নাজমুল হাসান পাপন এবং সাকিব আল হাসানের ব্যাপারটার সঙ্গে এফডিসির নির্বাচনের মিল আছে কিন্তু! দুটোই বিরক্তি চরমে নিয়ে গিয়েও থামছে না৷ পাপন-সাকিব পর্ব চলছে কয়েক বছর ধরে আর এফডিসির প্যাঁচাল কয়েক মাস ধরে- এই যা পার্থক্য৷
বিজ্ঞাপন
তবু ভালো এফডিসির নির্বাচন আদালতে গিয়ে ঠেকেছে, নইলে হয়ত প্রতিদিন প্রতি বেলায় দুই পক্ষের যথেচ্ছাচার দেখতে হতো৷
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের অবশ্য কথা বলতে বেলা-অবেলার হিসেব লাগে না৷ কোন বিষয় তার এক্তিয়ারভুক্ত আর কোন বিষয় এক্তিয়ারের বাইরে সেই বিবেচনাবোধও তার খুব একটা আছে বলে মনে হয় না৷ বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে সব বিষয়েই বাণী দেন তিনি৷ দেখে-শুনে মনে হয় জাতীয় ক্রিকেট দলের কোচ, ফিজিও, নির্বাচক, গ্রাউন্ডসম্যান, পিওন, চাপরাশি- সবই তিনি!
তাকে এমন ‘হান্ড্রেড ইন ওয়ান' বানানোর পেছনে সংবাদ মাধ্যমের ভূমিকাও কম নয়৷ বিশ্বের আর কোনো দেশে ক্রিকেট বোর্ড প্রধানের কাছে সাংবাদিকেরা এত বিষয়ে জানতে চান না, আর কোনো দেশের বোর্ড প্রধান কিন্তু ‘সবজান্তা' ইমেজ গড়ার এমন সুযোগও পান না৷ বলিহারি সংবাদমাধ্যম আমাদের!
বোর্ড প্রধানই যদি সব জানেন, তাকেই যদি সব বিষয়ে কথা বলতে হবে, তাহলে বাকিদের কী গুরুত্ব বা প্রয়োজন, কে জানে!
এই লেখাকেও এফডিসির নির্বাচনের মতো দীর্ঘ এবং বিরক্তিকর না করে মূল প্রসঙ্গে ফেরা যাক৷
রোববার ব্যক্তিগত কাজে দুবাই গিয়েছেন সাকিব আল হাসান৷ যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে পৌঁছে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার মতো শারীরিক ও মানসিক অবস্থায় তিনি নেই। এই অবস্থায় ক্রিকেট খেললে দলের জন্য ক্ষতিকর ও দেশের সঙ্গে গাদ্দারি হবে বলেও মনে করেন তিনি।
আগামী ১৮ মার্চ থেকে সাউথ আফ্রিকা সফর শুরু করবে বাংলাদেশ৷ তার মাত্র কয়েকদিন আগে সাকিবের পরোক্ষভাবে সিরিজ খেলতে অস্বীকৃতি জানানো নিঃসন্দেহে স্বেচ্ছাচারিতার নামান্তর৷ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক তারকা এমনটি আগেও করেছেন৷ তার মতো একজনের কাছ থেকে এমন আচরণ মোটেই প্রত্যাশিত নয়৷ সফর শুরুর আগে তার মতো অপরিহার্য খেলোয়াড় এমন করলে নির্বাচক এবং টিম ম্যানেজমেন্টকে যে বড় ধরনের বিপাকে পড়তে হয় তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহের অবকাশ নেই৷
এমন পরিস্থিতে অনেক কথার মাঝে নাজমুল হাসান পাপন যথার্থই বলেছেন, " ও (সাকিব) যদি কোনো ফরম্যাটে খেলতে না চায়, কোনো অসুবিধা নেই। এরপর কারো কোনো সমস্যা থাকার কথা? এরপর আর এসব করা উচিত নয়। খেলতে না চাইলে খেলবে না, আমি তো মেনে নিয়েছি। কিন্তু সেটা আগেভাগে জানাতে তো হবে।”
আগে জানানোর দাবিটা একেবারে যথার্থ৷ বিশ্বের সব দেশের ক্রিকেটারকেই এ নিয়ম মানতে হয়৷ দেশের স্বার্থে, দেশের ক্রিকেটের স্বার্থে, নিজের ক্যারিয়ারের স্বার্থে, শৃঙ্খলার স্বার্থে, পেশাদারিত্বের স্বার্থেই মানতে হয়৷
এই নিয়ম মেনে নিজের ক্যারিয়ারের পাশাপাশি দেশের ক্রিকেটকেও আপন গতিতে চলতে দেয়ার অসংখ্য উদাহরণ দেয়া যাবে৷ অসংখ্য থেকে মাত্র দুটো উদাহরণ দেয়া যাক৷ এক, ‘ইউনিভার্সেল বস' ক্রিস গেইল তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ আটটি বছর দেশের হয়ে একটি টেস্টও খেলেননি, ওয়ানডে খেলেননি শেষ তিন বছর- কই তার সাথে তো ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের তেমন কোনো সমস্যা হয়নি! ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোর্ড প্রধানও ‘‘গেইল দেশে দেশে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলে বেড়ানোর সুযোগ পেলে এভাবে ‘না' বলতে পারতেন কিনা'' প্রশ্ন তোলার সুযোগ পাননি৷
সাকিব দায়িত্ববোধ এবং দেশের প্রতি ‘কমিটমেন্ট' নিয়ে প্রশ্ন তোলার মতো আচরণ আগেও করেছেন৷ এক্ষেত্রে কোনো ফর্ম্যাটে খেলা-না খেলার সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষকে যথাযথ নিয়মে, সবার জন্য সুবিধাজনক সময়ে জানানোটা অবশ্যই দরকার৷ তামিম ইকবাল এবং মাহমুদুল্লাহও তো এ নিয়ম মেনেছেন৷ এবং তাদের সিদ্ধান্তের প্রতি বিসিবি সম্মানও জানিয়েছে৷ সাকিব তা পারবেন না কেন?
দ্বিতীয় উদাহরণটা নাজমুল হাসান পাপনের জন্য৷
সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে বিরাট কোহলি জানিয়েছিলেন, বিশ্বকাপের পর আর ভারতের টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক থাকবেন না৷ তাতে জল এত ঘোলা হলো যে, কোহলিকে ওয়ানডে অধিনায়কত্ব থেকেও সরিয়ে দিলো বিসিসিআই৷ তারপর বিসিসিআই প্রধান সৌরভ গাঙ্গুলির বিবৃতি এবং তার জবাবে কোহলির পাল্টা বিবৃতি৷ ব্যস, অধিনায়কত্ব নিয়ে কথার লড়াই সেখানেই শেষ৷ ওই্ বিষয়ে আর একটি কথাও বলেননি সৌরভ গাঙ্গুলি৷ বিরাট কোহলিও মন দিয়েছেন নিজের কাজে৷
নাজমুল হাসান পাপনও যদি দরকারি-অদরকারি, এক্তিয়ারভুক্ত-এক্তিয়ার বহির্ভূত নানা বিষয়ে হাজারো কথা না বলে নিজের আসল কাজে বেশি করে মন দেন, তাতেই বাংলাদেশের ক্রিকেটের কল্যাণ৷
ঘরোয়া ক্রিকেট, আম্পায়ারিং, পাতানো খেলা ইত্যাদি নিয়ে বিশেষ কিছু না করে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের ওপর সার্বক্ষণিক খবরদারি কোনো বোর্ড প্রধানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হতে পারে না৷
বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে পক্ষপাতিত্বের মহামারি
আম্পায়ারিং নিয়ে প্রশ্ন যুগে যুগে সব দেশেই উঠেছে৷ এ থেকে যেসব দেশ ঘরোয়া ক্রিকেটকে বেশি মুক্ত করেছে, ক্রিকেটে তারা তত এগিয়েছে৷ ছবিঘরে ক্রিকেট পরাশক্তিদের অতীত এবং বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের ‘কলুষিত’ বর্তমানের তুলনা...
ছবি: picture-alliance/imageBROKER/S. Belcher
ডেনিস লিলির ভারত ‘বর্জন’ এবং পাকিস্তান থেকে ‘শিক্ষা’
এক সময় ভারতের বোলিং মানেই ছিল স্পিন, স্পিন আর স্পিন৷ সেই ভারতে পেস বোলার তৈরিতে অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তী ডেনিস লিলির অ্যাকাডেমির ভূমিকার কথা কে না জানে! সেই লিলি কিন্তু একবারও ভারত সফরে আসেননি৷ পাকিস্তানে টেস্ট খেলেছেন মাত্র একবার৷ তার উপমহাদেশে খেলতে না আসার দুটো কারণ ছিল, এক, মরা উইকেট, দুই, অতিথি ফাস্টবোলারদের আরো ‘মেরে ফেলার’ উপযোগী আম্পায়ারিং!
ছবি: Colorsport/imago images
নিউজিল্যান্ডে মাইকেল হোল্ডিংয়ের লাথি
সাকিব আল হাসান ঘরোয়া ক্রিকেটে ‘লাথিকাণ্ড’ ঘটিয়ে সদ্য আলোচনায় এলেও এমন ঘটনা টেস্ট ক্রিকেটে ঘটেছে ৪১ বছর আগে৷ ১৯৮০ সালে নিউজিল্যান্ডে আম্পায়াররা এত পক্ষপাতদুষ্ট ছিলেন যে উইন্ডিজ ফাস্ট বোলার মাইকেল হোল্ডিং শেষ পর্যন্ত মেজাজ ধরে রাখতে পারেননি৷ ডানেডিন টেস্টে জন পার্কারকে আম্পায়ার জন হ্যাস্টি এলবিডাব্লিউ না দেয়ায় রেগেমেগে স্ট্রাইকিং এন্ডের স্টাম্প এক লাথিতে ছত্রখান করেছিলেন হোল্ডিং৷
ছবি: Mike Egerton/empics/picture alliance
অস্ট্রেলিয়ায় সুনিল গাভাস্কারের ‘ওয়াক আউট’
১৯৮১ সাল৷ মেলবোর্ন টেস্টে ডেনিস লিলির ইনকাটার গাভাস্কারের ব্যাট ছুঁয়ে লাগলো প্যাডে৷ ব্যাক ফুটে চলে যাওয়ায় গাভাস্কার তখন স্টাম্পের সামনেই দাঁড়িয়ে৷ তা দেখে আঙুল তুলে দিলেন রেক্স হোয়াইটহেড৷ গাভাস্কার সেদিন ওপেনিং পার্টনার চেতন চৌহানকে নিয়ে কিছুক্ষণের জন্য মাঠ ছেড়েছিলেন৷ সম্প্রতি গাভাস্কার অবশ্য জানিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়ানরা তাকে ‘ভাগো’ না বললে সেদিন হয়ত আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মেনে একাই মাঠ ছাড়তেন৷
ছবি: AP
দু’বার হিট উইকেট, তবু নট আউট!
১৯৮৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ব্রিসবেন টেস্টে জেফ লসনকে আম্পায়ার আরএ ফ্রেঞ্চ এবং এমডাব্লিউ জনসন অপরাজিত রাখার পণ করেছিলেন কিনা কে জানে! লেগ গ্ল্যান্স করতে গিয়ে লসন গোড়ালি লাগিয়ে স্টাম্প থেকে বেলস ফেলে দিলেন৷ পরের ওভারে মাইকেল হোল্ডিংয়ের ঝড়ো গতির বল সামলাতে গিয়ে আবার একই কাণ্ড৷ অথচ দুবারের একবারও নাকি আম্পায়াররা তা চোখেই দেখেননি৷ সেবার অবশ্য বেশি রাগেননি, স্টাম্পে লাথিও মারেননি হোল্ডিং!
ছবি: Getty Images
নিরপেক্ষ আম্পায়ার: ইমরান খানের ‘উপহার’
আজ যে সব আন্তর্জাতিক ম্যাচে ‘নিরপেক্ষ আম্পায়ার’-এর চল তার শুরু হয়েছিল পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের হাত ধরে, ১৯৮৬ সালে৷ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একটি টেস্ট পরিচালনার দায়িত্ব সেবার ভারতের ভিকে রামস্বামী আর পিলু রিপোর্টারকে দিয়েছিলেন ইমরান৷ ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে ভারতের বিপক্ষে সিরিজ পরিচালনার দায়িত্বও ইংল্যান্ডের জন হ্যাম্পশায়ার আর জন হোল্ডারকে দিয়েছিলেন পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক৷
ছবি: AP
তবুও মুরালিধরনের ‘চাকিং বিতর্ক’
১৯৯৯ সালে চার্লটন অ্যান্ড ইউনাইটেড ত্রিদেশীয় সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার আম্পায়ার রস এমারসনের এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত যে ক্রিকেট ইতিহাসে বার বার আলোচনায় ফিরবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই৷ টেস্ট ক্রিকেটে ৮০০ উইকেট পাওয়া একমাত্র বোলার মুত্তিয়া মুরালিধরনের ওভারের চতুর্থ বলটা স্কয়ার লেগ থেকে এমারসন কেন যে বল ‘ছোঁড়ার’ অভিযোগে নো ডেকেছিলেন তা আজও অজানা৷ আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত ইংল্যান্ডের ক্রিকেটারদেরও অবাক করেছিল৷
ছবি: AP
ইনজামামের প্রতিবাদ
২০০৬ সালে ইংল্যান্ড-পাকিস্তানের ওই টেস্ট ম্যাচ আম্পায়ারদের বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণেই চিরস্মরণীয়৷ চতুর্থ দিন চা বিরতির আগে বল বিকৃত করার অভিযোগ তুলে আম্পায়ার ড্যারেল হেয়ার পাকিস্তানকে নতুন বল নিতে বলায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন ইনজি৷ দল নিয়ে পাকিস্তানের অধিনায়ক মাঠ ছাড়ায় ইংল্যান্ডকে জয়ী ঘোষণা করে দেন আম্পায়াররা৷ পরে আইসিসি অবশ্য ম্যাচটাকে ড্র ঘোষণা করে৷
ছবি: Picture-Alliance / Photoshot
এলবিডাব্লিউ না, এসবিডাব্লিউ!
১৯৯৯ সালে অস্ট্রেলিয়া-ভারত অ্যাডিলেড টেস্ট৷ গ্লেন ম্যাকগ্রার শর্ট পিচ ডেলিভারি কী করে এত নীচু হলো, ‘ডাক’ করতে গিয়ে একেবারে বসে পড়া টেন্ডুলকারের কাঁধে লাগলো তা এতদিনেও বলা মুশকিল৷ আম্পায়ার ড্যারিল হার্পারের দেয়া সেই এলবিডাব্লিউ ইতিহাসে স্থান পেয়েছে ‘শোল্ডার বিফোর উইকেট’ নামে৷ টিভি রিপ্লে দেখে আজও অনেকেই বলেন, বল কখনোই স্টাম্পে লাগতো না৷
ছবি: AP
বেন স্টোকসকে আম্পায়ারের ‘উপহার’
২০১৯ সালের অ্যাশেজ সিরিজের সেই ম্যাচটা সবাই বেন স্টোকসের হার না মানা ১৩৫ রানের ইনিংস আর সেই সুবাদে ৩৫৯ রান তাড়া করে ইংল্যান্ডের জিতে যাওয়ার জন্যই মনে রাখবে৷ অথচ জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের যখন দুই রান দরকার, ঠিক তখন নাথান লায়নের বলে ‘নিশ্চিত’ এলবিডাব্লি্উ থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন ইংলিশ অলরাউন্ডার৷ অস্ট্রেলীয়দের জোরালো আবেদন প্রত্যাখ্যান করে দেন আম্পায়ার জোয়েল উইলসন, ইংল্যান্ডও পেয়ে যায় ঐতিহাসিক জয়৷
ছবি: Getty Images/S. Forster
ইতিহাসের নিকৃষ্টতম আম্পায়ারিংয়ের সিরিজ
২০০৫-এর অ্যাশেজেও ছিল বিতর্কিত সিদ্ধান্তের ছড়াছড়ি৷ ২০২০ সালে ক্রিকেট পাকিস্তান ডটকম-এর এক প্রতিবেদনে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ব্যাটসম্যান ড্যামিয়েন মার্টিনের রিটুইট করা ভিডিও এমবেড করা হয়েছে৷ ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার সাইমন ক্যাটিচকে লেগ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলে এলবিডাব্লিউ দিচ্ছেন পাকিস্তানের আম্পায়ার আলিম দার৷ ড্যামিয়েন মার্টিনের মতে, সেই সিরিজ ইতিহাসের নিকৃষ্টতম আম্পায়ারিংয়ের জন্য কুখ্যাত৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Khan
রোহিত শর্মাকে আম্পায়ারের ‘দান’
২০১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ-ভারত কোয়ার্টার ফাইনালে রোহিত শর্মা ডিপ মিড উইকেটে সহজ ক্যাচ দিয়েছিলেন রুবেল হোসেনের বলে৷ ইমরুল কায়েস ধরেওছিলেন ক্যাচটা৷ কিন্তু আম্পায়ার ইয়ান গোল্ড ‘নো’ ডাকায় বেঁচে যান রোহিত৷ সিদ্ধান্তটা ধারাভাষ্যকার শেন ওয়ার্নের কাছেও অবিশ্বাস্য মনে হয়েছিল৷ ওয়ার্ন বলেই ফেলেছিলেন, ‘‘এটা নো বল ছিল না, খুবই বাজে সিদ্ধান্ত৷’’
ছবি: Getty Images/D. Sarkar
ইংলিশ আর অস্ট্রেলীয়দের এক করে দেয়া সিদ্ধান্ত
২০১৩ সালের অ্যাশেজ সিরিজের ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার উসমান খাজাকে এমন এক কট বিহাইন্ড দেয়া হলো যে প্রতিবাদে ফেটে পড়লেন সবাই৷ রিভিউয়েও ভুল সিদ্ধান্ত খারিজ না হওয়ায় অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী কেভিন রুড বলেছিলেন, ‘‘এটি ক্রিকেটে আমার দেখা সবচেয়ে জঘন্য সিদ্ধান্ত৷’’ ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন আরো ক্ষেপে গিয়ে বলেছিলেন, ‘‘এমন আউট দিলে (প্যাভিলিয়নে) ফিরে আসা অন্যায়৷’’
ছবি: picture-alliance/AP Photo/R. Griffith
বাংলাদেশে দ্বিতীয় বিভাগ ক্রিকেটে ৪ বলে ৯২ রান
২০১৭ সালে দ্বিতীয় বিভাগ ক্রিকেটে এক্সিওম ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে ৪ বলে ৯২ রান দিয়ে খবরের শিরোনামে আসেন বোলার সুজন মাহমুদ৷ জয়ের জন্য এক্সিওমের দরকার ছিল ৮৯ রান৷ কিন্তু ওয়াইড আর নো বল দিয়ে দিয়ে মাত্র চার বলেই ৯২ রান দিয়ে দেন সুজন। লালমাটিয়া ক্লাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, পক্ষপাতমূলক আম্পায়ারিংয়ের প্রতিবাদে সুজন এমন করেছেন।পরে সুজনকে ১০ বছরের জন্য এবং লালমাটিয়া ক্লাবকে আজীবন নিষিদ্ধ করেছিল বিসিবি৷
ছবি: Sikander Ali
বল করার আগেই নো বল!
২০১৭ সালের আরেক ম্যাচে ১.১ ওভারে ৬৯ রান দিয়েছিলেন তাসনিম হাসান। তাকেও ১০ বছরের জন্য আর তার ক্লাব ফিয়ার ফাইটার্সকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়। তাসনিমও নাকি পক্ষপাতদুষ্ট আম্পায়ারিংয়ের প্রতিবাদেই এমন বোলিং করেছিলেন৷ ক্লাবটির আরো দাবি ছিল, বোলার বল করার আগেই আম্পায়ার নো বল দিয়েছেন এমন ঘটনাও সেবার ঘটেছে৷ লালমাটিয়া এবং ফিয়ার ফাইটার্স ক্লাব দুটির ম্যাচের আম্পায়ারদের মাত্র ছয় মাসের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল৷
ছবি: Getty Images/I. Hitchcock
বিসিবির ‘অন্ধ’ চোখ খুলবে কবে?
২০২০ সালে উইসডেনের এক পডকাস্টে নিল ডায়ার নামের একজন ইংল্যান্ডের কোনো এক স্থানীয় লিগে কাভারে ক্যাচ আউট হয়েও এক ব্যাটসম্যানের বেঁচে যাওয়ার গল্প শুনিয়েছিলেন৷ আম্পায়ারের নাকি মনে হয়েছিল বল প্যাডে লেগে কাভারে গিয়েছে৷ ইংল্যান্ডে এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে সেই চেষ্টাতেই প্রাণাতিপাত করে বোর্ড৷ অথচ সাকিবের সাকিবসুলভ লাথিকাণ্ডের পরে বিসিবি সভাপতি জানিয়ে দিলেন, ‘‘আম্পায়ারদের কোনো ত্রুটি খুঁজে পাওয়া যায়নি৷’’