৩২৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৮৩ রানে অলআইট হয়ে যায় সাউথ আফ্রিকা৷ বোলিং আর ব্যাটিং দুই ক্ষেত্রেই যেন নিজেদেরকে সেরা প্রমাণে ব্যস্ত ভারত৷
বিজ্ঞাপন
কলকাতার ইডেন গার্ডেনে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩২৬ রান তুলেছিল ভারত৷ জবাবে মাত্র ২৭.১ ওভারেই ৮৩ রানেই গুটিয়ে গেছে আফ্রিকা৷
২৪৩ রানের বড় জয়ে বিশ্বকাপে ভারত পেয়েছে টানা আট জয়৷
ইডেনের ‘হাই-ভোল্টেজ’ ম্যাচটা ছিল টুর্নামেন্টের সবচেয়ে ‘ইনফর্ম’ দুই দলের৷ ভারত এসেছিল টানা সাত ম্যাচে জয়ের গৌরব নিয়ে, অন্যদিকে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে হোঁচট বাদ দিয়ে প্রোটিয়াদের গাড়ি ছুটছিল এক্সপ্রেস গতিতে৷ কিন্তু সেই গাড়ি ইডেনে এসে ব্রেক ফেল করল অপ্রতিরোধ্য ভারতের সামনে৷ এই ম্যাচের আগেই দুই দলের সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল, এক হিসেবে ম্যাচটি ছিল নিজেদের শক্তির বার্তা দেওয়ার৷ তাতে ভারত পরিস্কার ব্যবধানে জয়ী তো বটেই, সাথে এই প্রশ্নও উঠে গেছে, এই ভারতকে কে থামাবে?
এই মুহূর্তে ভারতের ব্যাটার আর বোলাররা যেভাবে খেলছেন, এই প্রশ্নের উত্তর কারও কাছে নেই বলেই মনে হচ্ছে৷ ব্যাটাররা যদি ৩০০ রান করে দলকে অনেকটা এগিয়ে দেন, বোলারদের মনে হচ্ছে তাদের চেয়েও বেশি ভয়ংকর৷ ইডেনের উইকেটে ৩০০ রানের বেশি তাড়া করা খুবই কঠিন, কিন্তু সাউথ আফ্রিকাকে ৮৩ রানে গুটিয়ে দেওয়ার দুর্দান্ত কীর্তিটা তো বোলারদেরই৷
আজ অবশ্য ব্যাটসম্যান বা বোলাররা সবাই একজনকেই সেই জয় উৎসর্গ করবেন৷ ইডেনের চারপাশে শোভা পাচ্ছিল বিরাট কোহলির কাটআউট, ৫০ হাজার দর্শকে ঠাসা স্টেডিয়ামে অসংখ্য ব্যানার ও জার্সি কোহলির নামে৷ উপলক্ষ ভারতের এই ব্যাটসম্যানের ৩৫তম জন্মদিন৷ দলের দুর্দান্ত জয় এবং সেই সাথে নিজের ৪৯তম সেঞ্চুরি করে শচীন টেন্ডুলকারের বিশ্বরেকর্ড ছুঁয়ে ফেলা জন্মদিনটা এরচেয়ে ভালোভাবে রাঙাতে পারতেন না কোহলি৷ ম্যাচ শেষে ইডেনে আতশবাজির রোশনাই যেন তার জন্মদিনই আরেকবার উদযাপন করল৷
ইডেনে ঘণ্টা বাজিয়ে যখন বিসিসিআই সভাপতি রজার বিনি ও ভারত কোচ রাহুল দ্রাবিড় ম্যাচ শুরু করেন, সেটা যেন বাজাল আফ্রিকার সর্বনাশের ঘণ্টাই৷ টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে রোহিত শর্মা ও শুভমান গিল শুরুতেই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে নিজেদের বার্তাটা পরিষ্কার করে দেন৷ মাত্র ২৭ বলেই স্কোরবোর্ডে ৫০ রান উঠে গিয়েছিল ভারতের৷ শুরুতেই রোহিতের কঠিন একটা ক্যাচ হাতে জমাতে পারেননি তাবরাইজ শামসি৷ যখন মনে হচ্ছিল রোহিত সেটার জন্য আফ্রিকাকে বড় শাস্তি দেবেন তখনই আউট হয়ে গেলেন৷ রাবাদার বলটা ভালোই মেরেছিলেন রোহিত, কিন্তু বুলেট গতিতে ছুটে আসা বলটা মিড অনে দারুণভাবে ধরে ফেলেন প্রোটিয়া অধিনায়ক টেন্ডা বাভুমা৷ ২৪ বলে ৪০ রান করে ফিরে গিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক৷
অন্যদিকে শুভমান গিলও খেলছিলেন বেশ ভালো, করে ফেলেছিলেন ২৩ রান৷ ১০ ওভারের মধ্যে ৯০ রান উঠে গেল ভারতের৷ কেশভ মহারাজ এলেন, নিজের তৃতীয় বলেই বাঁহাতি স্পিনারদের এক স্বপ্নের ডেলিভারিতে তুলে নিলেন গিলকে৷ মিডল এবং লেগ স্টাম্পের মধ্যে পিচ করে বলটা দুর্দান্ত টার্ন করে বেলস ফেলে দিল, গিলও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না৷ টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা ডেলিভারিতে ফিরতে হলো গিলকে৷
ইডেন অবশ্য তখন ‘কোহলি, কোহলি’ স্লোগানে উন্মাতাল৷ কোহলি শুরুটাও করেছিলেন দারুণ, প্রথম ৩০ রান তুলে ফেলেন দ্রুতই৷ কিন্তু মহারাজের স্পিন আটকে রাখল কোহলি ও নতুন ব্যাটসম্যান শ্রেয়ার আইয়ারকে৷ ১০ ওভারে কোনো বাউন্ডারি না দিয়ে মাত্র ৩০ রানে ওভার শেষ করলেন মহারাজ৷
এএফপির চোখে একদিনের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের বড় ৭ অঘটন
ভারতে অনুষ্ঠানরত বিশ্বকাপ ক্রিকেটে মঙ্গলবার সাউথ আফ্রিকাকে হারিয়ে অঘটন ঘটিয়েছে নেদারল্যান্ডস৷ ছবিঘরে এমন আরও ছয়টি অঘটনের কথা থাকছে, যেগুলোর কথা উল্লেখ করেছে বার্তা সংস্থা এএফপি৷
ছবি: Adrian Murrell/Allsport/Getty Images
প্রথম ওডিআইতে জিম্বাবুয়ের জয়
১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ে তাদের প্রথম একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে দিয়েছিল৷ ডানকান ফ্লেচারের অপরাজিত ৬৯ রানের সুবাদে জিম্বাবুয়ে ৬০ ওভারে ২৩৯ রান তুলেছিল৷ জবাবে অস্ট্রেলিয়া ২২৬ রান তুলতে সমর্থ হয়েছিল৷ অর্থাৎ জিম্বাবুয়ে জিতেছিল ১৩ রানে৷ অস্ট্রেলিয়া দলে তখন অ্যালান বর্ডার, ডেনিস লিলি (ছবি), কেপলার ওয়েসেলস, জেফ থমসনের মতো ক্রিকেটার ছিলেন৷ বল হাতে ফ্লেচার চার উইকেট পেয়েছিলেন৷
ছবি: Murrell/Allsport/Hulton Archive/Getty Images
ভারতের প্রথম বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া
১৯৮৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত৷ বিশ্বকাপ শুরুর আগে ভারত ৯ বছর একদিনের ক্রিকেট খেলে মাত্র ১৭টিতে জয় পেয়েছিল৷ অন্যদিকে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ টানা দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ছিল৷ মাইকেল হোল্ডিং, ম্যালকম মার্শালদের বোলিংয়ে ভারত মাত্র ১৮৩ রান তুলেছিল৷ জবাবে অমরনাথ ও মদন লালের বিধ্বংসী বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৪০ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল৷ ভিভ রিচার্ডস সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেছিলেন৷
ছবি: Adrian Murrell/Allsport/Getty Images
কেনিয়ার কাছে লারাদের হার
১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ব্যাট করতে নেমে কোর্টনি ওয়ালশ ও রজার হার্পারের তোপের মুখে পড়ে কেনিয়া মাত্র ১৬৬ রান তুলতে পেরেছিল৷ জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ মাত্র ৯৩ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল৷ কেনিয়ার ওপেনিং বোলার রজব আলী ব্রায়ান লারাকে মাত্র ৮ রানে আউট করে দিয়েছিলেন৷ এছাড়া মরিস ওদুম্বে তিন উইকেট পেয়েছিলেন৷
ছবি: Igor Lubnevskiy/PantherMedia/picture alliance
আয়ারল্যান্ডের কাছে হেরে পাকিস্তানের বিদায়
২০০৭ সালের বিশ্বকাপ থেকে পাকিস্তানকে হটিয়ে দিয়েছিল আয়ারল্যান্ড৷ প্রথমে ব্যাট করা পাকিস্তানকে মাত্র ১৩২ রান তুলতে দিয়েছিল আইরিশরা৷ পরে সাত উইকেটে সেই রান তুলে ফেলেছিল তারা৷ ঐদিন খেলা শেষে রাতে নিজের হোটেল রুমে মারা গিয়েছিলেন পাকিস্তানের কোচ বব উলমার৷ ছবিতে পাকিস্তানের ইউনিস খানকে আউট করার পর আইরিশদের উল্লাস করতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: JEWEL SAMAD/AFP/Getty Image
ইংলিশদের হারিয়ে আইরিশদের অঘটন
২০১১ সালের বিশ্বকাপে আবারও আপসেট নিয়ে হাজির হয়েছিল আয়ারল্যান্ড৷ সেই বার তারা ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দিয়েছিল৷ প্রথমে ব্যাট করে ইংলিশরা ৩২৭ রান তুলেছিল৷ জবাবে কোনো রান তোলার আগেই অধিনায়ক উইলিয়াম পোর্টারফিল্ডকে হারিয়ে ফেলেছিল আইরিশরা৷ কিন্তু পরে জ্বলে উঠেছিলেন কেভিন ও’ব্রায়ান (ছবি)৷ ১৩ চার আর ছয়টি ছয়ের সহায়তায় ৬৩ বলে ১১৩ রান করেছিলেন তিনি৷ তাই পাঁচ বল বাকি থাকতেই জিতে যায় আয়ারল্যান্ড৷
ছবি: INDRANIL MUKHERJEE/AFP/Getty Images
আফগানদের ইংলিশ বধ
চলতি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২৮৪ রান তুলেছিল আফগানিস্তান৷ ওপেনার গুরবাজ ৮০ রান করেছিলেন৷ জবাবে ব্যাট করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে ইংল্যান্ডের উইকেট পড়তে থাকে৷ রশিদ খান, মুজিব উর রহমান আর মোহাম্মদ নবীর স্পিনে সুবিধা করতে পারেনি ইংলিশরা৷ শেষ পর্যন্ত ২১৫ রানে অলআউট হয়ে যায় বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড৷
ছবি: Money Sharma/AFP/Getty Images
নেদারল্যান্ডসে ধরা সাউথ আফ্রিকা
আফগানিস্তানের পর চলতি বিশ্বকাপে আরেকটি বড় অঘটন ঘটিয়েছে নেদারল্যান্ডস৷ সাউথ আফ্রিকাকে তারা ৩৮ রানে হারিয়ে দিয়েছে৷ নেদারল্যান্ডস ২৪৫ রান করেছিল৷ স্কট এডওয়ার্ডস ৬৯ বলে ৭৮ রান করেন৷ জবাবে সাউথ আফ্রিকা ২০৭ রানে অলআউট হয়ে যায়৷ ছবিতে সাউথ আফ্রিকার মিলারকে আউট করার পর ডাচদের উল্লাস করতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Money Sharma/AFP/Getty Images
7 ছবি1 | 7
স্পিনারদের শুরুতে দেখেশুনে খেলার পর অবশ্য কোহলি আর আইয়ার মনযোগ দিয়েছেন রান বাড়াতে৷ আইয়ারই ছিলেন বেশি আগ্রাসী, দুই ছয় মেরে দ্রুত পৌঁছে গিয়েছিলেন সত্তরের ঘরে৷ আরেকটু বেশি আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে এনগিডিকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন, ফিরলেন ৮৭ বলে ৭৭ রান করে৷ ভাঙল কোহলির সাথে তার ১৩৪ রানের জুটি৷ ভারতের রান তখন ২২৭৷ ওভার বাকি ১৩.১, মনে হচ্ছিল অন্তত ৩৫০ খুবই সম্ভব৷
কিন্তু এরপরেই আফ্রিকা আবার চেপে ধরল ভারতকে৷ লোকেশ রাহুল ফিরে যান ৮ রান করে৷ সূর্যকুমার যাদবের ১৪ বলে ২২ রানের ক্যামিওটা শেষ হলো শামসির বলে ক্যাচ দিয়ে৷ ওদিকে কোহলির প্রতিটি রানের সাথে সাথে ইডেনে উঠছিল হর্ষধ্বনির জোয়ার৷ শেষ পর্যন্ত ৪৯তম ওভারে গিয়ে সেই কাঙ্খিত সেঞ্চুরি পেলেন ১১৯ বলে৷ দাঁড়িয়ে তাকে সম্ভাষণ জানালেন ইডেনের ৫০ হাজার দর্শক৷ এই বিশ্বকাপেই সেঞ্চুরি পেতে পেতেও পাওয়া হয়নি একাধিকবার, সেই আক্ষেপও ঘোচালেন আজ৷
সেঞ্চুরি পেলেও কোহলি ইনিংস শেষ করার পর বলছিলেন, এই উইকেটে রান তোলা বেশ কঠিন ছিল৷ সত্যি বলতে, কোহলি নিজেও শেষের দিকে খুব সহজে রান তুলতে পারছিলেন না৷ সেই কাজ কতটা কঠিন, সেটা বোঝা গেল সাউথ আফ্রিকার ইনিংসে৷
ভারতের বোলিং আর আফ্রিকার ব্যাটিংয়ের ধুন্দুমার লড়াইয়ে কে জিতবে, তা নিয়ে কোনো রোমাঞ্চ যদি থাকে সেটা শেষ হয়ে গেছে খুব দ্রুতই৷ টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা কুইন্টন ডি কক হতে পারতেন প্রোটিয়াদের তুরুপের তাস৷ তিনি যখন ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই মোহাম্মদ সিরাজের বলে বোল্ড হয়ে গেলেন, আফ্রিকার আশার পাল গুটিয়ে যাওয়া শুরু করল তখনই৷ ইডেনের উইকেটে স্পিন ধরছিল বেশ ভালো, জাদেজাকে দ্রুতই আক্রমণে নিয়ে এলেন রোহিত৷ অধিনায়কের সিদ্ধান্ত ঠিক প্রমাণ করতে সময় নেননি জাদেজা, নিজের প্রথম ওভারেই ১১ রানে ফিরিয়েছেন প্রোটিয়া অধিনায়ক বাভুমাকে৷
এরপর মঞ্চে ভারতের বোলিং সুপারস্টার মোহাম্মদ শামি৷ এই বিশ্বকাপের প্রায় ‘আনপ্লেয়বল’ শামি পরের ওভারেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করলেন এইডেন মার্করামকে৷ ৩৫ রানে নেই ৩ উইকেট৷ স্পিনের বিপক্ষে হাইনরিখ ক্লাসেনের রেকর্ড দুর্দান্ত, কিন্তু জাদেজার বলটা বুঝতেই পারলেন না ক্লাসেন৷ আম্পায়ারে অবশ্য শুরুতে আউট দেননি, রিভিউ নিয়েই এলবিডব্লুতে তাকে ফিরিয়েছেন জাদেজা৷ পরের ওভারে ভারতের আরেকটি সফল এলবিডব্লুর রিভিউ৷ এবার বোলার শামি আর শিকার রেসি ভ্যান ডার ডুসেন৷ দুই ওভার পর মিলারকেও ফেরালেন জাদেজা৷ ৫৯ রানে ৬ উইকেট নেই আফ্রিকার, ইডেন মুখর ‘বন্দে মাতরম’ স্লোগানে৷ আফ্রিকার স্পেশালিস্ট ব্যাটারদের মধ্যে শুধু বাভুমা আর মিলারই দুই অংক ছুঁয়েছেন, দুজনেরই রান ১১৷
এরপরের গল্পটা খুব সংক্ষিপ্ত৷ জাদেজা একাই আফ্রিকার মিডল ও লেট অর্ডার গুড়িয়ে দিয়েছেন, তাকে এখানে সঙ্গ দিয়েছেন কুলদীপ৷ রাবাদাকে আউট করে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়েছেন জাদেজা, কোহলির সেঞ্চুরির দিনে তিনিও আফ্রিকাবধের অন্যতম নায়ক৷ যে আফ্রিকা অন্যদের নিয়ে ছেলেখেলা করেছে, তারা ভারতের সাথে করতে পারল না ১০০ রানও, গুটিয়ে গেল মাত্র ২৭.১ ওভারেই৷ এবং আফ্রিকার এমন অসহায় আত্মসমর্পণে শুরুতে করাটা প্রশ্নটাই এখন বিশ্বকাপে ফিরে ফিরে আসছে- এই ভারতকে থামাবে কে?
বর্তমান বিশ্বকাপে মিচেল মার্শ যেমন অস্ট্রেলিয়া দলের হয়ে, নিউজিল্যান্ডের হয়ে টম ল্যাথাম, ইংল্যান্ডের হয়ে স্যাম কারেন এবং নেদারল্যান্ডসের হয়ে বাস ডি লিডি খেলছেন, একসময় তেমনি তাদের বাবারাও খেলেছেন বিশ্বকাপ৷
ছবি: R. Satish Babu/AFP
টিম ডি লিডি, বাস ডি লিডি
২০০৩ বিশ্বকাপে ভারতের বিরুদ্ধে খেলায় নেদারল্যান্ডস টিম ডি লিডি চার উইকেট নিয়েছিলেন৷ এরমধ্যে শচীন টেন্ডুলকারের উইকেটও ছিল৷ তার ছেলে বাস ডি লিডি (ছবি) এবার বিশ্বকাপ খেলছেন৷ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে তিনিও চার উইকেট পেয়েছেন৷ ফলে বিশ্বকাপের ইতিহাসে এক ম্যাচে চারটি করে উইকেট পাওয়া বাবা ও ছেলে হচ্ছেন তারা৷
ছবি: Noah Seelam/AFP/Getty Images
ডন প্রিঙ্গেল, ডেরেক প্রিঙ্গেল
ম্যানচেস্টারে জন্ম নেয়া ডন ১৯৫০-এর দশকে কেনিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন৷ সেখানে গিয়ে তিনি পূর্ব আফ্রিকার হয়ে ১৯৭৫ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলেন৷ তার ছেলে ডেরেক (ছবি) ইংল্যান্ডের হয়ে ১৯৮৭ ও ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ খেলেছেন৷ ১৯৯২ সালের ফাইনালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তিনি ৩ উইকেট নিয়েছিলেন৷
ছবি: Adrian Murrell/Allsport/Getty Images
ল্যান্স কেয়ার্নস, ক্রিস কেয়ার্নস
বাবা ল্যান্স ১৯৭৫, ১৯৭৯ ও ১৯৮৩ বিশ্বকাপ খেলেছেন৷ আর ছেলে ক্রিস (ছবি) খেলেছেন চারটি বিশ্বকাপে- ১৯৯২, ১৯৯৬, ১৯৯৯ ও ২০০৩ বিশ্বকাপে৷ ২১৫টি একদিনের ম্যাচ খেলে ক্রিস ৪,৯৫০ রান করেছেন, উইকেট নিয়েছেন ২০১টি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
রড ল্যাথাম, টম ল্যাথাম
১৯৯২ সালের বিশ্বকাপে খেলেছিলেন রড ল্যাথাম৷ তার ছেলে টম (ছবি) এবার আছেন নিউজিল্যান্ড দলে৷
ছবি: Mahesh Kumar A./AP/picture alliance
কেভিন কারেন, স্যাম কারেন
জিম্বাবুয়ের হয়ে ১৯৮৩ ও ১৯৮৭ বিশ্বকাপ খেলেন কেভিন কারেন৷ ৮৩ বিশ্বকাপে ভারতের বিরুদ্ধে ৭৩, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ৬২ রান করেছিলেন৷ তার ছেলে স্যাম (ছবি) এবার বিশ্বকাপ খেলছেন ইংল্যান্ডের হয়ে৷
ছবি: William West/AFP
ক্রিস ব্রড, স্টুয়ার্ট ব্রড
ইংল্যান্ডের হয়ে ১৯৮৭ বিশ্বকাপ খেলেছিলেন ক্রিস ব্রড৷ তবে ১৯৮৬-৮৭ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজে তিনটি শতক হাঁকিয়ে সবচেয়ে বেশি পরিচিতি পান তিনি৷ তার ছেলে স্টুয়ার্ট (ছবি) ২০১৫ বিশ্বকাপ খেলেছেন৷ তিনি টেস্টে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়া বোলার৷ খেলা শেষে ক্রিস আম্পায়ারিং করেছেন৷ ২০২০ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টেস্ট চলাকালীন ‘অশালীন ভাষা’ ব্যবহার করায় ছেলেকে শাস্তি দিয়েছিলেন ক্রিস৷
ছবি: G. Copley/Getty Images
জিওফ মার্শ, শন মার্শ, মিচেল মার্শ
১৯৮৭ সালে বিশ্বকাপ জেতা অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্য ছিলেন জিওফ মার্শ৷ তার এক ছেলে শন মার্শ ২০১৯ বিশ্বকাপে দুটি ম্যাচে খেলেছেন৷ আরেক ছেলে মিচেল মার্শ (ছবি) এবার বিশ্বকাপ খেলছেন৷