আজকাল কম্পিউটার, ট্যাবলেট বা মোবাইল ফোনের অ্যাপে পছন্দমতো সংগীত সৃষ্টি করা যায়৷ জর্জিয়ার এক শিল্পী সেই পথে না গিয়ে অতি সাধারণ বস্তু ব্যবহার করে অসাধারণ সুর সৃষ্টি করে চলেছেন৷
বিজ্ঞাপন
কোকা নিকোলাডজে ২০১৬ সালে তাঁর প্রথম বিট মেশিন তৈরি করেন৷ সেটির মধ্যে একটি ক্র্যাংক হ্যান্ডেল রয়েছে৷ এ বিষয়ে কোকা বলেন, ‘‘এখানে অতি ক্ষুদ্র এক গিয়ার মোটর রয়েছে, যা স্নেয়ার ড্রাম নকল করে৷ এক ডিসি মোটর বাস ড্রাম নকল করে৷ অতি ক্ষুদ্র এক স্টেপার মোটর ছোট এক স্প্রিং-এর চারপাশে ঘুরে চলেছে৷ সেটিও হাই হ্যাটের নকল করছে৷''
তখন থেকে তিনি তাঁর এই উদ্ভাবনটিকে আরও উন্নত করে তুলেছেন৷ এই যন্ত্র একটি ছন্দ সৃষ্টি করে৷ তখন তিনি কম্পিউটারে সুর সৃষ্টি করেন৷ তাঁর তিন নম্বর বিট মেশিন পুরানো সোডার বোতল ও টেবিল টেনিসের বল দিয়ে তৈরি৷ অসলোর পপ সংগীত মিউজিয়ামে ২০১৭ সাল থেকে সেটি প্রদর্শিত হচ্ছে৷ কোকা নিকোলাডজে নিজের অনুভূতি সম্পর্কে বলেন, ‘‘ছোট সাউন্ডকে সত্যি বড় আকার দিতে পেরে আমি খুবই রোমাঞ্চিত৷ ছোট্ট একটি স্প্রিং নিয়ে কনট্যাক্ট মাইক্রোফোনের উপর রাখা যায়৷ তখন আপনি সেই তার বাজাতে পারেন৷ তারপর সেই শব্দ বিশাল আকার ধারণ করে একটা স্টেডিয়ামের দর্শকদের মাতিয়ে তুলতে পারে৷ তখন দারুণ লাগে৷''
অদ্ভুত বাদ্যযন্ত্রে আধুনিক সুর
02:51
এখন সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে আরও ঘন ঘন বায়না আসছে৷ বর্তমানে বিট মেশিনের জন্য ৩টি বরাত এসেছে৷ কোকা বলেন, ‘‘শেষ পর্যন্ত আমি এই কাজই করতে চাই৷ আমি অদ্ভুত বাদ্যযন্ত্র তৈরি করে সেগুলি বাজাতে চাই৷ এটাই দুনিয়ার সেরা কাজ৷''
তিনি ‘বিট মেশিনস' অ্যালবাম প্রকাশ করার পরিকল্পনা করছেন৷ বড় মঞ্চেও তিনি এই বাজনা বাজিয়েছেন৷ সেপ্টেম্বর মাসে বন শহরে বেটোফেন উৎসবেও তিনি সংগীত পরিবেশন করছেন৷
৫টি অদ্ভূত বাদ্যযন্ত্র, যা আপনাকে বিস্মিত করবে
সংগীতের সঙ্গে যারা জড়িত, তারা জানেন, হাতের কাছে পাওয়া যায় এমন যে কোনো কিছু দিয়েই সুর সৃষ্টি হতে পারে৷ বরফ থেকে শুরু করে সবজি – এমন কিছু বস্তু দিয়ে যে সুর সৃষ্টি করা যায়, জানতেন কি? দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বরফের তৈরি বাদ্যযন্ত্র
বরফের শব্দ অন্য যে কোনো বস্তুর থেকে একেবারেই আলাদা৷ অনেকেই এই সুরকে উষ্ণতার সঙ্গে তুলনা করেন৷ আইস মিউজিক ফেস্টিভেলে প্রতি বছর হাজারো পর্যটক বরফের সুর ও সৌন্দর্য দেখতে হাজির হন৷ এক একটি বাদ্যযন্ত্র তৈরি করতে কমপক্ষে ১২ ঘণ্টা লাগে৷ তবে লক্ষ্য রাখার বিষয় হলো, কনসার্টের আগ পর্যন্ত এটি গলে যায় কিনা, সেটা শিল্পীর ভাগ্যের উপর নির্ভর করে৷
ছবি: DW
নিত্য ব্যবহার্য জিনিস দিয়ে সংগীত সৃষ্টি
স্কটিশ ভিডিও শিল্পী জেমস প্রোভান ইউটিউবে নিজেকে ‘গির২০০৭’ নামে উপস্থাপন করেন৷ তার বিকল্প বাদ্যযন্ত্র দিয়ে তৈরি ক্লিপগুলো ১ কোটি ৭০ লাখ বার দেখা হয়েছে৷ তার ভিডিও ‘হাউজ বিট’ এ নিজের বাবা-মা’র পুরো বাড়িটিকে কিছুক্ষণের জন্য বাদ্যযন্ত্রে পরিণত করেছিলেন তিনি৷
ছবি: DW
ফ্লপি ডিস্ক ড্রাইভ থেকে গান
পোলিশ মিউজিশিয়ান পাওয়েল জাদ্রোনিয়াক কম্পিউটারের ৮টি হার্ড ড্রাইভ ব্যবহার করে এবং দুটি স্ক্যানার যুক্ত করে মিউজিক সৃষ্টি করেন৷ যন্ত্রগুলো থেকে বাজিং, ভাইব্রেটিং এবং চ্যাটারিংয়ের প্রোগ্রাম বানিয়ে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত করে ছোট ছোট সুর সৃষ্টি করেন তিনি৷ তাঁর বাদ্যযন্ত্রের নাম দিয়েছেন ‘ফ্লপোট্রন’৷
ছবি: DW
মার্বেল মেলোডিস
সুইডিশ সুরকার মার্টিন মলিন তাঁর মার্বেল মেশিনটি তৈরি করতে ১৪ মাস ধরে কাজ করেছেন৷ এটি একটি কাঠের বাদ্যযন্ত্র, যার আকার একটি তাঁত যন্ত্রের মতো৷ এর মধ্যে দুই হাজার ইস্পাতের মার্বেল একটি বিশেষ ব্যবস্থায় ঘুরতে থাকে এবং একে অপরের মধ্যে সংঘর্ষের ফলে ভিন্ন ভিন্ন সুর সৃষ্টি হয়৷ ইন্টারনেটে যন্ত্রটির কথা প্রকাশ করার পর তা ভাইরাল হয়ে যায়৷ ভিডিওটি দেখেছেন চার কোটিরও বেশি মানুষ৷
ছবি: Martin Molin
সবজি থেকে সুর
একটি গাজর কীভাবে বাঁশিতে পরিণত হয়? ভিয়েনার ভেজিটেবল অর্কেস্ট্রা একটি কুমড়োকে বানিয়ে ফেলল ড্রাম, সেলারি শাককে গিটার এবং বেল পিপার বা এক ধরনের লম্বা মরিচকে শিং বানিয়ে বাদ্যযন্ত্রে পরিণত করল৷ তবে ভালো সুর সৃষ্টির জন্য অবশ্যই শাক-সবজিগুলো হতে হবে টাটকা৷ ১৯৯৮ সাল থেকে অর্কেস্ট্রাটি বিশ্বব্যাপী কনসার্ট করে আসছে৷ প্রত্যেক শো-এর পর অতিথিদের জন্য ঐ শাক-সবজিগুলো দিয়ে ভেজিটেবল স্টু তৈরি করেন তারা৷