দেশের সিনেমা হলগুলোতে জাতীয় সংগীত বাজানোর সময় সব দর্শকদের উঠে দাঁড়িয়ে সম্মান দেখানো বাধ্যতামূলক করেছিল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট৷ কিন্তু সম্প্রতি চেন্নাইয়ের একটি সিনেমা হলে কিছু দর্শক তা না মানায়, অন্য একদল তাঁদের মারধর করে৷
বিজ্ঞাপন
গোটা দেশের সিনেমা হলগুলোতে ছবি শুরুর আগে জাতীয় সংগীত বাজানোর সময় উঠে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীতকে শ্রদ্ধা জানানো বাধ্যতামূলক করে শীর্ষ আদালতের নির্দেশিকা জারির পর, গত রবিবার দক্ষিণী শহর চেন্নাইয়ের একটি সিনেমা হলে জাতীয় সংগীত বাজানোর সময় কিছু দর্শক আসনে বসে থাকলে, তাই নিয়ে জনা কুড়ির অন্য একদল দর্শক তার প্রতিবাদ করে৷ এই নিয়ে শুরু হয় বচসা এবং বিরতির পর তাঁদের ওপর চড়াও হয়ে তাঁদের পেটানো হয়৷ তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, একদিকে যখন জাতীয় সংগীত বাজানো হচ্ছে, রূপালী পর্দায় জাতীয় পতাকা উড়ছিল, তখন জনা দশেক দর্শক না উঠে আসনে বসে সেলফি তুলছিলেন৷
জাতীয় পতাকার প্রতি, দেশের প্রতি এই অবমাননা নাকি সহ্য করা যায় না৷ জনৈক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ৯-১০ জন দর্শক বসেছিলেন৷ তাঁদের মধ্যে দু-তিন জন নারীও ছিলেন৷ ধ্বস্তাধস্তির সময় পুলিশ আসে এবং তদন্তের জন্য দু'দলকে থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর, চেন্নাই পুলিশ ১৯৭১ সালের জাতীয় সংগীত অবমাননা বিরোধি আইনের সংস্থান অনুযায়ী সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে৷
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা জারির পর জাতীয় সংগীত অবমাননার অভিযোগে এই প্রথম মামলা৷ দু'জন মহিলাসহ অপরপক্ষের অভিযোগ যে, তাঁদের দৈহিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয় এবং তাঁদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়৷ এদের মধ্যে একজন আইনের ছাত্রী৷ তিনি জানান, না দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীতকে ইচ্ছাকৃতভাবে অপমান করতে চায়নি সে৷
ভারতের কিছু বিতর্কিত আইন
ভারতে এমন কিছু কিছু আইন আছে, যা খুবই স্পর্শকাতর৷ তাই এ সব আইন নিয়ে প্রশ্ন তুললেই শুরু হয়ে যায় তুমুল বিতর্ক৷ তখন শেষ পর্যন্ত আদালতকে হস্তক্ষেপ করতে হয়, দিতে হয় সমাধান৷ এই রকমই কয়েকটি আইন তুলে ধরা হলো ছবিঘরে৷
ছবি: Reuters
৩৭০ ধারা
ভারতীয় সংবিধানের এই ধারায় জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যকে অন্যান্য রাজ্যগুলির তুলনায় কতগুলি ক্ষেত্রে স্বশাসনের বিশেষ অধিকার দেওয়া হয়েছে৷ রাজ্য গণপরিষদ এর সংশোধনের সুপারিশ না করায়, এটা এ মুহূর্তে স্থায়ী বিধান হয়ে আছে৷ তবে জাতীয় নিরাপত্তা, অত্যাবশ্যক পণ্য, সর্বভারতীয় নিয়োগ বিধি, কর ও শুল্ক, আদালত, মানবাধিকার ইত্যাদি ক্ষেত্রে জম্মু-কাশ্মীর অন্যান্য রাজ্য থেকে অভিন্ন৷
ছবি: Mohammadreza Davari
সোচ্চার সংঘ পরিবার
৩৭০ নম্বর ধারা রদ করার জন্য ভারতে সংঘ পরিবারের মতো কট্টর হিন্দু সংগঠনগুলি জোর আন্দোলন শুরু করেছে৷ সরকারকে তারা ক্রমাগত চাপ দিয়ে যাচ্ছে এ জন্য৷ তাদের মতে, এই ধারা ভারতের সংহতি ও অখণ্ডতার পরিপন্থি৷ শুধু তাই নয়, এই ধারা নাকি জম্মু-কাশ্মীরের অশান্ত পরিস্থিতির জন্য অনেকখানি দায়ী৷ সরকার অবশ্য এই বিতর্কে নিজেকে জড়াতে চাইছে না৷
ছবি: AP
এএফএসপিএ বা আফস্পা
সেনাবাহিনীর বিশেষ অধিকার আইন বা এএফএসপিএ কার্যকর হয় ১৯৫৮ সালে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্য এবং জম্মু-কাশ্মীরে৷ জঙ্গি তৎপরতা রুখতে এই আইনে সেনাবাহিনীকে দেয়া হয়েছে অবাধ ক্ষমতা৷ এতে করে ইচ্ছামতো গ্রেপ্তার, যখন খুশি তল্লাসি, কোনো কারণ না দেখিয়ে আটক এবং নির্যাতন করতে পারে মিলিটারি৷ তবে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় যে, এ আইন অনির্দিষ্টকালের জন্য বলবত থাকতে পারে না৷ বরং ক্ষেত্রবিশেষে তদন্ত করতে হবে৷
ছবি: AP
প্রতিবাদী নারী শর্মিলা চানু
মানবাধিকার সংগঠনগুলি আফস্পার বিরুদ্ধে সোচ্চার৷ অভিযোগ, গত দু’দশকে মনিপুরে এ আইনকে কাজে লাগিয়ে সাজানো সংঘর্ষে প্রায় দেড় হাজার মানুষকে হত্যা করেছে সেনাবাহিনী৷ এ সব হত্যাকাণ্ডের বিচার ও মনিপুর থেকে আফস্পা প্রত্যাহারের দাবিতে ১৬ বছর ধরে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন লৌহমানবী ইরম শর্মিলা চানু৷ নাকে ১৬ ইঞ্চির টিউব লাগানো তাঁর এই প্রতিবাদী ছবি গোটা দুনিয়া চেনে৷ আত্মহত্যার মামলা দায়ের করেও তাঁকে থামানো যায়নি৷
ছবি: AFP/Getty Images
৩৭৭ ধারা
ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারায় সমকামিতা এখনও অপরাধ৷ সমলিঙ্গের দুই প্রাপ্তবয়স্ক যদি পারস্পরিক সম্মতিতে যৌনকাজে লিপ্ত হয় এবং সেটা যদি প্রমাণিত হয়, তাহলেও ৩৭৭ নং ফৌজদারি দণ্ডবিধিতে ১০ বছরের জেল, এমনকি যাবজ্জীবন কারাবাসও হতে পারে৷ ভারতের সমকামী গোষ্ঠীগুলি ব্যক্তিস্বাধীনতার খেলাপ মনে করে এই আইন বাতিল করার দাবি জানিয়ে আসছে দীর্ঘদিীন ধরে৷ তবে বিষয়টি নিয়ে ভারতের জনমত বিভাজিত৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/R. Kakade
এলজিবিটি সম্প্রদায়ের নতুন পিটিশন
সম্প্রতি ভারতীয় দণ্ডবিধির এই ৩৭৭ নম্বর অনুচ্ছেদটির বিরুদ্ধে আবারো পিটিশন দায়ের করেন এলজিবিটি সম্প্রদায়ের কয়েকজন সেলিব্রেটি৷ বের হয় মিছিলও৷ হাতের প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুনে লেখা থাকে ছিল, ‘সমকামীদের ব্যক্তিগত জীবন বেছে নেবার অধিকার দিতে হবে৷’ ঋতু ডালমিয়া, আমন নাথ এবং নৃত্যশিল্পী এনএস জোহর-এর মতো তারকারা ছিলেন সেই মিছিলে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
পণপ্রথা বিরোধী আইন
ভারতে আজও পণপ্রথা বিরোধী আইনের ৪৯৮-এ ধারাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কখনও কখনও ঘটে যায় বধু হত্যার মতো ঘটনা৷ এই ধারা অনুযায়ী, বিয়ের পাঁচ বছরের মধ্যে স্ত্রী আত্মহত্যা করলে বা তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে, স্বামী বা অন্য সদস্যদের প্রমাণ করতে হবে যে তাঁরা নির্দোষ৷ তা নাহলে বধু নির্যাতনের অপরাধে তিন বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে৷ তবে স্ত্রী যাতে এই আইনের অপব্যহার না করেন, সেদিকটাও এবার খতিয়ে দেখতে চায় আদালত৷
ছবি: Narinder Nanu/AFP/Getty Images
আত্মহত্যা না খুন?
এ বছরের জানুয়ারি মাসে দিল্লির ফতেপুর বেরিতে ২২ বছরের নববিবাহিতা বধু ববিতাকে শ্বশুরবাড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়৷ বৌটির বাপেরবাড়ির লোকেদের অভিযোগ, পণের জন্য ববিতার ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালাতো তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেরা৷ আর সে কারণেই ববিতা আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয় অথবা আত্মহত্যার মোড়কে তাঁকে খুন করে শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই৷
ছবি: Getty Images/AFP
জাতিভেদ প্রথা অপরাধযোগ্য
জাতিভেদ বা অস্পৃশ্যতা দূরীকরণ আইনের ১৭নং ধারায় এই আইন লঙ্ঘনে ছ’মাসের জেল ও জরিমানার কথা বলা হয়েছে৷ কারণ মানুষের ব্যক্তি অধিকার মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে৷ সামাজিক মেলামেশা, খাওয়া-দাওয়া, ওঠা-বসা, ধর্মীয় স্থানে যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে নীচু জাত আর উঁচু জাতের মধ্যে বিভেদ করা অবৈধ৷ ১৯৭১ সালে আইনটি সংশোধন করে তার নাম দেওয়া হয় নাগরিক অধিকার সুরক্ষা আইন৷
ছবি: Getty Images/AFP/N. Seelam
দলিতরা কি মানুষ নয়?
মন্দির তো দূরের কথা, সম্প্রতি গুজরাট, উত্তর প্রদেশ এবং দক্ষিণ ভারতের কিছু গ্রামে দলিত ও হরিজনদের কুঁয়ো থেকে জল নিতে বাধা দেওয়া হয় গ্রামের মোড়লদের নির্দেশে৷ এ নিয়ে স্থানীয় মানুষের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা দেখা দিলে, পুলিশ পাহারা বসাতে হয়৷ শেষে দলিতরা নিজেদের জন্য আলাদা কুঁয়ো খুঁড়ে নেন৷ প্রচণ্ড খরা সত্ত্বেও গুজরাটের মেহসানা জেলার ডজন খানেক মহিলা কাকুতি-মিনতি করলেও তঁদের কুঁয়ো থেকে জল নিতে দেওয়া হয়নি৷
ছবি: Reuters/Danish Siddiqui
লিঙ্গ বৈষম্য নিরোধক আইন
দেব-দেবীর মন্দিরে নারীদের প্রবেশাধিকার না থাকায়, তার বিরুদ্ধে নারীবাদী সংগঠনগুলি সোচ্চার সর্বদাই৷ কিন্তু মন্দির কর্তৃপক্ষের মন এতে টলেনি৷ ধর্মগুরুদের মতে, প্রাচীনকাল থেকেই মাসিকের সময় মেয়েদের ‘অশুচি’ বলে গণ্য করা হয়৷ তাই তাদের ঢুকতে দেওয়া হয় না৷ এ নিয়ে আন্দোলনকারীরা আদালতের দ্বারস্থ হলে মুম্বই হাইকোর্ট মন্দির প্রবেশাধিকার আইন ১৯৪৭ অনুসারে রায় দেয় যে, মন্দিরে নারী-পুরুষের মধ্যে বৈষম্য করা যাবে না৷
ছবি: Reuters/Anindito Mukherjee
মন্দিরে প্রবেশাধিকার নিয়ে আবারো আপিল
তৃপ্তি দেশাইয়ের নেতৃত্বেই একদল মহিলা মহারাষ্ট্রের আহমেদনগরে একটি শনি মন্দিরে ঢোকার চেষ্টা করেন৷ মন্দির কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ তাঁদের বাধা দিলে, তাঁরা সেখানেই ধর্ণা দেন৷ মুম্বইয়ের রাস্তায় মন্দিরে মেয়েদের অবাধ প্রবেশাধিকারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল হয়৷ এরপর কিছু কিছু মন্দিরে নারীরা প্রবেশাধিকার পেলেও, কেরালার সবরিমালা এবং অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি মন্দির কর্তৃপক্ষ এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে৷
ছবি: DW/A. Chatterjee
মুসলিম শরিয়ত বিধি ১৯৩৭
‘মুসলিম পার্সোনাল ল’ নিয়ে সরকার দোটানায়৷ সংবিধানে নারী-পুরুষকে সমানাধিকার দেয়া হয়েছে৷ কিন্তু মুসলমানদের জন্য সামাজিক বা পারিবারিক বিবাদে কোরান-ভিত্তিক শরিয়ত আইনই শেষ কথা৷ তবে মুসলিম নারীরা বিবাহবিচ্ছেদের ক্ষেত্রে পুরুষদের এক তরফা তিন তালাকের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছে৷ আওয়াজ তুলেছে বহুবিবাহ, তালাক ও খোরপোষের দাবিতে৷ একদিকে সংবিধান, অন্যদিকে মুসলিম পুরুষ সমাজ৷ বিযয়টি তাই আদালতের ওপর ছেড়ে দিয়েছে সরকার৷
ছবি: picture-alliance/dpa
শাহ বানুর পর সায়রা বানু
ভারতের দেরাদনের ৩৫ বছরের সায়রা বানু সম্ভবত প্রথম মুসলিম মহিলা, যিনি সুপ্রিম কোর্টে তিন তালাক প্রথা রদ করার আর্জি জানিয়েছেন৷ সায়রা বানু উত্তরাখণ্ডে বাপের বাড়িতে গেলে তাঁর স্বামী রিজওয়ান আহমেদ এলাহাবাদ থেকে তালাকনামা পাঠিয়ে ১৫ বছরের দাম্পত্যজীবনের ইতি টানতে চান৷ বিয়ের পরে বহবার গর্ভপাতে আজ অসুস্থ সায়রা৷ তারপরও এই অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে মরিয়া সায়রা বানু৷
ছবি: Reuters
14 ছবি1 | 14
প্রসঙ্গত, সিনেমা হলে ছবি শুরুর আগে জাতীয় সংগীত বাজানোর সময় উঠে দাঁড়িয়ে তার প্রতি সম্মান জানানোটাকে সাংবিধানিক জাতীয়তাবাদ এবং দেশপ্রেমের প্রকাশ বলে অভিহিত করেছেন শীর্ষ আদালতের এক বেঞ্চ৷ এই নির্দেশ অমান্য করলে তিন বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে৷
এই নির্দেশ অবশ্য অনেকেই পছন্দ করছেন না৷ তাঁরা মনে করেন, উঠে দাঁড়ানো বা না দাঁড়ানোটা দেশপ্রেমের অভাব বা জাতীয় সংগীতকে অপমান করা নয়৷ জোর করে দেশপ্রেম কারোর ওপর চাপিয়ে দেওয়া যায় না৷ এটা অহেতুক৷ জাতীয়তাবাদ বা দেশভক্তির মতো অনুভূতিগুলি আসবে মনের ভেতর থেকে৷ এ সব লোকদেখানো হতে পারে না৷ টেলিভিশনে জাতীয় সংগীত বাজানো হলে, ঘরে ঘরে আইনের চোখকে ফাঁকি দেওয়া যায় সহজেই৷ কেউ দেখতে যাচ্ছে না৷ কাজেই দেশাত্মবোধ ব্যাপারটা সর্বোতভাবে নিজস্ব অন্তরের৷
এই প্রসঙ্গে ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপচারিতায় ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সের অধ্যাপক দেবদাস ভট্টাচার্য বললেন, ‘‘দেখুন সাংবিধান বা সুপ্রিম কোর্টের আদেশ নিয়ে আমার বলার কিছু নেই৷ তবে সুপ্রিম কোর্টের ওপর শ্রদ্ধা রেখে ব্যক্তিগতভাবে বলতে পারি যে, এই আদেশে আমি খুশি হতে পারিনি৷ এতে দেশাত্মবোধ বাড়ে কিনা জানি না৷ কারণ তাই যদি হয়, তাহলে শুধু সিনেমা হলে কেন? থিয়েটার নয় কেন?টেলিভিশনে নয় কেন? স্কুল, কলেজ, অফিসে নয় কেন? দিনের কাজ শুরু করার আগে জাতীয় সগীত গাইতে হবে, না হলে জেলে পোরা হবে – এটা মন থেকে মেনে নিতে পারছি না৷''
‘‘দেশে যখন অর্থনৈতিক ও সামাজিক উদার বাতাবরণ তৈরি হয়েছে, সেখানে এই ধরনের আদেশের মধ্যে কোথাও একটা বৈপরিত্য আছে বলে মনে হয়'', ডয়চে ভেলেকে জানান সমাজবিজ্ঞানী দেবদাস ভট্টাচার্য৷
তিনি জানান যে, তাঁর অনেক পরিচিত বন্ধু-বান্ধবরাও এই অভিমত পোষণ করেন৷ তবে আবারও বলি, আইন হলে তা নাগরিক হিসেবে মানতেই হবে৷ সবথেকে বড় কথা যিনি জাতীয় সংগীত লিখেছিলেন, বেঁচে থাকলে তিনি এ আইনে খুশি হতেন কিনা সন্দেহ৷ তাই বলছিলাম, মহামান্য শীর্ষ আদালত যদি আরও একটু ভেবে দেখতো, ভালো হতো৷ এবার থেকে সিনেমা দেখতে যাবার আগে এটা মাথায় রেখেই যেতে হবে, না হলে নয়৷ তাই তাঁর কথায়, ‘‘এর চেয়ে বরং ডিভিডি কিনে ঘরেই দেখবো৷''
নাগরিক সমাজের অন্য একটা অংশ অবশ্য মনে করেন, পছন্দ হলেই মানবো, না হলে নয়, এটা কোনো কথা না৷ যেসব আইন পছন্দ নয়, তা মানার দায় নেই, এটা হতে পারে না৷
উল্লেখ্য, সিনেমা হলে জাতীয় সংগীত বাজানোর প্রধান যুক্তি রোজ হাজার হাজার সিনেমা হলে লাখ লাখ লোক ছবি দেখতে যাচ্ছে, কাজেই দেশপ্রেমের বার্তা অনেক বেশি লোকের কাছে পৌঁছাবে৷
আপনি কী মনে করেন? সিনেমা হলে কি জাতীয় সংগীত বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত? লিখুন নীচের ঘরে৷