ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন ও খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অধ্যাপক তাজমেরী এস ইসলামের মুক্তির দাবি জানিয়েছে বিএনপিপন্থি বিভিন্ন সংগঠন৷ নাহলে আগামী সপ্তাহ থেকে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের৷
বিজ্ঞাপন
২০১৮ সালের একটি মামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সাবেক শিক্ষক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অধ্যাপক তাজমেরী এস ইসলামকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে৷ এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে জাতীয়তাবাদী পেশাজীবীদের সংগঠন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ৷ সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক শওকত মাহমুদ বলেন, ‘‘আজ জেলখানাগুলোতে পেশাজীবীরা আটক আছেন, তারা মত প্রকাশ করতে পারছেন না, মানবাধিকার চর্চা করতে পারছেন না৷ মিথ্যা মামলায় তাদেরকে জেলখানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভয় ধরানোর জন্য তাজমেরী ইসলাম গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷’’
তার মুক্তির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সম্মিলিত পেশাজীবী এক সাপ্তাহের মধ্যে দেখতে চাই তাজমেরী ইসলামকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে কিনা৷ যদি তাকে মুক্তি দেওয়া না হয়, তাহলে রাজপথে আমাদের আন্দোলন শুরু হয়ে যাবে, এই আন্দোলন স্বৈরাচার সরকার পতনের আন্দোলনে রূপান্তরিত হবে৷’’
সাবেক এই শিক্ষকের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের প্যানেল সাদা দলও৷ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘অধ্যাপক তাজমেরী ইসলাম কেবল একজন শিক্ষাবিদ নন, তিনি একজন নারী ও জ্যেষ্ঠ নাগরিক৷ মিথ্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারের প্রেরণের ঘটনাকে আমরা মানবাধিকারের পরিপন্থি বলেও মনে করি৷’’
সাদা দলের আহ্বায়ক পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক লুৎফর রহমান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ‘‘রাজনৈতিক ভিন্নমত দমন এবং বিএনপিকে ধ্বংস করে নিজেদের রাজনৈতিক একাধিপত্য বজায় রাখার জন্য সরকার যে ঘৃণ্য পন্থা অবলম্বন করছে, অধ্যাপক তাজমেরী ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনা এরই অংশ বলে আমাদের ধারণা৷’’
মামলা যখন হয়রানির জন্য
কেউ অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে মামলা হবে৷ সে অনুযায়ী তদন্ত ও বিচার হবে এমনটাই স্বাভাবিক৷ কিন্তু এর ব্যতিক্রমও হয়৷ অপরাধ না করেও মামলায় ফাঁসছেন অনেকে৷ এমন অনেক অভিযোগ আছে৷ অনেক মামলার অভিযোগ হাস্যরসও তৈরি করে৷
ছবি: bdnews24.com
হাস্যকর মামলার একাল-সেকাল
জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গভবনের কাপ, পিরিচ চুরির মামলা দেন মোশতাকের বিরুদ্ধে৷ ট্রাইব্যুনালের বিচারে তাঁর তিন বছরের জেল ও এক লাখ টাকা জরিমানা হয়৷ অব্যাহতি পান ১৯৭৯ সালে ৷ জোট সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ নেতা সাবের হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে দেয়া হয়েছিল প্লেট চুরির মামলা৷ শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহসানুল হক মিলনের বিরুদ্ধে ভ্যানিটি ব্যাগ, স্বর্ণের নেকলেস ছিনতাইয়ের অভিযোগ আনা হয়েছিল মহাজোট সরকারের আমলে৷
ছবি: Fotolia/Mehmet Dilsiz
মৃত ব্যক্তিও আসামি!
২০১৭ সালে ডেঙ্গুতে মারা যান চট্টগ্রামের বিএনপি কর্মী জসিম৷ ২০১৮ সালের অক্টোবরে পুলিশের উপর ককটেল ছুড়ে মারার মামলা হয় তাঁর বিরুদ্ধে৷ ঢাকার চকবাজার থানা বিএনপির আহবায়ক আব্দুল আজিজুল্লাহ মারা গেছেন ২০১৬ সালের মে মাসে৷ প্রায় আড়াই বছর পর তাঁর বিরুদ্ধেও ককটেল ছোড়ার অভিযোগ আনে পুলিশ৷
ছবি: bdnews24.com
অন্ধ প্রবীণের অগ্নিসংযোগ, পঙ্গু ব্যক্তির হামলা!
৭০ বছর বয়স, নেই দৃষ্টিশক্তি৷ তবুও জাতীয় নির্বাচনের আগে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় গাড়ি পোড়ানো মামলার আসামি করা হয়েছিল কেরামত আলীকে৷ শারীরিক প্রতিবন্ধী সুনামগঞ্জের তারা মিয়ার বিরুদ্ধেও চাপাতি হকস্টিক নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগে মামলা করা হয়েছিল প্রায় একই সময়ে৷ ভোটকেন্দ্র দখলের অভিযোগ আনা হয়েছে আশি বছরের প্রৌঢ়ের বিরুদ্ধেও৷ নির্বাচনের আগে পরে এমন অনেক মামলার খবরই এসেছে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে৷
ছবি: Reuters
অজ্ঞাতনামা মামলা
কোনো একটি ঘটনা ঘটলে সেখানে চিহ্নিত ব্যক্তিদের পাশাপাশি নামহীন সংখ্যা দিয়েও অনেককে আসামি করা হয়, যা পরিচিত অজ্ঞাতনামা মামলা হিসেবে৷ সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে এমন অনেক মামলা হয়েছে৷ এধরণের মামলায় বিরোধী দলের কর্মীসহ সাধারণ মানুষকে হয়রানি ও পুলিশের বিরুদ্ধে বাণিজ্যের অভিযোগ আছে৷
ছবি: picture alliance/ZUMA Press/Shariful Islam
নির্বাচনের আগে মামলা
সবশেষ জাতীয় নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে ৪,৪২৯টি মামলা করা হয়েছে৷ যাতে ৪ লাখ ৩৪ হাজার ৯৭৫ জনকে আসামি করা হয় বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি৷
ছবি: AFP/Getty Images/M. Uz Zaman
কোটা বিরোধী আন্দোলন
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির সংস্কারের দাবিতে ২০১৮ সালে আন্দোলন তুঙ্গে উঠে বাংলাদেশে৷ এসময় ৭০০ জনের বিরুদ্ধে অজ্ঞাত মামলা করা হয় বলে খবর বের হয় গণমাধ্যমে৷ পরে অনেককে গ্রেপ্তারও করে পুলিশ৷
ছবি: bdnews24
সড়ক নিরাপত্তার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের হয়রানি
স্কুল ছাত্রীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সড়কে নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন শিক্ষার্থীরা৷ এই আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা, বিশৃঙ্খলা নিয়ে ঢাকা মহানগরে ৪৩টি সহ ৯৫টি মামলা দায়েরের বিষয়ে খবর বের হয় গণমাধ্যমে৷ এই সময়ে গ্রেপ্তার করা হয় প্রখ্যাত ফটোগ্রাফার শহীদুল আলমকে৷ তাঁর বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা করে পুলিশ৷
ছবি: bdnews24
অজ্ঞাত মামলা পোশাক শ্রমিকদের বিরুদ্ধে
ন্যূনতম মজুরি কাঠামোর সমন্বয়ের দাবিতে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে রাস্তায় নামেন তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা৷ পুলিশের সাথে সংঘর্ষে এসময় এক শ্রমিকের মৃত্যুও হয়৷ এই ঘটনায় ২৯টি মামলা করা হয়েছে৷ যেখানে ৫৫১ জনের নামে আর ৩,০০০ অজ্ঞাতনামা শ্রমিককে আসামি করা হয়, যা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করেছিল হিউম্যান রাইটস ওয়াচ৷
ছবি: AFP/Getty Images
মিথ্যা মামলা, সাজানো আসামি
অনেক সময় নাটক সাজিয়েও অনেককে আসামি বানিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী৷ যার সবচেয়ে বড় উদাহরণ একুশে আগস্ট মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া জজ মিয়া৷ সাতটি মামলায় ভুয়া পরোয়ানায় এক কৃষকের ১০০ দিন হাজতবাসের খবরও সম্প্রতি গণমাধ্যমে বেরিয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Munir
9 ছবি1 | 9
মারপিটের মামলার আসামি
বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকালে তাজমেরী ইসলামকে ঢাকায় তার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ ঐদিনই আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন৷ ২০১৮ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মারপিটসহ দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় উত্তরা পশ্চিম থানার এক মামলায় আসামি এই শিক্ষক৷
উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি শাহ মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান ইলিয়াস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তাজমেরী এস ইসলামের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল৷ ওয়ারেন্ট তামিল টিম তাকে আদালতে হাজির করালে আদালত কারাগারে পাঠান৷ কোন মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘ওয়েরেন্টে অত বিস্তারিত লেখা থাকে না৷ আর উনি নেতা বা খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা তাও জানা ছিল না। এখন বিভিন্ন মাধ্যমে শুনতে পাচ্ছি৷’’
তাজমেরী ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এবং বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক৷ তিনি বিভিন্ন মেয়াদে রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি, সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন৷ বর্তমানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তিনি৷
বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান শুক্রবার বিডিনিউজকে জানান, একটি রাজনৈতিক মামলায় তাজমেরী এস ইসলামকে তার উত্তরার বাসা থেকে গ্রেপ্তারের পর বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে তোলা হয়৷ এ সময় তার জামিন আবেদন করা হলে বিচারক তা নাকচ করে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন৷
আদালতের নির্দেশের পর ড. তাজমেরী ইসলামকে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন মহিলা কারাগারের সুপার হালিমা খাতুন৷
এফএস/এডিকে (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)
রাষ্ট্রের দমন কৌশল
বাংলাদেশে যখন যে সরকারই ক্ষমতায় এসেছে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল কিংবা বিরুদ্ধমত দমন করেছে৷ কখনও আইন, কখনও প্রশাসন, কখনও সহযোগী সংগঠনের পেশি শক্তি ব্যবহার করে ভিন্ন মতের মানুষের উপর চালানো হয়েছে নির্যাতন৷
ছবি: Sony Ramany/AFP
জনতার মিছিলে পুলিশের গুলি
সরকার বিরোধী প্রতিবাদ কিংবা মিছিলে পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনা বারবার ঘটেছে বাংলাদেশে৷ এরশাদের আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পুলিশ গুলি করে ছাত্রদের হত্যা করে৷ এমন ঘটনা অব্যাহত ছিল গণতান্ত্রিক সরকারের আমলেও৷ ২০০৬ সালে কানসাটে বিদ্যুতের দাবিতে গণবিক্ষোভে ২০ জন নিহত হয়েছে৷
ছবি: DW/H. U. Rashid Swapan
মিছিল-সমাবেশে বাধা
নব্বইয়ের পর গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারগুলো প্রতিপক্ষকে রাস্তায় প্রতিবাদে বাধা দেয়৷ চলে পুলিশি হামলা, নির্যাতনের ঘটনা৷ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই পরিস্থিতি আরো প্রকট হয়েছে৷ শুধু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নয় নাগরিক সমাজের প্রতিবাদেও বাধা দেয়ার ঘটনা ঘটছে৷
ছবি: bdnews24.com
বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড
বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর হিসেবে ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ক্রসফায়ারের শিকার হয়েছেন ৩৬১ জন৷ গত বছর নিহত হয়েছেন ৪২১ জন, যা আগের বছরের তুলনায় তিনগুণ বেশি৷ এসব ক্রসফায়ারের ঘটনায় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ফাসানোর অভিযোগ আছে৷
ছবি: bdnews24.com
গুম কিংবা নিখোঁজ
ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটসের (এফআইএইচআর) হিসাবে ২০০৯-১৮ পর্যন্ত গুম হয়েছেন ৫০৭ জন৷ এর মধ্যে ৬২ জনের লাশ পাওয়া গেছে, ১৫৯ জনের হদিস মেলেনি৷ গত ১০ বছরে নিজেদের ৩০০ এর বেশি নেতাকর্মী গুম হয়েছে বলে দাবি করেছে বিএনপি৷ (প্রতীকী ছবি)
ছবি: Getty Images/AFP/O. Kose
মামলার হয়রানি
সবশেষ জাতীয় নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে ৪,৪২৯টি মামলা করা হয়েছে৷ যাতে চার লাখ ৩৪ হাজার ৯৭৫ জনকে আসামি করা হয় বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি৷ সেখানে এমনকি মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশের উপর ককটেল ছুড়ে মারার মামলা হয়েছে৷ ভোটকেন্দ্র দখলের অভিযোগ আনা হয়েছে আশি বছরের প্রৌঢ়ের বিরুদ্ধেও৷
ছবি: bdnews24.com
পেশিশক্তির দৌরাত্ম্য
বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলো তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোকে বরাবরই ব্যবহার করে আসছে বিপক্ষ বা ভিন্নমত দমনে৷ সাম্প্রতিক সময়ে রাজনীতিতে এমন পেশিশক্তির ব্যবহার আরও প্রকট হয়েছে৷ ২০১৯ সালে ছাত্রলীগের নির্যাতনে বুয়েটে আবরারের মৃত্যুর ঘটনা সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে৷ ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর ও কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের উপর বারবার হামলার ঘটনা ঘটেছে৷
ছবি: bdnews24.com
নিষ্পেষণমূলক আইন
ভিন্নমত দমনে আশ্রয় নেয়া হয় আইনেরও৷ ২০১৫ সালে করা তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়৷ গণমাধ্যমকর্মী, শিক্ষক, ব্লগার থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে এই আইনে মামলা হয়েছে৷ সেটি বাতিল করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস করা হলে সেখানেও একই ধরনের বিভিন্ন ধারা রাখা হয়৷ এই আইনে আটক হয়ে জেলখানায় বিনা বিচারে মারা যান লেখক মুশতাক আহমেদ৷
ছবি: Reuters/M. Ponir Hossain
গণমাধ্যমের উপর চাপ
বাংলাদেশে এখন বিপুল সংখ্যক গণমাধ্যম থাকলেও তাদের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন আছে৷ বিভিন্ন সময়ে টিভি চ্যানেল, নিউজ পোর্টাল বন্ধ করে দেয় সরকার৷ মালিকানা, বিজ্ঞাপন বন্ধে চাপ দেয়া, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কারণে গণমাধ্যমগুলো নিজেরাই এখন সেলফ সেন্সরশিপ আরোপ করে বলেও অভিযোগ রয়েছে৷
ছবি: Reuters/M. Ponir Hossain
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণ
২০১৯ সালের ২৯ জুন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানান, ঐ বছরের শেষ দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হবে বাংলাদেশ৷ তিনি বলেন, ‘‘রাষ্ট্রের এখন সবচেয়ে বড় ক্ষমতা হচ্ছে রাষ্ট্র ইচ্ছে করলে যে কোনো ওয়েবসাইটকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, এটি বড় অর্জন৷’’
ছবি: picture-alliance/chromorange/C. Ohde
ফোনে আড়িপাতা
সাম্প্রতিক সময়ে সরকার বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মী, বিভিন্ন মানুষের ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনা ঘটছে৷ ইউটিউব বা গণমাধ্যমে সেগুলো ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে, লঙ্ঘন করা হচ্ছে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা৷
ছবি: imago/avanti
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো যা বলছে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২০১৯ সালের মানবাধিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুমের ঘটনায় কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না৷ সভা-সমাবেশ ও বাকস্বাধীতার ওপর নিয়ন্ত্রণ বেড়েছে৷ হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে বিরোধী দলসহ নাগরিকদের প্রতিবাদ ও সংবাদ মাধ্যমের ওপর হামলা, মামলা এবং বাকস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের কথা বলা হয়েছে৷