1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সামনে দুটি বিকল্প – ইইউ এগোবে বা পিছিয়ে যাবে

২২ মে ২০১৯

মে মাসের শেষে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভবিষ্যতের দিশা স্থির হয়ে যাবে৷ একদিকে জাতীয়তাবাদের হাতছানি, অন্যদিকে আরো সমন্বয়ের মাধ্যমে বিশ্বমঞ্চে শক্তিশালী হবার আকাঙ্ক্ষা৷

Stimmzettel Wahl Wahlen Europawahl
ছবি: picture-alliance/dpa/N. Försterling

 ইউরোপীয় পার্লামেন্টে খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী সংসদীয় গোষ্ঠীর প্রধান মানফ্রেড ভেবার সম্প্রতি বলেছেন, ‘‘আগামী ২৬শে মে আমেদের এই মহাদেশের নিয়তি বেছে নিতে হবে৷'' শুধু ভেবার নয়, সব শিবিরের অনেক রাজনৈতিক নেতাই এবারের এই নির্বাচনকে এসপার-ওসপার হিসেবে দেখছেন৷ ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে ভেবার এই নির্বাচনকে ইউরোপপন্থি ও ইউরোপ-বিরোধীদের সংঘাত হিসেবে গণ্য করছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা যে ইউরোপে বসবাস করছি, সেটি একটি ভালো ইউরোপ৷ জাতীয়তাবাদীরা সেই অর্জন নষ্ট করে দেবে, এমনটা আমরা হতে দেবো না৷'' ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলিতে এর আগে সত্যি দক্ষিণপন্থি পপুলিস্ট ও ইউরোপ-বিরোধীদের এমন রমরমা দেখা যায়নি৷ জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী তারা প্রায় ২০ শতাংশ সমর্থন পেতে পারে৷

অর্বান না মাক্রোঁ – কার মডেল অনুসরণ করবে ইউরোপ?

হাঙ্গেরির জাতীয়তাবাদী রক্ষণশীল প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অর্বান মনে করেন, উদারপন্থি ও তাঁর পছন্দের সংকীর্ণ গণতন্ত্রের মধ্যে একটি মডেল বেছে নিতে হবে৷ অর্বান বলেন, উদারপন্থি মডেলের আওতায় ইউরোপের জনসংখ্যা ‘ঘেঁটে দেওয়া হচ্ছে' এবং অভিবাসনের মাধ্যমে সমাজের ইসলামিকরণ করা হচ্ছে৷ এই প্রবণতার মোকাবিলা করতে তিনি জার্মানি, ফ্রান্স, ডেনমার্ক ও ইটালির চরম দক্ষিণপন্থিদের সঙ্গে জোট বেঁধেছেন৷

অর্বান, ইটালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাটেও সালভিনি বা অস্ট্রিয়ার এফপিও দলের বিপর্যস্ত প্রাক্তন প্রধান হান্স ক্রিস্টিয়ান স্ট্রাখে-র মতো কট্টরপন্থি নেতাদের পছন্দের শত্রু হলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ৷মাক্রোঁ সংকীর্ণ  গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে সংগ্রাম ঘোষণা করেছেন এবং ইউরোপের পুনর্জন্ম, সংহতিবোধ ও সহমর্মিতার ডাক দিয়েছেন৷ সেই লক্ষ্যে তিনি ইইউর কাঠামোর সুদূরপ্রসারী সংস্কার চান৷ তাঁর জন্যও ইইউ পার্লামেন্টের নির্বাচন এসপার ওসপারের শামিল৷ তিনি বলেন, ‘‘যারা ইউরোপে বিশ্বাস করেন ও যাদের সেই বিশ্বাস নেই, এবারের নির্বাচনে তাদের মধ্যে সংঘাতই প্রধান বিষয়৷''

অভিবাসনই একমাত্র বিষয় নয়

ইউরোপপন্থি রাজনৈতিক দলগুলির মতে, কর্মসংস্থান, অভিবাসন, জলবায়ু সংরক্ষণ, বাণিজ্য নীতি, বিশ্বমঞ্চে ইউরোপের শক্তিশালী ভূমিকা – আগামী কয়েক বছরে ইইউকে এসব বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হবে৷ এ ক্ষেত্রে রক্ষণশীল শিবিরের মানফ্রেড ভেবার ও তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সমাজতান্ত্রিক শিবিরের ফ্রান্স টিমারমান্সের মধ্যে কোনো মৌলিক মতপার্থক্য নেই৷ দুজনই আফ্রিকার সঙ্গে সহযোগিতার নতুন কাঠামো গড়ে তুলতে চান৷ যেসব দেশ থেকে ইউরোপে শরণার্থীদের ঢল নামছে, সেসব দেশে বিনিয়োগ আরো বাড়াতে চান তাঁরা৷ অন্যদিকে পপুলিস্ট দক্ষিণপন্থিদের একটাই মূলমন্ত্র৷ তারা দুর্ভেদ্য দুর্গ গড়ে তুলে অভিবাসীদের যতটা সম্ভব ইউরোপের সীমানার বাইরে রাখতে চায়৷

পপুলিস্ট দক্ষিণপন্থিরা তাদের ভোটারদের একেবারে ভিন্ন এক ইইউ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে৷ ‘হারিয়ে যাওয়া' ক্ষমতা জাতীয় স্তরে ফিরিয়ে এনে ব্রাসেলসের কর্তৃত্ব খর্ব করতে চায় তারা৷ টিমারমান্স এমন স্বপ্ন উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, ‘‘আমরা ইউরোপের উগ্রবাদীদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেবো না৷'' তিনি ভোটারদের আগামী ৫ বছরে ইউরোপের রূপরেখা বেছে নেবার আহ্বান জানিয়েছেন৷

‘ইইউ-র প্রতিরোধের ক্ষমতা রয়েছে'

ব্রাসেলসে ‘ইউরোপিয়ান পলিসি সেন্টার' নামের থিংক ট্যাংকের বিশেষজ্ঞ ইয়ানিস এমানুইলিডিস মনে করেন, নির্বাচনের পর ইউরোপীয় পার্লামেন্টে খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী, সামাজিক গণতন্ত্রী, উদারপন্থি ও সবুজ শিবিরকে নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে বাধ্য হয়ে এক মহাজোট গড়ে তুলতে হবে৷ তবে তিনি এ প্রসঙ্গে ইইউর অন্তর্নিহিত প্রতিরোধ ক্ষমতার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন৷ তাঁর মতে, ভবিষ্যতেও ইইউ কোনো বৈরি শক্তির হাতে চলে যাবে না৷ আগের মতোই ইইউ-কে জোরালোভাবে নতুন সংকটগুলির মোকাবিলা করতে হবে বলে মনে করেন এমানুইলিডিস৷

ইইউ সংক্রান্ত গবেষক কারেল লানো মনে করেন, নির্বাচনের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং উত্তরের ধনী ও দক্ষিণের গরিব অঞ্চলের মধ্যে ফারাক কমানোর উদ্যোগ নিতে হবে৷ একমাত্র এভাবেই মূলত ইউরোপের দক্ষিণে শক্তিশালী পপুলিস্ট দক্ষিণপন্থি শক্তির প্রভাব প্রতিপত্তি খর্ব করা যাবে৷ একদিকে ইউরোপের অভ্যন্তরীণ বাজারকে আরো শক্তিশালী করতে হবে এবং ইউরোপের বাইরে আরো জোরালোভাবে সক্রিয় হতে হবে বলে মনে করেন লানো৷

গণতন্ত্রের মূহূর্ত আরো উপভোগ করতে হবে

এসপার-ওসপার, নিয়তি, শেষ সুযোগ – এমন সব বুলি ২৩ থেকে ২৬শে মে পর্যন্ত ভোটগ্রহণের সময় অন্তত আংশিকভাবে বেশ নাটকীয় বলে মনে হতে পারে৷ ইউরোপীয় কমিশনের মুখপাত্র মার্গারিটিস স্কিনাস মনে করেন, অবশ্যই এই নির্বাচনের গুরুত্ব রয়েছে৷ কিন্তু তার মাত্রা সম্পর্কেও সচেতন থাকতে হবে৷ ইউরোপীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে দীর্ঘ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তিনি বলেন, প্রতিবার ইইউ পার্লামেন্ট নির্বাচনের আগে এমন বুলি শোনা যায়৷ এমন নাটকীয় উত্তেজনার বদলে ইউরোপে গণতন্ত্রের এই মুহূর্ত উপভোগ করা উচিত বলে মনে করেন স্কিনাস৷

ব্যার্ন্ট রিগার্ট/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ