দু’টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বিবেচনায় নিন৷ রাজন ও ত্বকী হত্যা৷ রাজনের ঘটনা ২০১৫ সালের৷ ত্বকীরটি ২০১৩’র৷ রাজন হত্যায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় হয়েছে৷ আর ত্বকীর ক্ষেত্রে এখনও আদালতে অভিযোগপত্র জমা হয়নি৷
বিজ্ঞাপন
রাজনকে পাশবিকভাবে নির্যাতন করে হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল৷ দাবি উঠেছিল হত্যাকারীদের বিচারের৷ ফলে মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই বিচার সম্পন্ন করা গেছে৷ কিন্তু ত্বকীর ক্ষেত্রে তেমনটি হয়নি৷ কারণ এই হত্যাকাণ্ডের হয়ত কোনো ভিডিও নেই৷ কিংবা থাকলেও সেটি সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি৷
অবশ্য তর্কের খাতিরে কেউ বলতেই পারেন রাজন হত্যার সঙ্গে সমাজের কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত না থাকায় আইন প্রয়োগ করা গেছে৷ কিন্তু ত্বকী হত্যার সঙ্গেতো সরকারি দলের সাংসদ শামীম ওসমানের পরিবারের সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে৷
২০১৫ সালে ফেসবুক, টুইটারে যা সাড়া জাগিয়েছে
২০১৫ সালে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অনেক কিছু ঘটেছে৷ সন্ত্রাসী হামলার পর মানুষের প্রতিবাদ, একাত্মতার পাশাপাশি শরণার্থীদের নিয়ে আলোচনা ছিল সারা বছর৷ এখানে থাকছে গত ১২ মাসে আলোচিত ১২টি হ্যাশট্যাগের কথা৷
ছবি: picture-alliance/empics/D. Lipinski
জানুয়ারি: #জেসুইশার্লি
জানুয়ারি মাসে ফরাসি ভাষায় হ্যাশট্যাগ #জেসুইশার্লি, যার অর্থ ‘আই অ্যাম শার্লি’ বা ‘আমি শার্লি’ সারাবিশ্বে ট্রেন্ড করেছে৷ প্যারিসে শার্লি এব্দো পত্রিকার কার্যালয়ে সন্ত্রাসী হামলায় ১২ ব্যক্তি নিহতের ঘটনার পর হ্যাশট্যাগটি ছড়িয়ে পড়ে৷
ছবি: CHARLIE HEBDO
ফেব্রুয়ারি: #দ্যড্রেস
কালো এবং নীল নাকি সাদা এবং সোনালি? একটি পোশাকের রং নিয়ে ফেব্রুয়ারি মাসে বিভক্ত হয়ে যায় গোটা ইন্টারনেট বিশ্ব৷ তবে #দ্যড্রেস ব্যবহার করে ব্যাপক, আলোচনা, টুইট, পোস্টের পরও জানা যায়নি পোশাকের রং আসলে কোনটা৷ আপনার কী মনে হয়?
ছবি: tumblr
মার্চ: #জার্মানউইংস
গত মার্চে জার্মান উইংসের ফ্লাইট ৪ইউ৯৫২৫ ফরাসি আল্পসে বিধ্বস্ত হলে ১৫০ ব্যক্তি প্রাণ হারান৷ পরবর্তীতে জানা যায়, বিমানটি সহ-পাইলট আন্দ্রেস ল্যুবিৎস ইচ্ছাকৃতভাবে বিমানটি বিধ্বস্ত করেছিলেন৷ গোটা বিশ্বে এই ঘটনা আলোচিত হয়েছে #জার্মানউইংস হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Kneffel
এপ্রিল: #ব্ল্যাকলাইভসম্যাটার
গত এপ্রিলে দুই নিরস্ত্র কৃষ্ণাজ্ঞ ব্যক্তি, ওয়াল্টার স্কট এবং ফ্রেডি গ্রে, যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে নিহত হন৷ তাঁদের মৃত্যু গোটা দেশে প্রতিবাদের সূচনা করে, সৃষ্টি হয় #ব্ল্যাকলাইভসম্যাটার হ্যাশট্যাগ৷ পরবর্তীতে আরো অনেক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে হ্যাশট্যাগটি ব্যবহার হয়েছে৷ সাক্যুলে ২০১৫ সালে এটি টুইটারে ব্যবহার হয়েছে ৯০ লাখের বেশি বার৷
ছবি: Reuters/A. Latif
মে: #হোমটুভোট
মে মাসে আয়ারল্যান্ডে সমকামীদের বিয়ে নিয়ে গণভোটের আয়োজন করা হয়৷ সেসময় এই হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে অন্যত্র থাকা আইরিশরা ভোট দিতে ঘরে ফেরার কথা জানান৷ গণভোটে সমকামিদের বিয়ে বৈধ করার পক্ষে ৬০ শতাংশের বেশি ভোট পড়ে৷
ছবি: Reuters/C. McNaughton
জুন: #সেলফিউইথডটার
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত জুনে মেয়ের সঙ্গে বাবার সেলফি ইন্টারনেটে পোস্ট করতে ভারতবাসীকে অনুরোধ করেন৷ এরপর অগুনতি গর্বিত পিতা #সেলফিউইথডটার হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে মেয়ের সঙ্গে তোলা ছবি পোস্ট করেছেন৷ হ্যাশট্যাগটি শুধু ভারত নয়, গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে৷
ছবি: www.narendramodi.in
জুলাই: #গ্রিফারেন্ডাম
গ্রিসের ঋণ সঙ্কট ২০১৫ সালের অন্যতম আলোচিত বিষয় ছিল৷ জুলাইয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রেন্ড করে হ্যাশট্যাগ #গ্রিফারেন্ডাম৷ কৃচ্ছ্বতাসাধনের বিনিময়ে আরো আন্তর্জাতিক ঋণ নেয়া হবে কিনা সেটা নির্ধারণে এই গণভোটের আয়োজন করা হয়৷ বলাবাহুল্য, গ্রিসের অধিকাংশ মানুষ তাতে না ভোট দিয়েছিল৷ বরং ইউরোজোন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত দেয় তারা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/K. Nietfeld
আগস্ট: #রিফিউজিসওয়েলকাম
২০১৫ সালে ইতিহাসের সর্বোচ্চ সংখ্যক শরণার্থী দেখেছে বিশ্ব৷ প্রায় দুই কোটি মানুষ নিজের বসতভিটা ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে এবছর৷ #রিফিউজিসওয়েলকাম ব্যবহার করে অগুনতি মানুষ শরণার্থীদের গ্রহণে ইউরোপের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷ ইউরোপীয়রাও হ্যাশট্যাগটি ব্যবহার করে বিভিন্ন সাহায্য কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Rumpenhorst
সেপ্টেম্বর: #আইস্ট্যান্ডউইথআহমেদ
যখন ১৪ বছর বয়সি একটি ছেলেকে তার ব্যাগ থাকা ঘড়িতে বোমা ভেবে ক্লাসরুম থেকে বের করে দেয়া হয় এবং গ্রেপ্তার করা হয়, তখন বিষয়টি অনলাইনে পৌঁছাতে বেশি দেরি লাগেনি৷ টুইটারে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা থেকে শুরু করে বিশ্বের নামি-দামি অনেক ব্যক্তিত্ব আহমেদ মাহমুদের পাশে দাঁড়ান, সূচনা হয় #আইস্ট্যান্ডউইথআহমেদ হ্যাশট্যাগের৷
অক্টোবরে টিউশন ফি বাড়ানোর প্রতিবাদে রাস্তায় নামে দক্ষিণ আফ্রিকার শিক্ষার্থীরা৷ সপ্তাহব্যাপী প্রতিবাদ, পুলিশের হামলার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা টিউশন ফি বাড়ানোর পরিকল্পনা স্থগিত করেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Hendricks
নভেম্বর: #প্রেফরপ্যারিস
প্যারিসের ব্যঙ্গাত্মক ম্যাগাজিন শার্লি এব্দোতে হামলার প্রায় একছর প্যারিসে আবারো সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারান ১৩০ ব্যক্তি, আহত ৩৫০ জনের বেশি৷ এই ঘটনা গোটা বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়৷ #প্রেফরপ্যারিস ব্যবহার করে ভুক্তভোগীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন গোটা বিশ্বের মানুষ৷
ছবি: Reuters/Charles Platiau
ডিসেম্বর: #কপ২১
ডিসেম্বরে সবচেয়ে বড় ইস্যু ছিল জলবায়ু সম্মেলন৷ প্যারিসে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন ঘিরে কার্যত সারা বছরই আলোচনায় ছিল #কপ২১ হ্যাশট্যাগ৷
ছবি: picture-alliance/empics/D. Lipinski
12 ছবি1 | 12
হতে পারে এটি একটি কারণ৷ তবে যদি ত্বকী হত্যার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত হতো তাহলে হয়ত ঐসব মাধ্যম ব্যবহারকারীরা তা নিয়ে বেশি বেশি আলোচনা করতো৷ ফলে আইনি ব্যবস্থার উপর তার একটি প্রভাব পড়তে পারতো৷
এরপর ধরা যাক তনু হত্যা মামলার বিষয়টি৷ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুর হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছিল সেনানিবাস এলাকায়, গত ২০ মার্চ৷ সেনানিবাস হওয়ার কারণে এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সেনা পরিবারের লোকজন জড়িত থাকার অভিযোগ থাকায় শুরুতে এই হত্যাকাণ্ডটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে৷ কিন্তু তনু হত্যার প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ, প্রতিবাদের খবর সামাজিক মাধ্যমের কারণে সারা দেশে ছড়িয়েছে৷ ফলে যাঁরা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন সেটি সম্ভব হয়নি৷ এই হত্যা মামলার এখনও সুরাহা না হলেও অন্তত পুরো দেশবাসী সেটি সম্পর্কে এখন ওয়াকিবহাল৷
পাঠক, দর্শকের ক্ষমতা বাড়িয়েছে সামাজিক মাধ্যম
তনু হত্যার ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমের ভূমিকা এটাই প্রমাণ করছে যে, আগে যেমন পাঠক ও দর্শকদের কোন বিষয় নিয়ে ভাবতে হবে, সেটি ঠিক করে দিত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া, এখন সেটি হয়ে গেছে উল্টো৷ অর্থাৎ এখন পাঠক ও দর্শকদের চাহিদাই অনেকক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে ঠিক করে দিচ্ছে কোন বিষয় গুরুত্ব দিয়ে ছাপতে হবে কিংবা প্রচার করতে হবে৷
এছাড়া লাইক ও শেয়ারের এই যুগে পাঠক ও দর্শকরা যা পছন্দ করেন, গণমাধ্যমগুলোকে এখন সেরকম খবরই প্রকাশ করতে হচ্ছে৷
মোবাইল ফোনে আসক্ত? বুঝবেন যেভাবে...
স্মার্টফোনে অতি আসক্তি এক ধরণের রোগ৷ যাঁরা মোবাইল হাতে না থাকলে অস্থির হয়ে যান, বিজ্ঞানীরা বলছেন তাঁরা ‘নোমোফোবিয়া’-য় আক্রান্ত৷ চিনে নিন এ রোগের কিছু লক্ষণ৷
ছবি: Fotolia/Picture-Factory
ব্যাটারির চার্জ ফুরালেই আতঙ্ক
যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা কিছু মানুষের মধ্যে স্মার্টফোনের আসক্তির এমন তীব্রতা লক্ষ্য করেছেন যা রীতিমতো বিস্ময়কর৷ তাঁরা দেখেছেন, কিছু লোক মোবাইলের চার্জ শেষ হয়ে যাচ্ছে দেখলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, যেন মোবাইল বন্ধ হয়ে গেলে জীবনই অচল৷ এমন হলে বুঝতে হবে আপনিও নোমোফোবিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন বা অচিরেই হবেন৷
ছবি: picture-alliance/chromorange
ইন্টারনেট-নির্ভরতা
কিছু লোক ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়া এক মুহূর্তও থাকতে নারাজ৷ স্মার্টফোনের ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে জানলেই ওয়াই-ফাই জোন-এ যাওয়ার জন্য তাঁরা হা-হুতাশ শুরু করেন৷ এমন সবারও মোবাইল আসক্তি বাড়তে বাড়তে ‘নোমোফোবিয়া’-র সীমা ছুঁয়েছে বলে ধরে নেয়া যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Schutt
ইন্টারনেট থাকতেই হবে?
কোথাও বেড়াতে যাওয়ার আগে সবার আগে কী কী জানতে চান? ‘‘ওখানে ইন্টারনেট আছে?-’’এই প্রশ্ন করেন? যদি মনে হয়, যেখানে ইন্টারনেট সংযোগ নেই সেখানে বেড়াতে যাওয়া একদম উচিত নয়, তাহলে ‘নোমোফোবিয়া’ আপনাকেও গ্রাস করছে৷
ছবি: Colourbox
‘স্ট্যাটাস’ না দিতে পারলে হতাশ
ফেসবুক বা সামাজিক যোগাযোগের অন্যান্য মাধ্যমে প্রতিদিন ‘স্ট্যাটাস’ না লিখলেও অনেকের একদমই চলে না৷ মনে হয়, খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ করা হয়নি৷ এমন হওয়াটাও খারাপ কথা, তখন বুঝতে হবে ‘নোমোফোবিয়া’ আপনাকেও পেয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Lei
আরেক ‘সর্বনাশ’
ধরুন, ফোন করতে পারছেন না, এসএমএস-ও না, ফোন বা এসএমএস আসছেনওনা আপনার কাছে৷ কী হয় তখন? স্বাভাবিক পরিস্থিতিতেও খুব অসহায় লাগে? তাহলে আপনাকে নিয়েও চিন্তা আছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
রিচার্জ করাতে পারেননি....
প্রি-পেইড সিম ব্যবহার করেন এমন অনেকে ফোনের ‘ক্রেডিট’ শেষ হলে, অর্থাৎ ফোন বা এসএমএস করার উপায় না থাকলেই মহাদুশ্চিন্তায় পড়ে যান৷ তখন মনে রাখতে হবে, মোবাইল ফোন ছাড়া এক সময় পৃথিবীর সবারই জীবন চলতো, এ যুগেও কয়েক ঘণ্টা বা কয়েকটা দিন নিশ্চয়ই চলবে৷
ছবি: PeJo/Fotolia
ঘুমের সময় অন্তত অন্য কিছু ভাবুন.....
স্মার্টফোনে মানুষ এতটাই নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে যে কারো কারো রাতে মোবাইল ফোনে একটা হাত না রাখলে ঠিকমতো ঘুমই হয় না৷ নোমোফোবিয়া-র চূড়ান্ত লক্ষণ এটা৷ সুতরাং এই অভ্যাস ছাড়ুন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/T. Marttila/Lehtikuva
7 ছবি1 | 7
সাংবাদিকের সূত্র
সম্প্রতি জার্মানির মিউনিখে এক বন্দুকধারী গুলি চালিয়ে নয়জনকে হত্যা করে৷ ঘটনাটি যখন ঘটছিল তখন প্রায় সব আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে একটি ভিডিও গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করা হয়৷ টুইটারে শেয়ার হওয়া ঐ ভিডিওতে হত্যাকারীকে গুলি চালাতে দেখা গেছে৷ এভাবে সাংবাদিকরা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের অনেক কন্টেন্টকেই সূত্র হিসাবে ব্যবহার করছেন৷
এছাড়া ফেসবুক, টুইটার থাকায় অনেক মামলাই এখন সহজে ও দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান করা যাচ্ছে৷ অথচ ‘হিলসবোরো দুর্ঘটনার' কথা ধরুন৷ আজ থেকে ২৭ বছর আগে ইংল্যান্ডের হিলসবোরো স্টেডিয়ামে এক দুর্ঘটনায় লিভারপুল ফুটবল ক্লাবের ৯৬ জন সমর্থক প্রাণ হারিয়েছিলেন৷ এতদিন পর্যন্ত পুলিশ এই দুর্ঘটনার জন্য সমর্থকদেরই দায়ী করে আসছিল৷ কিন্তু গার্ডিয়ানের এক সাংবাদিক বিস্তারিত তদন্তের পর সেদিনের ঘটনায় পুলিশের গাফিলতির বিষয়টি তুলে ধরেন৷ এরপর সম্প্রতি আদালত দুর্ঘটনার জন্য পুলিশকে দায়ী করে রায় দেন৷ অথচ একবার ভাবুন, ২৭ বছর আগে যদি আজকের মতো স্মার্টফোন আর সামাজিক মাধ্যম থাকতো তাহলে কি রায়ের জন্য এতদিন অপেক্ষা করতে হত?
আছে নেতিবাচক দিকও
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম থাকায় এখন সাংবাদিকতায় যে শুধু ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে তা নয়৷ এর কিছু নেতিবাচক দিকও আছে৷ অনেক গণমাধ্যমই এখন শুধু লাইক আর শেয়ারের দিকে ঝুঁকে পড়ায় হালকা খবর প্রকাশ ও প্রচারের দিকে তাদের ক্ষমতার একটি বড় অংশ ব্যয় করছে৷ ফলে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সহ সচেতনতামূলক অনেক বিষয় নিয়ে খবর প্রকাশের হার কমে যাচ্ছে৷
এছাড়া সামাজিক মাধ্যমে এখন একটি বিষয়ের উপর নানা ধরণের খবর প্রকাশিত হচ্ছে৷ এর মধ্যে যে কোনটি সত্য আর কোনটি মিথ্যা কিংবা গুজব, তা বের করতে সাংবাদিকদের অনেক সময় ব্যয় করতে হচ্ছে৷ যেমন গত বছর নভেম্বরে ফ্রান্সে সন্ত্রাসী হামলা চলার সময় এক পর্যায়ে গুজব রটেছিল যে, ল্যুভ মিউজিয়ামেও (যেখানে ‘মোনালিসা' আছে) হামলা হয়েছে, আর প্রেসিডেন্ট ফ্রসোয়াঁ ওলঁদ স্ট্রোক করেছেন! গণমাধ্যমগুলোকে সেই সময় এমন গুজব খতিয়ে দেখতে হয়েছে৷
এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে রিপাবলিকান দলের কংগ্রেস অনুষ্ঠানের সময় ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বর্তমান ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামার বক্তব্য নকল করার অভিযোগ ওঠে৷ সেদিনই টুইটারে অন্য আরেকটি টুইট ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়৷ তাতে দেখা যাচ্ছে, বর্তমান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০১২ সালে ডেমোক্রেটিক দলের কনভেনশনে তাঁর স্ত্রীর দেয়া বক্তব্য নিয়ে একটি টুইট করেছেন৷ সেই একইরকম টুইট এবার করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পও! কিন্তু আসলে বিষয়টি অন্য৷ ট্রাম্পের টুইট ঠিক থাকলেও ওবামা ঐ সময় এরকম টুইট করেননি! ওবামার টুইটটি একটু খেয়াল করলেই দেখা যায়, সেখানে তারিখ হিসাবে ২০১২ সালের ১৯ জুলাইয়ের কথা বলা আছে৷ কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ঐ সময় ডেমোক্রেটদের কনভেনশনই অনুষ্ঠিত হয়নি!
খেয়াল করে দেখুন টুইটটি কিন্তু ৪৩২ বার রিটুইট হয়েছে!
শেষ কথা
নতুন কিছু এলে তার ইতিবাচক ও নেতিবাচক দু'টি দিকই থাকে৷ কথাটি নতুন প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য৷ যেমন কম্পিউটার, স্মার্টফোন আসায় যেমন সুবিধা হয়েছে তেমনি এর খারাপ দিকও আছে অনেক৷ আপনি কোন দিকটি নেবেন সেটা পুরোপুরি নির্ভর করছে আপনার উপর৷ একই কথা বলা যায় সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেও৷
আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷