দু’বছরে মারা গেছে ৮০ হাজার মানুষ৷ দিন যাচ্ছে, হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে৷ সংকট নিরসন তাই জরুরি৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন এ চেষ্টায় বেশ তৎপর৷ এর মাঝেই দেখা দিলো সিরিয়া-সংকট বাড়ার আশঙ্কা৷
বিজ্ঞাপন
বিদ্রোহীদের অস্ত্রসহায়তা দেয়া হবে কি হবেনা এ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) দ্বিধাবিভক্ত৷ সিরিয়ার ওপর এ জোটের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে ২০১১ থেকে৷ নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ফুরাতে বেশি বাকি নেই৷ এ অবস্থায় নতুন সিদ্ধান্ত নিতেই হবে, কিংবা ঘোষণা দিয়ে বলবৎ রাখতে হবে আগের সিদ্ধান্ত৷ কোন দিকে যাওয়া উচিত এ নিয়ে ভাবনায় আছে ইইউ৷
সিরিয়ার আন্দোলনের বার্ষিকী
সিরিয়ার সরকারবিরোধী আন্দোলনের দুই বছর পূর্ণ হলো৷ শুরুতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চললেও ক্রমেই তা সহিংস হয়ে উঠেছে৷
ছবি: Gaia Anderson
টিনএজারদের দিয়ে শুরু
সিরিয়ার দারা শহরের একটি স্কুলের দেয়ালে স্লোগান লেখায় আটক করা হয়েছিল কয়েকজন টিনএজারকে৷ তারা লিখেছিল, টিউনিশিয়া আর মিশরের পর সিরিয়ার বাশার আল আসাদ হবেন পরবর্তী আরব নেতা যাকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে৷ এই ঘটনার পরই শুরু হয় জোরদার আন্দোলন৷
ছবি: Gaia Anderson
দেশত্যাগীর সংখ্যা বাড়ছে
এখন পর্যন্ত প্রায় দশ লক্ষ সিরীয় ভয়ে দেশ ছেড়েছেন৷ আর প্রায় ত্রিশ লক্ষ মানুষ দেশের ভেতরেই গৃহহীন হয়ে পড়েছেন৷
ছবি: Gaia Anderson
অর্ধেকই শিশু
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে, যারা দেশ ছেড়েছে তাদের অর্ধেকেরও বেশি শিশু৷
ছবি: Gaia Anderson
শান্তিপূর্ণ থেকে সহিংস
শান্তিপূর্ণ থেকে সহিংস শান্তিপূর্ণভাবে যারা আন্দোলন শুরু করেছিলেন, ক্রমেই তারা দেখতে পান যে তাদের রাস্তাগুলো যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হচ্ছে৷ এছাড়া সশস্ত্র কিছু জনগণ ও সেনাবাহিনী ত্যাগ করাদের নিয়ে বিরোধী একটি জোটও গড়ে উঠেছে যারা সরকারি বাহিনীর সঙ্গে লড়ছে৷
ছবি: Gaia Anderson
শিশু শিক্ষা হুমকির মুখে
সরকারবিরোধী আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুদের শিক্ষা৷ জাতিসংঘ বলছে, প্রতি পাঁচটি স্কুলের একটি হয় যুদ্ধে ধ্বসে গেছে, না হয় আশ্রয় শিবির হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে৷
ছবি: Gaia Anderson
তুরস্ক আশ্রয় নিয়ে তিন লক্ষ সিরীয়
তুরস্কের আশ্রয় শিবিরগুলোতে থাকা প্রায় তিন লক্ষ সিরীয়র মধ্যে দুই তৃতীয়াংশ থাকে সরকারি পরিচালনায় থাকা শিবিরে৷ যেখানে স্কুল ও চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে৷ বাকি শরণার্থীরা যেখানে থাকছেন সেখানে ন্যূনতম সুবিধা নেই৷
ছবি: Gaia Anderson
সাহায্য থেকে বঞ্চিত
সিরিয়ার বিরোধীরা বলছে জাতিসংঘের সাহায্যগুলো পাচ্ছে সরকারি নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকাগুলোর বাসিন্দারা৷ বঞ্চিত হচ্ছেন বিরোধীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা উত্তরাঞ্চলের জনগণ৷
ছবি: Gaia Anderson
সহায়তা বিতরণ হচ্ছে না
গাল্ফ দেশগুলো থেকে যে অর্থ সহায়তা আসছে বিরোধী নেতারা সেগুলো আশ্রয়প্রার্থীদের না দিয়ে নিজেদের শক্তি বাড়াতে কাজে লাগাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে৷
ছবি: Gaia Anderson
ত্রাণ নিয়ে যেতে সমস্যা
‘সেভ দ্য চিলড্রেন’ বলছে যেসব এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেখানে যাওয়াটা বেশ কষ্টসাধ্য৷ এমনকি কোনো জায়গায় যাওয়াও যাচ্ছে না৷ সিরীয় সরকারই ঐসব এলাকায় ত্রাণ সংস্থাগুলোকে যেতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে৷
ছবি: Gaia Anderson
সমাধান হচ্ছে না
সিরিয়ার বিরোধীরা এক হতে না পারায় এবং পর্যাপ্ত আন্তর্জাতিক উদ্যোগ না থাকায় সিরিয়ার সমস্যার সমাধান হচ্ছে না৷
ছবি: Gaia Anderson
10 ছবি1 | 10
ব্রিটেন আর ফ্রান্স নিষেধাজ্ঞা আংশিক তুলে নেয়ার পক্ষে৷ দেশ দুটি মনে করে বাশার আল-আসাদ সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা রেখে বিদ্রোহীদের অস্ত্রসহায়তা দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে৷ তাদের যুক্তি, আসাদ সরকার যেহেতু (দেশ দুটির দাবি অনুযায়ী) রাশিয়া আর ইরানের কাছ থেকে অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে সেহেতু বিদ্রোহীদের একই সহায়তা দেয়া উচিত এবং এর ফলে যুদ্ধ তাড়াতাড়ি শেষ হতে পারে৷
কিন্তু ইইউ-র অনেক সদস্যদেশ আবার বিদ্রোহীদের অস্ত্র দেয়ার বিপক্ষে৷ বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র এবং সুইডেন মনে করে বিদ্রোহীদের এমন সহায়তা দিলে সংকট আরো ঘণীভূত হবে৷
এদিকে রাশিয়া এবং ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসবেন জন কেরি৷ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেরির বৈঠকে বসবেন প্যারিসে৷ সিরিয়ার চলমান সংকট নিরসনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের উদ্যোগই এ বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য৷
সংকট নিরসনের এত ভাবনা, এত উদ্যোগের মাঝেই লেবাননে রকেট হামলা চালিয়েছে বাশার আল-আসাদের অনুগত বাহিনী৷ জোড়া হামলায় মাত্র পাঁচজন আহত হলেও তাতে সংকট নতুন মোড় নেয়ার আশঙ্কাই যে বেড়েছে, তা বলাই বাহুল্য৷