1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সিনেমা হলে জাতীয় সংগীত জরুরি?‌

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
১১ জানুয়ারি ২০১৮

নাগরিকদের সিংহভাগ একমত যে, সিনেমা হল জাতীয় সংগীত বাজানোর জায়গা নয়৷ দেশের সর্বোচ্চ আদালতও পরোক্ষে সেটাই বলছে৷ তবু নাছোড় দেশের সরকার৷

ছবি: Getty Images/AFP/D. Faget

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট আগেই বলেছিল, সিনেমা হল বা কোথাওই জাতীয় সংগীত বাজানো বাধ্যতামূলক করা যায় না৷ কারণ, একজন নাগরিকের দেশপ্রেম লোক দেখিয়ে বেড়ানোর, বা ঢাক পিটিয়ে জাহির করার জিনিস নয়৷ একই কারণে জাতীয় সংগীত চলার সময় কাউকে উঠে দাঁড়াতেও বাধ্য করা যায় না, বলেছিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত৷ এবং সেই প্রসঙ্গে দেশের সরকারকে পরোক্ষে ভর্ৎসনাও করেছিল যে, নজর দেওয়ার মতো দেশে আরও অনেক সমস্যা আছে৷ শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট তার রায় ঘোষণা করল যে, সিনেমা হলে জাতীয় সংগীত বাজানো কোনও যুক্তিতেই বাধ্যতামূলক করা যায় না৷ এরপরও নাছোড় কেন্দ্র সরকার জানিয়েছে, ১২টি কেন্দ্রীয় মন্ত্রক থেকে যুগ্ম সচিব পর্যায়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত একটি কমিটি সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরবর্তী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে৷

বিতর্কের পক্ষ-বিপক্ষ

This browser does not support the audio element.

একটি বাংলা প্রকাশন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত পলকশ্রী প্যাটেল৷ জন্মসূত্রে গুজরাটি হলেও তিনি পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা এবং বাংলা ভাষাটা বাঙালিদের মতোই বলেন৷ পলকশ্রী দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন সহকর্মী অনিমেষ দত্ত'র সঙ্গে৷ জাতীয় সংগীত নিয়ে দু'‌জনের বক্তব্য সম্পূর্ণ আলাদা৷ পলকশ্রী যেমন মনে করেন, সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্ত ঠিক হলো না, কারণ, সিনেমা হলে জাতীয় সংগীত বাজানোটাই বরং ঠিক হতো৷ কারণ, সাধারণ জীবনে জাতীয় সংগীত শোনার সুযোগ পাওয়া যায় না৷ অন্যদিকে অনিমেষের বক্তব্য, সিনেমা হল মোটেই জাতীয় সংগীত বাজানোর জায়গা নয়৷ লোকে সিনেমা হলে যায় বিনোদনের খোঁজে৷ সেখানে বাধ্যতামূলক দেশাত্মবোধ না দেখালেও চলবে৷ বরং দেশকে সম্মান জানানোর আরও অনেক পথ আছে, সেগুলোতে নজর দেওয়া যেতে পারে৷

‘...তাতেই বরং জাতীয় সংগীতের সম্মানহানি হয়’

This browser does not support the audio element.

দেবারতি দাশগুপ্ত বাঙালি হলেও জন্মেছেন, বড় হয়েছেন উত্তর প্রদেশে৷ এখন কলকাতার বাসিন্দা দেবারতিও মনে করেন, জাতীয় সংগীত সিনেমা হলে বাধ্যতামূলক করা উচিত নয়, কারণ, তাতেই বরং জাতীয় সংগীতের সম্মানহানি হয়৷ জাতীয় সংগীত শুনে সম্মান দেখাতে লোকে ঠিক সময়ে দাঁড়িয়ে না-ও উঠতে পারে৷ এ নিয়ে কেরালা এবং ভারতের অন্য রাজ্যেও সিনেমা হলে অশান্তি, হাঙ্গামা, থানা-পুলিশ সবই হয়েছে৷ কাজেই দেবারতির স্পষ্ট মত, বাধ্যতামূলক দেশপ্রেম দেখানোর এই পদ্ধতি বাতিল হওয়া উচিত৷

পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবীণ নাগরিক বললেন, এর আগেও সিনেমা হলে সরকারি তথ্য দপ্তরের নিউজ রিল দেখানো হতো, যার শুরুতে জাতীয় পতাকার ছবি থাকতো৷ সিনেমার শেষে জাতীয় সংগীত বাজানোরও চল ছিল৷ কিন্তু তখন দর্শকদের উঠে দাঁড়াতে বাধ্য করার কোনও চেষ্টা ছিল না৷ তা-ও দেখা যেতো অধিকাংশ মানুষই নিজে থেকে উঠে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীতকে প্রথামাফিক সম্মান জানাচ্ছেন৷ এই ঘটনা যে কোনও সময়ে একই ঘটবে৷ কিছু লোক থাকবেই, যারা নানা কারণে দাঁড়িয়ে ওঠা প্রয়োজনীয় মনে করবে না৷ কাজেই সম্মান প্রদর্শনকে বাধ্যতামূলক করার চেষ্টা করলে হাঙ্গামা আর অশান্তিই শুধু বাড়বে, দেশপ্রেম বাড়বে না!‌

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ