সিরিয়ায় ইরানপন্থি মিলিশিয়ার উপর আক্রমণ অ্যামেরিকার। ইরাকে মার্কিন সেনা ঘাঁটি ও দূতাবাসে রকেট হামলার পর বাইডেন এই নির্দেশ দেন।
বিজ্ঞাপন
প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নেয়ার পর জো বাইডেন এই প্রথম অন্য দেশে সন্ত্রাসীদের উপর আক্রমণের নির্দেশ দিলেন। পেন্টাগন জানিয়েছে, সিরিয়ায় ইরানপন্থি সন্ত্রাসীদের উপর আক্রমণ চালানো হয়েছে। সীমান্তের কন্ট্রোল পয়েন্টে সন্ত্রাসীদের বেশ কিছু পরিকাঠামো ধ্বংস করা হয়েছে বলে তাদের দাবি।
পেন্টাগন জানিয়েছে, তাদের এই আক্রমণের ফলে একটা বার্তা দেয়া সম্ভব হয়েছে। আক্রমণের আগে বন্ধু দেশগুলির সঙ্গে কথাও বলা হয়েছে। সামরিক প্রতিক্রিয়ার পাশাপাশি কূটনৈতিক স্তরেও আলোচনা চালানো হবে বলে জানানো হয়েছে।
পেন্টাগন বলেছে, তাদের লক্ষ্য ছিল ইরানপন্থি দুই মিলিশিয়া কাতাইব হেজবোল্লাহ এবং কাতাইব সঈদ আল-সুহাদা। তাদের দাবি, এটা হলো সমানুপাতিক সামরিক প্রতিক্রিয়া। সম্প্রতি ইরাকে মার্কিন সেনা ঘাঁটি লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালানো হয়। তাতে একজন কন্ট্রাক্টরের মৃত্যু হয়েছে। বেশ কয়েকজন আহত। তারপর বাগদাদে মার্কিন দূতাবাস লক্ষ্য করেও রকেট হামলা হয়।
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিগুলো
ইরাক থেকে তুরস্ক, মধ্যপ্রাচ্যের বেশিরভাগ দেশেই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি৷ আছে হাজারো সৈন্য৷ এই ঘাঁটিগুলো দিয়ে ইরানকে চারপাশ থেকে ঘিরে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র৷
ছবি: imago/StockTrek Images
ইরাক
ইরাকে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ৫,২০০ সৈন্য রয়েছে৷ তবে তা ক্রমান্বয়ে কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছে পেন্টাগন৷ এর অংশ হিসেবে বেশ কয়েকটি ক্যাম্প থেকে এরিমধ্যে সৈন্য প্রত্যাহারও করা হয়েছে৷ বর্তমানে গ্রিন জোন, বাগদাদের কূটনৈতিক এলাকা, আল আসাদ বিমান ঘাঁটিতে দেশটির সেনাসদস্য রয়েছে৷ গত নভেম্বরে আল আসাদ বিমান ঘাঁটিতে সৈন্যদের সঙ্গে দেখা করেছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্স৷
ছবি: imago/StockTrek Images
কুয়েত
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম মিত্র কুয়েত৷ দুই দেশের মধ্যে রয়েছে প্রতিরক্ষা সহায়তা চুক্তি৷ দেশটিতে রয়েছে বেশ কয়েকটি মার্কিন ঘাঁটি৷ যেখানে প্রায় ১৩ হাজার সৈন্য রয়েছে৷
ছবি: Getty Images/S. Nelson
সিরিয়া
সিরিয়ার কোথায় যুক্তরাষ্ট্রের কত সংখ্যক সৈন্য রয়েছে সে বিষয়টি প্রকাশিত নয়৷ অক্টোবরে সেখান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার শুরু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন৷ তার আগ পর্যন্ত দেশটিতে প্রায় ২০০০ সৈন্য ছিল, বর্তমানে যা ৮০০ জনে নেমে এসেছে৷ যেসব ঘাঁটি চালু আছে তার একটি সিরিয়ান-জর্ডান সীমান্তে৷ এর কাছেই রয়েছে ইরানীয় আর তাদের সমর্থিত বাহিনী৷
ছবি: -picture alliance/AP Photo/Z. Garbarino
জডার্ন
ইরাক, সিরিয়া, ইসরায়েল, আর সৌদি আরবের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে জডার্নের৷ কৌশলগত দিক থেকে তাই মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভৌগলিক অবস্থান এটি৷ দেশটির মুভাফফাক ছালটি বিমান ঘাঁটি থেকে সিরিয়ায় আইএস বিরোধী হামলা চালানো হয়েছে৷ অবশ্য কিং ফয়সাল বিমান ঘাঁটিতে ২০১৬ সালে তিন মার্কিন সেনা নিহত হয়েছিল জডার্নের বিমান বাহিনীর গুলিতে৷
ছবি: AP
সৌদি আরব
সৌদি আরবে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের তিন হাজার সেনাসদস্য রয়েছে৷ অক্টোবরে সৌদি তেলক্ষেত্রে হামলার পর ইরানের সঙ্গে সৌদি আরবের সংঘাতের শঙ্কায় সেখানে আরো সৈন্য পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে তারা৷
ছবি: Getty Images/AFP/F. Nureldine
বাহরাইন
বাহরাইনে যুক্তরাষ্ট্রের একটি নৌ ঘাঁটি রয়েছে৷ দ্বীপ রাষ্ট্রটি বরাবরই সৌদি আরবের মিত্র৷ ইরানের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের পদক্ষেপের সমর্থকও তারা৷ বর্তমানে সেখানে সাত হাজার মার্কিন সৈন্য রয়েছে৷
ছবি: AP
ওমান
ওমানের অবস্থান হরমুজ প্রণালীর কাছে আরব উপকূলে, যা জ্বালানি পরিবহনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পথ৷ ২০১৯ সালের মার্চে যুক্তরাষ্ট্রেকে বিমান ও সমুদ্র বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেয় ওমান৷ বর্তমানে সেখানে ৬০০ মার্কিন সৈন্য রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/E. Noroozi
সংযুক্ত আরব আমিরাত
হরমুজ প্রণালীর পাশে থাকা আরেক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত৷ তাদেরও যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের সাথে ভাল সম্পর্ক বিদ্যমান৷ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেখানে পাঁচ হাজার সৈন্য পাঠিয়েছে পেন্টাগন৷
ছবি: picture-alliance/AP/K. Jebreili
কাতার
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটিটি কাতারের আল উদিদে৷ এর আধুনিকায়নে ২০১৮ সালে ১৮০ কোটি ডলারে একটি প্রকল্প ঘোষণা করেছে কাতার৷ বর্তমানে সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ১৩ হাজার সৈন্য নিযুক্ত রয়েছে৷
ছবি: Reuters/N. Zeitoon
তুরস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য রয়েছে তুরস্কেও৷ দেশটির ইনজিরলিক বিমান ঘাঁটিসহ বেশ কিছু জায়গায় মার্কিন সেনা অবস্থান করছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
10 ছবি1 | 10
পেন্টাগনের দাবি, প্রেসিডেন্ট বাইডেন অ্যামেরিকা ও মিত্র দেশগুলির সেনাকে রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। আবার তিনি পূর্ব সিরিয়া ও ইরাকের পরিস্থিতি খারাপ হোক তাও চান না। সবদিক বিবেচনা করে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের খবর, সাতটি ৫০০ পাউন্ডের বোমা কয়েকটি বাড়ির উপর ফেলা হয়েছে। সিরিয়া-ইরাক সীমান্তে এই বাড়িগুলি থেকেই অস্ত্র পাচার করা হতো এবং সন্ত্রাসীরা ইরাকে ঢুকত বলে অভিযোগ। পেন্টাগন আরো বড়সড় সামরিক অভিযান চালাতে চেয়েছিল। কিন্তু বাইডেন ছোট করে আক্রমণের পক্ষে মত দেন। পেন্টাগনের মুখপাত্র জানিয়েছেন, যারা রকেট হামলা চালিয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সিরিয়ার ইরানপন্থি নিউজ চ্যানেল জানিয়েছে, মার্কিন হানায় একজন মারা গেছেন, আহত বহু।