সার্বিয়ায় অবহেলিত প্রাণীদের আশ্রয়কেন্দ্র
১২ জানুয়ারি ২০২৪
জেনি নামের সাদা ঘোড়াটিকে কসাইখানা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে৷ জেনি সার্বিয়ার মধ্যভাগে লাপোভোর ঘোড়া সুরক্ষা কেন্দ্রের প্রথম বাসিন্দা৷ গোটা বলকান অঞ্চলে ‘স্টারো ব্রদো' একমাত্র এমন প্রতিষ্ঠান৷ সেই ঘোড়া সুরক্ষা কেন্দ্রের মালিক ভিয়োলেতা জোভিচ বলেন, ‘‘যে সব ঘোড়া আর বাঞ্ছিত নয়, আর কাজে লাগছে না, দুর্ব্যবহারের শিকার অথবা সেগুলির কথা মালিক ভুলেই গেছে – এমন প্রাণীদের সুরক্ষা ও ভালোবাসার একটা ঠাঁই দরকার৷ ঘোড়া এমন বাসা পেলে পরিবারের অংশ হয়ে উঠতে পারে৷''
২০১৫ সাল থেকে ‘স্টারো ব্রদো' ৮০-টিরও বেশি ঘোড়া ও গাধা উদ্ধার করেছে৷ বর্তমানে নয়টি ঘোড়া ও দুটি গাধা সেখানে আশ্রয় পেয়েছে৷ ছয়টি শুকর ও একটি মোষও উদ্ধার করা হয়েছে৷ বেদনাদায়ক অতীত জীবনের পর সব ক'টি প্রাণী আপাতত নিরাপদে রয়েছে৷ আশ্রয় কেন্দ্রের মালিক ও স্বেচ্ছাসেবীরা সেগুলির দেখাশোনা করছেন৷ জোভিচ বলেন, ‘‘প্রাণীগুলির কাহিনি ভিন্ন৷ সরকারি প্রাণীসম্পদ কর্তৃপক্ষের হাতে বাজেয়াপ্ত প্রাণী থেকে শুরু করে নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে মালিকের জমা দেওয়া প্রাণী এখানে রয়েছে৷ অনেক মানুষ আবার একজোট হয়ে ঘোড়া কিনেছেন৷ পরে সেগুলি আর সামলাতে পারেন নি৷ আমাদের এথানে প্রয়োজনীয় পরিবেশ থাকায় যত্ন নিতে আমরা প্রাণীগুলি গ্রহণ করি৷ সেগুলির ডাক্তারের পরিচর্যা, সামাজিক জীবনসহ অনেক কিছুর প্রয়োজন হয়৷''
মাসের শেষ সপ্তাহান্তে সেখানে ‘ওপেন ডে' পালিত হয়৷ অসংখ্য মানুষ প্রাণীগুলি দেখতে আসেন৷ কেউ কেউ ঘোড়া চড়তে চান, বড় প্রাণী সম্পর্কে ভয় কাটাতে চান অথবা নিছক আনন্দ উপভোগ করতে চান৷ বেলগ্রেডের বাসিন্দা স্রদজান স্টইকোভিচ নিজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলেন, ‘‘আমরা চার জন প্রথম বার এখানে এসেছি৷ দারুণ লাগছে৷ এই অসাধারণ মানুষগুলি এখানে যা করছেন এবং কত ভালোভাবে প্রাণীগুলির দেখাশোনা করছেন, তা দেখলে মনটা ভালো হয়ে যায়৷''
জেনির ভাগ্য ভালো ছিলো৷ সসেজে পরিণত না হয়ে সে এখন থেরাপির ঘোড়া হিসেবে মানুষকে সাহায্য করছে৷ ঘোড়া সুরক্ষা কেন্দ্রের মালিক ভিয়োলেতা জোভিচ বলেন, ‘‘জেনির স্বভাবচরিত্র ও কিছু গুণাগুণের ভিত্তিতে আমরা তাকে ও অন্য দুইটি ঘোড়াকে নিয়ে হিপোথেরাপি, থেরাপিউটিক্যাল রাইডিং ইত্যাদির পরিকল্পনা করছি৷ এভাবে এই স্থাপনা ভবিষ্যতে আর শুধু ঘোড়া সুরক্ষা কেন্দ্র থাকবে না৷ আমরা কোনো না কোনো ভাবে সম্প্রসারণ ঘটিয়ে সমাজের জন্য ভালো কিছু করতে চাই৷''
সার্বিয়ায় এখনো ঘোড়া দিয়ে বিভিন্ন কাজ করানো হয়৷ মালিকরা প্রায়ই প্রাণীগুলির ঠিকমতো যত্ন নেন না, এমনকি দুর্ব্যবহারও করেন৷ ভিওলেতা সেই প্রবণতা বদলাতে চান৷ বিপদে পড়া প্রাণীর সহায়তার পাশাপাশি তিনি পশু কল্যাণ সম্পর্কেও সচেতনতা বাড়াতে চান৷
ইয়েলেনা জুকিচ-পেইয়িচ/এসবি