1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ন্যাটো হামলার ১৫ বছর

ভ্লাদিমির মিনিচ/এসবি২৪ মার্চ ২০১৪

আজ থেকে ঠিক ১৫ বছর আগে ন্যাটো সার্বিয়ার উপর বিমান হামলা শুরু করেছিল৷ কসোভোয় আলবেনীয় জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অপরাধ বন্ধ করাই ছিল এই অভিযানের উদ্দেশ্য৷ কিন্তু এর ফলে অনেক নিরীহ মানুষেরও মৃত্যু হয়, যার জীবন্ত সাক্ষী দুটি গাছ৷

Bildergalerie Kosovo Krieg 15 Jahre Grdelicka Klisura
১৫ বছর আগে ন্যাটো সার্বিয়ার উপর বিমান হামলা শুরু করেছিলছবি: picture-alliance/dpa

সার্বিয়ার ভারভারিন শহরে সেতুর পাশে এই দুটি গাছ ইতিহাসের সবচেয়ে দুঃখজনক অধ্যায়ের সাক্ষী৷ দিনটা ছিল রৌদ্রোজ্জ্বল সুন্দর এক রবিবার৷ হাটে মানুষের ভিড়৷ অর্থোডক্স ধর্মীয় উৎসবের কারণে মানুষের সমাগম ছিল বেশি৷ সকালে একবার সাইরেন বেজেছিল বটে, কিন্তু মানুষ তাতে কান দেয় নি৷ মাস দুয়েক ধরেই বোমা বর্ষণ চলছিল৷ আশেপাশে কোনো সৈন্য বা সামরিক স্থাপনাও ছিল না৷ তাই ভয়ের কোনো কারণ দেখেনি উপস্থিত মানুষেরা৷

ছবি: Yugoslav Army/RL

সেদিনকার ঘটনা স্পষ্ট মনে আছে শহরের মেয়র জোরান মিলেনকোভিচের৷ সঙ্গে ছিল ১৫ বছরের মেয়ে সানিয়া ও তার দুই বান্ধবী৷ সেতুর উপরই ছিল সবাই৷ আকাশে উদয় হলো ন্যাটোর বোমারু বিমান৷ হাই-টেক বোমায় বিধ্বস্ত হয়ে গেল সেতুটি৷ তিনটি মেয়েই মারাত্মক আহত হয়েছিল৷ সানিয়া আর বেঁচে ফেরেনি৷ হামলার পর হতভম্ব মানুষ আহতদের সাহায্য করতে এগিয়ে গিয়েছিলেন৷ কিন্তু আচমকা আর্তনাদ শোনা গেল – ‘পালাও, ওরা আবার আসছে!'৷ ভাঙা সেতুর উপর আবার হামলা চালালো ন্যাটোর বিমান৷ নিহত ১০, আহত ৩০৷

ঘটনার পর ন্যাটোর মুখপাত্র জেমি শেয়া বলেছিলেন, ‘‘সব সময় অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে জয়ের মূল্য চোকাতে হয়৷'' অর্থাৎ ভারভারিন শহরে বোমা হামলার শিকার মানুষ ‘কোলল্যাটারাল ড্যামেজ' বা অনিচ্ছাকৃত ক্ষয়ক্ষতির অংশমাত্র৷ সার্বিয়ার নেতা স্লবোদান মিলোসেভিচের সরকার কসোভোর আলবেনীয় জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যে অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছিল, তার মোকাবিলা করাই ছিল প্রধান লক্ষ্য৷ অন্যদিকে সার্বিয়ার সূত্র অনুযায়ী ন্যাটোর হামলায় প্রায় ২,৫০০ নিরীহ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল৷ ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ'-এর সূত্র অনুযায়ী নিহতের সংখ্যা প্রায় ৫০০৷ কিন্তু ভারভারিন-এর হামলার মতো অনেক ঘটনাই যে অপ্রয়োজনীয় ছিল, তা স্পষ্ট হয়ে গেছে৷

হামলায় ভারভারিন শহরের সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলছবি: picture-alliance/dpa

ভারভারিন-এর ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ অবশ্য হাল ছাড়েননি৷ বার্লিনে এক আইনজীবীর সাহায্যে তাঁরা ন্যাটোর সদস্য দেশ হিসেবে জার্মানির কাছে ৮০ লক্ষ ডয়চে মার্ক ক্ষতিপূরণ দাবি করেছিলেন৷ তাঁদের বক্তব্য ছিল, ভারভারিন-এর সেতুর কোনো সামরিক গুরুত্ব না থাকা সত্ত্বেও সে দিন তার উপর হামলা চালানো হয়েছিল৷ হামলাকারীরা অবশ্যই জানতো যে হামলায় শুধু নিরীহ মানুষই হতাহত হবে৷ শহরটি রাজধানী বেলগ্রেড এবং কসোভো – দুটি স্থান থেকেই প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত৷ সেখানে কোনো সামরিক সংঘাতও ঘটে নি৷ জার্মানির আদালত অবশ্য এই অভিযোগ গ্রহণ করেনি৷ সামরিক জোটের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে জার্মানির একক দায়িত্ব প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি৷ ভারভারিন-এর মানুষ সেই আশাও করেননি৷ তাঁরা মূলত বিষয়টিকে রাজনৈতিক স্তরে নিয়ে গিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন৷ শহরের মেয়র জোরান মিলেনকোভিচ মনে করেন, ভারভারিন সম্পর্কে গোটা বিশ্বের সংবাদ মাধ্যমের আগ্রহও একটা বড় পাওনা৷ বিশ্বের মানুষ ন্যাটোর আগ্রাসনের বাস্তব জানতে পারুক, এটাই তিনি চেয়েছিলেন৷

স্লবোদান মিলোসেভিচছবি: picture-alliance/dpa

ভারভারিন-এর হামলার দশ দিন পর মিলোসেভিচ শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন, যার আওতায় তাঁর সৈন্যরা কসোভো ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ