সিরিয়ায় সংঘাত নিয়ে ইসরায়েলি উপস্থাপিকার বার্তা
২৬ মার্চ ২০১৮৩রা মার্চ রাতের বুলেটিন৷ ইসরায়েলের একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সংবাদ উপস্থাপন করছিলেন উপস্থাপিকা ( তাঁর নাম জানা যায়নি)৷ ভাষাটা ছিল হিব্রু৷ হঠাৎ তিনি ইংরেজিতে সিরিয়া সম্পর্কে বলা শুরু করেন৷ একেবারেই তাঁর নিজস্ব বক্তব্য৷ তিনি বলেন, ‘‘সিরিয়ার যেখানে যুদ্ধ চলছে, গাড়িতে সেখানে যেতে তেল আভিভ থেকে মাত্র ৮ ঘণ্টা লাগে৷ সেখানে চলছে গণহত্যা৷ আমি আরও স্পষ্টভাবে বলতে চাই, এটা হলোকস্ট৷ হয়ত আমরা এইসব কথা শুনতে চাই না বা মানতে চাই না যে, একবিংশ শতাব্দীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই যুগে আমাদের চোখের সামনে এসব ঘটছে৷ কিন্তু কী আশ্চর্য, আমরা কিছুই করছি না৷ সেখানে শিশুদের প্রতি ঘণ্টায় জবাই করা হচ্ছে৷ আমাকে প্রশ্ন করো না, কারা এখানে দোষী আর কারা নির্দোষ! যেটা সত্যি সেটা হলো, আমাদের চোখের সামনে এই বর্বরতম ঘটনা ঘটছে এবং জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র কেউই তা বন্ধ করার জন্য কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না৷’’
তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘আমাদের মধ্যে কতজন আছে, যারা সিরিয়ার নিরপরাধ মানুষগুলোর জন্য বিক্ষোভ মিছিল বা আন্দোলন করছেন? কেউ না৷ জাতিসংঘ কেবল বৈঠক করে যাচ্ছে৷ ছবি দেখে চোখের জল ফেলছে, এটা এক ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা৷’’
তিনি জানান, তিনি একজন আরব এবং একজন মুসলিম৷ তিনি ইসরায়েলের একজন নাগরিক৷ কিন্তু বিশ্বের একজন নাগরিক বলতে লজ্জা হয় তাঁর৷ এই কথা বলার সময় তাঁর গলা ধরে আসে৷ অশ্রুসজল চোখে তিনি বলেন, ‘‘আমি এজন্য নিজেকে ধিক্কার দিচ্ছি যে, আমরা এমন নেতাদের নির্বাচন করি, যারা নিরীহ মানুষদের বাঁচাতে শক্তিশালী পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা বোধ করে৷’’
সবশেষে তিনি বলেন, ‘‘আমরা কি ভুলে গেছি, আর্মেনিয়া, বসনিয়া, দারফুর, রুয়ান্ডা, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথা? না, ভুলিনি৷ আইনস্টাইন বলেছিলেন, ‘বিশ্ব কখনো শয়তানের দ্বারা ধ্বংস হবে না, ধ্বংস হবে তাদের হাতে যারা অন্যায়-অত্যাচার হতে দেখেও চুপ করে থাকবে, তাদের দ্বারা৷’’
ভিডিওটি ফেসবুক পাতায় পোস্ট করা হয় ৩রা মার্চ৷ এখন পর্যন্ত এটি দেখা হয়েছে ১ কোটি ৩০ লাখ বার৷ ২৮ লাখ বার শেয়ার হয়েছে৷ সাড়ে ৭ হাজার মন্তব্যের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই উপস্থাপিকার প্রশংসা করে লিখেছেন, সত্যিই এত সত্য কথা এখনকার দিনে কেউ বলার সাহস রাখে না৷
এপিবি/এসিবি