1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দক্ষিণ চীন সাগর

৬ নভেম্বর ২০১২

দক্ষিণ চীন সাগরে সমস্যা লেগেই আছে৷ এতদিন বড় মনে হচ্ছিল জাপানের সঙ্গে চীনের উত্তেজনা৷ আর এখন দেখা যাচ্ছে চীনের কড়াকড়িতে পাশের অন্যান্য দেশের জেলেরাও মহাসংকটে৷

ছবি: AP Photo/Kyodo News

৪৯ দিন ধরে জেলখানায় পড়ে আছেন ত্রান হিয়েন৷ অপরাধ - মাছ ধরা! অবিশ্বাস্য মনে হলেও এটাই সত্য৷ এবং ত্রান হিয়েনদের জীবনে জীবিকার জন্য এমন নিরীহ একটি কাজও অপরাধ এবং সে অপরাধে শাস্তি ভোগ করতে হয় কয়েক বছর ধরেই৷ ৩৩ বছর বয়সি এই ভিয়েতনামি খুব দুঃখ নিয়ে বলছিলেন, ‘‘আমার প্রথম সন্তানের জন্মের সময়ও আমি চীনের কারাগারে বন্দি ছিলাম!''

দক্ষিণ চীন সাগরের কতগুলো দ্বীপ নিয়ে চীনের সঙ্গে বিরোধ না থাকলে এমন দুর্ভাগ্য মেনে নিতে হতো না ত্রান হিয়েনদের৷ ওই অঞ্চলের কিছু দ্বীপ নিয়ে প্রতিবেশি প্রায় সব দেশের সঙ্গেই চীনের বিরোধ৷ জাপানের সঙ্গে বিরোধটা বেশ উত্তেজনা ছড়িয়ে ছিল কিছুদিন আগে৷ সে উত্তেজনা আপাতত প্রশমিত৷ আপাতদৃষ্টিতে অন্তত তা-ই মনে হয়৷ তবে চীন যে এখনো সবগুলো দ্বীপের ওপর তাদের পূর্ণ অধিকারের দাবিতে অটল এবং এ নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুললে বা বিরোধে জড়ানোর সম্ভাবনা তৈরি করলে তা কঠোর হাতে দমন করতে বিন্দুমাত্র দেরি করে না – তারই প্রমাণ ত্রান হিয়েনের মতো জেলেরা৷ গত মার্চে একটি কাঠের তৈরি মাছধরার নৌকার প্রধান মাল্লা হিয়েন ও তাঁর ১০ জন সহযোগীকে আটক করে পিটিয়ে জেলে পোরে চীনা টহলবাহিনী৷

যে দিয়াওউ বা সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে চীন ও জাপানের বিরোধছবি: AP

ভিয়েতনাম সরকার বলছে, গত কয়েক বছরে পার্সেল ও স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জের কাছের সমুদ্র থেকে কয়েকশ ভিয়েতনামি জেলেকে বন্দি করেছে চীন৷ বন্দিদের অনেকেই লি সোন দ্বীপের বাসিন্দা৷ ওই দ্বীপের তিন হাজার পরিবারের আয়ের একমাত্র উৎস মাছ ধরা৷ চীনের কড়াকড়িতে তাঁদের এখন প্রায় না খেয়ে মরার জোগাড়৷

অথচ সরকার তাঁদের সমস্যা সমাধানের কোনো উদ্যোগই নিচ্ছে না৷ উল্টো পার্সেল ও স্পার্টলি দ্বীপপুঞ্জের ওপর নিজেদের দাবি ধরে রাখার জন্য ব্যবহার করছে জেলেদের৷ অঞ্চলটিতে স্থানীয়রা যেন আরো বেশি করে মাছ ধরতে যায় সে ব্যাপারে উৎসাহিত করা হচ্ছে৷ ৫২ বছর বয়সি লি খুয়ান বলছিলেন, ‘‘ওখানে প্রচুর মাছ আছে বলে সরকার পার্সেল ও স্পার্টলি দ্বীপপুঞ্জে আমাদের মাছ ধরতে উৎসাহিত করে৷ মাছ ধরা তো অনেক বছর ধরেই আমাদের প্রধান জীবিকা৷''

কিন্তু ওই জীবিকার টানে সেখানে গেলেই বরণ করতে হয় বন্দি জীবনের অবর্ণনীয় কষ্ট৷ খেয়ে-পরে বাঁচতে হলে সেখানে যেতে হবে আর যাওয়ার পর ভাগ্য সুপ্রসন্ন না হলেই এক রকমের নরকবাস৷ বাঁচার জন্যে নরকবাসের ঝুঁকি না নিয়ে যে উপায় নেই – সে কথা সহজ কথায় বোঝাতে ভিয়েতনামের আরেক জেলে ফাম হোয়াং বলছিলেন, ‘‘তুরং সা এবং হোয়াং সার মতো মাছ শিকারের এলাকাগুলোকে জেলেরা তাঁদের বাড়ির পাশের বাগান বা ধানক্ষেতের মতো মনে করে৷'' দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, তাঁদের সেই বাগান বা ধানক্ষেতে যাওয়ার পথেই এখন সশস্ত্র চীনা টহলদারদের মোতায়েন করা হয়েছে৷

শুধু যে ভিয়েতনামের জেলেরাই এমন অবস্থায়, তা মোটেই নয়৷ ফিলিপিন্সের জেলেরাও একই সংকটের কথা বলে আসছে বহুদিন আগে থেকে৷ আর জাপান আর দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে চীনের সমস্যা তো আরো গভীর৷

এসিবি/ডিজি (এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ