সান ফ্রান্সিসকোতে সেবা চালুর অনুমতি পেলো রোবোট্যাক্সি
৩১ অক্টোবর ২০২৩
গুগলের ‘ওয়েমো' কোম্পানি এবং ‘ক্রুজ' নামের আরেক কোম্পানি সম্প্রতি এই অনুমতি পেয়েছে৷ তাদের দাবি চালকবিহীন ট্যাক্সি যাত্রী পরিবহন আরও নিরাপদ করবে, কারণ, চালকেরা ক্লান্ত বা অসাবধানও থাকতে পারেন৷
বর্তমানে পরীক্ষার অংশ হিসাবে কয়েকশ গাড়ি যাত্রীদের বিনামূল্যে সেবা দিচ্ছে৷ কিছু গাড়ি শুধু অফপিক সময়ে চলছে৷ তবে শিগগিরই দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা ভাড়া নিয়ে সেবা চালু হবে৷
শ্যারন জোভিনাৎসোর জন্য এটি ভালো খবর৷ কারণ, ওয়েমোর সঙ্গে তার কোম্পানির পার্টনারশিপ আছে৷ একজন অন্ধ ব্যক্তি হিসেবে তিনি বলেন, যাত্রার সময় কোনো চালক না থাকার মানে তার প্রতি বৈষম্য দেখানোরও কেউ থাকবে না৷ ‘লাইটহাউস ফর দ্য ব্লাইন্ড' সংস্থার প্রধান নির্বাহী জোভিনাৎসো বলেন, ‘‘ট্যাক্সি ও রাইডশেয়ার সেবা ব্যবহার করতে গিয়ে আমি একটা বিষয় খেয়াল করেছি৷ চোখে দেখতে পারি না বলে আমি কুকুর নিয়ে চলাফেরা করি৷ কিন্তু অনেক চালক তাদের গাড়িতে কুকুর নিতে চান না৷ তাই দেখা যায়, কুকুর দেখার পর তারা রাইড বাতিল করে দেন৷ তখন আমাকে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়৷ স্বয়ংক্রিয় ট্যাক্সিতে যেহেতু চালক থাকবে না, তাই সেই সমস্যাও হবে না৷''
তবে বিষয়টি সবাই পছন্দ করছেন না৷ ট্যাক্সি চালকেরা বলছেন, এসব গাড়ি তাদের চলার পথে চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে৷ চাকরি হারানোরও আশঙ্কা করছেন তারা৷
এছাড়া সেফ স্ট্রিট রেবেলের মতো গোষ্ঠীও আছে৷ তারা গাড়িমুক্ত এলাকা চায়৷ বিক্ষোভের অংশ হিসেবে তারা স্বয়ংক্রিয় গাড়ির সেন্সর ঢেকে দিচ্ছেন৷ আইনি পদক্ষেপের মুখে যেন পড়তে না হয় সেজন্য একজন অ্যাক্টিভিস্ট পরিচয় প্রকাশ না করে ডিডাব্লিউকে তার বক্তব্য জানিয়েছেন৷ ‘‘একজন চালকের কাছে যেসব সমস্যার সমাধান স্বাভাবিক বিষয়, সেসব সমস্যার মুখোমুখি হলে চালকবিহীন গাড়ি, মনে হয় যেন বিপদে পড়ে যায়৷ দুর্ঘটনা বা ধাক্কা লাগার জন্য এগুলো দায়ী মনে না হলেও যানজটের সময় তাদের আচরণ অন্য গাড়ির চালকদের বিপদের কারণ হতে পারে,'' বলেন তিনি৷
অন্য সমস্যাও হয়৷ যেমন বিভ্রান্ত হলে গাড়ি এক জায়গায় দাঁড়িয়ে যায়৷
এ কারণেই বেশি করে এমন গাড়ি রাস্তায় চলতে দেয়া উচিত বলে মনে করেন কেউ কেউ৷ কারণ তাহলে অভিজ্ঞতা হবে৷ কিন্তু অন্যরা মনে করেন, এ কারণেই স্বয়ংক্রিয় গাড়ি নামানোর পরিকল্পনা বাদ দেয়া উচিত৷ এবং সান ফ্রান্সিসকোর বাসিন্দাদের পরীক্ষা থেকে মুক্তি দেয়া উচিত৷
নতুন প্রযুক্তি আসায় শুধু সান ফ্রান্সিসকো নয়, বিশ্বের সব শহরকেই একটি প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে৷ সেটা হলো, কোন পর্যায়ে এসে একটি শহর সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে, নতুন প্রযুক্তিটা গণহারে ব্যবহারের সময় এসেছে, এবং অনিচ্ছাকৃত ফলাফলের চেয়ে লাভের পরিমাণই বেশি?
ক্যালিফোর্নিয়ার কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এমন সময় চলে এসেছে৷ তবে সান ফ্রান্সিসকোতে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, এই প্রযুক্তি চলে এসেছে, যা এড়ানো যায় না৷ এবং মানুষকে এর প্রভাবের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে৷
জেনেল ডুমালাওন/জেডএইচ