1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নোবেলজয়ীর চোখে ফুটবল

৭ নভেম্বর ২০১৩

বিংশ শতাব্দীতে বিশ্বসাহিত্যের যে ক'জন দিকপালের নাম লোকে একডাকে চেনে, তাদের মধ্যে পড়েন ফরাসি ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, দার্শনিক আলবেয়ার কামু৷ জন্ম: ৭ নভেম্বর, ১৯১৩৷ ফুটবল ছিল তাঁর (জীবন) দর্শনের অঙ্গ৷

http://commons.wikimedia.org/wiki/File:Albert_Camus,_gagnant_de_prix_Nobel,_portrait_en_buste,_pos%C3%A9_au_bureau,_faisant_face_%C3%A0_gauche,_cigarette_de_tabagisme.jpg Quelle: Wikipedia gemeinfrei

সত্তরের দশকে বাঙালি ‘আঁতেল', অর্থাৎ ইন্টেলেকচুয়াল বা বুদ্ধিজীবীদের কাছে কামু-সার্ত্র ছিলেন - ফুটবলের ভাষায় বলতে গেলে - ‘আঁতলামি'-র মেসি-নেইমার, কিংবা রিবেরি-রবেন৷ ঐ ফরোয়ার্ড লাইন দিয়েই গোল করতেন তাঁরা৷ কামু'র ‘‘দ্য ফল'', ‘‘দ্য আউটসাইডার'', ‘‘দ্য প্লেগ'' ইত্যাদি উপন্যাস - অবশ্যই ইংরিজি অনুবাদে এবং অবশ্যই পেঙ্গুইন পেপারব্যাক হিসেবে - ‘আঁতেল'-দের হাতে-হাতে, কিংবা পকেটে-পকেটে ঘুরতো৷ একজিস্টেনশিয়ালিজম বা অস্তিত্ববাদ, নিও-প্যাগানিজম ইত্যাদি আধুনিক দর্শনের বড় বড় গালভরা কথা ঘুরতো মুখে-মুখে৷

এ'সবের পেছনে কামু'র দান - অথবা অবদান - অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই৷ অথচ এই মানুষটি মাত্র ৪৪ বছর বয়সে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান৷ তার দু'বছর পরেই একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু সাহিত্যরসিকদের কাছে আজও একটি ‘শক' হয়ে রয়েছে৷ মানুষ হিসেবেও কামু'র জীবনকাহিনি চমকে দেবার মতো৷

আলবেয়ার কামু ও স্ত্রী ফ্রঁসিন কামুছবি: picture-alliance/maxppp

ফরাসি-শাসিত আলজিরিয়ার এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম৷ মা ছিলেন নিরক্ষর এবং অংশত বধির৷ বাবা ছিলেন কৃষি খামারের মজদুর - প্রথম বিশ্বযুদ্ধের রণাঙ্গণে মারা যান, কামু তখন মায়ের কোলের৷ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক এই মেধাবী শিশুটিকে নিজে বাড়তি টিউশন দিয়ে মানুষ না করলে বিশ্বসাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় বোধহয় অলিখিতই থেকে যেতো৷ পরে সেই শিক্ষককেই তাঁর নোবেল পুরস্কার উৎসর্গ করেন কামু৷

কামু'র বন্ধু শার্ল পঁসে একবার তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন: ফুটবল অথবা নাটক, কোনটা তিনি বেশি পছন্দ করেন৷ কামু নির্দ্বিধায় উত্তর দিয়েছিলেন: ‘ফুটবল, নিঃসন্দেহে ফুটবল৷' কামু নিজে ফুটবল খেলতেন ‘রেসিং উনিভার্সিতেয়ার আলজেরোয়া' বা ‘রুয়া' ক্লাবের জুনিয়র টিমে; গোলরক্ষক হিসেবে পয়লা নম্বর জার্সি পরতেন৷ যক্ষ্মা রোগ হওয়ার কারণে তাঁর ফুটবলার ক্যারিয়ারের ওখানেই ইতি ঘটে, কিন্তু থেকে যায় ব্রাত্যজনের সখা ফুটবলের প্রতি সারাজীবনের শ্রদ্ধা ও প্রীতি৷

পঞ্চাশের দশকেও রুয়া'র অ্যালাম্নি ক্রোড়পত্র থেকে কামু'কে বলা হয়, তাঁর সেই ফুটবল অতীত সম্পর্কে কিছু বলতে৷ কামু বলেন: ‘এতো বছর ধরে এতো কিছু দেখার পর আমি নৈতিকতা এবং মানুষের কর্তব্য সম্পর্কে যা নিশ্চিত করে জানি, তা আমি পেয়েছি খেলাধুলা থেকে, শিখেছি রুয়া'র কাছ থেকে৷'

কামু'র সাহিত্য বা দর্শনের খুব গভীরে প্রবেশ না করেই বলা চলে, কামু বিশ্বাস করতেন এক সহজ ধরনের নৈতিকতায়৷ ভাবতেন, রাজনীতি ও ধর্মের নামে মানুষকে এমন সব জটিল নৈতিক প্রণালীতে বেঁধে ফেলা হয়, যার ফলে সহজ বস্তুকেও অতি কঠিন বলে মনে হয়৷ যার ফলে সম্ভবত সেই রাজনৈতিক বা ধর্মীয় মতাদর্শই লাভবান হয়৷ কামু'র মতে রাজনীতিক ও দার্শনিকদের নৈতিকতার পরিবর্তে ফুটবল মাঠের সহজ নৈতিকতা অবলম্বন করাই শ্রেষ্ঠ পন্থা৷

এসি / জেডএইচ (এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ