সিরিয়া সংকট নিরসনের কিছুটা আশা জাগিয়েছিল জেনেভার এই শান্তি আলোচনা৷ কিন্তু শুরুর আগেই প্রায় উবে যেতে বসে সম্ভাবনা৷ সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট কোনো প্রতিনিধি না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়ায় ফিরে এসেছে অচলাবস্থা৷
বিজ্ঞাপন
সিরিয়ায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে যতবার শান্তি স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে ততবারই সেই প্রয়াস ভেস্তে গিয়ে আবার দেখা দিয়েছে অচলাবস্থা৷ জারি থেকেছে যুদ্ধ৷ প্রতিদিন অনেক মানুষের মৃত্যুর গ্লানি বজায় থেকেছে৷ এমন চলতে চলতে সিরিয়া যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা আড়াই লাখ ছাড়িয়েছে৷ গৃহহারাও হয়েছে লাখো মানুষ৷ ভয়াবহ এই যুদ্ধ থামিয়ে সিরিয়া এবং সিরিয়ার আশপাশে শান্তি ফেরানোর উদ্দেশ্যে শুক্রবার জাতিসংঘের উদ্যোগে জেনেভায় যে শান্তি আলোচনা হচ্ছে তাতে বাশার আল-আসাদের বিরোধী পক্ষের বড় একটি অংশই অংশ নিচ্ছে না৷ ফলে আলোচনার ফলপ্রসূতা এবং সাফল্য নিয়েই দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা৷
সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট জানিয়ে দিয়েছে আসাদ সরকার নিরীহ মানুষ হত্যা বন্ধ না করাসহ জোটের অন্যান্য শর্ত মেনে না নেয়া পর্যন্ত তারা জেনেভার আলোচনায় কোনো প্রতিনিধি পাঠাবে না৷
তবে সিরিয়ায় শান্তি স্থাপনের এ প্রয়াস সাফল্যের মুখ দেখবে এমন সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷ আলোচনার খুব গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ তুরস্ক জানিয়েছে এ আলোচনায় কুর্দিদের ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন পার্টি, অর্থাৎ পিওয়াইডি-র অংশ গ্রহণ তারা মেনে নেবেনা৷ অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া চায় আলোচনায় কুর্দিদেরও অংশ গ্রহণ থাকুক৷ তুরস্ক সাফ জানিয়ে দিয়েছে, পিওয়াইডি থাকলে এ শান্তি আলোচনা তারা বর্জন করবে৷ সব মিলিয়ে এই যখন পরিস্থিতি তখন প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক – সিরিয়া সংকট নিরসন সুদূর পরাহত?
এসিবি/ডিজি (রয়টার্স, ডিপিএ, এএফপি)
অনশনের শহর মাদায়া
গত তিন মাস ধরে অনশনে মৃত্যুর বিরুদ্ধে যুঝছে মাদায়ার আবালবৃদ্ধবনিতা৷ তবে অবশেষে সেই মৃত্যুর শহরে মানবিক সাহায্য পৌঁছতে শুরু করেছে৷
ছবি: Aktivisten aus Madaja
শহরে আটক
আসাদ বিরোধী বিদ্রোহী ও আইএস যোদ্ধাদের দখলে মাদায়া৷ শহরটিকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে আসাদ সমর্থক ও হেজবোল্লা গোষ্ঠীর যোদ্ধারা৷ ফলে কোনো রসদ শহরে ঢুকতে পারছিল না, মানুষজন এমনকি ঘাসপাতা খেয়ে বেঁচে ছিলেন৷
ছবি: Aktivisten aus Madaja
জল আর নুন
আস্তাকুঁড়ে খাবারের খোঁজে মানুষ, গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে সিরিয়ায় এ ধরনের দৃশ্য কল্পনা করা যেত না৷ মা দুধের বদলে বাচ্চাকে জলে নুন গুলে খেতে দিচ্ছেন৷
ছবি: Aktivisten aus Madaja
অশনি সংকেত
যে ভিডিও থেকে এই শিশুটির ছবি নেওয়া হয়েছে, সেটি তোলা হয় ২০১৬ সালের ৫ই জানুয়ারি৷ শীতের মৌসুম চলেছে, কাজেই ক্ষুধা ও অপুষ্টির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে হাড়কাঁপানো শীত৷
ছবি: Reuters
কষ্ট তো ছোটদেরই
বড়দের যুদ্ধে যারা সবার আগে ও সবচেয়ে বেশি কষ্ট পায়, তারা হলো ছোটরা৷ অক্টোবর মাস থেকে মাদায়ায় বাইরে থেকে কোনোরকম সাহায্যই যে পৌঁছায়নি৷
ছবি: Aktivisten aus Madaja
মানবিক ট্র্যাজেডি
একবিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে মানুষকে যখন ঘাসের রুটি খেতে হয়, তখন সেটাকে ট্র্যাজেডি ছাড়া আর কী বলা চলতে পারে...৷
ছবি: Aktivisten aus Madaja
প্রতিবাদের ঝড়
যেমন সিরিয়ার ইদলিব শহরে৷ বিক্ষোভকারীরা চান, মাদায়ায় ত্রাণ পাঠানো হোক – আর চান গৃহযুদ্ধের অন্ত৷
ছবি: picture-alliance/AA/F. Faham
সাহায্য পৌঁছাবে কেমন করে
মাদায়া থেকে পালানোর চেষ্টা করতে গিয়ে একাধিক মানুষ গুলিতে প্রাণ দিয়েছেন৷ জুলাই মাস থেকেই মাদায়া অবরুদ্ধ, কাজেই সেখানে ত্রাণসাহায্য পাঠানো কঠিন৷
ছবি: picture alliance/dpa/P. Krzysiek
সাহায্য যখন পৌঁছাতে শুরু করল
সিরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান বাশার আল-আসাদের অনুমতি পাবার পর জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ও সেই সঙ্গে রেড ক্রস ও রেড ক্রেসেন্ট ত্রাণসাহায্য পাঠাতে শুরু করে৷
ছবি: Getty Images/AFP/L. Beshara
অন্যান্য ভুখা শহর
মাদায়াই শুধু নয়, সেই সঙ্গে একেবারে উত্তরে অবস্থিত আরো দু’টি শহরে ত্রাণ পাঠানো শুরু হয়েছে৷ শিয়া অধ্যুষিত ফুয়া ও কফারিয়া শহর দু’টি অবরুদ্ধ করে রেখেছে বিদ্রোহীরা, কিন্তু মানুষজনের অবস্থা মাদায়ারই মতো৷ কেননা যুদ্ধে দু’পক্ষ থাকতে পারে, অনশনে নয়৷