপূর্তি
যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে শুরু হওয়া শাহবাগ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার শপথ নিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা৷ তবে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী আরো অনেক ইস্যুতে এখন সরব গণজাগরণ মঞ্চ৷ শাহবাগ আন্দোলনের বর্ষপূর্তি নিয়ে আমাদের ছবিঘর৷
ছবি: Harun Ur Rashid Swapan
সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার শপথ
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে শুরু হওয়া শাহবাগ আন্দোলনের এক বছর পূর্ণ হয়েছে গত পাঁচ ফেব্রুয়ারি৷ বর্ষপূর্তিতে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার শপথ নিয়েছেন আন্দোলনের কর্মীরা৷ গণজাগরণ মঞ্চের নেতৃত্বে চলবে এই আন্দোলন৷
ছবি: DW/M. Mamun
জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু
পাঁচ ফেব্রুয়ারি শাহবাগে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হয় গণজাগরণ মঞ্চের অনুষ্ঠান মালা৷ তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদযাপন করা হয় বর্ষপূর্তি৷
ছবি: DW/M. Mamun
‘ফাঁসির’ দাবি
শাহবাগ আন্দোলনের এক বছর পূর্তির শোভাযাত্রায় একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের ‘ফাঁসির’ দাবিতে সোচ্চার ছিলেন গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা৷
ছবি: DW/M. Mamun
জনতার ভিড়
গণজাগরণের মঞ্চের আয়োজিত বর্ষপূর্তির বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় সাধারণ মানুষের ঢল নামে৷ এক বছর পূর্তিতে ঢাকার শাহবাগ থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করে গণজাগরণ মঞ্চ কর্মীরা৷
ছবি: DW/M. Mamun
‘প্রতীকী ফাঁসি’
শোভাযাত্রায় ‘প্রতীকী ফাঁসির’ চিত্রও তুলে ধরা হয়৷ বলাবাহুল্য, একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের উদ্যোগকে সমর্থন করলেও ফাঁসির বিষয়ে সমর্থন নেই আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের৷
ছবি: DW/M. Mamun
আলোকচিত্র প্রদর্শনী
আন্দোলনের বছর পূর্তিতে শাহবাগে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়৷ যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে শুরু হওয়া এই আন্দোলন শাহবাগ ছাড়িয়ে গোটা বাংলাদেশে এবং পরবর্তীতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে৷
ছবি: DW/M. Mamun
‘নাস্তিক ব্লগার’
শাহবাগ আন্দোলন থেকে সৃষ্ট গণজাগরণের মঞ্চের গত এক বছরের পথচলা মোটেই সহজ ছিল না৷ বরং আন্দোলনের এক পর্যায়ে খুন হন ব্লগার রাজিব হায়দার৷ এরপর ঢালাওভাবে ব্লগারদের নাস্তিক এবং ইসলাম ধর্মবিরোধী আখ্যা দিয়ে তাঁদের শাস্তির দাবিতে রাজপথে নামে হেফাজতে ইসলাম৷ এক পর্যায়ে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ব্লগে ‘ইসলাম ধর্ম নিয়ে উসকানিমূলক মন্তব্য ও কটূক্তির' অভিযোগে চার ব্লগারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷
ছবি: Getty Images
‘সমর্থন আগের মতোই’
তবে ‘নাস্তিক ব্লগার’ প্রচারণার কারণে শাহবাগে জনসমর্থন কমেনি বলে মনে করেন ব্লগার আরিফ জেবতিক৷ শাহবাগ আন্দোলনের অন্যতম এই কর্মী বলেন, ‘‘আমাদের শুরুতে যে জনসমর্থন ছিল, আজকেও সেই একই জনসমর্থন আছে৷ এবং আমি চ্যালেঞ্জ করি যে কোনো মিডিয়া এটা জরিপ চালিয়ে দেখতে পারে৷’’
ছবি: Arif Jebtic
ভিন্নমত
শুরুর দিকে শাহবাগ আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীন অবশ্য মনে করেন, ‘‘রাজনৈতিক দল এবং আমাদের রাজনীতিক নেতারা আসলে আমাদের আন্দোলনটা খেয়ে ফেলেছে৷’’ দুর্বৃত্তের হামলায় গুরুতর আহত আসিফ গত বছর বাংলাদেশে কয়েকমাস কারাভোগের পর বর্তমানে জার্মানিতে অবস্থান করছেন৷
ছবি: DW/A. Islam
বিভিন্ন ইস্যুতে সরব গণজাগরণ মঞ্চ
প্রসঙ্গত, একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবির পাশাপাশি আরো অনেক ইস্যুতে সরব রয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ৷ সর্বশেষ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকেন্দ্রিক সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় ‘রোড মার্চ’ করে গণজাগরণ মঞ্চ৷
ছবি: Harun Ur Rashid Swapan
10 ছবি1 | 10
তবে ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘আঁতাত শব্দটি আওয়ামী লীগের ডিকশনারিতে নেই৷ যাঁরা আঁতাতের কথা বলেন, তাঁরা ষড়যন্ত্রকারীদের একটি অংশ৷ আওয়ামী লীগ আঁতাতের রাজনীতি করে না৷''
তিনি বলেন, ‘‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সাঈদীর মৃত্যুদণ্ড থেকে কারাদণ্ডের রায় মেনে নিতে পারি না৷ দেশের মানুষ হতাশ হয়েছে৷ তবে যেহেতু এটি সর্বোচ্চ আদালতের রায়, তাই এ রায় আমরা মেনে নিচ্ছি৷''
এদিকে এই রায়ের পর বিএনপি কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি৷ তবে তারা পরিস্থতি পর্যবেক্ষণ করছেন বলে কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে৷ "তাঁরা এখন দেখতে চান সরকারবিরোধী আন্দোলনে জামায়াত কী ভূমিকা নেয়৷ আর সেই ভূমিকাই প্রমাণ করবে এই রায়ের নেপথ্যে কিছু আছে কিনা৷''
অবশ্য বিএনপির এই আপাত নীরব ভূমিকা সহজভাবে নিচ্ছেন না সরকারি দলের নেতারা৷ তাঁরাও দেখতে চান জাময়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত কেথায় গিয়ে দাঁড়ায়৷ তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘‘সাঈদীর রায়ে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নীরবতা আসলে তাঁর কৃতজ্ঞতার প্রকাশ৷ এতে প্রমাণ হয় যে, তিনি যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষত্যাগ করেননি৷''
অন্যদিকে সাঈদীর শাস্তি কমলেও তাতে এখনো ‘নাখোশ' জামায়াতে ইসলামী বৃহস্পতিবার সারাদেশে ২৪ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি পালন করছে৷ হরতালে দিনের প্রথম ১২ ঘণ্টায় জামায়াত-শিবিরের অতীত রূপ দেখা যায়নি৷ সারাদেশে তারা নিরীহ হরতাল পালন করেছে৷ রবিবার আরো ২৪ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি রয়েছে তাদের৷ তবে গত বছরের ২৮শে ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনাল সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়ার পর, রায়ের প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংস তাণ্ডব চালায় জামায়াত-শিবির৷ ঐ সহিংসতায় এতদিনেই ৭০ জন নিহত হন৷
জামায়াতের এই নিরীহ হরতালকে ‘খুশি'-র হরতাল বলে ব্যাখ্যা দিয়েছেন ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া৷ তিনি বলেছেন, ‘‘আদালতের দেয়া রায়ে মুক্তিযোদ্ধারা খুশি হতে পারে নাই, খুশি হয়েছে জামায়াত৷ তারা খুশি হয়েই আজকের এই হরতাল দিয়েছে৷ এই হরতাল জামায়াতের পিঠ বাঁচানোর হরতাল৷''
সাঈদীকে ফাঁসির রায়, জামায়াতের তাণ্ডব
একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের একাধিক অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় বৃহস্পতিবার দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল৷ এই রায় ঘোষণার পর গোটা বাংলাদেশে তাণ্ডব চালিয়েছে জামায়াত-শিবির৷ এতে হতাহত অনেক৷
ছবি: AFP/Getty Images
ট্রাইব্যুনালের রায়
দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে ২০টি অভিযোগে গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণ, লুটতরাজসহ মানবতা বিরোধী অপরাধের কথা বলা হয়েছে৷ কয়েকটি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল-১ এর প্রধান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের আদালত মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন৷ অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানান, তার বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী ২০টি অভিযোগের ৮টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হয়েছে৷
ছবি: AP
রায়ের পরই তাণ্ডব
সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পরপরই রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সক্রিয় হয়ে ওঠে জামায়াত-শিবির৷ শুধু বৃহস্পতিবার বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছে কমপক্ষে ৩৫ ব্যক্তি৷ বার্তাসংস্থা এএফপি এবং আমাদের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম নিশ্চিত করেছে এই তথ্য৷ তবে শুক্রবার মৃতের সংখ্যা আরো বেড়েছে৷
ছবি: Reuters
আক্রান্ত পুলিশ
বৃহস্পতিবার জামায়াতের তাণ্ডবে প্রাণ হারান চার পুলিশ সদস্য৷ এদের মধ্যে তিনজন নিহত হন গাইবান্ধা জেলায়৷ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরডটকম জানিয়েছে, ‘পুলিশ ফাঁড়িতে পিটিয়ে মারা হয় তাদের’৷ অপর একজন প্রাণ হারান চট্টগ্রামের লোহাগড়ায় সংঘর্ষের সময়৷ বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, আহত এক পুলিশ সদস্য শুক্রবার প্রাণ হারান৷ সবমিলিয়ে সাঈদীর রায় ঘোষণার পর শুক্রবার দুপুর অবধি পুলিশ সদস্য নিহতের সংখ্যা ৫৷
ছবি: STR/AFP/Getty Images
‘অধিকাংশই জামায়াত-শিবির কর্মী’
জামায়াত দাবি করেছে, ‘‘পুলিশের গুলিতে তাদের ৫০ জন ‘নিরপরাধ’ সমর্থক নিহত হয়েছে৷ পুলিশ তাদেরকে ‘পাখির মতো গুলি করে’ হত্যা করেছে৷’’ তবে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রধান সুলতানা কামাল পুলিশের উপর সন্ত্রাসী হামলার জন্য জামায়াতকে দায়ী করেছেন৷
ছবি: AFP/Getty Images
প্রাণ হারাচ্ছে নিরীহ মানুষও
জামায়াতের তাণ্ডবে পুলিশ সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন, নিহত হয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থকও৷ তবে সাধারণ মানুষও মরছে এই তাণ্ডবে৷ ঢাকায় বৃহস্পতিবার প্রাণ হারান এক পথচারী, নোয়াখালি এবং বাঁশখালীতে নিহত হন হিন্দু সম্প্রদায়ের দুই ব্যক্তি৷ শুক্রবারও গাইবান্ধায় এক রিকশা চালক নিহত হয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের এবং জামায়াতের সমর্থকদের মধ্যকার সংঘর্ষের মাঝে পড়ে৷ নিরীহ প্রাণহানির এরকম খবর আরো শোনা যাচ্ছে৷
ছবি: AFP/Getty Images
‘ফেসবুক বন্ধ’
সাঈদীর বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার সময় বাংলাদেশ থেকে কম্পিউটার ব্যবহার করে স্বাভাবিক উপায়ে ফেসবুকে প্রবেশ করা যাচ্ছিল না৷ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি’র ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন আহমেদ জানান, ‘কারিগরি সমস্যার জন্য এমনটা হয়েছে’৷ তবে তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ জাকারিয়া স্বপন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার তারা (বিটিআরসি) কিছুক্ষণের জন্য ফেসবুক বন্ধ করে দিয়েছিল এবং পুনরায় আবারো চালু করেছে৷’
সতর্ক নিরাপত্তা বাহিনী
জামায়াত-শিবির তাণ্ডব আর নাশকতা রুখতে গোটা দেশে সতর্ক রয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা৷ বৃহস্পতিবার রাতেই বিভিন্ন এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিজিবি৷
ছবি: Reuters
ভিন্ন চিত্র
তবে সাঈদীর ফাঁসির রায়ে সামগ্রিকভাবে সন্তুষ্ট সাধারণ মানুষ৷ বৃহস্পতিবার এই রায় ঘোষণার পর উল্লাসে ফেটে পড়েন শাহবাগে অবস্থানরতরা৷ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় মিষ্টি বিতরণ করা হয়৷ ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া জানান অগুনতি মানুষ৷
ছবি: Reuters
‘শহীদের আত্মা শান্তি পাবে’
সাঈদীর বিরুদ্ধে একটি মামলার বাদি ও প্রথম সাক্ষী মাহবুবুল আলম হাওলাদার৷ রায় ঘোষণার পরে ডয়চে ভেলেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘সাঈদীর ফাঁসির আদেশ হওয়ায় দেশমাতৃকা কিছুটা পাপমুক্ত হয়েছে, যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তির জন্য ৪২ বছরের অপেক্ষার অবসান হতে চলেছে৷’
ছবি: DW/Harun Ur Rashid
আরো রায় বাকি
এখন পর্যন্ত তিন যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল৷ বাকি আছে আরো যুদ্ধাপরাধীর বিচার৷ মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি অপেক্ষায় আছে সব যুদ্ধাপরাধীর বিচার দেখার৷ বর্তমান তরুণ প্রজন্মও তাই জেগে আছে প্রজন্ম চত্বরে৷
ছবি: AP
10 ছবি1 | 10
আরো রায় আসছে...
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার কার্যক্রম বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে৷ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ যে কোনো দিন রায় ঘোষণা করবে৷ এ নিয়ে ট্রাইব্যুনাল-১'এ চারটি মামলা রায়ের অপেক্ষায় থাকল৷
অপরদিকে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের আপিলের শুনানি বুধবার শেষ হয়েছে৷ যে কোনো দিন আপিলের রায় ঘোষণা করবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ৷ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ঢাকার পল্লবীতে গণহত্যার অভিযোগে গত ৯ই মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ কামারুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়৷