সিরিয়ার পরিস্থিতি
৪ ফেব্রুয়ারি ২০১২জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ভোটাভুটির কথা
সিরিয়ার সংকট সমাধানে আরব লিগসহ পশ্চিমা গোষ্ঠী একটি খসড়া প্রস্তাব নিয়ে এগুচ্ছে৷ আর তা হলো সেখানে সহিংসতা ও সংঘর্ষ বন্ধে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াতে হবে৷ উপ-রাষ্ট্রপতির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার দাবি তুলেছে আরব লিগ৷ বিশেষ করে সিরিয়ায় পাঠানো আরব লিগের পর্যবেক্ষক দলকে প্রত্যাহার করার পর এখন জাতিসংঘের দিকেই চেয়ে আছে সবাই৷ আরব লিগও দ্রুত সংকট সমাধানে জাতিসংঘকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে৷ ফলে দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার পর শনিবার একটি খসড়া প্রস্তাবের উপর ভোটাভুটি করার কথা রয়েছে নিরাপত্তা পরিষদে৷
ভোটাভুটির ব্যাপারে রাশিয়ার অবস্থান
কিন্তু রাশিয়া এখনও বলে যাচ্ছে, খসড়া প্রস্তাবে বেশ কিছু সংস্কার করা হলেও তা এখনও যথেষ্ট নয়৷ তাই রাশিয়ার প্রস্তাব অনুসারে সঠিক পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হলেই শুধুমাত্র তাতে রাশিয়ার সমর্থন থাকবে, অন্যথা নয়৷ ফলে তড়িঘড়ি এখনই বিতর্কিত প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে তা নিরাপত্তা পরিষদের আরেকটি ‘কলঙ্ক' হবে৷ কারণ রাশিয়া তাতে সমর্থন দেবে না এবং তা অনুমোদনও হবে না৷ বার্তা সংস্থা ইতার-তাস জানিয়েছে, শনিবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী সের্গেই লাভরভ সিরিয়া বিষয়ক খসড়া প্রস্তাবের ব্যাপারে এভাবেই তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন৷ লাভরভের এই সাক্ষাৎকার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন রোসিয়া-ওয়ান'এ সম্প্রচার করা হয়৷ এছাড়া মস্কোর এ অবস্থানের কথা একদিন আগেই মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টন এবং জাতিসংঘে রাশিয়ান দূতের কাছেও পাঠানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি৷
বিশেষ করে সিরিয়ার উপর বাহির থেকে সামরিক হস্তক্ষেপের বিরোধী রাশিয়া এবং সংকটের রাজনৈতিক সমাধান চায় মস্কো৷ তাই সরকারের সাথে বিরোধী দলগুলোর সমঝোতা বৈঠকের মাধ্যমেই সমাধান করার পক্ষে মস্কোর অবস্থান৷
হোমস শহরে সরকারি বাহিনীর হামলা
এদিকে, আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী যখন সিরিয়ার সংকট সমাধানে ভোটাভুটির দিকে এগুচ্ছে তার কয়েক ঘণ্টা আগে হোমস শহরে গোলা হামলা চালিয়েছে দেশটির সরকারি বাহিনী৷ হোমস শহরের খালিদিয়া এলাকায় এ হামলা চালানো হয় শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শনিবার ভোর অবধি৷ খালিদিয়া এলাকায় অধিকাংশ সুন্নি জনগোষ্ঠীর বাস বলে জানা গেছে৷ প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ বিরোধী বিক্ষোভ-আন্দোলন শুরুর পর থেকে গত এগারো মাসের সহিংসতা ও সংঘর্ষের মধ্যে শনিবারের হামলায় সবচেয়ে বেশি হতাহত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে৷ যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস এবং স্থানীয় সমন্বয়কারী পরিষদ জানিয়েছে, শনিবারের হামলায় নিহতের সংখ্যা দুই শতাধিক৷ নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে৷
মানবাধিকার সংস্থাটির প্রধান রামি আব্দুল রহমান বলেছেন, গত মার্চ থেকে চলমান গণআন্দোলনের মধ্যে এটিই সবচেয়ে নৃশংস হামলার ঘটনা৷ তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, সিরিয়ার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীরা সন্ত্রাসীদের উস্কিয়ে দিতে এমন মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে৷ অন্যদিকে, সিরিয়ার সহিংসতার প্রতিবাদে শনিবার প্রবাসী সিরিয়ানরা লন্ডন, বার্লিন, কায়রো এবং কুয়েত সিটিতে অবস্থিত সিরীয় দূতাবাসে হামলা চালিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী