1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘সিবিআইকে রাজনৈতিক প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয়'

পায়েল সামন্ত কলকাতা
৯ এপ্রিল ২০২২

রাজ্যে একের পর এক মামলার তদন্তে সিবিআই৷ প্রকাশ্যে রাজ্য পুলিশে অনাস্থা জানাচ্ছেন অভিযোগকারীরা৷ কিন্তু সিবিআইয়ের সাফল্য নিয়েও আছে সংশয়৷

রাজ্য পুলিশের হাত থেকে মামলা হস্তান্তরিত হয়েছেছবি: Satyajit Shaw/DW

সাম্প্রতিক কালে পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি মামলার তদন্তভার হাতে নিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই৷ আদালতের নির্দেশে রাজ্য পুলিশের হাত থেকে মামলা হস্তান্তরিত হয়েছে৷ রামপুরহাটের ঘটনা, ঝালদার কাউন্সিলর খুন থেকে এসএসসি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার তদন্ত হাতে নিয়েছে সিবিআই৷ এর আগেও রাজ্যের একাধিক মামলার তদন্ত করেছে সিবিআই৷

সম্প্রতি দেশের প্রধান বিচারপতি এমএম নারাভানে সিবিআইয়ের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে সংশয়ের কথা বলেছেন৷ অতীতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার নির্ভরযোগ্যতার দিকটি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন৷ পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশে সিবিআই যে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলির তদন্ত করেছে, তার ইতিহাস কী বলছে?

তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘১৯৯৩-এর ভিখারি পাসোয়ান, ২০০১-এর গড়বেতা হত্যা, ২০০৭ সালের রিজওয়ানুর রহমানের রহস্যমৃত্যু থেকে নোবেল চুরি, সিবিআই তদন্তে সুরাহা হয়নি৷ দেশজুড়ে এমন অসংখ্য মামলা রয়েছে৷ সাধারণ মানুষেরও অভিজ্ঞতা, বহু কোটি টাকার সারদা ও নারদ মামলার তদন্তের ক্ষেত্রে বহু সময় পার হয়ে গিয়েছে৷ এখন কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে ভোট পরবর্তী হিংসা, কয়লা পাচার সংক্রান্ত মামলাও রয়েছে৷ অভিযোগ উঠেছে, নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই মামলা নিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থা তৎপর হয়৷ বাকি সময় তদন্তের কাজ চলে ঢিমেতালে৷ সিবিআইকে রাজনৈতিক প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয়৷''

‘রাজ্য পুলিশ শাসক দলের কথায় চলে’

This browser does not support the audio element.

রাজ্যের প্রাক্তন পুলিশ কর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘রাজ্য পুলিশ শাসক দলের কথায় চলে৷ যারা অপরাধের শিকার হচ্ছেন, তারা তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলছেন৷ এরা মনে করছেন, সিবিআই তদন্তভার নিলে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার হওয়ার সম্ভাবনা আছে, যা রাজ্য পুলিশের ক্ষেত্রে নেই৷ তাই ঘনঘন সিবিআই তদন্তের দাবি উঠছে৷

আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘রাজ্য পুলিশ বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে৷ তাই মানুষ যখন পুলিশকে সন্দেহ করে, তখন সিবিআই চায়৷ কিন্তু সিবিআই যে নিরপেক্ষ সেটাও নয়৷''

সিবিআইকে অতীতে সুপ্রিম কোর্ট ‘খাঁচাবন্দি তোতাপাখি' আখ্যা দিয়েছিল৷ পরবর্তীতে মাদ্রাজ হাইকোর্ট একই সুরে কেন্দ্রীয় সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে৷

সাংবাদিক শুভাশিস মৈত্র বলেন, ‘‘সিবিআইয়ের অপপ্রয়োগ শুরু হয়েছে ইন্দিরা গান্ধীর আমল থেকে৷ তারপর জনতা পার্টি ক্ষমতায় এসে কমিশন গড়েছিল৷ যদিও শেষমেশ কিছু বদলায়নি৷ সংসদের তিন তিনটি স্থায়ী কমিটির রিপোর্ট আছে৷ কিন্তু সবই রয়ে গিয়েছে ঠান্ডা ঘরে৷

আইনজীবী বিকাশরঞ্জন বলেন, ‘‘সারদা মামলায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যবেক্ষণে বলেছিল, সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন আছে৷ কিন্তু এটি আইনের দ্বারা তৈরি সংস্থা৷ নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতা তাদেরই প্রমাণ করতে হবে৷''

‘একেবারে নীচুতলা থেকে আওয়াজ না উঠলে অবস্থার পরিবর্তন হবে না’

This browser does not support the audio element.

বিজেপি যখন ক্ষমতায়, সেই সময় কেন্দ্রীয় সংস্থা পি চিদম্বরমের মতো শীর্ষস্থানীয় কংগ্রেস নেতাকেও জেলে পাঠিয়েছে৷ দেশের সবচেয়ে বড় দুই জাতীয় দল একে অপরের দিকে আঙুল তুললেও নিজেরা ক্ষমতায় থাকার সময় সিবিআইকে ব্যবহার করেছে বলে বিশ্লেষকদের পর্যবেক্ষণ৷ অর্থাৎ একই বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে কেন্দ্রীয় সংস্থা!

তদন্তে অসফল হওয়ার জন্য সব সময় সিবিআইকে দায়ী করতে রাজি নন নজরুল ইসলাম৷ তিনি মনে করেন, রাজ্য পুলিশ তদন্ত শুরু করার অনেকদিন পর কেন্দ্রীয় সংস্থা দায়িত্ব পাচ্ছে৷ তাদের আধিকারিকরা জাদু জানেন না৷ রাজ্য পুলিশ এর মধ্যে অনেক তথ্যপ্রমাণ লোপাট করে দিচ্ছে৷ এরপর তদন্তভার হাতে নিয়ে রহস্যের সমাধান কঠিন কাজ৷

বিকাশরঞ্জন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘তদন্ত যে-ই করুক, তাকে আইনের কাছে সৎ থাকতে হবে৷ রাজনৈতিক নেতা বা ব্যক্তির কাছে নয়৷ এই সর্বত্র একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷''

শুভাশিসের মতে, আস্থার অভাব ঘটলেও কোনো রাজনৈতিক দল চলতি পরিস্থিতি বদলাতে চায় না৷ একেবারে নীচুতলা থেকে আওয়াজ না উঠলে অবস্থার পরিবর্তন হবে না৷

বিকাশরঞ্জন মনে করেন, রাজ্য পুলিশ বা কেন্দ্রীয় সংস্থার কাছ থেকে মানুষ বিচার না পেলে বিদ্রোহ করবে৷ লাঠি হাতে রাস্তায় নামবে৷ তখন কেউ রেহাই পাবে না৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ