২০০৩ সালের পর প্রথমবারের মতো সিঙ্গাপুরের জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে৷ করোনার কারণেও সম্প্রতি বিদেশি এবং অনেক স্থায়ী বাসিন্দা দেশ ছেড়েছেন৷ তার প্রভাবই পড়েছে জনসংখ্যার হিসাবে৷
বিজ্ঞাপন
বার্ষিক জনসংখ্যা প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিঙ্গাপুরে বসবাসরত মানুষের সংখ্যা প্রায় ১৮,০০০ হাজার কমে গেছে৷ মোট জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৭ লাখে, যা আগের বছরের তুলনায় দশমিক তিন ভাগ কম৷ এর মধ্যে বিদেশিদের সংখ্যা দুই ভাগ কমে প্রায় সাড়ে ১৬ লাখে ঠেকেছে৷
এশিয়ায় ব্যবসার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র সিঙ্গাপুর করোনার কারণে অর্থনৈতিকভাবে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে৷ সরকারি হিসাবে চলতি বছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি পাঁচ থেকে সাত শতাংশ কমে যেতে পারে৷ এমন অবস্থায় বিদেশিরা দূরে থাক নিজেদের বাসিন্দাদেরই কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার৷ স্থানীয়দের চাকরি নিশ্চিত করতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিদেশি নিয়োগে নানা কড়াকড়িও আরোপ করা হয়েছে৷ যদিও এ নিয়ে সরকারের মধ্যেই ভিন্নমত রয়েছে৷ কারণ এর ফলে দীর্ঘমমেয়াদে ব্যবসা বাণিজ্যের আরো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে৷
এ মাসের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী লী সিয়েন লুং তার এক ভাষণেও বলেছেন, ‘‘আমরা সবকিছু বন্ধ করে দিচ্ছি আমাদের দেশে আর বিদেশিদের প্রয়োজন নেই, এমন ভুল ধারণা দেওয়া থেকে আমাদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে৷’’
পরিচ্ছন্ন রাস্তা, অপূর্ব সুউচ্চ ভবন এবং আন্তর্জাতিক স্ট্রিট ফুড৷ ছবিঘরে দেখে নিন সিঙ্গাপুরে ঘুরতে যাওয়ার কিছু কারণ৷
ছবি: picture-alliance/Global Travel Images
মেরিনা বে স্যান্ডস হোটেল
সিঙ্গাপুরের এই স্থাপত্যটির নিমার্ণশৈলী অপূর্ব এবং অসাধারণ৷ মেরিনা বে স্যান্ডস হোটেলকে সংক্ষেপে এমবিএস বলা হয়৷ এটি বর্তমানে সিঙ্গাপুরের নতুন ল্যান্ডমার্কে পরিণত হয়েছে৷ এটির উচ্চতা ২০০ মিটার, উপরে রয়েছে অসাধারণ একটি ছাদ৷ আর সেখানে আছে স্কাই পার্ক৷
ছবি: DW/A. Termèche
সিঙ্গাপুরের মাইলফলক
এই সিংহটি সিঙ্গাপুরের প্রতীকী প্রাণী৷ সংস্কৃতে ‘সিঙ্গা’ অর্থ সিংহ৷ বন্দরনগরীটি এশিয়ার মডেল নগরী হিসেবে গড়ে উঠেছে৷ এই মার্লিওন ভাস্কর্যটি একটি সিংহ, যার লেজটি মাছের মতো৷ এটি শহরের একটি ল্যান্ডমার্ক৷
ছবি: picture-alliance/robertharding/G. Hellier
মেরিনা বে
‘স্টপ ওভার’ গন্তব্য হিসেবে সিঙ্গাপুর ভীষণ জনপ্রিয়৷ শহরটির বেশিরভাগ এলাকা হেঁটেই দেখা যায়৷ অন্যতম আকর্ষণীয় গন্তব্য হলো ‘মেরিনা বে’ বা মেরিনা উপসাগর৷ ছবির ডানদিকে পুরোনো ঔপনিবেশিক ভবনগুলো সুউচ্চ ভবনগুলোর সাথে পাল্লা দিতে পারেনি৷ বাঁ পাশে গড়ে উঠছে নতুন সিঙ্গাপুর, আছে মেরিনা বে স্যান্ডস হোটেল, বিশাল শপিং মল এবং পদ্মফুলের আকৃতিতে আর্টসায়েন্স জাদুঘর৷
ছবি: picture-alliance/robertharding/G. Hellier
আকাশছোঁয়া ছাদ
এমবিএ’র সবচেয়ে লোভনীয় বস্তুটি হলো এর অসাধারণ সুইমিং পুল৷ ৫৭ তলায় অবস্থিত এই পুলে যখন সাঁতার কাটবেন, মনে হবে পুরো সিঙ্গাপুর আপনার পায়ের নীচে৷ তবে এমবিএ-তে যদি একটি রুম বুক করে থাকেন, তবেই এখানে প্রবেশের সুযোগ মিলবে৷ আর এজন্য কেবল একটি সিঙ্গেল রুমের জন্যই আপনাকে কমপক্ষে গুণতে হবে ৩০০ ইউরো!
ছবি: picture alliance/robertharding
বাগানের শহর
সিঙ্গাপুরে অন্তত ৬০ লাখ মানুষের বাস৷ এশিয়ার সবুজতম শহর বলা হয় এটিকে৷ উপসাগরের পাশে বাগানগুলো শহরের সবুজ প্রকল্পের অংশ৷ স্কাইওয়ে বা এরিয়াল ওয়াকওয়েতে হাঁটলে উপর থেকে ১০১ হেক্টর কমপ্লেক্সের অসাধারণ সৌন্দর্য চোখে পড়বে৷ তবে সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য দেখা যায় রাতের বেলায়, যখন সুউচ্চ কৃত্রিম গাছগুলো আলোয় ঝলমল করে ওঠে৷
ছবি: DW/A. Termèche
বে সাউথ গার্ডেন
এখানকার পার্কে রয়েছে বিশাল দু’টি গ্রিন হাউস৷ বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ কাঁচের গ্রিন হাউস হিসেবে ফ্লাওয়ার ডোম গ্রিনহাউসটি বিশ্ব রেকর্ডের গিনেস বুকে স্থান করে নিয়েছে৷ ছোটটির নাম ‘ক্লাউড ফরেস্ট’৷
ছবি: DW/A. Termèche
সাগর তীরে এসপ্লানেড থিয়েটার
সিঙ্গাপুরে যেসব ভবন নির্মিত হয়েছে, সবগুলোতেই প্রকৃতিকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে৷ এমনকি থিয়েটার বানানোর ক্ষেত্রেও৷ থিয়েটারটিতে ২০০০ আসন রয়েছে, একটি কনসার্ট হল রয়েছে ১৬শ আসনের এবং আছে একটি শপিং মল৷ এর আকৃতি ডুরিয়ান (বাংলাদেশের কাঁঠালের মতো) ফলের মতো৷
ছবি: picture-alliance/dpa/H.-P. Lochmann
অরচার্ড রোড
সিঙ্গাপুরে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ কেনাকাটা৷ শহরজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অভিজাত আর ঝলমলে শপিংমল৷ সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকে এগুলো৷ সপ্তাহের সাতদিনই খোলা৷ এদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় শপিং এলাকা হলো অরচার্ড রোড৷
ছবি: picture-alliance/dpa/How Hwee Young
চীনা নববর্ষ উদযাপন
সিঙ্গাপুরে বৌদ্ধ, মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান সব ধর্মাবলম্বী শান্তিতে বসবাস করেন৷ তাই চায়না টাউন, লিটল ইন্ডিয়া বা আরব স্ট্রিট অবশ্যই ঘুরে দেখা উচিত৷ বিশেষ করে যখন চীনা নববর্ষ উদযাপন হয়, তখন এসব সড়ক জমজমাট হয়ে ওঠে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Morrison
ঐতিহ্য
বিশ্বের অন্যতম ধনী শহরহুলোর একটি হলো সিঙ্গাপুর৷ তবে শহরের যত চাকচিক্যই থাকুক না কেন, এখানকার মানুষ নিজেদের ঐতিহ্যকে বিসর্জন দেননি৷ হিন্দু মন্দির, বৌদ্ধ মন্দির, মসজিদ এবং চার্চগুলো এখানকার সংস্কৃতি আর প্রথার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়৷
ছবি: picture-alliance/prisma
খাবারের দোকান
সিঙ্গাপুরের অধিবাসীরা খেতে ভালোবাসেন৷ যাঁরা বিভিন্ন অফিসে কাজ করেন, দুপুরের খাবারের সময় তাঁদের অনেকেই রাস্তায় খাবারের দোকানগুলো থেকে নানা ধরনের খাবার খেয়ে থাকেন৷ এখানকার স্ট্রিটফুড খুবই জনপ্রিয়৷