সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার উসকানি দিচ্ছে একটি উগ্রবাদী গোষ্ঠী৷ মিয়ানমারে মুসলমানদের ওপর বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নির্যাতনের ভুয়া ছবি ও তথ্য ছড়িয়ে প্রতিশোধ নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছে তারা৷
বিজ্ঞাপন
নানা ধরণের ছবি সম্পাদনা ও ফটোশপ-এ কারসাজি করে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলামানদের ওপর বৌদ্ধদের হামলা ও নির্যাতনের চিত্র বলে তা প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে৷ এছাড়া তার সঙ্গে তারা জুড়ে দিচ্ছে নানা কাল্পনিক তথ্য৷ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও এ সব ভুয়া ছবি ও তথ্যের উদ্ধৃতি দেয়া হচ্ছে৷
যেসব ভুয়া ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, তার মধ্যে একটি ২০০৪ সালে থাইল্যান্ডে বিক্ষোভকারীদের দমন করার ছবি৷ ২০১০ সালে চীনে ভূমিকম্পের পর তিব্বতের বৌদ্ধদের উদ্ধার করা মৃতদেহ, ২০১০ সালে কঙ্গোতে গ্যাস ট্যাংকার বিস্ফোরণে দগ্ধ মানুষ, ২০১২ সালে দিল্লির একটি সড়কে এক তিব্বতি যুবকের নিজ শরীরে আগুন লাগিয়ে দৌঁড়ানোর ছবি, খেলনা বন্দুক নিয়ে খেলারত এক বার্মিজ শিশুর আলোকচিত্র, চীনের সাংহাই প্রদেশে ভূমিকম্পে নিহতদের লাশের ছবিও রোহিঙ্গা নির্যাতেনের ছবি বলে প্রচার করা হচ্ছে৷ এমনকি শ্রীলঙ্কায় এক ধর্ষিত নারীর দেহের ছবিকেও রোহিঙ্গা নারীর দেহ বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে৷
রোহিঙ্গাদের ‘যুদ্ধের’ যেন শেষ নেই
ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়ায় রোহিঙ্গাদের প্রবেশের ঘটনা ঘটেই চলেছে৷ অনেক বাংলাদেশিও আছেন তাঁদের মাঝে৷ থাইল্যান্ডে গিয়ে কবরেও ঠাঁই হয়েছে অনেকের! আজকের ছবিঘরটি তাঁদের নিয়েই৷
ছবি: Reuters/R: Bintang
আটকে পড়া
গত ১০ মে চারটি নৌযানে করে ইন্দোনেশিয়ার আচে প্রদেশে প্রবেশ করে ৬০০ রোহিঙ্গা৷ একই সময়ে লাংকাওইতে প্রবেশ করে প্রায় এক হাজার রোহিঙ্গা৷ সমুদ্র থেকে স্থলে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ তাঁদের ঘিরে ফেলে৷ ভাগ্যান্বেষণে দেশ ছাড়া মানুষগুলো এখনো মুক্ত নয়৷
ছবি: Reuters/R. Bintang
ক্লান্ত
মানবপাচারকারীরা তাঁদের ছেড়ে যাওয়াতে সমুদ্রবক্ষে বিপদেই পড়েছিলেন রোহিঙ্গারা৷ আনুমানিক সপ্তাহ খানেক সমুদ্রপথে ঘুরে অবশেষে ভীষণ ক্ষুধার্ত এবং ক্লান্ত অবস্থায় তাঁরা ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছান৷ দীর্ঘ অর্ধাহার, অনাহারে অসুস্থ হয়ে পড়েন অনেকে৷ তাঁদের চিকিৎসা চলছে৷
ছবি: Reuters/R: Bintang
ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রা
প্রতিবছর এভাবেই মালয়েশিয়া বা ইন্দোনেশিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে শত শত রোহিঙ্গা৷ মিয়ানমার ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কিছু বাংলাদেশিও থাকেন সব সময়৷ ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী তোলায় অনেক নৌযান ডুবে যায় সাগরে, সলিলসমাধি হয় অনেকের৷ জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, এ বছরের প্রথম তিন মাসে ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ছেড়েছেন অন্তত ২৫ হাজার রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি৷
ছবি: Asiapics
ওদের কোনো দেশ নেই!
বৌদ্ধপ্রধান দেশ মিয়ানমারে ৮ লক্ষের মতো রোহিঙ্গা মুসলমানের বাস৷ তবে সংখ্যাটা দ্রুতই কমছে৷ বৌদ্ধদের সঙ্গে দাঙ্গার কারণে দেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন অনেকেই৷ মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে স্বীকারই করে না৷ তাদের মতে, রোহিঙ্গারা ‘বাংলাদেশি অভিবাসী’৷ আবার বাংলাদেশে আশ্রয় নিলে ঐতিহাসিক কারণেই তাঁদের মিয়ানমার থেকে আগত বহিরাগতের মর্যাদা দেয় বাংলাদেশ৷
ছবি: Reuters/R: Bintang
আধুনিক দাস-বাণিজ্য
মানবপাচারকারীদের কাছে সমুদ্রপথে বাংলাদেশ ছাড়া রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশিরা যেন ক্রীতদাস৷ মাত্র ২০০ ডলারের বিনিময়ে নির্বিঘ্নে মালয়েশিয়ায় পৌঁছে দেয়ার কথা বলে নৌযানে তুললেও যাত্রীদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হয়৷ খেতে না দেয়া, ছোট্ট জায়গায় গাদাগাদি করে থাকতে বাধ্য করা, শারীরিক নির্যাতন – বলতে গেলে সব ধরণের অত্যাচারই চলে তাঁদের ওপর৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/S. Yulinnas
থাইল্যান্ড নিয়ে আতঙ্ক
রোহিঙ্গারা থাইল্যান্ডেও যান৷ জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, ২০১২ সালে আড়াই লাখ মানুষ অবৈধভাবে থাইল্যান্ডে প্রবেশ করেছেন৷ অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্য থাইল্যান্ড অবশ্য একেবারেই নিরাপদ ঠিকানা নয়৷ মানবপাচারকারীরা সে দেশে নিয়ে অভিবাসন প্রত্যাশীদের জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবি করে৷ মুক্তিপণ না দিলে মেরেও ফেলা হয়৷ সম্প্রতি মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে বেশ কিছু গণকবরের সন্ধান পেয়েছে থাই সরকার৷
ছবি: Reuters/D. Sagolj
পরিত্যক্ত
থাইল্যান্ড সরকারের অভিযান শুরুর পর অনেক রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশিকে গভীর জঙ্গলে ফেলে পাচারকারীরা পালিয়ে যায়৷ মালয়েশিয়া সীমান্তের কাছের জঙ্গল থেকে উদ্ধার করে এ পর্যন্ত অন্তত শ’ খানেক অভিবাসন প্রত্যাশীকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে থাই কর্তৃপক্ষ৷
ছবি: AFP/Getty Images/Str
7 ছবি1 | 7
সম্প্রতি সাগরে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিদের উদ্ধারের বিষয়ে সৃষ্ট জটিলতার পর, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে এই অপপ্রচার শুরু হয়েছে৷ একটি গোষ্ঠী এগুলোকে সংঘবদ্ধভাবে ফেসবুকে ‘পোস্ট' দেয়ার পর অনেকেই না বুঝে তা শেয়ার এবং নানা মন্তব্য করছেন৷ প্রতিশোধ নেয়ার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানাচ্ছেন তারা৷
তবে এর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেই আবার প্রতিবাদ হচ্ছে৷ যেসব ছবি কারসাজি করে রোহিঙ্গাদের বলে চালানো হচ্ছে, তার মূল ছবি এবং আসল ঘটনাও প্রকাশ করছেন কেউ কেউ৷ এ সব ছবি দেখে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন তাঁরা৷
একজন ব্লগে লিখেছেন, ‘‘ফেসবুক, ব্লগে দীর্ঘদিন যাবৎ কিছু লোক তাদের অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য ফটোশপ বা ক্রপ করে ছবি পোস্ট দিয়ে বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা করছে৷ আমাদের মধ্যে অনেকেই তাদের ফাঁদে পা দিয়ে এই সব ভুয়া ছবি নিয়ে আলোচনা করি, ফেসবুকে শেয়ার করি, উত্তেজিত হই৷ মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানরা নির্যাতিত তা সারা বিশ্ব জানে, অনেকেই প্রতিবাদে সোচ্চার আছেন৷ তবে তাতে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের ভ্রুক্ষেপ নেই৷ এই সুযোগে অনেকেই মিয়ানমারে মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের ফটোশপ করা ভুয়া ছবি দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে৷ অনেকক্ষেত্রে তারা সফল ও হচ্ছে৷ এমনই কিছু ছবি শেয়ার করা হলো, যাতে ভুয়া তথ্যযুক্ত ছবির পাশে আসল তথ্য সমৃদ্ধ ছবি দেয়া হয়েছে৷''
এ নিয়ে সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট এবং সাংবাদিক বাধন অধিকারী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এটা স্পষ্ট যে একটি মহল পরিকল্পিতভাকে এ সব ভুয়া ছবি এবং তথ্য ছড়াচ্ছে৷ তাদের ‘টার্গেট' সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়৷ এ সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে৷ তবে সরকারের উচিত এ সব অপপ্রচার নিয়ে দেশের মানুষকে সচেতন করা৷ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অপপ্রচারের জবাব দেয়ার জন্য সরকারেরও উচিত এই মাধ্যম ব্যবহার করা৷''
তিনি বলেন, ‘‘এর আগে একই ধরণের অপপ্রচার হয়েছে৷ তবে এ ধরণের অপপ্রচার রোধ করা না গেলে যে কোনো সময় বড় ধরণের অঘটন ঘটে যেতে পারে৷''
বাংলাদেশে শরণার্থী, বাংলাদেশের শরণার্থী
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা, ইউএনএইচসিআর-এর এক প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বের শরণার্থী আশ্রয়দাতা দেশের তালিকায় নবম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ৷ তেমনি বাংলাদেশ থেকেও অনেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশে শরণার্থী হয়ে যাচ্ছেন৷
ছবি: Reuters
বাংলাদেশ নবম
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর ‘গ্লোবাল ট্রেন্ডস-২০১৩’ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদনে বলছে, বিশ্বের শরণার্থী আশ্রয়দাতা দেশের তালিকায় বাংলাদেশের স্থান নবম৷ প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের অর্থনীতির তুলনায় ধারণক্ষমতার দিকে থেকে বাংলাদেশ পৃথিবীর নবম শরণার্থী আশ্রয়দাতা দেশ৷
ছবি: Shaikh Azizur Rahman
কতজন শরণার্থী?
দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশে দুটি সরকারি শরণার্থী শিবিরে ৩০ হাজারের মতো মিয়ানমারের (রোহিঙ্গা) শরণার্থী বসবাস করছে বলে জানিয়েছে ইউএনএইচসিআর-এর প্রতিবেদন৷ শিবিরের বাইরে আছে আরও দুই থেকে পাঁচ লাখ অনিবন্ধিত ব্যক্তি৷
ছবি: AP
আশ্রয়প্রার্থী
হ্যাঁ৷ বাংলাদেশেও কেউ কেউ আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন৷ ইউএনএইচসিআর ওয়েবসাইটের বাংলাদেশ পাতায় এমন আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা নয়জন বলে জানানো হয়েছে৷ ২০১৪ সালের ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত সংখ্যাটা এমন ছিল বলে উল্লেখ করা হয়৷
ছবি: DW/Shaikh Azizur Rahman
বাংলাদেশের শরণার্থী
উন্নত জীবনের আশায় বাংলাদেশ থেকে অনেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাচ্ছেন৷ অনেকক্ষেত্রে তাঁরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাগর পথে রওনা দেন৷ কেউ গন্তব্যে পৌঁছে গ্রেপ্তার হয়ে ফিরে আসেন৷ কেউ বা শরণার্থী পরিচয় পান৷ বাংলাদেশের এমন শরণার্থীর সংখ্যা ৯,৮৩৯ জন৷
ছবি: Reuters
বাংলাদেশের আশ্রয়প্রার্থী
উন্নত বিশ্বে কোনোভাবে ঢুকে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনার চল অনেকদিন ধরেই চলছে৷ জাতিসংঘের হিসেবে বাংলাদেশের এমন আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা ২২,১২৮ জন৷ সংখ্যাটা ২০১৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রযোজ্য৷
ছবি: Reuters
স্বপ্নের শুরু টেকনাফে
বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়ার মতো দেশে যাওয়ার চেষ্টা করেন অনেক বাংলাদেশি৷ এ জন্য তাঁরা দালালদের অনেক অর্থও দিয়ে থাকেন৷ তাঁদের এই যাত্রা শুরু হয় টেকনাফ থেকে৷
ছবি: DW/Shaikh Azizur Rahman
ছোট নৌকা থেকে বড় নৌকায়
টেকনাফ থেকে প্রথমে ছোট নৌকায় যাত্রা শুরু হয়৷ তারপর একসময় মাছ ধরার বড় নৌকা বা কার্গোতে যাত্রীদের তুলে দেয়া হয়৷ সাধারণত অক্টোবর থেকে পরবর্তী পাঁচ মাসকে সমুদ্র যাত্রার জন্য সঠিক সময় বলে বিবেচনা করা হয়৷
ছবি: Asiapics
খাবার, পানির অভাব
ইউএনএইচসিআর-এর একটি প্রতিবেদন বলছে, যাঁরা সাগর পথে বঙ্গোপসাগর পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করেন তাঁদের অনেকে খাবার ও পানির অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন৷ এছাড়া দালালরা অনেক সময় তাঁদের সঙ্গে খারাপ আচরণও করে৷
ছবি: Reuters
8 ছবি1 | 8
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহারকারী খোরশেদ আলম ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘এই অপপ্রচারের মাত্রা দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে, এটা পরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে৷ তবে আগের চেয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহারকারীরা সচেতন হয়েছেন৷ তাঁরা যে কোনো তথ্য এখন যাচাই করে দেখতে চান৷ কারণ তাঁরা জানেন যে, ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের সব ছবি বা তথ্য সঠিক নয়৷'' তবে তিনি মনে করেন, ‘‘এই সব অপপ্রচারের বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করতে মূল ধারার সংবাদমাধ্যমেরও ভূমিকা রাখা প্রয়োজন৷''
এই অপপ্রচারের কারণে বাংলাদেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায় বিশেষ করে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকায় বসবাসকারীরা আতঙ্কে আছেন৷ চট্টগ্রামের সাংবাদিক হামিদ উল্লাহ ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘একটি মহল সব সময়ই সুযোগের অপেক্ষায় থাকে৷ তারা এ ধরণের পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চালায়৷ অবশ্য এবার আগে থেকেই পুলিশ প্রশাসনসহ সুশীল সমাজ সতর্ক অবস্থানে আছে৷''
২০১২ সালে মিয়ানমারে জাতিগত সংঘর্ষের পর কক্সবাজারের স্থানীয় মুসলমানদের একাংশ পরিকল্পিতভাবে বৌদ্ধদের ওপর হামলা করে৷ এ হামলায় অংশগ্রণকারীদের অধিকাংশই ছিল রোহিঙ্গা মুসলমান৷ ফেসবুকে এক বৌদ্ধ যুবক ইসলামকে অবমাননার ভুয়া অভিযোগ তুলে এ হামলা করা হয় তখন৷
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার কুশুম দেওয়ান জানান, ‘‘সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভুয়া ছবির বিষয়টি আমাদেরও চোখে পড়েছে৷ আমাদের বিশেষজ্ঞ টিম একটি উসকানিমূলক প্রচারণাকারীর নেটওয়ার্ক চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেছে৷''
তিনি বলেন, ‘‘বিষয় গুরুতর হওয়ার ফলে কোনো অভিযোগ পাওয়ার অপেক্ষায় না থেকে আমরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করছি৷''
তিনি জানান, ‘‘আমরা সংখ্যালঘু বিশেষ করে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার ব্যাপারে সচেতন এবং সতর্ক আছি৷ কোনো গোষ্ঠী যাতে এই অপপ্রচারের সুযোগ নিতে না পারে, আমরা সে ব্যাপারে কাজ করছি৷''