সাপ ও মাছের কাছ থেকে মানুষের অনেক কিছু শেখার আছে৷ তাদের ক্ষমতা নকল করে যন্ত্রপাতি তৈরি করে অনেক সমস্যার সমাধান করা সম্ভব৷ এমন আবিষ্কার তরান্বিত করতে স্কুলপড়ুয়া ও ছাত্রছাত্রীদেরও উৎসাহ দেওয়া প্রয়োজন৷
সেই প্রক্রিয়া বুঝতে তিনিসাপের মাথার খুলির কাঠামো খতিয়ে দেখেছেন৷ তাদের দাঁতের সারি পেছনদিকে বাঁকাভাবে সাজানো৷ তার সঙ্গে কি তাদের গেলার প্রক্রিয়ার সম্পর্ক রয়েছে? অলিভার শ্ভার্ৎস মনে করেন, ‘‘কৌশল হলো, তারা উপর ও নীচের চোয়াল পালা করে নাড়াচাড়া করে৷ পেছনের দিকে সাজানো দাঁতের সারি শিকারকে তখন ধীরে ধীরে পেটের দিকে ঠেলে দেয়৷ সেই প্রক্রিয়ার অনুকরণ করে আমরা দুই পাটি দাঁত তৈরি করেছি, যেগুলি পরস্পরের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টি করে পার্টিকেল ধীরে ধীরে নীচের দিকে ঠেলে দেয়৷
অনেক প্রযুক্তিগত সমাধানসূত্রের ক্ষেত্রে প্রকৃতি অসাধারণ জ্ঞানভাণ্ডার হতে পারে৷ যেমন অস্থিযুক্ত মাছের লেজের বিশেষ গঠন অসাধারণ প্রভাব সৃষ্টি করে৷ অলিভার বলেন, ‘‘সাধারণত আমি চাপ দিলে মাছের শরীর ফুলে উঠে আমার কাছ থেকে সরে যাবে বলে ধরে নেওয়া হয়৷ অথচ ঠিক এর বিপরীতটাই ঘটে৷ সেটি আমার দিকে ফুলে ওঠে৷''
জঙ্গলে সাপ, ব্যাঙ খেয়ে সেনা প্রশিক্ষণ!
থাইল্যান্ডে শুরু হয়েছে ‘কোবরা গোল্ড’ ট্রেনিং৷ থাই সেনার সঙ্গে মিলে কুচকাওয়াজ করছে মার্কিন সৈন্য৷ রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার সৈন্যরাও৷ মূলত জঙ্গলে কীভাবে বেঁচে থাকতে হয়, তারই প্রশিক্ষণ হচ্ছে৷
ছবি: Reuters/A. Perawongmetha
কেউটের রক্ত
ভিয়েতনাম যুদ্ধে মার্কিন সৈন্যবাহিনীর অপদস্ত হওয়ার অন্যতম কারণ ছিল, জল-জঙ্গলের যুদ্ধে তাঁরা প্রশিক্ষিত ছিল না৷ অনেকটা ভিয়েতনামের মতোই জঙ্গল থাইল্যান্ডে৷ মার্কিন সেনা সেখানে জঙ্গলে বেঁচে থাকার প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেছে৷ সেখানেই এক মার্কিন সৈন্য কেউটে সাপের রক্ত পান করছেন৷
ছবি: Reuters/A. Perawongmetha
প্রশিক্ষণ পর্ব
থাই সেনা আধিকারিক দেখাচ্ছেন, কীভাবে জঙ্গলে কেউটে সাপ ধরতে হয়৷ এবং তারপর বিষ বের করে সেই সাপ খেতে হয়৷
ছবি: Reuters/A. Perawongmetha
রক্তপানের পর
কাজটা মোটেই সহজ নয়৷ সাপ মেরে সেই রক্ত পান করা৷ কঠিন সেই কাজটা করে স্বভাবতই খুশি মার্কিন সেনা কর্মকর্তা৷ দিনভর সেই রক্ত লেগে ছিল তাঁর শরীরে এবং পোশাকে৷
ছবি: Reuters/A. Perawongmetha
অ্যামবুশ
দক্ষিণ কোরিয়া এবং মার্কিন সেনারা একত্রে নিয়েছে সমুদ্রের ধারে অ্যামবুশ করার প্রশিক্ষণ৷ জাহাজ থেকে নেমেই কীভাবে শত্রুর সঙ্গে লড়াই শুরু করে দিতে হয়, তা শেখানো হয়েছে তাঁদের৷
ছবি: Reuters/A. Perawongmetha
ব্যাঙ খাওয়া
শুধু সাপ নয়, জ্যান্ত ব্যাঙ এবং অন্যান্য কীটপতঙ্গ কীভাবে ধরে খেয়ে ফেলতে হয়, তারও প্রশিক্ষণ হয়েছে থাইল্যান্ডের জঙ্গলে৷ ছবিতে দেখা যাচ্ছে, আস্ত একটি ব্যাঙ খেয়ে ফেলছেন এক মার্কিন সেনা৷
ছবি: Reuters/A. Perawongmetha
বালির প্রশিক্ষণ
মার্কিন সেনা এবং থাই সেনা একত্রে বালির ওপর যুদ্ধের নানা কৌশল নিয়ে আলোচনা করেছে৷ একত্রে কুচকাওয়াজও হয়েছে৷
ছবি: Reuters/A. Perawongmetha
হাতের উপর শুঁয়ো
জঙ্গল যুদ্ধে বনের পশুপাখি এবং কীটপতঙ্গের সঙ্গে যুঝে চলতে হয় সৈন্যদের৷ কীভাবে বিছে, শুঁয়োপোকার মতো কীটদের সঙ্গে জীবন কাটাতে হয়, তারও প্রশিক্ষণ হয় থাইল্যান্ডে৷ ছবিতে দেখা যাচ্ছে একটি বিছেকে হাতের উপর দিয়ে যেতে দিচ্ছেন কয়েকজন মার্কিন সৈন্য৷
ছবি: Reuters/A. Perawongmetha
7 ছবি1 | 7
তথাকঠিত ‘ফিন-রে' কাঠামো গোলাকার শরীরের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেয়৷ নানাভাবে এই গুণ কাজে লাগানো সম্ভব৷ অলিভার শ্ভার্ৎস এমন এক চিমটা তৈরি করেছেন, যা দিয়ে স্নায়ু বা সংযোগকারী টিস্যুর মতো নরম অংশ যত্ন করে তুলে নিয়ে কোথাও বসানো যায়৷
কিন্তু এই চিমটা বাজারে আনতে তিনি এখনো কোনো বিনিয়োগকারী পান নি৷ অলিভার শ্ভার্ৎস বলেন, ‘‘বায়োনিক্স-এর সমস্যা হলো, সম্পূর্ণ চালু এক প্রোটোটাইপ তৈরি করতে হলে অনেক ধৈর্যের প্রয়োজন৷ তবে এর সুবিধা হলো, প্রায়ই এমন এক উদ্ভাবন পাওয়া যায়, যার প্রভাব হয় সুদূরপ্রসারী৷ কারণ তার নানা প্রয়োগ পাওয়া যায়৷''
প্রকৃতির কাছ থেকে প্রেরণার শিক্ষা তিনি শিশুদেরও দিতে চান৷ যেমন স্টুটগার্ট শহরের চিড়িয়াখানা তথা বোটানিকাল গার্ডেনে বায়োনিক্স বোঝানোর বুথ তৈরি করে তিনি এমন পদক্ষেপ নিচ্ছেন৷ অলিভার বলেন, ‘‘আমরা লক্ষ্য করেছি, যে শিশুরা স্কুলে জীববিদ্যা ক্লাসে নিজস্ব পর্যবেক্ষণের কোনো সুযোগ পায় না৷ এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়োলজির ছাত্রছাত্রীরা বিষয় হিসেবে জেনেটিক্স ও মলিকিউলার বায়োলজি চর্চা করলেও নিজস্ব পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণের পথে যায় না৷ তাই আমরা এক্ষেত্রে উৎসাহ দিতে চাই৷''
তাঁর অভিজ্ঞতা হলো, প্রকৃতির মধ্যে উদ্ভাবনের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে৷ এবার শুধু আবিষ্কারের অপেক্ষা৷
সাবিনে ফ্র্যুবুস/এসবি
অজগর সাপ দিয়ে গা মালিশ
গা ম্যাজম্যাজ করছে? মাসাজ, অর্থাৎ মালিশ করাতে চান? একটা অজগর সাপ যদি আপনার গায়ের ব্যথা দূর করে দেয়, কেমন হয়? ভয় পেলেন? ইন্দোনেশিয়ার একটি স্পা-এ কিন্তু অজগরের ‘সেবা’ নেন অনেকেই৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: Getty Images/U. Ifansasti
শরীর মালিশে অজগর কেন?
অজগর কীভাবে বড় বড় প্রাণী শিকার করে, জানেন? কাছাকাছি পেলে প্রথমে শিকারকে সারা শরীর দিয়ে জড়িয়ে ধরে অজগর৷ তারপর যত জোরে সম্ভব চেপে ধরে৷ বড় ভয়ানক সেই চাপ৷ ফলে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই দম বন্ধ হয়ে মারা যায় সেই প্রাণী৷ তারপর ধীরে ধীরে প্রাণীটিকে গিলে ফেলে অজগর৷ তো এমন ভয়ংকর এক সাপকে দিয়ে কেন মানুষের শরীর মালিশ করানো হয় বালি দ্বীপের ওই স্পা-এ? এর উত্তর এখনো অনেকেরই অজানা৷
ছবি: Getty Images/U. Ifansasti
তবে ভয়ের কিছু নেই
বলা হচ্ছে, অজগর দিয়ে যেভাবে মাসাজ করানো হয়, তাতে নাকি ভয়ের কিছু নেই৷ কারণ প্রথমত, মাসাজ শুরুর আগে অজগরকে পেট পুরে খাওয়ানো হয়৷ পেটে ক্ষিদে না থাকলে অজগর মানুষকে গিলতে যাবে কেন? দ্বিতীয়ত, মাসাজের আগে অজগরের মুখও বন্ধ করে দেয়া হয়, সুতরাং চাইলেও সে কাউকে কামড়াতে বা গিলতে পারে না৷
ছবি: Getty Images/U. Ifansasti
অজগরের মাসাজ উপকারী?
যত অভয়ই দেয়া হোক না কেন, গায়ের ওপরে যখন প্রায় তিন মিটার লম্বা আর আট কেজির মতো ওজনের একটা সাপ ছেড়ে দেয়া হয়, ভয় তো লাগেই৷ সাপের পিচ্ছিল শরীর পিঠে যত নড়াচড়া করে, ততই ভয়ের মাত্রা বাড়তে থাকে৷ সেই ভয়ের কারণে অ্যাড্রেনালিন নিঃসরণের মাত্রা বেড়ে যায়৷ তাতে নাকি শরীরের অনেক উপকার!
ছবি: Getty Images/U. Ifansasti
মনেরও উপকার
অজগরকে কে না ভয় পায়! মাসাজ শেষ হলে সেই ভয়ের জায়গায় মনে ঠাঁই নেয় এক ধরনের মুক্তির আনন্দ৷ কেউ কেউ জানিয়েছেন, মাসাজ নেয়ার আগে তারা সাপের নাম শুনলেই ভয় পেতেন৷ কিন্তু মাসাজ নেয়ার পরে নাকি সেই ভয় কেটে গেছে৷
ছবি: Getty Images/U. Ifansasti
যারা অ্যাডভেঞ্চার ভালোবাসেন
বিশ্বে এমন মানুষের অভাব নেই, যাঁরা বিপদ ভালোওবাসেন৷ অন্যরকম কিছু করে বাড়তি আনন্দ পান তারা৷ এমন অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় মানুষদের জন্য নাকি অজগরের মাসাজ আরো বেশি উপকারী৷ অজগর পিঠে চড়লে নাকি তাদের হরমোনের নিউট্রোট্রান্সমিটার ডোপামিনের মাত্রা বেড়ে যায়৷
ছবি: Getty Images/U. Ifansasti
আছেন রক্ষাকর্তা
মাসাজের সময় কোনো মানুষকে কখনোই জলজ্যান্ত অজগরের কাছে একা ছেড়ে দেয়া হয় না৷ সবসময়ই একজন সুপারভাইজার কাছে থাকেন৷ তার কাজই হলো, অজগর কখনো থেমে যাচ্ছে কিনা, কোনো বিপদ ঘটাতে চাচ্ছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখা৷
ছবি: Getty Images/U. Ifansasti
ব্রিটেন আর ফিলিপিন্সেও...
শুধু ইন্দোনেশিয়া নয়, ব্রিটেন আর ফিলিপিন্সেও সাপ দিয়ে মাসাজ করানো হয়৷ যাবেন নাকি?