সাভারে ভবন ধসের ঘটনা ঘটেছে বুধবার সকালে৷ এখনো সেখানে উদ্ধারকাজ চলছে৷ সেই সঙ্গে ব্লগ, ফেসবুকে চলছে বিভিন্ন আলোচনা৷ সামহয়্যার ইন ব্লগে আদনান আমিন অন্য উৎস থেকে নেয়া একটি লেখা শেয়ার করেছেন৷
বিজ্ঞাপন
সেই লেখাতে বলা হয়েছে, ভবন ধসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো বাংলাদেশ যেন এক হয়ে গেছে৷ উদাহরণ হিসেবে বলা হয়েছে, উদ্ধারকাজ যেন নির্বিঘ্নে হতে পারে সেজন্য হরতাল প্রত্যাহার করেছে বিএনপি৷ আর আওয়ামী লীগ সরকার চার কোটি টাকা বরাদ্দ করা ছাড়াও উদ্ধারকাজে নিয়োজিত করেছে সকল বাহিনীকে৷ হেফাজতে ইসলাম মানিকগঞ্জের মহাসমাবেশ স্থগিত করেছে৷ আর পাল্লা দিয়ে রক্ত সংগ্রহ করছে গণজাগরণ মঞ্চ ও ছাত্র শিবিরের কর্মীরা৷
এদিকে, এত বড় ঘটনার পরও প্রথম আলো শুক্রবার সন্ধ্যায় তাদের ‘মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার' অনুষ্ঠান স্থগিত না করায় অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারীকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে৷
সাভারে ‘রানা প্লাজা’ ধসে বহু হতাহত
২৪ এপ্রিল সকাল ৯ টায় সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত নয় তলা ‘রানা প্লাজা’ ধসে পড়ে৷
ছবি: Reuters
আগেই ফাটল দেখা দিয়েছিল
২৪ এপ্রিল সকাল ৯ টায় সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত নয় তলা ‘রানা প্লাজা’ ধসে পড়ে৷ সাভার মডেল থানার ওসি আসাদুজ্জামান জানান, মঙ্গলবার সকালে ফাটল দেখা দেয়ার পরপরই ওই ভবনে থাকা চারটি গার্মেন্ট কারখানা ও ব্যাংক বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল৷ তবে ২৪ এপ্রিল সকালে কারখানায় আবার কাজ শুরু হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বহু হতাহত
১০ মে সকাল পর্যন্ত ধসে পড়া রানা প্লাজা থেকে ১০৩৬টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে৷ এসব লাশের অধিকাংশই পোশাক শ্রমিকদের৷
ছবি: picture-alliance/dpa
‘প্রয়োজনীয় যন্ত্র নেই’
ফায়ার সার্ভিসসহ উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা বলছেন, ব্যাপক ধ্বংসের ঘটনা ঘটেছে৷ এমন ধ্বংসস্তূপ সরানোর মতো প্রয়োজনীয় যন্ত্র নেই৷ এ কারণে উদ্ধারকাজ চালাতে সমস্যা হচ্ছে৷
ছবি: Reuters
এখনো অনেকে আটকা পড়ে আছেন
সাভারে ধসে পড়া বহুতল ভবনে এখনো অনেকে আটকা পড়ে আছেন বলে জানিয়েছেন উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিরা৷ সকালে ভবন ধসের পরপরই স্থানীয়রা উদ্ধার তৎপরতায় এগিয়ে আসেন৷ এরপর ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা উদ্ধার অভিযানে অংশ নেন৷
ছবি: Reuters
রক্ত চাই
ধ্বংসস্তুপ থেকে থেকে উদ্ধার করা শত শত আহতের জন্য প্রচুর রক্ত প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা৷ এজন্য ব্লগ, ফেসবুকের মাধ্যমে সকলকে রক্ত দানে আহ্বান জানানো হয়েছে৷ বিভিন্ন সংগঠনও রক্ত সংগ্রহে নেমেছে৷
ছবি: Reuters
জোর করে ঢোকানোর অভিযোগ
আগের দিন ভবনে ফাটল দেখা দেয়ায় ঐ ভবনে থাকা পোশাক কারখানার শ্রমিকরা কাজে যেতে না চাইলেও মালিকরা তাদেরকে জোর করে ঢুকিয়ে দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে৷
ছবি: Reuters
ইমারত বিধিমালা মানা হয়নি
‘রানা প্লাজা’ ইমারত বিধিমালা সঠিকভাবে অনুসরণ করে নির্মিত হয়নি বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর৷ বুধবার দুপুরে তিনি ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন৷ বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘কিছু হরতাল সমর্থক ভবনটির ফাটল ধরা দেয়ালের বিভিন্ন স্তম্ভ এবং গেট ধরে নাড়াচাড়া করেছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন৷ ভবনটি ধসে পড়ার পেছনে সেটাও একটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে৷'' (ফাইল ফটো)
ছবি: Reuters
হরতাল প্রত্যাহার
উদ্ধার তৎপরতা নির্বিঘ্ন এবং আহতদের দ্রুত চিকিৎসার পথে বাঁধা দূর করতে হরতাল প্রত্যাহার করেছে বিএনপি৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এজন্য বিএনপিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন৷
ছবি: Harun Ur Rashid
সরকারের আশ্বাস
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন৷ এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা, ত্রাণ ও পুনর্বাসনের জন্য যা যা করা দরকার তা করা হবে বলে জানিয়েছে সরকার৷
ছবি: dapd
খালেদার শোক প্রকাশ
ভবন ধসে প্রাণহানির ঘটনায় বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া গভীর শোক প্রকাশ করেছেন৷ উদ্ধারকাজ যথাযথভাবে চালাতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি৷ খালেদা জিয়া শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন৷
ছবি: Reuters
10 ছবি1 | 10
তারেক সালাহউদ্দিনের প্রশ্ন দেশ থেকে কি সম্মান দেখানো উঠে গেল? ‘‘তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের ধ্বজ্জাধারী পত্রিকা প্রথম আলো আজকের দিনে কোটি কোটি টাকা খরচ করে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে – এটা মেনে নেয়ার জন্য খুব একটা প্রস্তুত ছিলাম না৷
‘‘পরে মনে পড়ল, সরকারি দলের সাথে প্রথম আলোর একটা মিল আছে – আওয়ামী লীগের অনেকেই যেমন এখন আর রানাকে চিনতে পারছে না, তেমনি প্রথম আলোও হঠাৎ একদিন তার নিজস্ব পত্রিকা আলপিনকে চিনতে পারেনি৷….টাকার কাছে সবাই অন্ধ; আমার মতো অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারীদের স্ট্যাটাসে প্রথম আলোর কিছুই যাবে আসবে না, তারা আজ উটের মতো নাচবে৷''
এমনই অনেকের ক্ষোভের একটা উত্তর দেয়ার চেষ্টা করেছেন প্রথম আলোর সাংবাদিক ও ফেসবুক ব্যবহারকারী শরিফুল হাসান৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘তিন মাস ধরে আয়োজন করা একটা অনুষ্ঠান হুট করে বন্ধ করে দেয়া খুব কঠিন৷ কারণ শত শত গেস্ট৷ ফের তাদের সময় পাওয়া, অনুষ্ঠানের শিডিউল পাওয়া এসব কঠিন৷ তাই অনুষ্ঠানটা চাইলেও বন্ধ করা যায় না৷ তবে সাভারের ঘটনা যেহেতু শোকের সেই বাস্তবতায় অনুষ্ঠানে নাচ-গান বিনোদন এসব থাকছে না৷ এর বদলে সাভারের ভবন ধসে হতাহতদের প্রতি গভীর শোক, সমবেদনা প্রকাশ করা হবে৷ তাদের জন্য অর্থ সংগ্রহসহ কিছু প্রচষ্টো নেয়া হবে৷''
এরপর অবশ্য তিনি সবার সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেছেন যে, অনুষ্ঠানটা পিছিয়ে দিতে পারলে ভালো হতো৷ কিন্তু সেটা যেহেতু অসম্ভব তাই বাস্তবতাটা মেনে নিতেই হবে৷