ভোটাররা ভোট দিতে পারবেন?
১ জানুয়ারি ২০২০দক্ষিণে সাঈদ খোকনকে বাদ দিয়ে ফজলে নূর তাপসকে আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী করায় নির্বাচন এখন আলোচনায় এসেছে৷ কিন্তু একটি প্রশ্নই বড় হয়ে দেখা দিয়েছে৷ ভোটাররা ভোট দিতে পারবেন তো?
মেয়র পদে ঢাকা উত্তরে মনোনয়ন জমা দিয়েছের সাতজন৷ কাউন্সিলর পদে ৩৭৪ এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর (নারী) পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৮৯ জন৷
উত্তরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম, বিএনপির তাবিথ আউয়াল, জাতীয় পার্টির প্রার্থী জি এম কামরুল ইসলাম৷ এছাড়া বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) আহমেদ সাজেদুল হক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শেখ মো. ফজলে বারী মাসউদ এবং প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের (পিডিপি) শাহীন খান প্রার্থী হয়েছেন৷
দক্ষিণেও মেয়র পদে সাত জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন৷ ৪৫৪ জন কাউন্সিলর পদে এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে (নারী) মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৯৯ জন৷
মেয়র পদে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস, বিএনপির ইশরাক হোসেন ও জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন মিলন প্রার্থী হয়েছেন৷
এছাড়া গণফ্রন্টের আব্দুস সামাদ সুজন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. আক্তার উজ্জামান ওরফে আয়াতুল্লাহ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আবদুর রহমান, বাংলাদেশ পিপলস পার্টির বাহারানে সুলতান বাহার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন৷
আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস ও আতিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে এরইমধ্যে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে৷ তারা মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়ে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেন বলে অভিযোগ৷ সর্বোচ্চ পাঁচজনকে নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার বিধান থাকলেও তা তারা মানেননি৷ গাড়িবহর নিয়ে মহড়া করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তারা৷ বিএনপির দুই প্রার্থীর বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ আছে৷
৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে এর আগে পর্যালোচনা করেছে টিআইবি৷ তার আলোকে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ওই নির্বাচনের কারণে ভোটারদের একটা আশঙ্কা আছে যে তারা ভোট দিতে পারবেন কিনা৷ কারণ ভোটারদের ইচ্ছার উপরে ভোট দেয়া এখন আর নির্ভর করে না৷ নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঠিক ভূমিকা এবং নির্বাচনে প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছার ওপর ভোটারদের স্বাধীনভাবে ভোট দেয়ার বিষয়টি নির্ভর করে৷ এই বিষয়গুলো ঠিক না থাকলে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আরেকটি মহড়া হতে পারে সিটি নির্বাচন৷''
গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি ২০১৫ সালের সিটি নির্বাচনে ঢাকা উত্তরে প্রার্থী হয়েছিলেন৷ তিনি এবার প্রার্থী হননি এবং নির্বাচন বর্জন করেছেন৷ তার কথা, ‘‘নির্বাচন করে কী হবে? এরইমধ্যে দু'জনকে তো অভিনন্দন জানানো শুরু হয়ে গেছে৷ তাহলে পূর্বনির্ধারিত ফলের এই নির্বাচনে গিয়ে লাভ কী? ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের নামে যে প্রহসন হয়েছে, তারই পুনরাবৃত্তি হবে৷''
ইভিএম-এ ভোট কারচুপির আশঙ্কা কম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আসলে যন্ত্রের পিছনে মানুষগুলোর ভূমিকাই মুখ্য৷ তারা যদি সঠিক ভূমিকা পালন না করেন তাহলে ইভিএম দিয়ে কারচুপি ঠেকানো যাবে না৷ আর গত নির্বাচনে ইভিএম-এ যে কারচুপি হয়েছে তার প্রমাণতো আমাদের কাছে আছে৷''
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এই বড় দুই দলের কোনো প্রার্থীকে পাওয়া যায়নি৷ তবে জাতীয় পার্টির ঢাকা উত্তরের মেয়র প্রার্থী জি এম কামরুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমি এবার আশাবাদী যে অতীতের ইমেজ পুনরুদ্ধারের জন্য হলেও সরকার এবার সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে৷ ভোটারদের মধ্যে ভোট দেয়ার ব্যাপক আগ্রহ আছে৷ আমার আশা তাদের আগ্রহের প্রতি এবার সম্মান দেখানো হবে৷''
তবে তিনি বলেন, ‘‘সরকারের সদিচ্ছার ওপরে ভোটারদের স্বাধীনভাবে ভোট দেয়া নির্ভর করছে৷ নানা পরিস্থিতির কারণে সরকার সদিচ্ছা দেখাবে বলে আমার বিশ্বাস৷ তাই আমার ভিতরে কোনো আশঙ্কা নেই৷''