1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সাগরের বিপজ্জনক পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করেন যে জীববিজ্ঞানী

১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী গারউইন গ্রেটশেল ভূমধ্যসাগরের দিকে নজর রাখছেন৷ প্রতিদিন তিনি সাগরের পরিবর্তন দেখছেন৷ এই পরিবর্তন কেন বিপজ্জনক তা সাধারণ মানুষ জানতে পারেন তার ডাইভিং স্কুলে৷

৩৫ বছর আগে এখানে ডাইভিং শুরু করেন অস্ট্রিয়ার সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী
সাগরের বিপজ্জনক পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করেন জীববিজ্ঞানী গারউইন গ্রেটশেল৷ ছবি: DW

পরের ডাইভের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন গারউইন গ্রেটশেল৷ ক্রোয়েশিয়ার ভ্যালস্যুলিনুহ বের পানি অনেকবার যাচাই করেছেন তিনি৷ অস্ট্রিয়ার এই সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী এখানে ডাইভিং শুরু করেন ৩৫ বছর আগে৷

সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী গারউইন গ্রেটশেল বলেন, ‘‘আমি দায়িত্ব নিয়েই বলতে পারি যে প্রথম ২০ বা ২৫ বছরে তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি৷ কিন্তু গত ছয় থেকে ১০ বছরে অবিশ্বাসরকম পরিবর্তন হয়েছে৷ এখন প্রায় প্রতিমাসেই পরিবর্তন হচ্ছে৷''

পানির উপরে সবকিছু বরাবরের মতোই আছে৷ নীল আকাশ, স্বচ্ছ জল, এবং সাগরের পাশে বিশ্রাম নেয়া মানুষ৷

কিন্তু জলের নিচে পরিবর্তনটা স্পষ্ট৷ কয়েকবছর আগেও বে বা খাড়িটি সামুদ্রিক ঘাসে সমৃদ্ধ ছিল যেখানে বহু প্রজাতির বিচরণ ছিল৷ সেগুলো সাগরের ফুসফুস হিসেবে পরিচিত ছিল৷ পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখতে সেগুলোর মূখ্য ভূমিকা ছিল৷

সাগরের জীববৈচিত্র্য আশঙ্কাজনক পরিবর্তন

04:19

This browser does not support the video element.

কিন্তু বর্তমানে ভ্যালস্যুলিনুহ বে জলের নিচে বিরাণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে৷ কোনো উদ্ভিদ, সামুদ্রিক ঘাসের বিস্তৃতি নেই৷ সামুদ্রিক জীবের এই আবাসস্থলটি কয়েকবছরের মধ্যেই হারিয়ে গেছে৷ আর তার পরিণতি নাটকীয়৷ 

পুলা মেরিন স্কুলের সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী গারউইন গ্রেটশেল বলেন, ‘‘জীববৈচিত্র হারানোর অর্থ হচ্ছে আমরা মানুষরা নিজেরাই নিজেদের আবর্জনার মধ্যে শ্বাসরুদ্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে আছি কারণ প্রকৃতি আর আমরা যা দূষিত করেছি তা বিশুদ্ধ করতে পারছে না৷''

ভুমধ্যসাগর বিশ্বের অন্যান্য সাগরের চেয়ে দ্রুত উষ্ণ হয়ে ওঠায় উদ্বিগ্ন বিজ্ঞানীরা৷ ফলে অনেক সামুদ্রিক জীব ক্রমশ অ্যাড্রিয়াটিক সাগরে বসতি গড়ার চেষ্টা করছে যেগুলো এখানকার নয়৷ যেমন নীল কাঁকড়া৷ স্পঞ্জ কাঁকড়ার সঙ্গে এগুলোর সরাসরি প্রতিযোগিতা রয়েছে৷ ফলে শিকারের সময় বিপত্তি বাঁধে৷

অন্যদিকে জেলেরা নীল কাঁকড়া পছন্দ করেন কারণ রেস্তোরাঁ মালিকরা এগুলো ভালো দামে কেনেন৷ কিন্তু গত কয়েকবছর ধরে প্রয়োজন মতো মাছ পাচ্ছেন না তারা৷

স্থানীয় জেলে মারিঙ্কো লাপভ একটি ছোট্ট নৌকা নিয়ে মাছ ধরতে যাচ্ছেন৷ এটা একসময় তার বাবার ছিল৷ তিনি বলেন, ‘‘আগে পরিস্থিতি অনেক ভালো ছিল, অনেক মাছ পাওয়া যেতো৷ এখন মাছ কম৷ আগে লাভ বেশি হতো!''

সম্প্রতি একজন মারাত্মক বিষাক্ত মাছ পাফার মাছ ধরেছেন৷ এগুলো সাধারণত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলে পাওয়া যায়৷ মারিঙ্কো লাপভ বলেন, ‘‘এখন এখানে পাফার মাছ পাওয়া যাচ্ছে৷ এগুলো বিষাক্ত শুনেছি৷ আপনি সাধারণত সবকিছুই খেতে পারেন কিন্তু মানুষ এই মাছ চেনে না৷ এখন কী মাছ পাচ্ছি তা ফোনে পরীক্ষা করতে হয়৷''

ক্রোয়েশিয়া পর্যটননির্ভর৷ পর্যটকরা দেশটির হাজার হাজার দ্বীপ এবং দুই হাজার কিলোমিটার লম্বা সমুদ্র সৈকতে ভীড় করেন৷ এটার অন্ধকার দিকও আছে৷ নতুন নতুন ভবন তৈরি হচ্ছে, পরিবেশ দূষণ বাড়ছে, কাঠামোগত দুর্বলতাও রয়েছে৷ তবে অ্যাড্রিয়াটিক এখনো মেনে নিচ্ছে৷

সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী গারউইন গ্রেটশেল বলেন, ‘‘সাগরের নিজস্ব আইন রয়েছে৷ সেগুলো ভূমিরক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়৷ এবং আমরা সবসময় ভূমির আইন দিয়ে পরিস্থিতি বিবেচনা করি৷ আমরা এখানে যাকিছু ধ্বংস করি তা আর পুর্নগঠন করতে পারি না৷ আমরা শুধু এভাবে ফেলে যেতে পারি এবং আশা করতে পারি প্রকৃতি নিজেই পুনর্গঠিত হবে৷''

মেরিন স্কুলটি সম্প্রতি একটি এক্যুরিয়াম পেয়েছে৷ এখানে তরুণরা আদর্শ সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র সম্পর্কে ধারনা পায়৷  

প্রতিবেদন: ফ্যাইট উলরিশ ব্রাউন/এআই

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ