1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সিদ্ধান্ত না মানলে কঠোর শাস্তির হুমকি আওয়ামী লীগ-বিএনপির

২১ এপ্রিল ২০২৪

উপজেলা নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত না মানলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির হাইকমান্ড।

সংসদ নির্বাচনের ব্যালট বক্সের ছবি
প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত অমান্য করে ভোটে অংশ নিচ্ছেন অনেকেইছবি: Indranil Mukherjee/AFP

প্রথম ধাপের নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন আগামিকাল সোমবার। অন্যদিকে দ্বিতীয় ধাপের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল রোববার। প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত অমান্য করে ভোটে অংশ নিচ্ছেন অনেকেই। দলের সিদ্ধান্ত যাই হোক তারা ভোটের মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। দুই দলই সিদ্ধান্ত অমান্যকারীদের তালিকা তৈরী করছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ ডয়চে ভেলেকে বলেন, "এখনই তো আর ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। আগামীকাল মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এখন যদি একজন উপজেলা চেয়ারম্যান থাকেন, তিনি আবার যদি কোন মন্ত্রী বা এমপির স্বজন হন তাহলেও কি তিনি ভোটের মাঠ থেকে সরে যাবেন? আবার অনেক জায়গায় আমাদের দলের একজনই প্রার্থী আছেন। তিনি আবার কোন মন্ত্রী বা এমপির স্বজন। তিনি যদি সরে যান তাহলে আমাদের আর কোন প্রার্থীই থাকবে না। এমন নানা ধরনের সংকট আছে। সবকিছু বুঝেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে হ্যাঁ, যৌক্তিক কারণ ছাড়া যদি কেউ নির্বাচন করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলের হাইকমান্ডই  সবকিছু বুঝে এ ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।”

'মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে'

This browser does not support the audio element.

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের পরিবারের সদস্য বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই বার্তা দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সবাইকে জানিয়ে দিয়েছেন। যদি শেষ পর্যন্ত দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার বার্তা দেওয়া হয়েছে। দলের সাংগঠনিক সম্পাদকরা এখন সারা দেশে আওয়ামী লীগের যারা এমপি, মন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ আছেন তারা কতজন নিজের আত্মীয়স্বজনকে উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী করেছেন তার তালিকা তৈরি করছেন। এই তালিকা তৈরির কাজ এখনও শেষ হয়নি বলে দলের দপ্তর থেকে জানিয়েছে।

আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে এ ব্যাপারে আলোচনা হবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে আওয়ামী লীগের ভেতরে ক্ষোভ, বিক্ষোভ এবং কোন্দল ছড়িয়ে পড়ে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে সৃষ্টি হয় উত্তাপ-উত্তেজনা এবং বিভাজন। অনেক জায়গায় সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। এই বিভাজন কমিয়ে আনার জন্য দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছেন। ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়ছেন। কিন্তু সেই নির্দেশনা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগের ভিতর বিভক্তি এবং কোন্দল কমেনি। বিভক্তি ও কোন্দলের সূত্র ধরে দলের ভিতরে হানাহানি মারামারির প্রবণতাও লক্ষ্য করা গেছে।

যদিও নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত দিয়েছে বিএনপির হাইকমান্ড কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে যাচ্ছেন বিএনপির অনেক নেতা।দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে বিএনপি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। ৮ মে অনুষ্ঠেয় প্রথম দফার উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ভোটে প্রার্থী হওয়ার জন্য বিএনপির ৪৫ নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এদিন ১৫০ উপজেলায় নির্বাচন হবে। ফলে বিএনপির সংখ্যাটি গুরুত্বপূর্ণ নয় বলেই মনে করছেন নেতারা।

'সিদ্ধান্ত অমান্যকারীদের বহিষ্কার করা হবে'

This browser does not support the audio element.

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুনুর রশীদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, "আমাদের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে। সিদ্ধান্ত অমান্যকারীদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। ইতিমধ্যে তাদের সবাইকে বার্তা দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর নেতারা এ ব্যাপারে খোঁজখবর রাখছেন। যদিও কিছু তথ্য আমার কানে এসেছে। কয়েকজন আমাকে বলেছেণও। সেটা হল, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অনেক জায়গায় বিএনপি নেতাদের চাপ দেওয়া হচ্ছে। তারা যদি নির্বাচনে অংশ না নেন তাহলে আরও বেশি মামলা দিয়ে হয়রানি করা হবে। অনেক জায়গায় তো আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপি নেতাকে মঞ্চে তার প্রার্থী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন। তবে ঘটনা যা হোক দলের সিদ্ধান্ত কেউ অমান্য করতে পারবেন না।”

প্রথম ধাপে ৮ মে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন বিএনপির সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাপ মিয়া। ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, "জেলার নেতারা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে নির্বাচন থেকে সরে আসতে বলেছেন। কিন্তু আমি নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছি না। কারণ দলের কর্মীদের দাঁড়ানোর জায়গা নেই। তারা মনে করছেন, আমি নির্বাচিত হলে ছোট হলেও দলের একটি দাঁড়ানোর জায়গা হবে। আমার পক্ষে গণজোয়ার উঠেছে।” নির্বাচন করার ব্যাপারে আওয়ামী লীগের কোন চাপ আছে কিনা? জানতে চাইলে তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, "না, আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। কেউ কিছু আমাকে বলেনি। আমি বিএনপি নেতা হিসেবে নয়, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছি।”

এদিকে নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে অপহরণ ও মারধরের ঘটনার পর লুৎফুল হাবীব রুবেল নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। রোববার সকালে নাটোরের গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

রুবেল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক। ভিডিওতে নিজেকে ষড়যন্ত্রের শিকার দাবি করে লুৎফুল হাবীব রুবেল বলেন, "আমি ২০০২ সাল থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ২০০৫ সালে সিংড়া গোলই আফরোজ কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম। বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বরত আছি। গত ৩ এপ্রিল ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পদত্যাগ করি। ইউনিয়ন পরিষদেও পরপর তিন বার নির্বাচিত হয়েছি আমি। যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার সাথে আমি জড়িত নই। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। আমাকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে বিভিন্ন মহল সক্রিয় রয়েছে। প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের নির্দেশনা অনুযায়ী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছি। অফিসিয়াল যে প্রক্রিয়াগুলো রয়েছে সেগুলো যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করব।”

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ