1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিশ্ব পানি সপ্তাহ

২৮ আগস্ট ২০১২

রবিবার থেকে শুরু হয়েছে ‘বিশ্ব পানি সপ্তাহ’৷ সুইডেনের স্টকহোমে চলছে বিভিন্ন আলোচনা৷ কেননা ২০২৫ সালের মধ্যে পানযোগ্য পানির প্রায় ৯০ ভাগই শেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা৷ তাই এরপর কী হবে তা নিয়ে চলছে আলোচনা৷

ছবি: Fotolia

‘ওয়াটার, ওয়াটার এভরিহোয়্যার, নর এনি ড্রপ টু ড্রিংক' - ইংলিশ লেখক স্যামুয়েল টেলরের বিখ্যাত ‘দি রাইম অফ দি এনশিয়েন্ট ম্যারিনার' কবিতার বিখ্যাত লাইন এটি৷ সমুদ্রে হারিয়ে যাওয়া নাবিকদের নৌকার চারপাশে এতো পানি, অথচ সেই পানির অভাবেই মরতে হয়েছিল তাদের৷ কেননা সাগরের লবণাক্ত পানি তো আর খাওয়া যায় না৷

কিন্তু দিন এমন আসছে যে, সমুদ্রের এই লবণাক্ত পানিকেই এখন পানের যোগ্য করে তুলতে হবে৷ নইলে পানির অভাবে কবিতার ঐ নাবিকদের মতোই প্রাণ হারাতে হতে পারে বিশ্বের অনেককে৷

লোনা পানিকে পানযোগ্য করার বর্তমান উপায়ের নাম হলো ‘রিভার্স অসমোসিস'৷ কিন্তু এতে প্রচুর জ্বালানি খরচ হয়৷ এবং এটা বেশ ব্যয়বহুলও৷ তাই বিকল্প উপায় নিয়ে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা৷ এঁদের মধ্যে রয়েছেন জার্মানির ‘রুয়র-ইউনিভার্সিটি বোখুম'এর একদল বিজ্ঞানী৷ যার নেতৃত্বে রয়েছেন ফাবিও লা মান্টিয়া৷ তাঁদের পদ্ধতির নাম ‘ডিস্যালিনেশন ব্যাটারি' অর্থাৎ বিলবণীকরণ ব্যাটারি৷

গবেষণা দলের প্রধান ফাবিও লা মান্টিয়াছবি: privat

নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে একটা ব্যাটারি যেভাবে কাজ করে ঠিক সেই উপায়েই পানি থেকে লবণকে পৃথক করে তাঁদের পদ্ধতিটি৷ মান্টিয়া বলেন, সাগরের পানিতে রয়েছে সোডিয়াম আর ক্লোরাইড৷ এর মধ্যে সোডিয়াম পজিটিভ আর ক্লোরাইড নেগেটিভ চার্জযুক্ত৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা বিদ্যুৎ প্রয়োগ করি৷ এবং এই বিদ্যুতই পানি থেকে লবণ দূর করে৷''

মান্টিয়ার দলে কাজ করেন আলবার্তো বাতিস্তি৷ তিনি বোখুম বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্টরেট করছেন৷ মান্টিয়া আর বাতিস্তির কাজ বর্তমানে একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে৷ তাঁরা এক মিলিলিটারের পাঁচভাগের এক ভাগ সমপরিমাণ পানি লবণমুক্ত করার চেষ্টা করছেন৷

ডিডাব্লিউর প্রতিনিধি যখন তাঁদের পরীক্ষাগারে গিয়ে উপস্থিত হন তখন তাঁরা কাজ করছিলেন৷ এসময় বাতিস্তি বলেন, ‘‘আমরা প্রথমে সমুদ্রের পানি থেকে ২৫ ভাগ সোডিয়াম ক্লোরাইড দূর করার চেষ্টা করছি৷ সেজন্য আমি জানি, আমাকে ৪০ মিনিট ধরে পরীক্ষাটা চালাতে হবে৷''

চলছে গবেষণাছবি: Ruhr-Universität Bochum

তবে লোনা পানিকে পানযোগ্য করতে মান্টিয়া আর বাতিস্তিকে ২৫ নয়, ৯৮ ভাগ সোডিয়াম ক্লোরাইড দূর করতে হবে৷ কিন্তু প্রয়োজনীয় উপাদান পাওয়া যাচ্ছে না বলে সেটা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান মান্টিয়া৷ তবে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের এই উপাদানগুলো উন্নত করতে হবে৷ এবং আমরা তা করছি৷ আমাদের, সংখ্যাটা ২৫ থেকে ৯৮'তে নিয়ে যেতে হবে৷''

মান্টিয়া বলেন, ‘‘আমরা যে প্রক্রিয়া বের করার চেষ্টা করছি, তা দিয়ে অতিলবণাক্ত পানি পানযোগ্য করা সম্ভব৷ রিভার্স অসমোসিসের মাধ্যমে যেটা সম্ভব নয়৷ তবে আমরা আমাদের পদ্ধতিতে ৯০ ভাগ পর্যন্ত সোডিয়াম ক্লোরাইড দূর করতে চাই৷ বাকি আট ভাগ করবো রিভার্স অসমোসিস প্রক্রিয়ায়৷''

মান্টিয়া এখন পর্যন্ত তাঁর গবেষণাকাজ নিয়ে বেশ সন্তুষ্ট৷ তবে ছোটোখাটো যে সমস্যা হচ্ছে অচিরেই তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে বলে মনে করেন তিনি৷ মান্টিয়া বলেন, ভবিষ্যতে যদি উন্নত ইলেক্ট্রোড পাওয়া যায় তাহলে তাঁদের পদ্ধতি ব্যবহার করে কম খরচে অনেক বেশি পরিমাণ পানি শোধন করা সম্ভব হবে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের প্রযুক্তির বয়স মাত্র এক বছর৷ অন্যদিকে রিভার্স অসমোসিস ব্যবহৃত হচ্ছে ৪০ বছর ধরে৷ ফলে এখনই আমাদের প্রযুক্তিটাকে রিভার্স অসমোসিসের সঙ্গে তুলনা করাটা বয়স্ক একজনের সঙ্গে একটা শিশুর তুলনা করার মতো হবে৷''

নিজেদের গবেষণার চূড়ান্ত সফলতার জন্য আরও সময় চেয়েছেন মান্টিয়া ও তাঁর দল৷

প্রতিবেদন: ব্রিগিটে ওস্টেরাট / জেডএইচ

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ