বোরোলিন, মাঙ্কি ক্যাপ আর মাছের ঝোলের মতো বাঙালির আদরের জিনিস নিয়ে গান লিখে সোশ্যাল মিডিয়াকে মাতিয়েছেন যিনি, সেই সাওন দত্ত এবার গান গেয়ে শিখিয়েছেন, কীভাবে কসা মাংস রাঁধতে হয়৷
বিজ্ঞাপন
তাও আবার প্রেসার কুকারে৷ সাওন দত্তর বয়স আজ ৪৫৷ স্থাপত্য নিয়ে পড়াশুনো করেছেন, স্থপতি হিসেবে কয়েক বছর কাজও করেছেন৷ কিন্তু মন ছিল চিরকালই গানের দিকে, সংগীতের দিকে৷ পিয়ানো, কিবোর্ড, হাওয়াইয়ান গিটার বাজান, এককালে দ্য ইন্ডিয়ান ওশান-এর মতো ব্যান্ডের সদস্য ছিলেন৷
থাকেন মুম্বইতে৷ কিছুদিন রেকর্ডিং কোম্পানিগুলির সঙ্গে কাজ করার পর নিজের ভিডিও সং ব্লগ শুরু করেছেন, যা-তে পুরোপুরি স্বনির্ভর হয়ে নিজের পছন্দ মতো মিউজিক সৃষ্টি করতে পারেন৷ সেই ব্লগ – বা ভ্লগ – যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে এ রকম সাফল্য পাবে, তা তিনি নিজেও ভাবতে পারেননি, বলেছেন সাওন৷
আইডিয়াটা সহজ৷ বিজ্ঞাপনের জিঙ্গল-এর মতো সুরে, নিজে পিয়ানো বাজিয়ে, নিজের আইফোনে ভিডিও তুলে, তা পোস্ট করা৷ কিন্তু বিষয়বস্তু হলো বাঙালিত্ব, নিজের তথা জাতির৷ প্রেরণা হলো নস্টালজিয়া বা স্মৃতিমেদুরতা, একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন সাওন৷ কিছু সার্বজনীন বাঙালি বৈশিষ্ট্য বা গুণাগুণ নিয়ে গান লেখেন তিনি, বাঙালিকে হাস্যকর করার জন্য নয়, বাঙালিত্বকে সেলিব্রেট করার জন্য৷
তাই কসা মাংস৷ গান ও মন্তব্য সবই ইংরেজিতে, কখনো পাক্কা ইংরেজি আক্সেন্টে, কখনো বাঙালি উচ্চারণে৷ প্রেসার কুকারে কসা মাংস রাঁধার রেসিপিতে কিন্তু কোনো ফাঁক নেই, চাইলে সাওনের গান শুনেই রেঁধে ফেলতে পারবেন! কাজেই ‘কসা মাংস'-কে এক হিসেবে রান্নার ভিডিও বলা চলতে পারে – ক্রসওভার আর কাকে বলে!
কথায় বলে যে রাঁধে, সে কি চুল বাঁধে না? সাওন দত্তর ক্ষেত্রে সেটা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যে রাঁধে, সে কি গান বাঁধে না? গানটা ইউটিউবে চেখে দেখতে পারবেন, শুধু কসা মাংসটা নিজেকে রেঁধে নিতে হবে...
জার্মানরা প্রায় প্রতিদিনই মাংস খায় যদিও ডাক্তারদের মতে, কেউ দিনে ১০০ গ্রামের বেশি মাংস খেলে তাঁর হৃদরোগের ঝুঁকি এবং পাকস্থলীর ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায়৷
ছবি: aquariagirl1970 - Fotolia.com
প্রতিদিন মাংস
জার্মানদের খাবারের তালিকায় প্রায় প্রতিদিনই মাংস থাকা চাই৷ মাংস রান্না বা সেদ্ধ অবস্থায়, এছাড়া সসেজ, সালামি, হ্যাম – কোনো না কোনোভাবে তাঁদের খাবার টেবিলে থাকে মাংস৷ তবে অতিরিক্ত মাংস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয় এবং এতে নানা সমস্যা দেখা যায়, সে কথা জেনেও তাঁরা মাংস পছন্দ করেন৷
ছবি: picture-alliance/landov
সপ্তাহে ৬০০ গ্রাম মাংস
একজন প্রাপ্তবয়স্ক জার্মান গড়ে দিনে ১৫০ গ্রাম মাংস খান, অর্থাৎ সপ্তাহে যা ১০০০ গ্রামেরও বেশি৷ অথচ ডাক্তাদের মতে, একজন মানুষ সপ্তাহে ৬০০ গ্রাম মাংস খেতে পারেন এবং এর বেশি খাওয়া একেবারেই উচিত নয় যদি সে মাংস ‘রেড মিট’ হয়৷ গরু, ছাগল, শূকর, ভেড়া এবং ঘোড়ার মাংসকে ‘রেডমিট’ বলা হয়৷
ছবি: Fotolia/stockcreations
ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়
ডাক্তারদের মতে, কেউ দিনে ১০০ গ্রামের বেশি ‘রেডমিট’ খেলে তাঁর হৃদরোগের ঝুঁকি এবং পাকস্থলীর ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায়৷ সে তুলনায় সাদা মাংস, অর্থাৎ মুরগি বা পাখির মাংস খেলে ঝুঁকি অনেক কম৷
ছবি: picture alliance/dpa
পরিমিত পরিমাণ
মাংসতে রয়েছে প্রোটিন, আয়রন এবং ভিটামিন ‘বি’৷ জার্মানির পট্সডাম রেব্র্যুক-এর খাদ্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ড.গিজেলা ওলিয়াস বলেন, রেডমিট হৃদরোগ এবং পাকস্থলীর ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায় ঠিকই৷ তবে মাংসের তৈরি সসেজ কিন্তু এই ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় আরো বেশি৷
ছবি: picture alliance/chromorange
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মিটকাটার
জার্মান মাংসের দোকানের কর্মীরা প্রায় সকলেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত৷ এখানে যে কোনো জায়গায় কাজ করতে গেলে সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ থাকতে হয় – তা সে মাংস কাটার কাজ হোক, অথবা অন্য কোনো কাজ৷
ছবি: DW
গ্রিল মাংস
আগুনে পোড়ানো বা গ্রিল করা রসালো মাংস দেখতে যেমন লোভনীয়, তেমন খেতেও দারুণ মজা৷ তাই গ্রীষ্মকালে জার্মানরা প্রায়ই গ্রিল পার্টির আয়োজন করেন, যেখানে প্রচুর পরিমাণে মাংস খাওয়া হয়৷
ছবি: DW/K.Sacks
আরো গ্রিল
নানাভাবে বিভিন্ন পশুর বিভিন্ন অংশের মাংস গ্রিল করা হয়৷ তবে জার্মানরা বেশিরভাগই গ্রিল করেন শূকরের মাংস৷ এসব লোভনীয় গ্রিল দেখে কারো কি মনে থাকার কথা যে, একজন মানুষের দিনে মাত্র ১০০ গ্রাম মাংস খাওয়া উচিত?
ছবি: DW/K.Sacks
দামে সস্তা
গরু বা খাসির মাংসের তুলনায় শূকরের মাংস দামের দিক দিয়ে অনেক সস্তা৷ আর সেজন্যই হয়ত শূকরের মাংস জার্মানিতে বেশি খাওয়া হয়ে থাকে৷ এবং সেটা হয়ে থাকে নানাভাবেই!
ছবি: picture alliance / Fotoagentur Kunz
পাউরুটির সাথেও মাংস
জার্মানরা সকালের নাস্তা বা রাতে রুটির সাথেও মাংসের সসেজ বা মাংসের স্লাইস খান৷ এছাড়া, বিভিন্ন দোকানে, ক্যাফেতে নানা ধরনের রুটির মধ্যে ‘স্যান্ডউইচ’ আকারে মাংস ভরে খাবারও চল আছে জার্মানিতে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ড্যোনার কাবাব
জার্মানিতে অনেক তুর্কি রেস্তোরাঁ আছে এবং এসব রেস্তোরাঁর বেশিরভাগ খাবারই মাংস দিয়ে তৈরি৷ বিশেষ করে ‘ড্যোনার কাবাব’ তরুণদের কাছে বেশ প্রিয়৷ এটা একরকম পাতলা রুটির মধ্যে সবজি এবং গ্রিল করা মাংস দিয়ে তৈরি করে হয়৷ বলা বাহুল্য, জার্মানিতে ৪০ লাখ মুসলমানের বাস, যাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই এসেছেন তুরস্ক থেকে৷
হালাল মাংস
জার্মানিতে তুর্কি দোকানগুলোতে হালাল মাংসও পাওয়া যায়৷ সেসব দোকানে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা মুসলমানসহ জার্মানরাও মাংস কেনেন৷