অভিযোগ, এই বিচারপতি হাজার হাজার মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। সিরিয়ার নতুন প্রশাসন এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
এই জেলেই রাখা হবে বিচারপতিকেছবি: Asaad al-Asaad/newscon/picture alliance
বিজ্ঞাপন
সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদের সরকারের আমলে হাজার হাজার বিরোধীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জেলে আটক করে নির্যাতন করা হয়েছে। বহু মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। নতুন সরকার এসে সাবেক আমলের 'হত্যাকারী'দের আটক করতে শুরু করেছে বলে সিরিয়া ওয়ার মনিটার সংস্থা জানিয়েছে।
সিরিয়ার মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছে, যে বিচারপতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তার নাম মোহাম্মেদ কানজো হাসান। টারটাস অঞ্চল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসাদের সঙ্গে তার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল বলে দাবি করা হয়েছে। ওই বিচারপতির সঙ্গে আরো ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা ওই বিচারপতির সহযোগী বলে জানানো হয়েছে। সেনা বিচারালয়ে ওই বিচারপতি হাজার হাজার বিদ্রোহীদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন বলে অভিযোগ।
মুক্তির আনন্দে দেশে দেশে সিরীয়দের উল্লাস
বাশার আল আসাদের পতনের মাধ্যমে সিরিয়ায় শেষ হলো বাথ পার্টির দীর্ঘ ৬১ বছরে শাসন। সেই সাথে হলো আসাদ পরিবারের ৪৩ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান। আসাদ সরকারের পতনে তাই দেশে-বিদেশে আনন্দ-উল্লাসে মেতেছেন সিরীয়রা।
ছবি: Julius Christian Schreiner/dpa/picture alliance
দামেস্ক, সিরিয়া
বাশার আল আসাদের পতনের মাধ্যমে অবসান ঘটেছে সিরিয়ায় বাথ পার্টির ৬১ বছরের শাসনামলের। রোববার (৮ ডিসেম্বর) আসাদ সরকারের পতনের পর উচ্ছ্বসিত নারী শিশু সবাই নেমে আসেন রাজধানী দামেস্কের রাস্তায়। এ সময় পতাকা হাতে এক সিরিয়ান নারীকে উদযাপন করতে দেখা যায়।
ছবি: Bekir Kasim/Anadolu/picture alliance
আঙ্কারা, তুরস্ক
সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের কারণে পার্শ্ববর্তী দেশ তুরস্কে আশ্রয় নেয়া সিরিয়ার নাগরিকরা বাশার আল আসাদের পতনে বিজয় মিছিল করেছেন। তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারার রাস্তায় সিরিয়া ও তুরস্ক দুই দেশের পতাকা হাতে তাদের আনন্দ মিছিল করতে দেখা যায়।
ছবি: Tunahan Turhan/SOPA Images via ZUMA Press Wire/picture alliance
উট্রেশট, নেদারল্যান্ডস
গৃহযুদ্ধের কারণে ইউরোপে অবস্থানরত সিরীয় শরণার্থীরাও পিছিয়ে থাকেননি আনন্দ উদযাপনে। নেদারল্যান্ডের উট্রেশট শহরে নারী-পুরুষ সকলেই সিরিয়ার পতাকা হাতে মুক্তির আন্দন্দ ভাগাভাগি করেন।
ছবি: Rob Engelaar/ANP/IMAGO
হামবুর্গ, জার্মানি
প্রায় এক যুগ ধরে চলা গৃহযুদ্ধের কারণে সবচেয়ে বেশি সিরীয় শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছেন জার্মানিতে। বাশার আল আসাদের পতনের খবরে দেশটির রাজধানী বার্লিনসহ বেশ কয়েকটি শহরে উচ্ছ্বসিত মানুষের জমায়েত দেখা যায়। বন্দর নগরী হামবুর্গের সেন্ট্রাল রেলস্টেশনের সামনে আন্দন্দ মিছিল করছেন সিরিয়ার নাগরিকরা।
ছবি: Bodo Marks/dpa/picture alliance
বেলগ্রেড, সার্বিয়া
সার্বিয়ার রাজধানী বেল্গ্রেডে সিরিয়ার দূতাবাসের সামনে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের পতাকা টানাতে দেখা যায়।
ছবি: Darko Vojinovic/AP Photo/picture alliance
লন্ডন, যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যে বসবাসরত সিরিয়ার শরণার্থীরা লন্ডনের ট্রাফালগার স্কয়ারে সমবেত হয়েছিলেন। সেসময় তাদের সিরিয়ার বাশার আল আসাদের বিরোধীদের পতাকা উড়াতে দেখা যায়।
ছবি: Mina Kim/REUTERS
6 ছবি1 | 6
২০১১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত সিরিয়ার মিলিটারি ফিল্ড কোর্ট বা সেনা আদালতের প্রধান ছিলেন কানজো। ২০১১ সালেই সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এরপর গোটা সিরিয়ার সেনা আদালতের প্রধান হিসেবে পদন্নোতি হয় তার। অভিযোগ এই সময়ে, এক মিনিটেরও কম সময়ে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করে দিতেন কানজো। ওই সময়ের মধ্যেই তিনি মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়ে দিতেন। অর্থাৎ, কার্যত বিনা বিচারে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতো বিদ্রোহীদের।
অভিযোগ, বন্দিদেরপরিজনদের কাছ থেকে ১৫০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি টাকা ঘুষ নিয়েছেন এই বিচারপতি। তার বিনিময়ে তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়নি।
সিরিয়ার অন্যতম চর্চিত জেলের নাম সিডনায়া। নির্যাতন, বিচার বহির্ভূত হত্যার জন্য পরিচিত এই কুখ্যাত জেল ছিল আসাদের তৈরি। এখানেই বিদ্রোহাদের ঢুকিয়ে নির্যাতন চালানো হতো। রাজধানী দামাস্ক থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই জেল। ২০১১ সাল থেকে এই জেলে অন্তত ৩০ হাজার মানুষকে বন্দি করা হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য। তার মধ্যে মাত্র ছয় হাজার ব্যক্তি পরে ছাড়া পেয়েছেন। অধিকাংশ মানুষ এখনো নিখোঁজ।