‘শিশুদের বিষয়ে হাল ছাড়বেন না'
১৩ মার্চ ২০১৫![Syrische Flüchtlinge aus Kobane in einem Flüchtlingslager in der Türkei](https://static.dw.com/image/18104772_800.webp)
ডিডাব্লিউ: সিরীয়দের অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন৷ আপনি কি আশা করেন যে তারা এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে?
মিস্টি বাসওয়েল: অবস্থা সংকটাপন্ন এবং জটিল৷ তবে আসল কথা হলো, সিরিয়ার নারী, শিশু এবং বিপর্যস্ত পুরুষদেরও মানবিক সহায়তা দেয়ার ব্যাপারে আমাদের একমত হওয়া উচিত৷ সহায়তার প্রক্রিয়াটি যাতে জটিল এবং কঠিন না হয় সে বিষয়েও আমাদের ঐক্যমত দরকার৷ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় হিসেবে প্রাথমিক এই বিষয়গুলোতে আমাদের একমত হওয়াটা জরুরি৷ আমার তো মনে হয় এই যুদ্ধ থেকে অনেক কঠিন কঠিন বিষয় বেরিয়ে আসছে৷ এ অবস্থায় আশাবাদী থাকা খুব কঠিন৷ তবে আমরা সিরিয়ার ভেতরের এবং সিরিয়া ছেড়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে শরণার্থী হওয়া শিশুদের নিয়ে কাজ করি৷ কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় কি জানেন, এই শিশুগুলো এমন ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেলেও এখনো কিন্তু হাসতে পারে, শিখতে চায়, স্কুলে যেতে চায়! আমি মনে করি, আমাদের এই আশার জায়গাটা ধরে রাখা আমাদের দায়িত্ব, কখনোই আশা ছাড়া উচিত নয়৷ ওরা (শিশুরা) তো আশা ছাড়েনি, আমরা কেমন করে ছাড়ি!
সাহায্য বেশি দরকার কি সিরিয়ায় আটকে পড়াদের, নাকি সিরিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলো এবং ইউরোপের আশ্রয় শিবিরে অবস্থানরত শিশুদের?
আমার মনে হয় সবার জন্য কাজ করাই আমাদের দায়িত্ব৷ এটা ঠিক যে যারা এখনো সিরিয়ায় আটকে আছে, তাদের চেয়ে অনেক সহজে আমরা সিরিয়া ছেড়ে আসা মানুষদের কাছে যেতে পারছি৷ সিরিয়ায় বিবদমান দু'পক্ষের উচিত দুর্গতদের কাছে মানবিক সহায়তা নিয়ে যেতে দেয়া৷
এত লম্বা একটা সময় ধরে সিরিয়ায় সংকট চলছে৷ যতদিন যাচ্ছে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে পারস্পরিক সংঘাত আরো বাড়ছে৷ সব গোষ্ঠিকে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন বা যে কোনো আইনের আওতায় রাখাই কঠিন৷ সবার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কীভাবে কাজ করা উচিত?
কাজটা খুব কঠিন৷ তবে সাধারণ মানুষের তো মানবিক সহায়তা পাওয়ার অধিকার আছে৷ মানবিক সহায়তা পৌঁছানোয় সহায়তা করার জন্য বিবদমান পক্ষগুলোর ওপর চাপ বাড়ানো নিরাপত্তা পরিষদের দায়িত্ব৷
‘ফেইলিং সিরিয়া' প্রতিবেদন অনুযায়ী সিরিয়ার এক চতুর্থাংশ স্কুল এখন বন্ধ৷ যুদ্ধের কারণে সেখানকার এবং শরণার্থী হয়ে যাওয়া অনেক শিশুই ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ৷ আপনাদের সংস্থা এই শিশুদের জন্য কী করছে?
অনেক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও আমরা সিরিয়ার ভেতরের শিশুদেরও লেখাপড়ায় সহায়তা করছি৷ শিশুরা কীভাবে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারে, তার উপায় বের করার জন্য আমরা স্কুল কর্তৃপক্ষ, শিক্ষক এবং স্থানীয়দেরও সাহায্য-সহযোগীতা করি৷ স্কুলে হামলা হচ্ছে, শিশুরা মারা যাচ্ছে এ বিষয়টি নিয়ে আমরা খুব দুশ্চিন্তাগ্রস্ত৷ গত বছরও ১৬০ জনের বেশি শিশু তাদের স্কুলে মারা গেছে৷
সিরিয়ার রাজনৈতিক সমাধান কার্যকর হবে বলে মনে হচ্ছেনা৷ পরিস্থিতি কী আরো খারাপের দিকে যেতে পারে?
আর কতটা খারাপ হতে পারে? ২০১৪ সালকে তো সিরিয়া সংকট শুরুর পর থেকে সবচেয়ে খারাপ বছর বলে মনে হলো৷ রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে হলে সংকটটাকে আরো অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে মূল্যায়ন করতে হবে৷ এই জায়গটাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বড় একটি ভূমিকা থাকা দরকার৷ এখনো কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে শান্তি স্থাপনের জন্য বড় রকমের কোনো আহ্বানের আওয়াজ শোনা যায়নি৷ সিরিয়ার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ কিন্তু যুদ্ধের অবসান চায়৷ সে'কারণেই আমরা মনে করি সিরিয়া যুদ্ধ বন্ধ করার বিষয়টিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরো গুরুত্ব আরোপ করা উচিত৷
মিস্টি বাসওয়েল, ‘সেভ দ্য চিলড্রেন'-এর রিজিওনাল অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন-এর পরিচালক৷