মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ)৷
বিজ্ঞাপন
সংগঠনটি মনে করে, সাক্ষীরা নিরাপদ না হলে ভবিষ্যতে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে সাক্ষীরা সাক্ষ্য নাও দিতে পারেন৷ এদিকে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রাণা দাসগুপ্ত ডয়চে ভেলেকে বলেন শুধু সাক্ষী নয়, বিচারক ও প্রসিকিউটররাও হুমকির মুখে আছেন৷
কাদের মোল্লার ফাঁসি পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসিতে ঝোলা কাদের মোল্লাকে ইসলামপন্থিরা বলছেন ‘শহিদ৷’ এই শহিদের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিভিন্ন জেলায় চলছে সহিংসতা৷ মোল্লার ফাঁসি পরবর্তী চব্বিশ ঘণ্টা নিয়ে আমাদের বিশেষ ছবিঘর৷
ছবি: AP
ইসলামপন্থিদের কাছে ‘শহিদ’
জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা কাদের মোল্লাকে মনে করছেন একজন ‘শহিদ৷’ যিনি ‘‘ইসলামি আন্দোলন করার কারণে’’ ফাঁসির দড়িতে ঝুলেছেন৷ এই ‘শহিদের’ মৃত্যুতে তাই শুক্রবার বিভিন্ন জেলায় গায়েবানা জানাজার আয়োজন করে জামায়াত-শিবির৷ মোল্লার জন্য পাকিস্তানেও গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ ছবিটি সেখানকার৷
ছবি: Rizwan Tabassum/AFP/Getty Images
অনেকের কাছে ‘মিরপুরের কসাই’
তবে বাংলাদেশে অনেকেই কাদের মোল্লাকে মনে করেন ‘মিরপুরের কসাই,’ যিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন৷ ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তার বিরুদ্ধে আনা মানবতাবিরোধী ছয়টি অভিযোগের পাঁচটি প্রমাণিত হয়েছে৷ ফলে তাকে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের সাজা বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত দশটা এক মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে কার্যকর হয়৷
ছবি: Mustafiz Mamun
মোল্লার পরিবার আক্রান্ত
জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর ঢাকার মগবাজারে তার পরিবারের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে৷ কাদের মোল্লার ছেলে হাসান জামিল বাংলাদেশের একাধিক সংবাদপত্রের কাছে দাবি করেন, ‘‘কিছু ছাত্রলীগের নেতা পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা চালায়৷’’ এসময় মোল্লা পরিবারের কয়েক সদস্যকে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়৷
ছবি: Getty Images/Afp/Munir Uz Zaman
ফরিদপুরে শেষ ঠিকানা
বৃহস্পতিবার রাতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর মাইক্রোবাসে করে কাদের মোল্লার মরদেহ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের করা হয়৷ বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম লিখেছে, ‘‘স্থানীয় সময় রাত ৪টার দিকে ফরিদপুরের আমিরাবাদ গ্রামে লাশ পৌঁছানোর পর জানাজা শেষে লাশ দাফন করা হয়৷’’
ছবি: Mustafiz Mamun
ফাঁসির রায় উদযাপন
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে কাদের মোল্লার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকার শাহবাগে সমবেত হন অসংখ্য মানুষ৷ তাদের আন্দোলনের ফলে পরবর্তীতে আইন সংশোধন করে কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়৷ সেই আপিলে মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত হয় মোল্লার৷ রায় কার্যকরের পর স্বাভাবিকভাবেই তাই শাহবাগে আনন্দ মিছিল দেখা গেছে৷
ছবি: Mustafiz Mamun
ব্যাপক সহিংসতা
এদিকে, শুক্রবার বাংলাদেশে সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে পাঁচ ব্যক্তি৷ রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সড়ক অবরোধ করে, সেতু ভেঙে, গাড়ি পুড়িয়ে চালানো হচ্ছে নাশকতা৷ এমতাবস্থায় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷
ছবি: DW/M. Mamun
তবে সাঈদীর মতো নয়
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ শাহেদুল আনাম খান এবং শরীফ এ কাফি অবশ্য ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘জামায়াত তার সহিংস তত্পরতা নিয়ে কতদূর এগোতে পারবে তাও দেখার বিষয় আছে৷ কারণ সাঈদীর ফাঁসির রায়ের পর তারা যে মাত্রায় সহিংসতা চালাতে সক্ষম হয়েছিল এবার এখন পর্যন্ত তারা সেই মাত্রায় যেতে পারেনি৷ এর কারণ আগের অভিজ্ঞতা থেকে সরকার পূর্ব-প্রস্তুতি নিয়েছে৷’’ তবে এই প্রস্তুতি যথেষ্ট নয় বলেই মনে করেন এই দুই বিশেষজ্ঞ৷
ছবি: DW/M. Mamun
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
জামায়াত নেতা কাদের মোল্লাকে ফাঁসি না দিতে বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ করেছিল জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন৷ তবে মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকরের পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আব্দুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিষয়টি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়৷
ছবি: Reuters
মৃত্যুদণ্ড সমর্থন করে না জার্মানি
বৃহস্পতিবার জার্মানির মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনার মার্কুস ল্যোনিং এক বিবৃতিতে কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর না করতে বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন৷ তিনি বলেছিলেন, ‘‘জার্মানি নীতিগতভাবে মৃত্যুদণ্ড সমর্থন করে না৷’’ তাই ফাঁসির পরিবর্তে কারাদণ্ড দেবার অনুরোধ জানিয়েছিলেন তিনি৷
ছবি: dapd
ট্রাইব্যুনাল নিয়ে বিতর্ক
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ২০১০ সালে ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করে৷ তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিরোধী দল বিএনপি মনে করে, সরকার বিরোধী দলকে দুর্বল করতে এই ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করেছে৷ আন্তর্জাতিক পর্যায়েও এই ট্রাইব্যুনাল নিয়ে বিতর্ক রয়েছে৷
ছবি: AP
10 ছবি1 | 10
চলতি মাসেই হত্যা করা হয়েছে মাওলানা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর মামলার সাক্ষী মুস্তাফা হাওলাদারকে৷ এছাড়া আলি আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে মামলার সাক্ষী রণজিৎ কুমার নাথের বাড়ি ও দোকান পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে৷ আগুন দেয়া হয়েছে ট্রাইব্যুনালের ২ জন এবং আপিল বিভাগের একজন বিচারকের বাড়িতে৷ এর আগে একজন সাক্ষীর ভাইকে হত্যা করা হয়েছে৷
এই অবস্থায় একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যারা সাক্ষ্য দিয়েছেন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ৷ সংস্থাটির এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে যারা সাক্ষী দিচ্ছেন তাঁদের হত্যা করার ঘটনা অতীতের এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে যারা সাক্ষ্য দেবেন তাঁদেরকে প্রভাবিত করবে৷ এতে সাক্ষীরা আর সাক্ষ্য নাও দিতে পারেন৷''
এদিকে সরকার অবশ্য দাবি করছে তারা চাহিদামতো সাক্ষীদের নিরাপত্তা দিয়ে থাকেন৷ কেউ চাইলে পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়৷ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সমন্বয়কারী হান্নান খান ডয়চে ভেলেকে জানান, তাদের কাছেও সাক্ষীরা নিরাপত্তার আবেদন করেন৷ সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপারদের সাক্ষীদের নিরাপত্তার ব্যাপারে বলে দেয়া আছে৷
সাঈদীকে ফাঁসির রায়, জামায়াতের তাণ্ডব
একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের একাধিক অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় বৃহস্পতিবার দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল৷ এই রায় ঘোষণার পর গোটা বাংলাদেশে তাণ্ডব চালিয়েছে জামায়াত-শিবির৷ এতে হতাহত অনেক৷
ছবি: AFP/Getty Images
ট্রাইব্যুনালের রায়
দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে ২০টি অভিযোগে গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণ, লুটতরাজসহ মানবতা বিরোধী অপরাধের কথা বলা হয়েছে৷ কয়েকটি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল-১ এর প্রধান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের আদালত মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন৷ অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানান, তার বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী ২০টি অভিযোগের ৮টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হয়েছে৷
ছবি: AP
রায়ের পরই তাণ্ডব
সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পরপরই রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সক্রিয় হয়ে ওঠে জামায়াত-শিবির৷ শুধু বৃহস্পতিবার বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছে কমপক্ষে ৩৫ ব্যক্তি৷ বার্তাসংস্থা এএফপি এবং আমাদের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম নিশ্চিত করেছে এই তথ্য৷ তবে শুক্রবার মৃতের সংখ্যা আরো বেড়েছে৷
ছবি: Reuters
আক্রান্ত পুলিশ
বৃহস্পতিবার জামায়াতের তাণ্ডবে প্রাণ হারান চার পুলিশ সদস্য৷ এদের মধ্যে তিনজন নিহত হন গাইবান্ধা জেলায়৷ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরডটকম জানিয়েছে, ‘পুলিশ ফাঁড়িতে পিটিয়ে মারা হয় তাদের’৷ অপর একজন প্রাণ হারান চট্টগ্রামের লোহাগড়ায় সংঘর্ষের সময়৷ বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, আহত এক পুলিশ সদস্য শুক্রবার প্রাণ হারান৷ সবমিলিয়ে সাঈদীর রায় ঘোষণার পর শুক্রবার দুপুর অবধি পুলিশ সদস্য নিহতের সংখ্যা ৫৷
ছবি: STR/AFP/Getty Images
‘অধিকাংশই জামায়াত-শিবির কর্মী’
জামায়াত দাবি করেছে, ‘‘পুলিশের গুলিতে তাদের ৫০ জন ‘নিরপরাধ’ সমর্থক নিহত হয়েছে৷ পুলিশ তাদেরকে ‘পাখির মতো গুলি করে’ হত্যা করেছে৷’’ তবে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রধান সুলতানা কামাল পুলিশের উপর সন্ত্রাসী হামলার জন্য জামায়াতকে দায়ী করেছেন৷
ছবি: AFP/Getty Images
প্রাণ হারাচ্ছে নিরীহ মানুষও
জামায়াতের তাণ্ডবে পুলিশ সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন, নিহত হয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থকও৷ তবে সাধারণ মানুষও মরছে এই তাণ্ডবে৷ ঢাকায় বৃহস্পতিবার প্রাণ হারান এক পথচারী, নোয়াখালি এবং বাঁশখালীতে নিহত হন হিন্দু সম্প্রদায়ের দুই ব্যক্তি৷ শুক্রবারও গাইবান্ধায় এক রিকশা চালক নিহত হয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের এবং জামায়াতের সমর্থকদের মধ্যকার সংঘর্ষের মাঝে পড়ে৷ নিরীহ প্রাণহানির এরকম খবর আরো শোনা যাচ্ছে৷
ছবি: AFP/Getty Images
‘ফেসবুক বন্ধ’
সাঈদীর বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার সময় বাংলাদেশ থেকে কম্পিউটার ব্যবহার করে স্বাভাবিক উপায়ে ফেসবুকে প্রবেশ করা যাচ্ছিল না৷ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি’র ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন আহমেদ জানান, ‘কারিগরি সমস্যার জন্য এমনটা হয়েছে’৷ তবে তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ জাকারিয়া স্বপন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার তারা (বিটিআরসি) কিছুক্ষণের জন্য ফেসবুক বন্ধ করে দিয়েছিল এবং পুনরায় আবারো চালু করেছে৷’
সতর্ক নিরাপত্তা বাহিনী
জামায়াত-শিবির তাণ্ডব আর নাশকতা রুখতে গোটা দেশে সতর্ক রয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা৷ বৃহস্পতিবার রাতেই বিভিন্ন এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিজিবি৷
ছবি: Reuters
ভিন্ন চিত্র
তবে সাঈদীর ফাঁসির রায়ে সামগ্রিকভাবে সন্তুষ্ট সাধারণ মানুষ৷ বৃহস্পতিবার এই রায় ঘোষণার পর উল্লাসে ফেটে পড়েন শাহবাগে অবস্থানরতরা৷ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় মিষ্টি বিতরণ করা হয়৷ ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া জানান অগুনতি মানুষ৷
ছবি: Reuters
‘শহীদের আত্মা শান্তি পাবে’
সাঈদীর বিরুদ্ধে একটি মামলার বাদি ও প্রথম সাক্ষী মাহবুবুল আলম হাওলাদার৷ রায় ঘোষণার পরে ডয়চে ভেলেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘সাঈদীর ফাঁসির আদেশ হওয়ায় দেশমাতৃকা কিছুটা পাপমুক্ত হয়েছে, যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তির জন্য ৪২ বছরের অপেক্ষার অবসান হতে চলেছে৷’
ছবি: DW/Harun Ur Rashid
আরো রায় বাকি
এখন পর্যন্ত তিন যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল৷ বাকি আছে আরো যুদ্ধাপরাধীর বিচার৷ মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি অপেক্ষায় আছে সব যুদ্ধাপরাধীর বিচার দেখার৷ বর্তমান তরুণ প্রজন্মও তাই জেগে আছে প্রজন্ম চত্বরে৷
ছবি: AP
10 ছবি1 | 10
এর জবাবে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রাণা দাসগুপ্ত ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সরকার যা বলছে তা আইওয়াশ ছাড়া আর কিছুই নয়৷ কারো বাড়িতে পুলিশ দিয়ে অথবা থানায় নিয়ে বসিয়ে রেখে নিরাপত্তা দেয়া সম্ভব নয়৷ প্রয়োজন সাক্ষী সুরক্ষা আইন৷'' তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনাল গঠনের ৪ বছর হয়ে গেলেও সরকার এখনো এব্যাপারে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না৷ অথচ ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে বারবার এই আইনের কথা বলা হচ্ছে৷ আইনটি হলে আবেদনের প্রয়োজন পড়বে না, সাক্ষীদের সুরক্ষার ব্যাপারটি আইনি কাঠামোর মধ্যে চলে আসবে৷ তিনি জানান, ‘‘শুধু সাক্ষী নয়, প্রসিকিউটর এবং বিচারকরাও হুমকির মধ্যে আছেন৷ বিচারকদের বাড়িতে হামলা ছাড়াও চিঠি দিয়ে হুমকি দেয়া হয়েছে৷ আর এই অবস্থা চলতে থাকলে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে যুদ্ধাপরাধের বিচার৷''
এদিকে সাক্ষী মুস্তাফা হাওলাদারকে হত্যার পর ট্রাইব্যুনাল তার প্রতিক্রিয়ায় আদালতে বলেছেন, ‘‘একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশে বিচার কাজে সহায়তার জন্য একজন সাক্ষীকে হত্যা করার বিষয়টি কখনোই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না৷'' রাণা দাসগুপ্ত বলেন, তাঁরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিচারকাজে অংশ নিচ্ছেন, বিচারে সহায়তা করছেন৷ তাই পুরো ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন৷