1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সার্বিয়ায় আবিষ্কৃত গণকবর

নেমানইয়া রুইয়েভিচ / আরবি১০ মে ২০১৪

সম্প্রতি সার্বিয়ায় একটি গণকবর আবিষ্কৃত হয়েছে৷ এর ফলে শয়ে শয়ে কসোভো-আলবেনীয় মানুষের খোঁজ পাওয়া যেতে পারে, যারা যুদ্ধ শেষে ১৯৯০ দশকের শেষ দিক থেকে নিখোঁজ রয়েছেন৷

Serbien Massengrab in Batajnica
ছবি: ANDREJ ISAKOVIC/AFP/Getty Images

১৯৯৯ সালে কসোভো যুদ্ধে হেরে যাওয়ার পর বেলগ্রেডের সেনাবাহিনী একটি শেষ কাজ সম্পন্ন করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে৷ তা হলো বেসামরিক কসোভো আলবেনীয়দের মরদেহ সার্বিয়াতে এনে লুকিয়ে ফেলা৷ নিজেদের অপরাধের বিস্তৃতি গোপন করাই ছিল তাদের লক্ষ্য৷

কসোভোর রক্তাক্ত সংঘর্ষে ১৩,৫০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়৷ এর মধ্যে বেশিরভাগই কসোভো-আলবেনীয়৷ গত ১৫ বছরে ১,২০০ কসোভো-আলবেনীয়র মৃতদেহ আবিষ্কৃত হয়৷ ১,৫০০ ‘নিখোঁজ' রয়েছেন বলে তালিকাবদ্ধ করা হয়েছে৷

সম্ভবত দ্বিতীয় বৃহত্তম গণকবর

সম্প্রতি কসোভো সংলগ্ন দক্ষিণ সার্বিয়ার গ্রাম রুডনিচায় একটি সরকারি নির্মাণ কোম্পানির পুরানো প্রস্তরখনিতে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শুরু হয়েছে৷ এক সাক্ষীর ধারণা, সেখানে ৪০০ মৃতদেহ থাকতে পারে৷ গত বছর রুডনিচায় ছয়টি মৃতদেহের অবশিষ্টাংশ পাওয়া গিয়েছে৷ দুই জনের ডিএনএ পরীক্ষা করে জানা গিয়েছে, এইগুলি যুদ্ধে নিখোঁজ ব্যক্তিদের দেহাবশেষ৷

এখন এই জঘন্য অপরাধ কীভাবে সংঘটিত হয়েছিল, তার প্রমাণাদি পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে৷ বলেন প্রধান প্রত্নতত্ত্ববিদ আন্ড্রেই স্টারোভিচ৷ তাঁর মতে, ‘‘যে ট্রাকটি লাশগুলি বহন করেছে, সেখানে নিশ্চয়ই চিহ্ন রয়ে গিয়েছে৷ যেমন পোশাক-আশাক কিংবা গুলিগোলার চিহ্ন৷

সুসংঘটিত জঘন্য অপরাধ

এটা ছিল সুসংঘটিত জঘন্য অপরাধ৷ বলেন বেলগ্রেডের সাংবাদিক মেলিসা জোভানোভিচ৷ এক অনলাইন পোর্টালে লেখেন তিনি, ‘‘গণকবর তৈরি করার জন্য প্রয়োজন লজিস্টিক, লোকবল ও যন্ত্রপাতি৷ আলবেনীয়দের বিরুদ্ধে এই অপরাধ কতটা রাষ্ট্রীয়ভাবে সংঘটিত হয়েছিল, সার্বিয়ায় এখন সেই প্রশ্নটা তোলা হয় না৷'' বেলগ্রেড এক্ষেত্রে ভণ্ডামির আশ্রয় নিয়েছে৷ মাঝেমধ্যে দুই-একটা অপরাধ প্রকাশ করা হয়৷ অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়৷ কিন্তু রাষ্ট্রীয় বর্বরতাকে আড়ালে রাখার চেষ্টা করা হয়৷''

বেলগ্রেডের কাছে প্রায় ১,০০০ মরদেহ খুঁজে পাওয়া গিয়েছেছবি: picture-alliance/dpa

রুডনিচার আবিষ্কৃত নিহতদের সংখ্যা সঠিক হলে এটাই হবে সার্বিয়ায় আবিষ্কৃত দ্বিতীয় বৃহত্তম গণকবর৷ এর আগে বেলগ্রেডের কাছে সার্বিয়ার বিশেষ ইউনিটের ঘাঁটি বাটাইনিৎসায় প্রায় ১,০০০ মরদেহ খুঁজে পাওয়া গিয়েছে৷ এছাড়া আরো কয়েকটি জায়গায় কিছু লাশ পাওয়া গিয়েছে৷

গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীর বর্ণনা

যুদ্ধের সময় সার্বিয়ার সেনাবাহিনীতে ড্রাইভার হিসাবে কাজ করতেন, এমন একজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী এখন নতুন পরিচিতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি দেশে বসবাস করছেন৷ তিনি সেই ২০০১ সালেই সার্বিয়ার প্রেসকে জানিয়েছিলেন, কীভাবে শিল্পনগরী বোর-এ সম্ভবত বিশাল চুল্লিতে পুড়িয়ে ফেলার জন্য শয়ে লাশ নিয়ে যাওয়া হয়৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘আমাকে কসোভো থেকে বোর-এ সবসময় রাতে গাড়ি চালিয়ে যেতে হতো৷ যাত্রার কারণ হিসাবে লেখা থাকতো ‘গোপনীয়'৷''

১৯৯৯ সালে কসোভোকে জাতিসংঘের নিয়ন্ত্রণে আনা হয়ছবি: picture-alliance/dpa

২০০৮ সালে স্বাধীনতা ঘোষণা করে

১৯৯৯ সালে কসোভোকে জাতিসংঘের নিয়ন্ত্রণে আনা হয়৷ ২০০৮ সালে সার্বিয়ার এই সাবেক প্রদেশটি একতরফা স্বাধীনতা ঘোষণা করে৷ সার্বিয়া এটির স্বাধীনতা মেনে না নিলেও ব্রাসেলস-এ কসোভোর সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের চুক্তিতে আবদ্ধ হয়৷ পরস্পরকে যে ভালবাসতে হবে, এমন কোনো কথা নেই, কিন্তু একটা আস্থার জায়গা তৈরি করা যেতে পারে৷ বলেন সার্বিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী আলেক্সান্ডার ভুচিচ৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘আমি নিশ্চিত করে বলতে চাই, কোনো অপরাধকে ধামাচাপা দেওয়া হবে না৷ অপরাধ যেই সংঘটিত করুক না কেন, তার দায়িত্ব নিতে হবে তাকে৷''

অপরাধীকে কারাগারে নিক্ষেপ করতে হলে সার্বিয়া ও কসোভো এই দুই পক্ষেরই প্রয়োজন বিশ্বাসযোগ্য বিচার৷ বলেন কসোভোর রাজধানী প্রিস্টিনার রাজনীতি গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক ইলির ডেডা৷ কিন্তু যুদ্ধে নিখোঁজ অনেক ব্যক্তির অদৃষ্টে কী ঘটেছে তা এখন পর্যন্ত অজ্ঞাতই রয়েছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ