1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘সামনে আসছে ভয়াবহ সময়’

২ মে ২০১৪

গ্রীষ্মের শুরুতেই বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে পানির সংকট৷ নদী থেকে ভারতের পানি প্রত্যাহার এবং বাংলাদেশে সচেতনতার অভাব এই সংকটকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে তা উঠে এসেছে ব্লগ ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলির আলোচনায়৷

ছবি: MUNIR UZ ZAMAN/AFP/Getty Images

সামহয়্যার ইন ব্লগে শাহ আজিজ লিখেছেন, ‘‘গত কদিন দেখছি ঢাকার কাটাশুরের একাংশে একটি পানির গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে আর আশেপাশের লোকজন বড় ড্রাম থেকে শুরু করে বদনা পর্যন্ত ভরে নিচ্ছেন৷ এই পানি দিয়ে রান্নাবান্না, হাত-মুখ ধোয়া, পায়খানা এবং মেপে মেপে পান করতে হবে৷ এই অব্যবস্থা স্থায়ী হয়ে গেছে ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে এবং এর স্থায়ী কোনো সমাধান নেই, নেই কোনো উদ্যোগ৷''

একই ব্লগে মোস্তফা কামাল পলাশ লিখেছেন, টাইম মেশিনে চড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময়টিতে ফেরার সুযোগ থাকলে তিনি পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও প্রকৌশল বিষয়ে লেখাপড়া করতেন৷ এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বাংলাদেশের পানি সংকটের বিভিন্ন দিক তুলে এনেছেন৷

তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশে প্রবেশের ঠিক আগ মুহূর্তে ভারত সরকার অন্তর্জাতিক নদীতে বাধ দিয়ে একতরফা পানি প্রত্যাহার করছে শুষ্ক মৌসুমে পশ্চিমবঙ্গে সেচ কাজের জন্য৷

বিভিন্ন গবেষণার বরাত দিয়ে পলাশের লেখায় বলা হয়েছে, বর্তমানে বাংলাদেশে খাবার পানির ৯৭ শতাংশ ও চাষাবাদের ৮০ শতাংশ ভূ-গর্ভস্থ উৎস থেকে আসে৷ পৃথিবীর মোট ব্যবহৃত ভূ-গর্ভস্থ পানির শতকরা ৩৫ ভাগ ব্যবহার করে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও নেপাল৷

বাংলাদেশ গত ২০ বছরে খদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে তার অন্যতম করণ হলো শুকনো মৌসুমে (ফেব্রুয়ারি-মে) অগভীর ও গভীর নলকূপের মাধ্যমে সেচের মাধ্যমে বোরো ধান উৎপাদন৷

‘‘অপরিকল্পিতভাবে ব্যাপক পরিমাণে ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহার করে বোরো ধান চাষ করার ফলে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি যেটা আমাদের জন্য সু-সংবাদ, কিন্তু দুঃসংবাদ হলো আমরা ক্ষতি করেছি আমাদের ভূ-গর্ভস্থ পানির পরিমাণের৷ প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে যে পরিমাণ পানি মাটির নিচে জমা হয় তার চেয়ে বেশি পরিমাণ পানি আমরা মাটির নিচ থেকে তুলে থাকি কৃষিকাজের জন্য৷''

পানি পরিশোধনের সহজ পদ্ধতি

04:40

This browser does not support the video element.

পলাশ লিখেছেন, গত ২০-৩০ বছর ধরে গভীর নলকূপের মাধ্যমে চাষাবাদের পানি তুলতে গিয়ে নদীর পানিও টেনে নেয়া হচ্ছে৷ ফলে নদী পানিশূন্য হয়ে পড়ছে এবং শুকনো মৌসুমে গ্রাম-বাংলার জলাভূমি ও পুকুরগুলোও শুকিয়ে যাচ্ছে৷

তিনি মনে করেন, বুড়িগঙ্গা নদীর তলায় কি পরিমাণ ‘হেভি মেটাল' জামা হয়েছে তা যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি নদীর তলা পরীক্ষা করে বলা সম্ভব নয়৷ বুড়িগঙ্গা নদীর তলা থেকে দূষিত পদার্থ কি পরিমাণে ও কত দিনে ঢাকা ওয়াসার নলকূপে পৌঁছাতে পারে তা জানতে দরকার বৈজ্ঞানিক গবেষণা৷ গবেষণার জন্য দকরার অর্থ ও যোগ্য মানব সম্পদ৷ ... এই মুহূর্তে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ওয়াটার রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট/ইঞ্জিনিয়ারিং' বিষয় চালু করে নদী ও পানি সম্পদ নিয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন৷

তাছাড়া পানি দূষণ ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে গণমাধ্যমেও ব্যাপক প্রচারণা দরকার বলে পলাশ মনে করেন৷

তাঁর এই লেখার প্রতিক্রিয়ায় আশিক হাসান লিখেছেন, ‘‘অভিন্ন নদী নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলোর পরিসংখ্যান নিলে দেখা যাবে লাভের লাভ কিছুই হয়নি বরং ভারত কালক্ষেপণ করে শুধু নিজের পরিকল্পনামাফিক বাঁধ তৈরি করে গেছে যত্রতত্র৷ বাংলাদেশের কোনো আপত্তির মুখে তাঁরা তাঁদের কাজ বন্ধ করেনি৷ ভারতে কোন দল সরকার গঠন করলো তা নিয়ে আমরা হাজার অঙ্ক কষলেও কোনো লাভ নেই, কারণ ভারতের পররাষ্ট্রনীতি দলনির্ভর নয়, বরং রাষ্ট্রের স্বার্থনির্ভর৷''

তিন মনে করেন, সমুদ্রসীমা নিয়ে যেভাবে আন্তজার্তিক আদালতে বিরোধ মীমাংসা হয়েছে, সেভাবে অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা নিয়েও সরকারকে এগিয়ে যেতে হবে৷

মুহাম্মদ এরশাদুল করিম একই লেখার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘‘মালয়েশিয়াতে বৃষ্টির পানি ব্যবহৃত হয়৷ অনান্য উন্নত দেশেও তাই৷ মালয়েশিয়াতে গত প্রায় দুইমাস ধরে পানির সমস্যা চলছিল, কারণ বৃষ্টি ছিল না আর প্রচণ্ড গরমের কারণে সরকার পানি দিতে পারছিল না৷ তখন রেশনিং করে চলেছে৷...তখন বুঝতে পারছিলাম কী ভয়াবহ সময় সামনে আসছে৷''

সংকলন: জাহিদুল কবির

সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ