জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন মিলিয়ে প্রায় ১০০টি সংস্থা সিরিয়া যুদ্ধ শেষ করতে বিশ্বের সব নাগরিকের কাছে একটি আবেদন করেছে৷
বিজ্ঞাপন
সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে আবেদনটি শেয়ার, রিটুইট ও লাইক করতে বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের ব্র্যাকের প্রধান ফজলে হাসান আবেদ সহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার প্রধানরা৷
জাতিসংঘের টুইটার অ্যাকাউন্টে একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে৷ এতে মাত্র ৬০ সেকেন্ডে সিরিয়া যুদ্ধের শুরু ও তার ফলে মানুষের যে চরম ভোগান্তি হয়েছে এবং হচ্ছে সেটা দেখানো হয়েছে৷ টুইটে লেখা হয়েছে, ‘‘সিরিয়ার জন্য ৬০ সেকেন্ড৷ দেখুন আর সিরিয়া সংকট শেষ করতে সহায়তা হিসেবে ভিডিওটি শেয়ার করুন৷''
আবেদনে বলা হয়েছে, ২০১১ সালের মার্চে শুরু হওয়া সিরিয়া যুদ্ধ ষষ্ঠ বার্ষিকীর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে৷ ‘‘লক্ষ লক্ষ নিরীহ মানুষ যারা ইতিমধ্যে অনেক ভোগান্তির শিকার হয়েছে এবং আরও লক্ষ লক্ষ মানুষ যাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার দোলায় দুলছে তাদের বাঁচাতে এখনই পদক্ষেপ নেয়া আহ্বান জানাচ্ছি আমরা'', আবেদনে বলা হয়েছে৷
এর আগে ২০১৩ সালে সিরিয়া সংকট বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছিল৷ সবশেষ আবেদনে সেই তথ্য উল্লেখ করে বলা হয়, ‘‘ওটা ছিল তিন বছর আগের কথা৷ যুদ্ধ এখনও চলছে৷ রক্তপাতের ঘটনা ষষ্ঠ বছরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে৷'' এবারের আবেদন রাষ্ট্রগুলোর জন্য নয়, বিশ্বের প্রতিটি মানুষের কাছে করা হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে৷
সিরিয়া সংকটের কারণে এখন পর্যন্ত দুই লক্ষ ৬০ হাজার মানুষের প্রাণ গেছে৷ এছাড়া প্রায় এক কোটি ৩৫ লক্ষ মানুষ সিরিয়ার ভেতরে মানবাধিকার সংকটে পড়েছেন৷ গৃহযুদ্ধ এড়াতে প্রায় ৪৬ লক্ষ সিরীয়কে প্রতিবেশী দেশ সহ অন্যান্য দেশে শরণার্থীর জীবন বেছে নিতে হয়েছে৷
সিরিয়ার সংকট সমাধানের আশায় সোমবার থেকে জাতিসংঘে নতুন করে শান্তি আলোচনা শুরু হচ্ছে৷
জেডএইচ/ডিজি (এএফপি, ডিপিএ)
অনশনের শহর মাদায়া
গত তিন মাস ধরে অনশনে মৃত্যুর বিরুদ্ধে যুঝছে মাদায়ার আবালবৃদ্ধবনিতা৷ তবে অবশেষে সেই মৃত্যুর শহরে মানবিক সাহায্য পৌঁছতে শুরু করেছে৷
ছবি: Aktivisten aus Madaja
শহরে আটক
আসাদ বিরোধী বিদ্রোহী ও আইএস যোদ্ধাদের দখলে মাদায়া৷ শহরটিকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে আসাদ সমর্থক ও হেজবোল্লা গোষ্ঠীর যোদ্ধারা৷ ফলে কোনো রসদ শহরে ঢুকতে পারছিল না, মানুষজন এমনকি ঘাসপাতা খেয়ে বেঁচে ছিলেন৷
ছবি: Aktivisten aus Madaja
জল আর নুন
আস্তাকুঁড়ে খাবারের খোঁজে মানুষ, গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে সিরিয়ায় এ ধরনের দৃশ্য কল্পনা করা যেত না৷ মা দুধের বদলে বাচ্চাকে জলে নুন গুলে খেতে দিচ্ছেন৷
ছবি: Aktivisten aus Madaja
অশনি সংকেত
যে ভিডিও থেকে এই শিশুটির ছবি নেওয়া হয়েছে, সেটি তোলা হয় ২০১৬ সালের ৫ই জানুয়ারি৷ শীতের মৌসুম চলেছে, কাজেই ক্ষুধা ও অপুষ্টির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে হাড়কাঁপানো শীত৷
ছবি: Reuters
কষ্ট তো ছোটদেরই
বড়দের যুদ্ধে যারা সবার আগে ও সবচেয়ে বেশি কষ্ট পায়, তারা হলো ছোটরা৷ অক্টোবর মাস থেকে মাদায়ায় বাইরে থেকে কোনোরকম সাহায্যই যে পৌঁছায়নি৷
ছবি: Aktivisten aus Madaja
মানবিক ট্র্যাজেডি
একবিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে মানুষকে যখন ঘাসের রুটি খেতে হয়, তখন সেটাকে ট্র্যাজেডি ছাড়া আর কী বলা চলতে পারে...৷
ছবি: Aktivisten aus Madaja
প্রতিবাদের ঝড়
যেমন সিরিয়ার ইদলিব শহরে৷ বিক্ষোভকারীরা চান, মাদায়ায় ত্রাণ পাঠানো হোক – আর চান গৃহযুদ্ধের অন্ত৷
ছবি: picture-alliance/AA/F. Faham
সাহায্য পৌঁছাবে কেমন করে
মাদায়া থেকে পালানোর চেষ্টা করতে গিয়ে একাধিক মানুষ গুলিতে প্রাণ দিয়েছেন৷ জুলাই মাস থেকেই মাদায়া অবরুদ্ধ, কাজেই সেখানে ত্রাণসাহায্য পাঠানো কঠিন৷
ছবি: picture alliance/dpa/P. Krzysiek
সাহায্য যখন পৌঁছাতে শুরু করল
সিরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান বাশার আল-আসাদের অনুমতি পাবার পর জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ও সেই সঙ্গে রেড ক্রস ও রেড ক্রেসেন্ট ত্রাণসাহায্য পাঠাতে শুরু করে৷
ছবি: Getty Images/AFP/L. Beshara
অন্যান্য ভুখা শহর
মাদায়াই শুধু নয়, সেই সঙ্গে একেবারে উত্তরে অবস্থিত আরো দু’টি শহরে ত্রাণ পাঠানো শুরু হয়েছে৷ শিয়া অধ্যুষিত ফুয়া ও কফারিয়া শহর দু’টি অবরুদ্ধ করে রেখেছে বিদ্রোহীরা, কিন্তু মানুষজনের অবস্থা মাদায়ারই মতো৷ কেননা যুদ্ধে দু’পক্ষ থাকতে পারে, অনশনে নয়৷