যুদ্ধাপরাধীদের বিচার
১২ অক্টোবর ২০১৩আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে রায়ের খসড়া ফাঁসে যারা ট্রাইব্যুনালের কর্মচারী নয়ন আলিকে অর্থের লোভ দেখিয়ে কাজে লাগিয়েছে, সে তাদের নাম প্রকাশ করেছে আদালতের কাছে৷ তাদের মধ্যে সাকার আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম এবং তাঁর সহকারী আইনজীবী মেহেদী হাসান অন্যতম৷ শুধু রায় নয়, ট্রাইব্যুনালের আরো কিছু কাগজপত্রও সে অর্থের লোভে পাচার করেছে৷ আর এ জন্য সে ব্যারিস্টার ফকরুলের কাকরাইলের চেম্বারে গিয়েছে এবং কথা বলেছে৷ তবে রায়ের খসড়া ফাঁসের জন্য ৫০ হাজার টাকা দেয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত নয়ন সে টাকা পায়নি৷
মামলাটি এখন গোয়েন্দা বিভাগ তদন্ত করছে৷ উপ পুলিশ কমিশনার মাসুদুর রহমান ডয়চে ভেলেকে জানান, এই জবানবন্দিতে সাকা চৌধুরীর ম্যানেজার এবং ট্রাইব্যুনালের আরেক কর্মচারী ফারুকের নাম এসেছে৷ ফারুককে অবশ্য এরই মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ ফারুকের সঙ্গে সাকার ম্যানেজারের পরিচয় আছে৷ ফারুকই ম্যানেজারের সঙ্গে নয়নের পরিচয় করিয়ে দেয়৷ আর ম্যানেজার নয়নকে ব্যারিস্টার ফকরুল ইসলাম এবং তার সহকারী মেহেদির সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয়৷
উপ পুলিশ কমিশনার আরও জানান, রায়ের খসড়াসহ পেন ড্রাইভ এবং ফখরুল ইসলামের কম্পিউটার জব্দ করা হয়েছে৷ তা থেকেও তার এই অপরাধে জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে৷ তাই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে৷ পুলিশ তাকে খুঁজছে৷ আর সাকার ম্যানেজারও পলাতক আছে৷ সাকার পরিবারের কোন সদস্য এই রায় ফাঁসের সঙ্গে জড়িত কিনা, তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে৷ তবে সাকার ম্যানেজারকে আটক করা গেলে তা পরিষ্কার হবে বলে জানান তিনি৷ তিনি বলেন, শুধু রায়ের খসড়া ফাঁস নয়, ফাঁসের পর কারা তা অনলাইনে দিলো, তাও তদন্তে বেরিয়ে আসবে৷
জানা গেছে, ব্যারিস্টার ফকরুল ইসলামকে আটকের জন্য গোয়েন্দারা তার চেম্বার এবং বাসায় নজর রেখেও তাকে পাননি৷ পুলিশ ধারণা করছে, তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন৷ আর ডয়চে ভেলে তাঁর মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বার বার বন্ধ পায়৷
গত ১লা অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে একাত্তরে মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেয়৷ তবে রায়ের খসড়া (দণ্ড ছাড়া) আগের রাতেই অনলাইনে প্রকাশ হয়ে যায়৷ তা নিয়ে সাকার আইনজীবী এবং পরিবারের সদস্যরা রায়ের দিন দাবি করেন, আইন মন্ত্রণালয় আগেই রায় তৈরি করেছে৷ তারা এও দাবি করেন, আইন মন্ত্রণালয় থেকেই রায় বাইরে গেছে৷ কিন্তু পরের দিন ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার থানায় জিডি করেন এবং তাতে ট্রাইব্যুনাল থেকেই রায়ের খসড়ার অংশ বিশেষ ফাঁসের অভিযোগ করা হয়৷