সিরিয়ায় আবার ইসরায়েলের বিমান হামলা
৯ জুন ২০২১ব্রিটেনভিত্তিক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস আরো জানায়, মঙ্গলবার ইসরায়েলের বিমান থেকে হোমস, হামা, লাতাকিয়া প্রদেশ এবং রাজধানী দামেস্কে বেশ কিছু হামলা চালানো হয়৷ হোমস নগরীর কাছের গ্রাম খিরবেতের কাছেই হেজবুল্লাহর একটি অস্ত্রের গুদাম রয়েছে৷ সেখানে ইসরায়েলের চালানো বিমান হামলায় ১১ জন প্রাণ হারায়৷ সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের প্রধান রামি আব্দুল রহমান বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘‘কমপক্ষে সাতজন সেনাসদস্য এবং ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্সের চারজন মিলিশিয়া মারা গেছেন৷''
সিরিয়ায় নির্বাচন : পশ্চিমাদের সমালোচনা, আসাদের তাচ্ছিল্য
সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ৷ নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ সমালোচকদের প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ বলেছেন, ‘‘আপনাদের মতামতের সামান্য গুরুত্বও নেই৷’’ ছবিঘরে বিস্তারিত...
নির্বাচনের সমালোচনা এবং আসাদের জবাব
নির্বাচন সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি এবং ইটালির মন্তব্য, ‘‘এ নির্বাচন স্বচ্ছ নয়, সবার জন্য উন্মুক্তও নয়৷’’ এর প্রতিক্রিয়ায় সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ বলেন, ‘‘আপনাদের মতামতের সামান্য গুরুত্বও নেই৷’’ ছবিতে দুমার এক ভোটকেন্দ্রে আসাদ ও তার স্ত্রী আসমার ভোট দেয়ার দৃশ্য৷
বিরোধীদের বিক্ষোভ
শুধু প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের অনুগত বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে এমন সব অঞ্চলে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পর্যবেক্ষণে আয়োজনের দাবি জানিয়েছিল জাতিসংঘ৷ আসাদ সরকার তা মানেনি৷ সরকার নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের বাইরে বুধবার আসাদ ও নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন বিরোধীরা৷ ওপরে ইডলিবের এক বিক্ষোভ সমাবেশের ছবি৷
আসাদ আরো সাত বছর?
আসাদের বাবা হাফেজ-আল-আসাদ ৩০ বছর সিরিয়া শাসন করেন৷ ২০০০ সালে তিনি মারা গেলে শুরু হয় আসাদ-পর্ব৷ আগের তিন নির্বাচনের সর্বশেষটি হয়েছিল ২০১৪ সালে৷ অনেক প্রার্থী অংশ নিলেও সেবার ৮৮ ভাগ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন সাবেক চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ আসাদ৷ এবারের নির্বাচনেও তার জয় অবশ্যম্ভাবী বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ ছবিতে ড্রোনের সহায়তায় পতাকা উড়িয়ে আসাদ-বিরোধী প্রার্থীর অভিনব প্রচার৷
ভোট গণনা
ভোটগ্রহণ শেষে গণনা শুরু করতে দেখা যাচ্ছে নির্বাচন-কর্মীদের৷ শুক্রবার সিরিয়ার সময় সন্ধ্যে নাগাদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করার কথা৷
জার্মানিতে বিক্ষোভ
সিরিয়া যুদ্ধ শুরুর পর জার্মানিতে আশ্রয় নেয়া সিরীয়দের একটি অংশ বার্লিনে আসাদ এবং তার সরকারের অধীনে অনুষ্ঠানরত নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন৷ সমাবেশে তার নিখোঁজ বাবার ছবি নিয়ে অংশ নেন ওয়াফা মুস্তাফা৷ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘‘আসাদ যতদিন ক্ষমতায় আছেন, ততদিন আমার বাবাসহ এক লাখ ৩০ হাজার জনকে জোর করে কারাগারে রাখা হবে৷’’
প্রবাসী সিরীয়দের ভোট দেয়া-না দেয়া
‘বৈধভাবে’ যারা সিরিয়া ছেড়েছিলেন, তাদের বিদেশ থেকেও নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ দিয়েছে বাশার আল আসাদ সরকার৷ অনেক দেশে অবস্থানরত সিরীয়রা পাসপোর্টে সিরিয়া ছাড়ার সিল দেখিয়ে ভোট দিতে পারলেও জার্মানি, তুরস্কসহ বাশার আল আসাদ-বিরোধী সাতটি দেশ কাউকেই এ নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়নি৷ ছবিতে দামেস্কে বাসে চড়ে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার দৃশ্য৷
তাদের কাছে নির্বাচন বড় আনন্দের
বুধবার ভোটারদের মাঝে স্বতস্ফূর্ত আনন্দও দেখা গেছে৷ ছবিতে ভোট দেয়ার পর দুই তরুণীর প্রাণখোলা হাসির সেল্ফি তোলার মুহূর্ত৷
শ্লোগানমুখর ভোটকেন্দ্র
দামেস্কের এক ভোটকেন্দ্রের বাইরের ছবি৷ নিজেদের প্রার্থীর সমর্থনে শ্লোগান দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা৷
সমর্থকদের মাঝে আাসাদ
দুমার ভোটকেন্দ্রের বাইর এক সমর্থকের সঙ্গে কথা বলছেন বাশার আল আসাদ৷ পাশে তার ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত স্ত্রী আসমা৷
নিরাপত্তা
যুদ্ধের কারণে সিরিয়ার প্রায় অর্ধেক মানুষ দেশ ছেড়েছে৷ যুদ্ধে নিহত হয়েছে তিন লাখ ৮৮ হাজার মানুষ৷ নির্বাচনের দিনেও দেশজুড়ে ছিল কড়া নিরাপত্তা৷ দামেস্কের ছবি৷
আসাদের প্রতিদ্বন্দ্বী
দামেস্কে ভোট দিচ্ছেন বিরোধী প্রার্থী মাহমুদ মারেই৷ এছাড়া সাবেক মন্ত্রী আব্দাল্লাহ সালুম আব্দাল্লাহ-ও ভোটের এ লড়াইয়ে অংশ নেন৷
নারীদের অংশগ্রহণ
নির্বাচনে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো৷ ছবিতে দামেস্কে এক নারীর ভোট দেয়ার দৃশ্য৷
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে টানা ১১ দিনের যুদ্ধের পর এই প্রথম সিরিয়ায় বিমান হামলা চালালো ইসরায়েল৷ ২১ মে মিশরের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি মেনে নেয় হামাস ও ইসরায়েল৷
২০১১ সালে সিরিয়ায় যুদ্ধ শুরু হয়৷ এরপর থেকে সিরিয়ার ওপর অনেক বার বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল৷
সিরিয়ার ফটোগ্রাফারদের চোখে এক দশকের গৃহযুদ্ধ
সিরিয়ায় চলমান গৃহযুদ্ধের মধ্যে দৈনন্দিন জীবনের ছবি তোলেন স্থানীয় কিছু সাংবাদিক৷ সেসব ছবি সমকালীন ইতিহাসের নথি হিসেবে সংগ্রহ করছে জাতিসংঘ৷ দেখুন ছবিঘরে৷
রাকার ধ্বংসস্তূপে স্মৃতির খোঁজ
চারপাশে ধ্বংসস্তূপ, এর মাঝে একটি স্ট্রলার নিয়ে হাঁটছেন এক নারী৷ ২০১৯ সালে রাকায় তোলা ছবিটি৷ ফটোগ্রাফার আবুদ হামাম বললেন, ‘‘আমার শহরের এই অবস্থা আমাকে খুব কষ্ট দেয়৷ এর প্রতিটি রাস্তায় আমার স্মৃতি আছে৷ আমাদের অতীতের সব স্মৃতি, এই শহরের সাথে জড়িয়ে থাকা প্রতিটি মুহূর্ত তারা ধ্বংস করে দিয়েছে৷’’
অন্তহীন শোক
২০২০ সালে ইদলিবে তোলা এই ছবিতে মায়ের মৃত্যুর পর দুই ভাই একে অপরকে জড়িয়ে কাঁদছে৷ সিরিয়া যুদ্ধ যখন শুরু হয়, তখন ফটোগ্রাফার গাইথ আল সাঈদের বয়স ছিলো ১৭৷ সেসময় বোমা হামলায় তিনি তার ভাইকে হারান৷ সাঈদ বলেন, ‘‘আমি যখনই কোন বিমান হামলার ছবি তুলতে আসি, তখন আমার ভাইয়ের কথা মনে হয়৷ প্রতিদিনই এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে৷’’
বোমা হামলায় সৃষ্ট পানির পুল
২০১৩ সালে বোমা হামলায় বিধ্বস্ত পাইপ থেকে পানি বের হয়ে ছোট্ট পুলের মত তৈরি হয়েছে৷ সেখান থেকে পানি খাচ্ছে আলেপ্পোর এই ছেলেটি৷ ফটোগ্রাফার মুজাফ্ফার সালমান বললেন, ‘‘অনেকেই আমার এই ছবিটির সমালোচনা করে বলেছেন, ফটোগ্রাফারের উচিত ছিলো ছেলেটিকে বিশুদ্ধ পানি খাওয়ানো৷ কিন্তু আমার মতে, যা বাস্তব সেটাই তুলে ধরা উচিত, যাতে মানুষ পরিস্থিতিটা উপলব্ধি করে তা পরিবর্তনের চেষ্টা করে৷’’
ঘৌলা ছেড়ে যাচ্ছে মানুষ
২০১৮ সালের মার্চ মাসে ঘৌলা ছেড়ে যাওয়ার সময় নিজের সন্তানকে একটা সুটকেসে ভরে নিয়ে যাচ্ছেন এক বাবা৷ ফটোগ্রাফার ওমর সানাদিকি বলেন, ‘‘যুদ্ধ কেবল সিরিয়াকে বদলে দেয়নি, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিয়েছে এবং বিশ্বের কাছে কীভাবে মানবিক আবেদন তুলে ধরতে হয় সেটাও আমাদের শিখিয়েছে এই যুদ্ধ৷ আমার স্বপ্ন, ৫০ বছর পর আমার দুই মেয়ে বিশ্বের কাছে এই ছবিগুলো তুলে ধরবে৷’’
দৌমায় এক কাপ কফি
দামেস্কের অদূরে দৌমায় নিজের বাড়িতে বসে কফি খাচ্ছেন এক দম্পতি৷ ২০১৭ সালে তোলা ছবিটি৷ ফটোগ্রাফার সামির আল দৌমি বলেন, ‘‘উম্মে মোহাম্মদ আমার দেখা বিশেষ একজন মানুষ৷ যুদ্ধে গুরুতর আহত হন, একটু সুস্থ হতেই স্বামী বিমান হামলায় আহত হয়ে চলার শক্তি হারান৷ স্বামীর প্রতি তার ভালোবাসা অতুলনীয়৷’’
মর্টার হামলায় পা হারানো শিশুটি
২০১৩ সালের ডিসেম্বরে দামেস্কে তোলা ছবিতে দেখা যাচ্ছে, রাতের খাবারের জন্য অপেক্ষা করছে পাঁচ বছরের আইয়া৷ স্কুলে যাওয়ার সময় মর্টার হামলায় পা হারায় সে৷ ফটোগ্রাফার ক্যারোল আলফারাহকে আইয়া বলে, ‘‘আমি তখন আমার বাদামি জুতাটা পড়েছিলাম, জুতার সাথে আমার পা-টাও উড়ে গেলো৷ চলে গেলো আমার পা৷’’
পার্কুর প্রশিক্ষণ
আলেপ্পোর কাছে কাফর নৌরানে পার্কুর অ্যাথলেটরা বিধ্বস্ত ভবনে তাদের প্রশিক্ষণ অব্যাহত রেখেছেন৷ ছবিটি ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে তোলা৷ ফটোগ্রাফার আনাস আলখারবোতিল দেখাতে চেয়েছেন ধ্বংসের মধ্যেও মানুষের জীবন থেমে থাকে না৷
নতুন করে বাঁচা
‘‘অস্ত্রবিরতির পর ইদলিবের দক্ষিণে বালিউন শহরে এক পরিবারের বাড়িতে ফেরার এই ছবিটা তুলেছিলাম ২০২০ সালে৷ ছবিটি তুলতে গিয়ে আমার একই সাথে আনন্দ ও কষ্টের অনুভূতি হয়েছিল৷ ’’ জানালেন ফটোগ্রাফার আলি হাজ সুলেইমান৷ তিনি বললেন,‘‘ মানুষকে বাড়ি ফিরতে দেখে আমার আনন্দ হয়েছে, কিন্তু কষ্ট হয়েছে এই ভেবে আমি আমার গ্রামে যেতে পারছি না৷’’
এসিবি/ কেএম (এএফপি)