সিরিয়ায় আবার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল৷ হামলায় একজন সিরীয় সৈন্য নিহত এবং দু'জন আহত হয়েছে৷ সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা এ খবর নিশ্চিত করেছে৷
বিজ্ঞাপন
সানা জানায়, রোববার সিরিয়ার হোমস নগরের এক বিমানঘাঁটিতে এ হামলা চালানো হয়৷ সেনাবাহিনীর এক সূত্র সানা-কে বলেন, ‘‘হামলায় একজন সৈন্য নিহত এবং দু'জন আহত হয়েছেন৷ এছাড়া অস্ত্রের গুদামও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷'' হামলার বিষয়ে এখনো ইসরায়েলের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি৷ ব্রিটেনভিত্তিক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, হোমস-এর ওই ঘাঁটিতে ইরান এবং হেজবোল্লাহ-র সৈন্যরাও রয়েছেন৷
এ নিয়ে সিরিয়ায় এক দিনের মধ্যে দ্বিতীয় হামলা চালালো ইসরায়েল৷ এর আগে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে সিরিয়ার বেশ কিছু লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর কথা জানিয়েছিল৷ মূলত সেনাঘাঁটি এবং পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে চালানো ওই হামলায় তিনজন সিরীয় সৈন্যসহ অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছিল তারা৷ আইডিএফ-এর পক্ষ থেকে বলা হয়, সিরিয়া থেকে ইসরায়েলে দু'টি রকেট নিক্ষেপের জবাব হিসেবে সেই হামলা চালানো হয়৷ আইডিএফ-এর বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘ আমরা মনে করি, (রকেট হামলার জন্য) সিরিয়া সরকার দায়ী৷ ইসরায়েলের বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতি করার যে-কোনো চেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে৷''
সিরিয়ায় ইরানের উপস্থিতি বরদাশত করবে না ইসরায়েল
সিরিয়ায় প্রায় নিয়মিত বিরতিতেই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল৷ মূলত হেজবোল্লাহ এবং ইরানের এলিট ফোর্স-কে লক্ষ্য করে হামলাগুলো চালানো হচ্ছে বলে দাবি তেল আবিবের৷ তেল আবিব মনে করে, সিরিয়ায় স্থায়ীভাবে অবস্থান নেয়ার জন্যই প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সহায়তায় সেনা পাঠিয়েছে ইরান৷ সিরিয়ায় ইরানের সেনা সদস্যদের অবস্থান মেনে নেয়া হবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছে ইসরায়েল৷
এসিবি/কেএম (এপি, এএফপি, ডিপিএ)
যুদ্ধে বিধ্বস্ত সিরিয়ার ইতিহাস
বার্লিনের প্যার্গামন মিউজিয়ামে চলছে সিরিয়ার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিষয়ে অভিনব একটি প্রদর্শনী৷ যুদ্ধের আগে ও পরে কীভাবে বদলেছে দেশটির সাংস্কৃতিক মানচিত্র, তা তুলে ধরছে এই প্রদর্শনী৷
ছবি: Staatliche Museen zu Berlin, Museum für Islamische Kunst/E. Wirth
ধুলোয় মিশেছে ‘আলেপ্পোর দুর্গ’
দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ শতাব্দীতে যার উত্থান, সেই বিখ্যাত ‘আলেপ্পোর দুর্গ’-এর সর্বত্র যুদ্ধের স্পষ্ট ছাপ দেখা যাচ্ছে৷ দুর্গের বিভিন্ন অংশ ধুলোয় মিশে গেলেও শিগগিরই তা পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়া হবে৷ উল্লেখ্য, ১৯৮৬ সাল থেকেই এই দুর্গের নাম ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছে৷
ছবি: Sultan Kitaz
ইতিহাস
বলা হয়, এই দুর্গের জন্ম খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে৷ যুদ্ধে এই দুর্গের আশেপাশের অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হলেও অক্ষত রয়েছে মূল প্রাঙ্গন৷ দুর্গের সামনে একটি মসজিদ রয়েছে৷
ছবি: Staatliche Museen zu Berlin, Museum für Islamische Kunst/E. Wirth
বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন মসজিদ
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের উমায়েদ মসজিদ বিশ্বের প্রাচীনতম মসজিদগুলোর একটি৷ অষ্টম শতাব্দীর গোড়ায় তৈরি এই মসজিদ ১৯৮০ সালে ইউনেস্কো’র ‘বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী স্থান’ তালিকায় স্থান পায়৷
ছবি: Issam Hajjar
বিশ্বখ্যাত আলেপ্পো বাজার
সিরিয়ার সবচেয়ে ঘন জনবসতি ছিল আলেপ্পো শহরে৷ সেখানের আলেপ্পো বাজার বা ‘সুক’-এ ছিল হাজারেরও বেশি ছোট ছোট দোকান৷ যুদ্ধে শহরের পুরোনো অংশ নিশ্চিহ্ন হলে তার ছোঁয়া লাগে এই বাজারেও৷ ফলে, হারিয়ে গেছে এই বাজারের বিশাল অংশ৷
ছবি: Issam Hajjar
বেল মন্দির
মেসোপটেমিয়ার আরাধ্য দেবতা ‘বেল’-এর এই মন্দিরের বয়স প্রায় ২,০০০ বছর৷ ২০১৫ সালে ইসলামিক স্টেটের বোমা হামলায় পালমিরা শহরে অবস্থিত এই মন্দিরটির কেন্দ্রীয় ভবনসহ অন্যান্য পবিত্র স্থান ধূলিসাৎ হয়ে যায়৷
ছবি: Staatliche Museen zu Berlin, Museum für Islamische Kunst/E. Wirth
পালমিরার ‘ভ্যালি অফ টুম্বস’
১৯৮০ সালে ইউনেস্কোর তালিকায় আসার পর থেকে এই অঞ্চলে শুরু হয় প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা৷ উপরের ছবিতে দেখা যাচ্ছে, এই উপত্যকার একটি অংশ, যেখানে জার্মানি ও সিরিয়ার দুটি গবেষণা দল ১৯৮১ সাল থেকে ১৯৮৫ পর্যন্ত কর্মরত ছিল৷ এই গবেষণা থেকে আঞ্চলিক ইতিহাসের অনেক অজানা তথ্য জানা যায়৷
ছবি: Sammlung M. Meinecke/A. Schmidt-Colinet
যুদ্ধের আগে আলেপ্পো
২০০১ সালে যখন এই ছবিটি তোলা হয়, তখনও কেউ জানত না, ঠিক কী হতে চলেছে এক দশক পরে৷ সোনালি সূর্যের আলোয় মোড়া আলেপ্পোর এই ছবিতে ঐতিহাসিক মসজিদটির মিনার দেখা যাচ্ছে, যা সেই সময় সংস্কার করা হচ্ছিল৷
ছবি: Peter Heiske
যুদ্ধবিধ্বস্ত আলেপ্পো
গত কয়েক বছরে সিরিয়ায় যুদ্ধের প্রতীক হয়ে উঠেছে আলেপ্পো৷ অতীতের এই বর্ধিষ্ণু শহর যুদ্ধের ফলে এক ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে৷ উপরের ছবিতে রয়েছে আবশির পাশা মসজিদ ও বেহরামিয়াহ মসজিদ চত্বরের ধ্বংসাবশেষের চিত্র৷ যুদ্ধের ফলে সিরিয়ার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা এই ছবি থেকে কিছুটা হলেও আন্দাজ করা যায়৷