1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সাধারণ শিক্ষার্থীরা জঙ্গিবাদে বেশি জড়াচ্ছে

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৫ জুন ২০১৯

জঙ্গিবাদে জড়ানোর ক্ষেত্রে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের চেয়ে সাধারণ স্কুল, কলেজের বাংলা মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের সংখ্যাটা বেশি৷ অ্যান্টি-টেরোরিজম ইউনিটের গবেষণায় উঠে এসেছে এই তথ্য৷

Indien Moderne Bildungstechnologie
ছবি: Getty Images/AFP/I. Mukherjee

গবেষণায় দেখা গেছে, জঙ্গিবাদে যারা জড়ায় তাদের ৫৬ ভাগ সাধারণ স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী৷ অবশিষ্ট ৪৪ ভাগের মধ্যে মাদ্রাসা থেকে ২২ ভাগ আর ইংরেজি মাধ্যম থেকে ২২ ভাগ জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছে৷

গবেষণাটি পরিচালনা নেতৃত্বে ছিলেন, পুলিশের অ্যান্টি-টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মনিরুজ্জামান। ডয়চে ভেলেকে তিনি জানান, ‘‘২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার লোক জঙ্গি বিরোধী অভিযানে ধরা পড়ে৷ জঙ্গিবাদের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ৩০০ শিক্ষার্থীর ওপর জরিপ করি৷ কিছু সুনির্দিষ্ট প্রশ্নের ভিত্তিতে সার্ভে করা হয়। তাতে দেখা যায়, বাংলা মাধ্যমের শিক্ষার্থীরাই জঙ্গিবাদে জড়াচ্ছে বেশি। পরে গবেষণালবন্ধ ফলকে মিলিয়ে দেখেছি। তাতেও দেখা গেছে, নতুন যারা ধরা পড়ছে তাদের মধ্যে ৫৫ থেকে ৬০ ভাগ বাংলা মাধ্যমের শিক্ষার্থী।'' 

জঙ্গিবাদে বাংলা মাধ্যমের শিক্ষার্থীরাই বেশি জড়াচ্ছে: মনিরুজ্জামান

This browser does not support the audio element.

কারণ ব্যাখ্যায় পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, নানা হতাশা থেকেই জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছেন অনেকে৷ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম বা অনলাইন হলো জড়িয়ে পড়ার একটি ক্ষেত্র৷ ফলে, ইন্টারনেট ব্যবহারের যাদের বেশি, তারা বেশি জড়াচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, ‘‘সাধারণত বাংলা বা ইংলিশ মিডিয়ামে যারা পড়াশোনা করেন তাদের অনলাইন ব্যবহারের সুযোগ বেশি। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের সেটা কম।''
গবেষণায় বলছে, ইন্টারনেটের মাধ্যমে জঙ্গিবাদ বা উগ্রবাদে জড়িয়েছে ৮০ ভাগ৷ বাকিরা পরিচিত কারো মাধ্যমে কিংবা নিজ উদ্যোগে পা রাখছে জঙ্গিবাদে৷

সিগন্যাল, হোয়াটসএ্যাপ, ভাইবারের মতো মাধ্যম ব্যবহার করায় চিহ্নিত করা কঠিন: তানভীর জোহা

This browser does not support the audio element.

আইসিটি বিশেষজ্ঞ ও জঙ্গি বিষয়ক গবেষক তানভীর জোহা বলেন, ‘‘২০০৮ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ফেসবুক ছিলো খেলাফত (জঙ্গিবাদ) ছড়িয়ে দেয়ার জনপ্রিয় মাধ্যম। অনেকগুলো পেজ ছিল। তবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং অভিযানের ফলে এখানে ভাটা পড়েছে। এখন তারা এনক্রিপ্টেড প্লাটফর্মে চলে গেছে। তারা সিগন্যাল, হোয়াটসএ্যাপ, ভাইবার ও টেলিগ্রামের মত মাধ্যম ব্যবহার করছে। আর এটা সুনির্দিষ্ট ও টার্গেটভিত্তিক। চিহ্নিত করা কঠিন।''

বলা হচ্ছে, বাংলা ও ইরেজি মাধ্যমে পড়ুয়াদের ইন্টারনেট প্রাপ্তির সুবিধাটা তুলনামূলক বেশি৷ কিন্তু মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদেরও সেই সুযোগ নেহাত কম নয়৷ স্বেচ্ছ্বাসেবী সংগঠন মুভ ফাউন্ডেশনের জরিপ বলছে, নিজস্ব কম্পিউটার না থাকলেও মোবাইল ফোন ও ট্যাবসহ নানা উপায়ে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ৭৫ ভাগ ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করছে।

জরিপের আরো জানা যায়, দিনে গড়ে দেড় ঘন্টা অনলাইনে সক্রিয় থাকে মাদ্রাসা পড়ুয়ারা৷ বাংলাদেশের ১২টি জেলার ৩৬ কওমি ও আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই জরিপ করা হয়। প্রতিষ্ঠান প্রধান সাইফুল হক ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘মাদ্রাসার নারী শিক্ষার্থীরা অনলাইনে বেশি সময় কাটান।''

ঢাকার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহফুজুল হক জানান, ‘‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলার জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দিই না। তবে তারা ব্যক্তিগত পর্যায়ে বাসায় মোবাইল ফোন বা কেউ কেউ কম্পিউটার ব্যবহার করে। আর তা সেখানে ইন্টারনেট ব্যবহারে কোনো বাধা নেই।''

মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা যাতে বিপদগামী না হতে পারে, সেজন্য নিয়মিত জঙ্গিবাদবিরোধী বয়ান কররার কথা জানান প্রিন্সিপাল। তিনি বলেন, ‘‘ধর্মের সাথে যে জঙ্গিবাদের সম্পর্ক নেই, তা আমরা কোরান হাদিসের রেফরেন্সসহ নিয়মিত তাদের কাছে তুলে ধরি।''

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মজিবুর রহমানের মতে, ‘‘মাদ্রাসা শিক্ষায় ধর্মীয় বিষয় স্পষ্ট, তাই তাদের বিভ্রান্ত করার সুযোগ কম। বাংলা বা ইংরেজি মাধ্যমে সেটা না থাকায় তাদের বিভ্রান্ত করা সহজ। তাই অ্যান্টি-টেররিজম ইউনিটের গবেষণায় যে তথ্য উঠে এসেছে, তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।'‘

তিনি বলেন, ‘‘মাদ্রাসা বা সাধারণ যে ধরনেরই শিক্ষা বলুন না কেন পাঠ্যক্রমে জঙ্গিবাদ বা জঙ্গিবাদ বিরোধী কোনো উপাদান নেই।'' সমাজে জঙ্গিবাদের উপস্থিতি থাকায়, পাঠক্রমে জঙ্গিবাদবিরোধী বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা এবং সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলায় গুরুত্ব দেয়ার কথা বলেন অধ্যাপক মজিবুর রহমান৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ