গণহত্যার আশঙ্কা
২৯ জুলাই ২০১২বিদ্রোহীদের হাত থেকে আলেপ্পোর বিভিন্ন এলাকার নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নিতে মরিয়া সরকারি সেনারা৷ হেলিকপ্টার এবং ট্যাংকের সহায়তা নিয়ে তাই দু'দিন ধরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে সরকারি বাহিনী৷ ইরান সফররত সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ালিদ আল-মুয়াল্লেম জানিয়েছেন, ‘বিদ্রোহীদেরকে অবশ্যই পরাস্ত করা হবে৷'
এদিকে, সিরিয়ার বিরোধী পক্ষ, সিরিয়ান ন্যাশনাল কাউন্সিল বা এসএনসি অভিযোগ করেছে, সেদেশের সরকারি বাহিনী আলেপ্পোয় গণহত্যার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে৷ এই বিষয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে জরুরী বৈঠকের আহ্বান জানায় এসএনসি৷ বিরোধী গোষ্ঠীর প্রধান আব্দেল বাসেত সাঈদা যুদ্ধ চালিয়ে যেতে বিদেশি মিত্রদের কাছ থেকে ভারি অস্ত্র সহায়তাও চেয়েছেন৷ বলাবাহুল্য, উপসাগরীয় অঞ্চলের সমৃদ্ধ দেশগুলো গত এপ্রিলে বিদ্রোহী সেনাদেরকে বেতনভাতা প্রদানের প্রতিশ্রুত দিয়েছিল৷ এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিদ্রোহীদেরকে যোগাযোগ রক্ষার উন্নত উপকরণ সরবরাহের বিষয়টিও স্বীকার করেছে৷
জাতিসংঘ-আরব লিগের বিশেষ শান্তি দূত কোফি আনান অবশ্য উভয় পক্ষকে সংঘর্ষ থেকে বিরত থাকতে বলেছেন৷ তাঁর মতে, শুধুমাত্র রাজনৈতিক পথে এই সহিংসতা নিরসন সম্ভব৷ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর হিসেবে অনুযায়ী, সিরিয়ায় গত বছরের মার্চ মাস ধরে চলা সরকারবিরোধী আন্দোলনে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বিশ হাজারের বেশি৷ সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীরা দাবি করেছে, রবিবারও সিরিয়ার দারা প্রদেশে সরকারি বাহিনীর হাতে প্রাণ হারিয়েছে ২১ ব্যক্তি৷ নিহতদের কয়েকজনকে জবাই করে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে৷
প্রসঙ্গত, গত ২০ জুলাই আলেপ্পোর বেশ কিছু অংশ দখল করে নেয়ে বিদ্রোহী সেনারা৷ কিন্তু এরপরই বিপুল সংখ্যক সরকারি সেনা বিভিন্ন এলাকা থেকে আলেপ্পোর দিকে রওয়ানা হয়৷ পর্যাপ্ত সেনা সংগ্রহের পর বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোকে ঘিরে ফেলে হেলিকপ্টার ও ট্যাংকযোগে অভিযান শুরু করে সরকারি সেনারা৷ তবে উভয়পক্ষই যুদ্ধে নিজেদের অগ্রগতির দাবি জানিয়েছে৷
বার্তাসংস্থা এএফপি'র এক প্রতিবেদক দাবি করেছেন, বিদ্রোহীরা অনেক এলাকা থেকে সরকারি সেনাদেরকে বিতাড়নে সক্ষম হয়েছে৷ আলেপ্পোয় বর্তমানে প্রায় ২৫ লাখ সাধারণ মানুষ অবস্থান করছে৷ গোলা এবং হেলিকপ্টার হামলা থেকে বাঁচতে এদের অনেকেই বিভিন্ন ভবনের বেসমেন্টে আশ্রয় গ্রহণ করেছে৷
এআই / আরআই (এএফপি, ডিপিএ)