1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সামরিক সংঘাতে আজারবাইজান-আর্মেনিয়া

২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

দুই প্রতিবেশি রাষ্ট্র আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে৷ বিতর্কিত অঞ্চল নাগর্নো-কারাবাখ এ রোববার দুই পক্ষের মধ্যে লড়াই শুরু হয়েছে৷ দুই দেশের সরকারই এজন্য একে অপরকে দায়ী করেছে৷

ছবি: Armenian Defense Ministry/AP/picture alliance

১৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন নাগর্নো-কারাবাখ সেনাবাহিনীর উপ প্রধান আর্তুর সারকিসিয়ান৷ আহত হয়েছেন শতাধিক৷ তবে হতাহতরা সামরিক নাকি বেসামরিক নাগরিক তা এখনও পরিস্কার নয়৷ 

আজারবাইজানের চারটি সামরিক হেলিকপ্টার ভূপাতিত করার পাশাপাশি, ১০টি ট্যাংক ও ১৫ টি ড্রোনে আঘাত হানা হয়েছে বলে দাবি করেছে আর্মেনিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ এর আগে আজারবাইজান সেখানে বেসামরিক নাগরিকদের উপরে বোমা বর্ষণ করেছে বলেও উল্লেখ করা হয়৷ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘এর পুরো দায় আজারবাইজানের সামরিক-রাজনৈতিক সরকারের উপর বর্তায়৷’’

অন্যদিকে আজারবাইজান বলছে, আর্মেনিয়া নাগর্নো-কারাবাখ এ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে৷ এতে বেসামরিক এবং সামরিক বাহিনীর সদস্য হতাহত হয়েছেন বলে উল্লেখ করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট৷ নিজেদের হেলিকপ্টার ভূপাতিত হওয়া ও ট্যাংকে আর্মেনিয়ার আঘাত হানার দাবি অস্বীকার করেছে আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়৷

অঞ্চলটির বেশ কয়েকটি গ্রাম নিজেরা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বলে উল্টো দাবি করেছে আজারবাইজান৷ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এএফপিকে বলেন, ‘‘আমরা ছয়টি গ্রাম মুক্ত করেছি৷ এর মধ্যে পাঁচটি ফিজুলি জেলায় আর একটি জেবরাইলে৷’’

আজারবাইজানের চারটি সামরিক হেলিকপ্টার ভূপাতিত করার পাশাপাশি, ১০টি ট্যাংক ও ১৫ টি ড্রোনে আঘাত হানা হয়েছে বলে দাবি করেছে আর্মেনিয়া৷ছবি: Armenian Defense Ministry/AP/picture alliance

সামরিক আইন জারি

দুই পক্ষের লড়াইয়ে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নাগর্নো-কারাবাখ এর স্টেপানাকেয়ার্ট শহর৷ সেখানকার বাসিন্দাদের নিরাপদে থাকতে বলেছে শহর কর্তৃপক্ষ৷ বেশ কয়েকটি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আহত হয়েছেন অনেকে৷

অঞ্চলটিতে সামরিক আইন জারির ঘোষণা দিয়েছেন কারাবাখ এর প্রেসিডেন্ট আরাইক হারুতিউনিয়ান ৷ দেশজুড়ে সামরিক আইন জারির ঘোষণা দিয়েছেন আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশেনিয়ানও ৷

ফেসবুকে প্রকাশিত এক ভিডিওতে নিকোল পাশেনিয়ান দাবি করেছেন, আজারবাইজানের একনায়কতান্ত্রিক সরকার আর্মেনিয়ার জনগণের উপর যুদ্ধ ঘোষণা করেছে৷  ‘‘আমরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত,’’ বলেন তিনি৷

ইউরোপীয় কাউন্সিলে প্রেসিডেন্ট শার্ল মিসেল এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে দুই পক্ষকে লড়াই বন্ধের আহবান জানিয়েছেন৷ টুইটার বার্তায় তিনি লিখেছেন, কোন রকম শর্ত ছাড়া আলোচনার টেবিলে বসাই এই মুহুর্তে একমাত্র পথ৷ একই বার্তা দিয়েছে ফ্রান্স, জার্মানিও৷

আজারবাইজানের পাশে তুরস্ক

গত কয়েক মাস ধরেই অঞ্চলটিতে দুই দেশের উত্তেজনা চলছিল৷ সম্ভাব্য লড়াইর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া, ককেশাস অঞ্চল বিশেষজ্ঞ সিলভিয়া স্টোবার এমনটা বলেছেন ডয়চে ভেলেকে৷ তিনি বলেন, তুরস্কের সহযোগিতা পেয়ে আজারবাইজানের নেতৃত্ব সেখানে সংঘাতে জড়ানোর বিষয়ে উৎসাহী হয়ে ওঠে৷ অন্যদিকে রাশিয়া থেকে অস্ত্র আমদানি করে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ছিল আর্মেনিয়াও৷

এরিমধ্যে এই সংঘাতে সরাসরি আজারবাইজানের প্রতি সমর্থন দিয়েছে তুরস্ক৷ হামলার জন্য আর্মেনিয়াকে দায়ী করে বিবৃতি দিয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়৷ ‘‘আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার এই লড়াইয়ে আমরা আমাদের আজারবাইজানের ভাইদের সব রকমের সহযোগিতা দিব,’’ এক বিবৃতিতে এভাবেই বাকুর সরকারকে আশ্বস্ত করেছেন তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলুসি আকার৷

অন্যদিকে দুই পক্ষকে অনতিবিলম্বে সংঘাত থামিয়ে আলোচনায় বসার আহবান জানিয়েছে রাশিয়া৷

সংঘাতের সূচনা যেখান থেকে

২০১৬ সালের পরে রোববারই প্রথম আজারবাইজান-আর্মেনিয়ার মধ্যে বড় ধরনের লড়াই শুরু হল৷ সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পর থেকেই এই অঞ্চলে দুই দেশের বিরোধ চলছে৷ ১৯৯০ এর দশকে আর্মেনিয়ান নৃগোষ্ঠী আজারবাইজানের কাছ থেকে কারাবাখ দখল করে৷ এ নিয়ে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে সেসময়ই৷ শুরু হয় যুদ্ধ, যাতে প্রাণ হারিয়েছেন ৩০ হাজার মানুষ৷

১৯৯৪ সালে দুই পক্ষের মধ্য যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সরাসরি সংঘাতের ইতি ঘটে৷ ২০১০ সালে ফ্রান্স, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রর মধ্যস্থতায় শান্তি চুক্তির উদ্যোগ ভেস্তে যায়৷

নিজেদের অঞ্চল পুনরায় দখলে বেশ কয়েকবারই হুমকি দিয়েছে আজারবাইজান৷ নিজেদের স্বাধীনতা ঘোষণা করলেও নাগর্নো-কারাবাখ অনেকটাই আর্মেনিয়ার সহযোগিতার উপর নির্ভরশীল৷ অঞ্চলটিকে সামরিকভাবে রক্ষার কথা প্রকাশ্যেই বলে আসছে আর্মেনিয়াও৷

এফএস/এআই (এএফপি, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ