২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ভোরে ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি৷ হত্যাকাণ্ডের সময় ওই বাসায় ছিল তাদের একমাত্র শিশুপুত্র মাহির সরোয়ার মেঘ৷ এরপর ৬ বছর বছর কেটে গেছে৷
দু'বার হাত বদল হয়ে আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্ত করছে র্যাব৷ তারা আদালতে মামলার তদন্ত অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলে ব্যর্থ হয়েছে ৫৪ বার৷ ১লা ফেব্রুয়ারি তারা নতুন করে সময় নিয়েছে৷ অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের পরবর্তী তারিখ ১৩ মার্চ৷
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল রবিবার সচিবালয়ে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দাবি করেন সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্তে অগ্রগতি আছে৷ র্যাব শিগগিরই আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে বলে জানিয়েছেন তিনি৷
কেন খুন হয়েছেন সাগর, রুনি?
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার এবং মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের তিন বছর পূর্ণ হয়েছে৷ কিন্তু আজও নিহতের পরিবার, শুভানুধ্যায়ী আর সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের মানুষ জানতে পারলো না, কেন এই হত্যাকাণ্ড? এই বিষয়ে ছবিঘর দেখুন এখানে:
ছবি: DW
সেই কালোরাত
২০১২ সালের এগারোই ফেব্রুয়ারি৷ সেদিন খুব ভোরবেলা জানা গিয়েছিল, ঢাকায় নিজের ভাড়া বাসায় খুন হয়েছেন সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার এবং মেহেরুন রুনি৷ একই ফ্ল্যাটে থাকলেও প্রাণে বেঁচে যান তাদের একমাত্র শিশুপুত্র মেঘ৷
ছবি: dapd
সাগর সরওয়ার
দেশি-বিদেশি একাধিক গণমাধ্যমে কাজ করার পর ২০১১ সালে মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক হিসেবে কাজ শুরু করেন সাগর সরওয়ার (ডানে)৷ সর্বশেষ সেই টেলিভিশন চ্যানেলেই কাজ করেছেন তিনি৷ ২০১২ সালের দশই ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে কাজ থেকে বাসায় ফেরার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই খুন হন সাগর৷
ছবি: DW
মেহেরুন রুনি
একাধিক দৈনিকে কাজ করার পর কয়েক বছর আগে টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলায় কাজ শুরু করেন মেহেরুন রুনি (বামে)৷ মাঝে স্বামীর সঙ্গে বছর দেড়েক জার্মানিতে কাটিয়েছেন তিনি৷ এরপর ২০১১ সালে আবারো ফিরে যান নিজের কর্মস্থলে৷
ছবি: DW
৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার!
১১ ফেব্রুয়ারি ভোররাতে এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তারের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন৷ বলাবাহুল্য, সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি৷
ছবি: DW
সাংবাদিকদের আন্দোলন
বাংলাদেশের বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের মধ্যে মতের অমিল থাকলেও সাগর-রুনি ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের ঘোষণা প্রদান করে সব সংগঠন৷ খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গত এক বছরে বেশ কয়েকটি প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন সংগঠন৷
ছবি: DW/Harun Ur Rashid Swapan
আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ
সাংবাদিক দম্পতি হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এবং খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে গর্জে ওঠে বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত বাঙালিরা৷ জার্মানিসহ কয়েকটি দেশে খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়৷ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনও খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিবৃতি প্রকাশ করেছে৷
ছবি: DW
ব্লগারদের প্রতিরোধ
সাংবাদিক সংগঠনগুলোর আন্দোলনের পাশাপাশি ব্লগাররা এই দম্পতি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে রাজপথে নামে৷ গত বছর এই ইস্যুতে ব্লগ ‘ব্ল্যাক আউট’ পালন করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ব্লগ৷ সামহয়্যার ইন ব্লগে এখনো রয়েছে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ব্যানার৷
ছবি: DW
রিপোটার্স উইদাআউট বর্ডার্স
সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে রাজপথে ব্লগারদের সক্রিয় আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকাসহ বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম ইত্যাদি ইস্যুতে ব্লগ লিখে ডয়চে ভেলের দ্য বব্স প্রতিযোগিতার রিপোটার্স উইদাআউট বর্ডার্স অ্যাওয়ার্ড জয় করে আবু সুফিয়ানের বাংলা ব্লগ৷ ছবিতে আন্দোলনরত আবু সুফিয়ান৷
ছবি: DW
নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নাটকীয় ঘোষণা
গত অক্টোবর মাসে নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডে ‘জড়িত’ আটজনকে চিহ্নিত করে সাতজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানান৷ বাকি একজনকে গ্রেপ্তার করা হয় গত সপ্তাহে৷ ব়্যাব গ্রেপ্তারকৃতদের বলছে ‘সন্দেহভাজন’৷ আর পরিবার মনে করছে, এদেরকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে কার্যত ‘জজ মিয়া’ নাটক সাজানো হচ্ছে৷
আন্তর্জাতিক তদন্ত চান পরিবার
সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ডের এক বছর হলেও তদন্তে কোনো অগ্রগতি নেই৷ ধরা পড়েনি মূল অপরাধীরা৷ তাই তাদের পরিবার এখন আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি করেছেন৷ রুনির ভাই নওশের রোমান জানিয়েছেন, তারা (ব়্যাব) তদন্তের চেয়ে হয়রানি করতে বেশি উৎসাহী৷ সাগর রুনির একমাত্র সন্তান মেঘের নিরাপত্তাও প্রত্যাহার করা হয়েছে৷
ছবি: DW/Harun Ur Rashid Swapan
জজ মিয়া নাটক চান না সাগরের মা
সাগরের মা সালেহা মনির এখনও কাঁদেন৷ তাঁর দাবি হচ্ছে, প্রকৃত অপরাধীদের ধরতে হবে৷ এক বছর পর দারোয়ান এনামুলকে গ্রেফতার তাঁর কাছে জজ মিয়া নাটক ছাড়া কিছুই নয়৷ তাঁর মতে, এক বছরে নানা টালবাহানা করে প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা চলছে৷
ছবি: DW/Harun Ur Rashid Swapan
11 ছবি1 | 11
এই মামলায় তদন্তকারীরা এ পর্যন্ত আটজনকে আটক করেছেন৷ তারা হলেন,তানভীর রহমান, বাড়ির নিরাপত্তা কর্মী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুন, পলাশ রুদ্র পাল, তানভীর ও আবু সাঈদ৷ তবে এখন পর্যন্ত তাদের কাছে হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানাতে পারেননি তদন্তকারীরা৷ তারা সবাই বর্তমানে জামিনে আছেন৷ এদেরমধ্যে পাঁচজন ঢাকার মহাখালীতে বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসক নিতাই হত্যা মামলার আসামি৷ আটকদের কেউ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেয়নি৷
‘হত্যাকারীরা কি প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও শক্তিশালী?’
এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাবের সহকারী পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন আহমেদ এখন সংবাদ মাধ্যমেকে এড়িয়ে চলছেন৷ দু'দিন ধরে তার সঙ্গে যোগাযোগের নানা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন ডয়চে ভেলেসহ অন্যান্য গণমাধ্যম কর্মীরা৷ তবে আগে তিনি দাবি করেছিলেন, সন্দেহভাজন ১৩০জন ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে মামলার তদন্ত চলছে৷ ল্যাপটপ এবং মোবাইল ফোন উদ্ধারে বিটিআরসির সহায়তা নেয়া হচ্ছে৷''
মামলার তদন্ত দ্রুত ও সঠিক করতে আদালতের নির্দেশে সাগর-রুনি হত্যার ৭৫ দিন পর ২০১২ সালের বছরের ২৬ এপ্রিল কবর থেকে লাশ তুলে দ্বিতীয় দফা ময়না তদন্ত এবং ভিসেরা আলামত নেয়া হয়৷ সাগর-রুনি হত্যা রহস্য জানতে র্যাব সাগর-রুনি ছাড়াও ২১ জনের ডিএনএ পরীক্ষা করিয়ে এনেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ল্যাব থেকে৷ কিন্তু এখন পর্যন্ত তাতে কোনো ফল মেলেনি৷
সাগর সরওয়ার মা সালেহা মনির ‘‘আমাকে র্যাব বলেছিল সাড়র-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত একটি ব্যয়বহুল তদন্ত৷ আমরা দেশের বাইরে থেকে অনেক টাকা খরচ করে ডিএনএ টেস্ট করাচ্ছি৷ আমার প্রশ্ন হল তদন্তে যদি এত টাকা খরচ হয়, এটা যদি ব্যয়বহুল তদন্তই হয় তাহলে হত্যাকারীরা কেন ধরা পরছে না৷ তারা কি সব কিছু জেনেও গোপন করছে? আমি জানতে চাই এই ব্যয়বহুল তদন্তের উদ্দেশ্য কী, কার স্বার্থে৷''
‘এই মামলার তদন্তে র্যাব ব্যর্থ হয়েছে’
তিনি বলেন, ‘‘আমি নিশ্চিত সাগর-রুনির হত্যাকারীদের নাম দেশের মানুষ একদিন জানতে পারবে৷ হয়তো সেদিন আমি থাকবো না৷ আমি জানি না ৪৮ ঘণ্টা কবে হবে৷ প্রধানমন্ত্রীও তখন হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন৷ কিন্তু আমার প্রশ্ন হত্যাকারীরা কি প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও শক্তিশালী? তাই যদি না হয় তাহলে তাদের ধরা যাচ্ছে না কেন? সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড কোনো ক্লুলেস মার্ডার নয়৷ অনেক তথ্য, অনেক আলামত৷ তারপরও মামলা ডিটেক্ট হয় না৷ কত হত্যাকাণ্ডে বিচার হল৷ নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের বিচার হল, বিশ্বজিৎ হত্যার বিচার হল৷ কিন্তু সাগর-রুনি হত্যার কেন বিচার হয়না!''
সাগর-রুনি হত্যা মামলার বাদি সাগরের ভাই নওশের রোমান৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এটা স্পষ্ট যে এই মামলার তদন্তে র্যাব ব্যর্থ হয়েছে৷ আমরা চাই তদন্তের মাধ্যমে হত্যাকারীদের চিহ্নত এবং বিচার করা হোক৷'' তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে মামলার তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে তদন্তকারীরা অনেক দিন হয় কোনো যোগাযোগ করেন না৷ আমরাও আর তাদের সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি৷ জানতে চাইলে তারা ওই একই কথা বলে, আমরা আশাবাদী৷''
‘আসুন আমরা সাগর-রুনিকে ভুলে যাই’
সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনির খুনিদের নিশ্চিত করা যায়নি! তাই নৃশংস সেই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করেই রাজধানীর দৃক গ্যালারিতে চলছে ‘সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করি’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী৷
ছবি: DW
ছবিতে বর্বোরোচিত হত্যাকাণ্ড
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনির বর্বোরোচিত হত্যাকাণ্ডের তিন বছর পূর্তিতে এই প্রদর্শনীটির আয়োজন করেছে সাগর-রুনির পরিবার, বন্ধু-বান্ধব ও শুভানুধ্যায়ীরা৷ প্রদর্শনীটি চলবে ২৬শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত৷
ছবি: DW
স্থান পেয়েছে কবরের ‘এপিটাফ’
সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তিন বছর পূর্তিতে আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শনীর দুই দরজায় সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনির কবরের এপিটাফ-এর একটি আলোকচিত্র৷
ছবি: DW
‘আমরা তোমাদের ভুলবো না’
‘সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করি’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীটিতে সাংবাদিক দম্পতির কর্মস্থলের পরিচয়-পত্র৷ ঢাকায় মাছরাঙা টেলিভিশনে যোগ দেয়ার আগে সাগর সরওয়ার কাজ করতেন ডয়চে ভেলেতে আর মেহেরুন রুনি কাজ করতেন বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশন ‘চ্যানেল আই’-এ৷
ছবি: DW
ছোটবেলার সেই দিনগুলো...
সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনির পরিচয়-পত্রের পাশে রুনির ছোটবেলার আলোকচিত্র৷ মেহেরুন রুনির পারিবারিক অ্যালবামের এ সব ছবিও স্থান পেয়েছে প্রদর্শনীতে৷
ছবি: DW
‘আজও বড় ভালোবাসি তোমায়’
সাগর-রুনি ও তাঁদের একমাত্র শিশুপুত্র মেঘের একটি মর্মস্পর্শী ছবি৷ ছবিটির বামদিকে মেঘের আঁকা বাবার ছবি আর ডানে মায়ের ছবি৷ কোনো এক ‘মা দিবসে’ ছবিটি এঁকেছিল মেঘ, যার পাশে কাঁচা হাতে লেখা – ‘‘ভালোবাসি মা’’৷
ছবি: DW
চঞ্চল মেঘের প্রশ্নবিদ্ধ চোখ
প্রদর্শনী জুড়ে সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে মাহির সরওয়ার মেঘের চঞ্চলতা৷ পুরো গ্যালারি জুড়ে আপন মনে খেলে চলা ছোট্ট এই শিশুটির দু’চোখেই যেন বাবা-মা হত্যার বিচারের আকুতি৷ মেঘ কি পাবে বর্বর এ হত্যাকাণ্ডের বিচার?
ছবি: DW
ছোট্ট মেঘের হাতের কাজ
ডয়চে ভেলেতে কাজের সূত্রে মেঘকে নিয়ে সাগর-রুনির বসবাস ছিল জার্মানিতে৷ সে সময়ে স্কুলের জন্য তৈরি করা মেঘের একটি ছবির অ্যালবাম৷
ছবি: DW
সত্যি কি আমরা ভুলে যায়নি?
সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের পর প্রকাশিত বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা৷ আর তার সামনে, দেয়ালে লেখা ‘Let’s Forget Sagar-Runi’ – ‘আসুন আমরা সাগর-রুনিকে ভুলে যাই’৷
ছবি: DW
হারিয়ে যাওয়া বোনের জন্য...
প্রদর্শনীতে মেহেরুন রুনির ছোটবেলার একটি ছবি বোর্ডে লাগাচ্ছেন ভাই নওশেদ আলম৷ চার ভাই-বোনের মধ্যে রুনি ছিলেন দ্বিতীয় সন্তান৷
ছবি: DW
দোষীদের খোঁজ পাওয়া যাবে তো?
রুনির আরেক ভাই নওশের রোমান৷ তিনি জানান, ‘‘সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতেই এ প্রদর্শনীর আয়োজন৷ এতে পুরো ঘটনার ভয়াবহতা ফুটে না উঠলেও, জঘন্যতম এই অপরাধের প্রতি মানুষের মধ্যে এক ধরনের সচেতনতা সৃষ্টি করার প্রয়াস রয়েছে৷’’
ছবি: DW
কোথায় গেল সাগরের ল্যাপটপ?
প্রদর্শনীতে সাগর সরওয়ারের ব্যবহৃত ল্যাপটপের পাশে তাঁরই লেখা একটি বই৷ মাঝে প্রতীক হিসেবে রাখা হয়েছে একটি খেলনার পিস্তল৷
ছবি: DW
চোখে চশমা, মুখে সেই অনবদ্য হাসি
সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তিন বছর পূর্তিতে আয়োজিত প্রদর্শনীতে মেহেরুন রুনি ও সাগর সরওয়ারের ব্যবহৃত চশমা৷ এ আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে সাংবাদিক দম্পতির বিভিন্ন আলোকচিত্র ছাড়াও দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিসপত্রও স্থান পেয়েছে৷
ছবি: DW
আজও কেমন জলজ্যান্ত!
প্রদর্শনীতে আলোকচিত্রের পাশাপাশি দেখানো হচ্ছে ভিডিও ক্লিপও৷ সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের পর নানা ঘটনার ভিডিও-চিত্র দেখানো হচ্ছে প্রজেক্টরে৷
ছবি: DW
নৃশংসতার প্রতীক
নিহত এই সাংবাদিক দম্পতির প্রতি সম্মান জানাতে এবং একই সাথে পুরো রহস্য উদঘাটনের দাবি জানিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো এই আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন৷ ২০১২ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি পশ্চিম রাজাবাজারে নিজেদের ভাড়া করা ফ্ল্যাটে, অজ্ঞাত আততায়ীদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হন তাঁরা৷
ছবি: DW
নীরবে-নিভৃতে কাঁদে...
মেহেরুন রুনির পুরনো ছবির সামনে অশ্রুসজল মা নুরন নাহার মির্জা৷ সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে আজও নীরবে-নিভৃতে চোখের জল ফেলে চলছেন এই মা৷
ছবি: DW
সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই
প্রদর্শনীতে সাগর-রুনি ও মেঘের ছবির সঙ্গে ‘সেলফি’ তুলছেন এক দর্শনার্থী৷ সাধারণ মানুষের হৃদয়ে স্থান পাওয়া সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনির হত্যাকাণ্ডের বিচার এখন বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের দাবি৷
ছবি: DW
16 ছবি1 | 16
সাগর-রুনির একমাত্র সন্তান মেঘের বয়স এখন সাড়ে ১১ বছর৷ চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে৷ নওশের জানান,‘‘মেঘ স্বাভাবিক শিশু হিসেবেই বড় হচ্ছে৷ নিয়মিত পড়াশুনা করে৷ খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ আছে৷''
মেঘ প্রসঙ্গে সাগরের মা সালেহা মনির বলেন,‘‘প্রধানমন্ত্রী মেঘের সব দায়িত্ব নেয়ার কথা বলেছিলেন৷ কিন্তু তার বাস্তবায়ন এখনো আমরা দেখতে পাইনি৷''
সালেহা মনির তাঁর সন্তান সাগর আর পুত্রবধু রুনির কবর জিয়ারত করতে যাননি একদিনও, মৃত্যুবার্ষিকীতেও না৷ তিনি প্রতিজ্ঞা করেছেন, এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হলে তবেই তিনি তাদের কবর জিয়ারত করবেন৷
তবে সেই প্রতিজ্ঞা তিনি রাখতে পারবেন কিনা এ নিয়ে তাঁর মধ্যেই দেখা দিয়েছে সংশয়৷