গত সপ্তাহেই রাশিয়ার সঙ্গে চলমান আলোচনা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি৷ সেই আলোচনা আপাতত ব্যর্থ৷ সিরিয়া যুদ্ধ থামাতে তাই নতুন উদ্যোগ নিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ৷
ছবি: Reuters/SANA
বিজ্ঞাপন
এবার যুদ্ধ থামাতে ফ্রান্সের দেয়া একটি রূপরেখা নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ৷ সোমবার ফ্রান্সের দেয়া নতুন এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শুরু হয়৷ প্রস্তাবটিতে যুদ্ধ সংশ্লিষ্ট কোনো পক্ষ যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করারও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে ফ্রান্স৷
তবে রাশিয়া শুরুতেই প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেছে৷ জাতিসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভিটালি চুরকিন জানিয়েছেন, তাঁর দেশ মনে করে এই প্রস্তাব অনুযায়ী যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়িত হলে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো, বিশেষ করে আইএস সিরিয়ায় ঢুকে পড়ার সুযোগ পাবে৷
সিরিয়ায় ত্রাণ সহায়তা পাঠানো যাচ্ছে না৷ আলেপ্পোসহ বেশ কয়েকটি শহরের সাধারণ মানুষকে জরুরি ভিত্তিতে মানবিক সহায়তা দেয়া দরকার৷ কিন্তু রাশিয়া এবং সিরিয়ার বাশার আল-আসাদ সরকার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত না হওয়ায় ত্রান পাঠানো যাচ্ছে না৷
যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরেরউদ্যোগটি ব্যর্থ হওয়ার জন্য পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়াকেই দায়ী করছে৷ বিশেষ করে সম্প্রতি রাশিয়া আবার সিরিয়ায় বিমান থেকে বোমা হামলা শুরু করায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো অসন্তোষ প্রকাশ করেছে৷ রাশিয়া তারপরও অনড়৷ বিদ্রোহী অধিকৃত আলেপ্পোয় তাই মানবিক বিপর্যয় দেখা দেয়া সত্ত্বেও ত্রাণ পাঠানো যাচ্ছে না৷
২০১১ সাল থেকে যুদ্ধ চলছে সিরিয়ায়৷ যুদ্ধে এ পর্যন্ত আড়াই লাখ মানুষ মারা গেছে৷
এসিবি/ ডিজি (এএফপি, রয়টার্স)
সিরিয়া থেকে যেভাবে জার্মানিতে এসেছে একটি পরিবার
জীবন বাঁচাতে সিরিয়া থেকে জার্মানিতে এসেছেন অনেক শরণার্থী৷ জার্মানির ইমিগ্রেশন সেন্টার সেসব মানুষের সংগ্রাম নিয়ে আয়োজন করেছে একটি প্রদর্শনীর৷ সেখানেই জানা গেলো কোটো পরিবারের বেঁচে থাকার গল্প৷
ছবি: Sammlung Deutsches Auswandererhaus
আলেপ্পোয় সুখি সংসার
২০১৬ সালে তোলা কোটা পরিবারের ছবি৷ খলিল, তাঁর স্ত্রী হামিদা, সন্তান মান্নান, ডোলোভান, আয়াজ এবং নের্ভানা৷ তখন সিরিয়ায় কোনো গৃহযুদ্ধ ছিল না, ছিল না ধ্বংসলীলা৷
ছবি: Sammlung Deutsches Auswandererhaus
দেশত্যাগের সিদ্ধান্ত
সিরিয়ায় ২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরুর সময় খলিল কোটো সেদেশের জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের একটি শাখার প্রধান ছিলেন৷ গৃহযুদ্ধ শুরুর পর চাকুরি হারান এই ইলেক্ট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ার৷ একসময় খাদ্য এবং পানির অভাব প্রকট হতে থাকে৷ ২০১৪ সালের এপ্রিলে পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, তারা তুরস্ক চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, যেখানে খলিলের মা বাস করতেন৷
ছবি: Sammlung Deutsches Auswandererhaus
ধাপে ধাপে আগানো
খলিল তুরস্কে কোনো কাজ খুঁজে পাননি৷ তাই ২০১৪ সালের জুলাইয়ে তাঁর পরিবার জার্মানিতে আসার সিদ্ধান্ত নেন৷ খলিলের ভাই ইউরোপে বাস করেন৷ তিনিই পরিবারটিকে জার্মানিতে আসতে উৎসাহ যোগান৷ শরণার্থী হিসেবে জার্মানিতে আসার পথে বুলগেরিয়ায় একটি শরণার্থী শিবিরে ছয় মাস কাটান কোটো পরিবার৷ এই চামচটি সেই শিবিরের এক স্মৃতিচিহ্ন৷
ছবি: Sammlung Deutsches Auswandererhaus
জার্মানিতে স্বাগতম
অবশেষে জার্মানিতে কোটো পরিবার৷ জার্মানির উত্তরের শহর ব্রেমেনে তাদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে৷ সেখানকার এক নারী খলিলকে এই জিন্সের প্যান্টটি দিয়েছেন, জার্মানিতে পাওয়া তাঁর প্রথম পোশাক এটি৷
ছবি: Sammlung Deutsches Auswandererhaus
অনিশ্চিত ভবিষ্যত
খলিলের সন্তানরা এখন জার্মান স্কুলে যাচ্ছেন৷ আর খলিল এবং তাঁর স্ত্রী হামিদা শিখছেন জার্মান৷ ইলেক্ট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ার জার্মানিতে একটি চাকরি পাবেন বলে আশা করছেন৷ সিরিয়ায় ফেলে আসা অতীত মাঝে মাঝে মনে করে আনন্দ খোঁজেন তারা৷ আয়াজের সিরিয়ার স্কুলের আইডি কার্ড এটি৷